Ajker Patrika

মডেল রাউধা হত্যা মামলা আবার তদন্তের নির্দেশ

রাজশাহী প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ জুলাই ২০২২, ২০: ০৭
মডেল রাউধা হত্যা মামলা আবার তদন্তের নির্দেশ

আন্তর্জাতিক ‘ভোগ’ সাময়িকীর মডেল রাউধা আতিফ হত্যা মামলা পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তাকে দিয়ে মামলাটি তদন্ত করাতে বলা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহীর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩-এর বিচারক মহিদুর রহমান শুনানি শেষে এই আদেশ দিয়েছেন। 

মালদ্বীপের বাসিন্দা রাউধা আতিফ রাজশাহীর ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। ২০১৭ সালের ২৯ মার্চ কলেজের বিদেশি শিক্ষার্থীদের হোস্টেল কক্ষ থেকে রাউধার লাশ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ যখন লাশটি উদ্ধার করে তখন সেটি বিছানার ওপর ছিল। কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, রাউধা ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন। পুলিশ যাওয়ার আগেই দরজা ভেঙে লাশটি নামানো হয় বলেও কর্তৃপক্ষের দাবি। 

তবে রাউধার বাবা ডা. মোহাম্মদ আতিফের দাবি তাঁর মেয়ে আত্মহত্যা করেননি। তাই তিনি রাউধার সহপাঠী সিরাত পারভীনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। প্রথমে ময়নাতদন্ত শেষে রাউধার লাশ রাজশাহীতে দাফন করা হয়। হত্যা মামলা করার পর কবর থেকে লাশ তুলে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত করা হয়। দুই ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনেই বলা হয়, রাউধা আত্মহত্যা করেছেন। 

পরে ২০১৭ সালের ১৫ অক্টোবর শাহমখদুম থানার তৎকালীন পুলিশ পরিদর্শক আনোয়ার আলী তুহিন ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের পরিদর্শক আসমাউল হক আদালতে মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেন। এতে নারাজি দেন রাউধার বাবা। আদালত তা গ্রহণ করে মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) দায়িত্ব দেন। 

পিবিআইয়ের তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) সাইদুর রহমান ২০১৯ সালের ১৮ মে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এতে তিনি ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে আত্মহত্যার বিষয়টি থাকার কথা উল্লেখ করেন। আর তাঁর নিজের তদন্তের বিষয়ে উল্লেখ করেন যে মামলার আসামি সিরাত পারভীনের হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়ে কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। এই প্রতিবেদন পাওয়ার পর আদালত মামলাটি নথিজাত করেন। 

এতেও অসন্তোষ প্রকাশ করেন রাউধার বাবা ডা. মোহাম্মদ আতিফ। তিনি আইনজীবীর মাধ্যমে যথাযথ প্রক্রিয়ায় আবারও মামলাটি তদন্তের আবেদন করেছিলেন। আদালত মঙ্গলবার এ আদেশ দিয়েছেন। রাউধা হত্যা মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী আসলাম সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

আসলাম সরকার জানান, ২০২০ সালের ২ জানুয়ারি তিনি মহানগর দায়রা ও জজ আদালতে মামলার রিভিশন আবেদন করেন। চলতি বছরের ১৮ এপ্রিল আদালতে রিভিশনের আবেদন মঞ্জুর হয়। সেদিন আদালত নিম্ন আদালতে বাদীর নারাজি আবেদন দাখিলের অনুমতি দেন। 

এরপর ২৯ জুন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩-এ বাদীর নারাজি আবেদন দাখিল করা হয়। এরই শুনানি অনুষ্ঠিত হলো মঙ্গলবার। শুনানির আগে আদালত মামলার বাদী ডা. মোহাম্মদ আতিফের জবানবন্দি গ্রহণ করেন। পরে শুনানি শেষে মামলাটি পুনঃ তদন্তের আদেশ দেন। 

মামলার বাদী ডা. মোহাম্মদ আতিফ বলেন, তিনি একজন চিকিৎসক। তিনি নিশ্চিত যে তাঁর মেয়ে আত্মহত্যা করেননি। তাঁকে হত্যা করা হয়েছিল। কিন্তু প্রতিবারই তদন্ত প্রভাবিত করা হয়েছে। তিনি ন্যায়বিচার পাননি। তাই আবারও নারাজি দাখিল করেছিলেন। আদালতের এ আদেশের মাধ্যমে নথিজাত হওয়া একটা ‘মৃত’ মামলা পুনরুজ্জীবিত হলো। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এবার তদন্তে তাঁর মেয়েকে হত্যার বিষয়টি উঠে আসবে। 

আইনজীবী আসলাম সরকার বলেন, দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে লাশ নামানো হলে দরজায় আঘাত থাকবে। ছিটকিনি ভাঙা বা বাঁকানো থাকবে। ৪০ কেজি ওজনের একটা মানুষও যদি ফ্যানে ঝুলে তাহলে সেই ফ্যানেও একটা চিহ্ন থাকবে। পরীক্ষায় তা ধরা পড়বে। এসব কিছুই পাওয়া যায়নি। তাহলে মেয়েটা আত্মহত্যা করল কীভাবে? এই বিষয়গুলোই আদালতকে বোঝানো হয়েছে। তাই আদালত মামলা পুনরায় তদন্তের আদেশ দিয়েছেন। আদেশের কপি দ্রুতই আদালত থেকে রাজশাহী নগর পুলিশের কমিশনারের কাছে পাঠানো হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনালে অবতরণ করল প্রথম ফ্লাইট

৩ আগস্ট বিমানবন্দরে বাধা পান তাপস, হাসিনাকে অনুরোধ করেন অফিসারের সঙ্গে কথা বলতে- অডিও ফাঁস

স্ত্রী রাজি নন, সাবেক সেনাপ্রধান হারুনের মরদেহের ময়নাতদন্ত হবে না: পুলিশ

বাকৃবির ৫৭ শিক্ষকসহ ১৫৪ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা

বগুড়ায় দুই মামলায় আ.লীগের ছয় নেতা-কর্মী ১০ দিনের রিমান্ডে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত