নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় হাতে টান পড়লেই হিন্দুপাড়ার বাসিন্দাদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করতেন স্থানীয় এক তাঁতী দল নেতা। ধরে নিয়ে যেতেন পুকুরের মাছ, হাঁস, গাছের কলার কাঁদি। কেউ বাধা দিতে গেলেই হাঁসুয়া নিয়ে তেড়ে যেতেন। বের করতেন ছোরা। সবশেষ চাঁদা দিতে না চাইলে একজনকে মারধরের পর হিন্দুপাড়ার বাসিন্দারা থানা ঘেরাও করেন।
এরপর পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে। আজ বুধবার তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাঁর নাম নবাব হোসেন ওরফে বাচ্চু (৩০)। তিনি উপজেলার গোবিন্দপাড়া ইউনিয়ন তাঁতী দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। আজ তাঁতী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ ও সদস্যসচিব হাজি মজিবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে নবাব হোসেনকে দলীয় পদ থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কারের কথা জানানো হয়েছে।
নবাব হোসেনের বাড়ি চাঁইসাড়া গ্রামে। এ গ্রামের একপাশে প্রায় ১০০টি হিন্দু পরিবারের বাস। এলাকাটি হিন্দুপাড়া নামে পরিচিত। বছর দু-এক আগে হিন্দুপাড়ার পাশে ৩ শতক জায়গা কিনে বাড়ি করেন নবাব। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর নবাব এ পাড়ার বাসিন্দাদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় শুরু করেছিলেন। তা না হলে পাড়ায় থাকতে দেবেন না বলে হুমকি দিতেন। বাধ্য হয়ে সবাই নবাবকে চাঁদা দিয়ে আসছিলেন।
পাড়ার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সপ্তাহখানেক আগে নারায়ণ ভবানী (৬০) নামের এক ব্যক্তির কাছে পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন নবাব। নবাব হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, গ্রামে থাকতে হলে তাঁকে টাকা দিতে হবে। তা না হলে সমস্যায় পড়তে হবে। তবে নারায়ণ ভবানী টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণ ভবানীকে দেখতে পেয়ে নবাব তাঁর পথরোধ করেন। তিনি টাকা না দেওয়ার কারণ জানতে চান। নারায়ণ টাকা দেবেন না বলতেই ক্ষুব্ধ হয়ে নবাব হোসেন তাঁর ওপর হামলা চালান। এ সময় তাঁকে মারধর করে রাস্তায় ফেলে রেখে চলে যান নবাব। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন।
ঘটনাটি জানাজানি হলে চাঁইসাড়া গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের শতাধিক নারী-পুরুষ প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে বাগমারা থানায় গিয়ে বিক্ষোভ করেন। তাঁরা নবাব হোসেনকে গ্রেপ্তার এবং নিজেদের নিরাপত্তা দেওয়ার দাবি জানান। পরে পুলিশ মামলা নেওয়া, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের আশ্বাস দিলে বেলা আড়াইটার দিকে তাঁরা থানা চত্বর ত্যাগ করেন। বিষয়টি জানতে পেরে নবাব পালিয়ে যান। পরে রাতেই নওগাঁর মান্দা উপজেলার কালীনগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে নবাবকে গ্রেপ্তার করে বাগমারা থানা-পুলিশের একটি দল। এর আগে রাতেই নবাব হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ভুক্তভোগী নারায়ণ ভবানী।
এ বিষয়ে বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা অভিযোগ পেয়েই নবাবকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছি। পাড়ার বাসিন্দারা জানিয়েছেন যে অনেক দিন ধরে নবাব চাঁদা নিচ্ছিলেন। টাকা না পেলে মাছ, হাঁস ও মুরগি ধরে নিয়ে যেতেন। তবে তাঁরা আগে আমাদের জানাননি। আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’
অতিষ্ঠ ছিল সংখ্যালঘুরা
তাঁতী দল নেতা নবাবের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন চাঁইসাড়া হিন্দুপাড়ার বাসিন্দারা। নবাব গ্রেপ্তার হলেও আতঙ্ক রয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন, আওয়ামী সরকারের পতনের পর থেকে নবাব তাঁদের ‘আওয়ামী লীগ’ ট্যাগ দিয়ে বলতেন—পাড়ায় থাকতে হলে তাঁকে টাকা দিয়ে থাকতে হবে।
গ্রামের এক স্কুলশিক্ষক বলেন, বাড়ি বাড়ি গিয়ে নবাব নিয়মিত চাঁদা নিয়ে যেতেন। কারও হয়তো পুকুরে মাছ আছে, সে মাছ ধরে নিয়ে যেতেন। পুকুরপাড় থেকে হাঁস নিয়ে যেতেন। গাছের কলার কাঁদি কেটে নিয়ে যেতেন। ধান মাড়াই করলে ধান দিতে হতো। কারও কিছু বলার সাহস ছিল না। কেউ কিছু বললে হাঁসুয়া নিয়ে এসে ভয় দেখাতেন। তাঁর কাছে সব সময় একটা ছোট ছোরা থাকত। টিপ দিলেই ছোরা বড় হয়ে যেত। এভাবে তিনি ভয় দেখাতেন।
ওই স্কুলশিক্ষক বলেন, ‘গ্রামের প্রায় প্রত্যেকেই নবাবকে টাকা দিয়েছে। সবচেয়ে খারাপ ব্যাপার ছিল, টাকা দিতে না চাইলে নবাব বাড়ির বয়স্ক মায়েদের গিয়ে ভয় দেখাত। বলত—আপনার ছেলেকে টাকা দিয়ে দিতে বলবেন। তা না হলে সমস্যা হবে। মায়েরা ভয়ে থাকতেন। রাস্তাঘাটে দেখা হলে ছেলেদের কাছে টাকা চাইত। দিলে ভালো, না দিলে পকেটে হাত দিয়ে যা পেত, সবই জোর করে নিয়ে নিত। বলত—এখন আমরা খাব। এটাই ছিল তার কথা।’
এ নিয়ে দলীয় স্থানীয় নেতাদের জানিয়েও প্রতিকার পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন পাড়ার বাসিন্দারা। গ্রামের আরও এক ব্যক্তি জানান, সম্প্রতি উপেন্দ্রনাথ সরকার নামের এক ব্যক্তি নবাবের এমন উৎপাতের কথা দলের লোকজনকে জানিয়েছিলেন। কয়েক দিন পর উপেন্দ্রনাথের সঙ্গে নবাবের দেখা হলে তিনি তাঁকে লক্ষ্য করে হাঁসুয়ার আঘাত করার চেষ্টা করেন। তবে উপেন্দ্রনাথ কোনো রকমে হাঁসুয়াটি ধরে ফেলেন। হাঁসুয়াটি লাগে হাতে থাকা বাজারের ব্যাগে। সম্প্রতি দামনাশ উচ্চবিদ্যালয়ে গিয়েও হাঙ্গামা করেন নবাব। সেদিন তাঁকে ধরে ধারালো অস্ত্রসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। পরে তিনি ছাড়া পেয়ে যান।
গোবিন্দাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হাবিবুর রহমান বলেন, ‘হিন্দুদের ওপর তার এত অত্যাচার শুরু হয়েছিল, তা বলার মতো না। মুসলমানদেরও যারা দুর্বল মানুষ, তারাও চাঁদা দিতে বাধ্য হচ্ছিল। গতকাল তার হাতে আহত নারায়ণ ভবানীর সঙ্গে আমি দেখা করেছি। আমাকে তিনি জানিয়েছেন যে, তাঁকে মারধর করে নবাব ১৫ হাজার টাকা কেড়ে নিয়েছে। এভাবে তো দলের নাম ভাঙিয়ে চলতে পারে না।’

‘হাফ ম্যাড’ বলছে বিএনপি
গত ৩১ জুলাই গোবিন্দপাড়া ইউনিয়ন তাঁতী দলের কর্মিসভা শেষে নতুন কমিটি গঠন করা হয়। সেদিন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ পান নবাব হোসেন। এই কমিটি নিয়ে সেদিন বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। সেদিন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নবাবেরও নাম প্রকাশ হয়।
তবে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডি এম জিয়াউর রহমান দাবি করেছেন, নবাব ‘হাফ ম্যাড’। তিনি বলেন, ‘যখন যে দলের মিছিল হয়, নবাব সে দলের মিছিলেই যোগ দেয়। সে আসলে হাফ ম্যাড। তাঁতী দলের কর্মিসভার দিন সে এসে বলে তাকে সভাপতির পদ দিতে হবে, সাধারণ সম্পাদকের পদ দিতে হবে। তখন নেতারা বলেন—ঠিক আছে, তুই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এভাবে সে এই পদ পেয়ে যায়। এখন কোনো বিতর্ক উঠলে দল কিছু শুনছে না। দায় এড়াতে সরাসরি বহিষ্কার করছে। নবাবকেও বহিষ্কার করা হয়েছে।’
জিয়াউর রহমান দাবি করেন, নবাব বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। সংখ্যালঘুদেরই যে টার্গেট করে তিনি টাকা নিতেন, এমনটি নয়। তাই হিন্দুপাড়ার বাসিন্দারা গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি দিতে চেয়েছেন। তাঁরা বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দেবেন যে—এটা দলীয় কোনো ইস্যু নয়, সংখ্যালঘু ইস্যুও নয়।
নবাব আসলেই বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী কি না—জানতে চাইলে হিন্দুপাড়ার এক বাসিন্দা বলেন, ‘জাতে মাতাল তালে ঠিক। এমন হলে সে কীভাবে বলে যে আপনারা বহুদিন ধরে আওয়ামী লীগ করেছেন, এখন আমাদের টাকা দিয়ে থাকতে হবে। এটা তো সম্ভব না। তার কিছু গুরু আছে। তারাই নবাবকে এ রকম বেপরোয়া করে তুলেছিল। এখনো আমরা ভয়ে।’
তাঁতী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নবাবের এমন কর্মকাণ্ড দলীয় সুনাম ও ভাবমূর্তি গুরুতরভাবে ক্ষুণ্ন করেছে, যা সংগঠনের গঠনতন্ত্র ও আদর্শের পরিপন্থী। তাই কেন্দ্রীয় কমিটি তাঁকে সাময়িক বহিষ্কারের জরুরি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তাঁর সঙ্গে দলীয় কোনো নেতা-কর্মীর সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পর্ক ও যোগাযোগ না রাখার জন্য এবং তাঁকে দেখামাত্রই আইনের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, নবাবের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা যাচাই এবং ঘটনা উদ্ঘাটনের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটি একটি তদন্ত টিম গঠন করেছে। এ তদন্ত টিমের রিপোর্টের ভিত্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে স্থায়ী ও চূড়ান্ত সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় হাতে টান পড়লেই হিন্দুপাড়ার বাসিন্দাদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করতেন স্থানীয় এক তাঁতী দল নেতা। ধরে নিয়ে যেতেন পুকুরের মাছ, হাঁস, গাছের কলার কাঁদি। কেউ বাধা দিতে গেলেই হাঁসুয়া নিয়ে তেড়ে যেতেন। বের করতেন ছোরা। সবশেষ চাঁদা দিতে না চাইলে একজনকে মারধরের পর হিন্দুপাড়ার বাসিন্দারা থানা ঘেরাও করেন।
এরপর পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে। আজ বুধবার তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাঁর নাম নবাব হোসেন ওরফে বাচ্চু (৩০)। তিনি উপজেলার গোবিন্দপাড়া ইউনিয়ন তাঁতী দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। আজ তাঁতী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ ও সদস্যসচিব হাজি মজিবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে নবাব হোসেনকে দলীয় পদ থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কারের কথা জানানো হয়েছে।
নবাব হোসেনের বাড়ি চাঁইসাড়া গ্রামে। এ গ্রামের একপাশে প্রায় ১০০টি হিন্দু পরিবারের বাস। এলাকাটি হিন্দুপাড়া নামে পরিচিত। বছর দু-এক আগে হিন্দুপাড়ার পাশে ৩ শতক জায়গা কিনে বাড়ি করেন নবাব। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর নবাব এ পাড়ার বাসিন্দাদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় শুরু করেছিলেন। তা না হলে পাড়ায় থাকতে দেবেন না বলে হুমকি দিতেন। বাধ্য হয়ে সবাই নবাবকে চাঁদা দিয়ে আসছিলেন।
পাড়ার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সপ্তাহখানেক আগে নারায়ণ ভবানী (৬০) নামের এক ব্যক্তির কাছে পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন নবাব। নবাব হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, গ্রামে থাকতে হলে তাঁকে টাকা দিতে হবে। তা না হলে সমস্যায় পড়তে হবে। তবে নারায়ণ ভবানী টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণ ভবানীকে দেখতে পেয়ে নবাব তাঁর পথরোধ করেন। তিনি টাকা না দেওয়ার কারণ জানতে চান। নারায়ণ টাকা দেবেন না বলতেই ক্ষুব্ধ হয়ে নবাব হোসেন তাঁর ওপর হামলা চালান। এ সময় তাঁকে মারধর করে রাস্তায় ফেলে রেখে চলে যান নবাব। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন।
ঘটনাটি জানাজানি হলে চাঁইসাড়া গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের শতাধিক নারী-পুরুষ প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে বাগমারা থানায় গিয়ে বিক্ষোভ করেন। তাঁরা নবাব হোসেনকে গ্রেপ্তার এবং নিজেদের নিরাপত্তা দেওয়ার দাবি জানান। পরে পুলিশ মামলা নেওয়া, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের আশ্বাস দিলে বেলা আড়াইটার দিকে তাঁরা থানা চত্বর ত্যাগ করেন। বিষয়টি জানতে পেরে নবাব পালিয়ে যান। পরে রাতেই নওগাঁর মান্দা উপজেলার কালীনগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে নবাবকে গ্রেপ্তার করে বাগমারা থানা-পুলিশের একটি দল। এর আগে রাতেই নবাব হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ভুক্তভোগী নারায়ণ ভবানী।
এ বিষয়ে বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা অভিযোগ পেয়েই নবাবকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছি। পাড়ার বাসিন্দারা জানিয়েছেন যে অনেক দিন ধরে নবাব চাঁদা নিচ্ছিলেন। টাকা না পেলে মাছ, হাঁস ও মুরগি ধরে নিয়ে যেতেন। তবে তাঁরা আগে আমাদের জানাননি। আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’
অতিষ্ঠ ছিল সংখ্যালঘুরা
তাঁতী দল নেতা নবাবের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন চাঁইসাড়া হিন্দুপাড়ার বাসিন্দারা। নবাব গ্রেপ্তার হলেও আতঙ্ক রয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন, আওয়ামী সরকারের পতনের পর থেকে নবাব তাঁদের ‘আওয়ামী লীগ’ ট্যাগ দিয়ে বলতেন—পাড়ায় থাকতে হলে তাঁকে টাকা দিয়ে থাকতে হবে।
গ্রামের এক স্কুলশিক্ষক বলেন, বাড়ি বাড়ি গিয়ে নবাব নিয়মিত চাঁদা নিয়ে যেতেন। কারও হয়তো পুকুরে মাছ আছে, সে মাছ ধরে নিয়ে যেতেন। পুকুরপাড় থেকে হাঁস নিয়ে যেতেন। গাছের কলার কাঁদি কেটে নিয়ে যেতেন। ধান মাড়াই করলে ধান দিতে হতো। কারও কিছু বলার সাহস ছিল না। কেউ কিছু বললে হাঁসুয়া নিয়ে এসে ভয় দেখাতেন। তাঁর কাছে সব সময় একটা ছোট ছোরা থাকত। টিপ দিলেই ছোরা বড় হয়ে যেত। এভাবে তিনি ভয় দেখাতেন।
ওই স্কুলশিক্ষক বলেন, ‘গ্রামের প্রায় প্রত্যেকেই নবাবকে টাকা দিয়েছে। সবচেয়ে খারাপ ব্যাপার ছিল, টাকা দিতে না চাইলে নবাব বাড়ির বয়স্ক মায়েদের গিয়ে ভয় দেখাত। বলত—আপনার ছেলেকে টাকা দিয়ে দিতে বলবেন। তা না হলে সমস্যা হবে। মায়েরা ভয়ে থাকতেন। রাস্তাঘাটে দেখা হলে ছেলেদের কাছে টাকা চাইত। দিলে ভালো, না দিলে পকেটে হাত দিয়ে যা পেত, সবই জোর করে নিয়ে নিত। বলত—এখন আমরা খাব। এটাই ছিল তার কথা।’
এ নিয়ে দলীয় স্থানীয় নেতাদের জানিয়েও প্রতিকার পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন পাড়ার বাসিন্দারা। গ্রামের আরও এক ব্যক্তি জানান, সম্প্রতি উপেন্দ্রনাথ সরকার নামের এক ব্যক্তি নবাবের এমন উৎপাতের কথা দলের লোকজনকে জানিয়েছিলেন। কয়েক দিন পর উপেন্দ্রনাথের সঙ্গে নবাবের দেখা হলে তিনি তাঁকে লক্ষ্য করে হাঁসুয়ার আঘাত করার চেষ্টা করেন। তবে উপেন্দ্রনাথ কোনো রকমে হাঁসুয়াটি ধরে ফেলেন। হাঁসুয়াটি লাগে হাতে থাকা বাজারের ব্যাগে। সম্প্রতি দামনাশ উচ্চবিদ্যালয়ে গিয়েও হাঙ্গামা করেন নবাব। সেদিন তাঁকে ধরে ধারালো অস্ত্রসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। পরে তিনি ছাড়া পেয়ে যান।
গোবিন্দাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হাবিবুর রহমান বলেন, ‘হিন্দুদের ওপর তার এত অত্যাচার শুরু হয়েছিল, তা বলার মতো না। মুসলমানদেরও যারা দুর্বল মানুষ, তারাও চাঁদা দিতে বাধ্য হচ্ছিল। গতকাল তার হাতে আহত নারায়ণ ভবানীর সঙ্গে আমি দেখা করেছি। আমাকে তিনি জানিয়েছেন যে, তাঁকে মারধর করে নবাব ১৫ হাজার টাকা কেড়ে নিয়েছে। এভাবে তো দলের নাম ভাঙিয়ে চলতে পারে না।’

‘হাফ ম্যাড’ বলছে বিএনপি
গত ৩১ জুলাই গোবিন্দপাড়া ইউনিয়ন তাঁতী দলের কর্মিসভা শেষে নতুন কমিটি গঠন করা হয়। সেদিন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ পান নবাব হোসেন। এই কমিটি নিয়ে সেদিন বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। সেদিন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নবাবেরও নাম প্রকাশ হয়।
তবে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডি এম জিয়াউর রহমান দাবি করেছেন, নবাব ‘হাফ ম্যাড’। তিনি বলেন, ‘যখন যে দলের মিছিল হয়, নবাব সে দলের মিছিলেই যোগ দেয়। সে আসলে হাফ ম্যাড। তাঁতী দলের কর্মিসভার দিন সে এসে বলে তাকে সভাপতির পদ দিতে হবে, সাধারণ সম্পাদকের পদ দিতে হবে। তখন নেতারা বলেন—ঠিক আছে, তুই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এভাবে সে এই পদ পেয়ে যায়। এখন কোনো বিতর্ক উঠলে দল কিছু শুনছে না। দায় এড়াতে সরাসরি বহিষ্কার করছে। নবাবকেও বহিষ্কার করা হয়েছে।’
জিয়াউর রহমান দাবি করেন, নবাব বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। সংখ্যালঘুদেরই যে টার্গেট করে তিনি টাকা নিতেন, এমনটি নয়। তাই হিন্দুপাড়ার বাসিন্দারা গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি দিতে চেয়েছেন। তাঁরা বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দেবেন যে—এটা দলীয় কোনো ইস্যু নয়, সংখ্যালঘু ইস্যুও নয়।
নবাব আসলেই বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী কি না—জানতে চাইলে হিন্দুপাড়ার এক বাসিন্দা বলেন, ‘জাতে মাতাল তালে ঠিক। এমন হলে সে কীভাবে বলে যে আপনারা বহুদিন ধরে আওয়ামী লীগ করেছেন, এখন আমাদের টাকা দিয়ে থাকতে হবে। এটা তো সম্ভব না। তার কিছু গুরু আছে। তারাই নবাবকে এ রকম বেপরোয়া করে তুলেছিল। এখনো আমরা ভয়ে।’
তাঁতী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নবাবের এমন কর্মকাণ্ড দলীয় সুনাম ও ভাবমূর্তি গুরুতরভাবে ক্ষুণ্ন করেছে, যা সংগঠনের গঠনতন্ত্র ও আদর্শের পরিপন্থী। তাই কেন্দ্রীয় কমিটি তাঁকে সাময়িক বহিষ্কারের জরুরি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তাঁর সঙ্গে দলীয় কোনো নেতা-কর্মীর সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পর্ক ও যোগাযোগ না রাখার জন্য এবং তাঁকে দেখামাত্রই আইনের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, নবাবের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা যাচাই এবং ঘটনা উদ্ঘাটনের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটি একটি তদন্ত টিম গঠন করেছে। এ তদন্ত টিমের রিপোর্টের ভিত্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে স্থায়ী ও চূড়ান্ত সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় হাতে টান পড়লেই হিন্দুপাড়ার বাসিন্দাদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করতেন স্থানীয় এক তাঁতী দল নেতা। ধরে নিয়ে যেতেন পুকুরের মাছ, হাঁস, গাছের কলার কাঁদি। কেউ বাধা দিতে গেলেই হাঁসুয়া নিয়ে তেড়ে যেতেন। বের করতেন ছোরা। সবশেষ চাঁদা দিতে না চাইলে একজনকে মারধরের পর হিন্দুপাড়ার বাসিন্দারা থানা ঘেরাও করেন।
এরপর পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে। আজ বুধবার তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাঁর নাম নবাব হোসেন ওরফে বাচ্চু (৩০)। তিনি উপজেলার গোবিন্দপাড়া ইউনিয়ন তাঁতী দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। আজ তাঁতী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ ও সদস্যসচিব হাজি মজিবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে নবাব হোসেনকে দলীয় পদ থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কারের কথা জানানো হয়েছে।
নবাব হোসেনের বাড়ি চাঁইসাড়া গ্রামে। এ গ্রামের একপাশে প্রায় ১০০টি হিন্দু পরিবারের বাস। এলাকাটি হিন্দুপাড়া নামে পরিচিত। বছর দু-এক আগে হিন্দুপাড়ার পাশে ৩ শতক জায়গা কিনে বাড়ি করেন নবাব। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর নবাব এ পাড়ার বাসিন্দাদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় শুরু করেছিলেন। তা না হলে পাড়ায় থাকতে দেবেন না বলে হুমকি দিতেন। বাধ্য হয়ে সবাই নবাবকে চাঁদা দিয়ে আসছিলেন।
পাড়ার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সপ্তাহখানেক আগে নারায়ণ ভবানী (৬০) নামের এক ব্যক্তির কাছে পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন নবাব। নবাব হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, গ্রামে থাকতে হলে তাঁকে টাকা দিতে হবে। তা না হলে সমস্যায় পড়তে হবে। তবে নারায়ণ ভবানী টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণ ভবানীকে দেখতে পেয়ে নবাব তাঁর পথরোধ করেন। তিনি টাকা না দেওয়ার কারণ জানতে চান। নারায়ণ টাকা দেবেন না বলতেই ক্ষুব্ধ হয়ে নবাব হোসেন তাঁর ওপর হামলা চালান। এ সময় তাঁকে মারধর করে রাস্তায় ফেলে রেখে চলে যান নবাব। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন।
ঘটনাটি জানাজানি হলে চাঁইসাড়া গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের শতাধিক নারী-পুরুষ প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে বাগমারা থানায় গিয়ে বিক্ষোভ করেন। তাঁরা নবাব হোসেনকে গ্রেপ্তার এবং নিজেদের নিরাপত্তা দেওয়ার দাবি জানান। পরে পুলিশ মামলা নেওয়া, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের আশ্বাস দিলে বেলা আড়াইটার দিকে তাঁরা থানা চত্বর ত্যাগ করেন। বিষয়টি জানতে পেরে নবাব পালিয়ে যান। পরে রাতেই নওগাঁর মান্দা উপজেলার কালীনগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে নবাবকে গ্রেপ্তার করে বাগমারা থানা-পুলিশের একটি দল। এর আগে রাতেই নবাব হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ভুক্তভোগী নারায়ণ ভবানী।
এ বিষয়ে বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা অভিযোগ পেয়েই নবাবকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছি। পাড়ার বাসিন্দারা জানিয়েছেন যে অনেক দিন ধরে নবাব চাঁদা নিচ্ছিলেন। টাকা না পেলে মাছ, হাঁস ও মুরগি ধরে নিয়ে যেতেন। তবে তাঁরা আগে আমাদের জানাননি। আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’
অতিষ্ঠ ছিল সংখ্যালঘুরা
তাঁতী দল নেতা নবাবের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন চাঁইসাড়া হিন্দুপাড়ার বাসিন্দারা। নবাব গ্রেপ্তার হলেও আতঙ্ক রয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন, আওয়ামী সরকারের পতনের পর থেকে নবাব তাঁদের ‘আওয়ামী লীগ’ ট্যাগ দিয়ে বলতেন—পাড়ায় থাকতে হলে তাঁকে টাকা দিয়ে থাকতে হবে।
গ্রামের এক স্কুলশিক্ষক বলেন, বাড়ি বাড়ি গিয়ে নবাব নিয়মিত চাঁদা নিয়ে যেতেন। কারও হয়তো পুকুরে মাছ আছে, সে মাছ ধরে নিয়ে যেতেন। পুকুরপাড় থেকে হাঁস নিয়ে যেতেন। গাছের কলার কাঁদি কেটে নিয়ে যেতেন। ধান মাড়াই করলে ধান দিতে হতো। কারও কিছু বলার সাহস ছিল না। কেউ কিছু বললে হাঁসুয়া নিয়ে এসে ভয় দেখাতেন। তাঁর কাছে সব সময় একটা ছোট ছোরা থাকত। টিপ দিলেই ছোরা বড় হয়ে যেত। এভাবে তিনি ভয় দেখাতেন।
ওই স্কুলশিক্ষক বলেন, ‘গ্রামের প্রায় প্রত্যেকেই নবাবকে টাকা দিয়েছে। সবচেয়ে খারাপ ব্যাপার ছিল, টাকা দিতে না চাইলে নবাব বাড়ির বয়স্ক মায়েদের গিয়ে ভয় দেখাত। বলত—আপনার ছেলেকে টাকা দিয়ে দিতে বলবেন। তা না হলে সমস্যা হবে। মায়েরা ভয়ে থাকতেন। রাস্তাঘাটে দেখা হলে ছেলেদের কাছে টাকা চাইত। দিলে ভালো, না দিলে পকেটে হাত দিয়ে যা পেত, সবই জোর করে নিয়ে নিত। বলত—এখন আমরা খাব। এটাই ছিল তার কথা।’
এ নিয়ে দলীয় স্থানীয় নেতাদের জানিয়েও প্রতিকার পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন পাড়ার বাসিন্দারা। গ্রামের আরও এক ব্যক্তি জানান, সম্প্রতি উপেন্দ্রনাথ সরকার নামের এক ব্যক্তি নবাবের এমন উৎপাতের কথা দলের লোকজনকে জানিয়েছিলেন। কয়েক দিন পর উপেন্দ্রনাথের সঙ্গে নবাবের দেখা হলে তিনি তাঁকে লক্ষ্য করে হাঁসুয়ার আঘাত করার চেষ্টা করেন। তবে উপেন্দ্রনাথ কোনো রকমে হাঁসুয়াটি ধরে ফেলেন। হাঁসুয়াটি লাগে হাতে থাকা বাজারের ব্যাগে। সম্প্রতি দামনাশ উচ্চবিদ্যালয়ে গিয়েও হাঙ্গামা করেন নবাব। সেদিন তাঁকে ধরে ধারালো অস্ত্রসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। পরে তিনি ছাড়া পেয়ে যান।
গোবিন্দাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হাবিবুর রহমান বলেন, ‘হিন্দুদের ওপর তার এত অত্যাচার শুরু হয়েছিল, তা বলার মতো না। মুসলমানদেরও যারা দুর্বল মানুষ, তারাও চাঁদা দিতে বাধ্য হচ্ছিল। গতকাল তার হাতে আহত নারায়ণ ভবানীর সঙ্গে আমি দেখা করেছি। আমাকে তিনি জানিয়েছেন যে, তাঁকে মারধর করে নবাব ১৫ হাজার টাকা কেড়ে নিয়েছে। এভাবে তো দলের নাম ভাঙিয়ে চলতে পারে না।’

‘হাফ ম্যাড’ বলছে বিএনপি
গত ৩১ জুলাই গোবিন্দপাড়া ইউনিয়ন তাঁতী দলের কর্মিসভা শেষে নতুন কমিটি গঠন করা হয়। সেদিন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ পান নবাব হোসেন। এই কমিটি নিয়ে সেদিন বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। সেদিন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নবাবেরও নাম প্রকাশ হয়।
তবে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডি এম জিয়াউর রহমান দাবি করেছেন, নবাব ‘হাফ ম্যাড’। তিনি বলেন, ‘যখন যে দলের মিছিল হয়, নবাব সে দলের মিছিলেই যোগ দেয়। সে আসলে হাফ ম্যাড। তাঁতী দলের কর্মিসভার দিন সে এসে বলে তাকে সভাপতির পদ দিতে হবে, সাধারণ সম্পাদকের পদ দিতে হবে। তখন নেতারা বলেন—ঠিক আছে, তুই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এভাবে সে এই পদ পেয়ে যায়। এখন কোনো বিতর্ক উঠলে দল কিছু শুনছে না। দায় এড়াতে সরাসরি বহিষ্কার করছে। নবাবকেও বহিষ্কার করা হয়েছে।’
জিয়াউর রহমান দাবি করেন, নবাব বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। সংখ্যালঘুদেরই যে টার্গেট করে তিনি টাকা নিতেন, এমনটি নয়। তাই হিন্দুপাড়ার বাসিন্দারা গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি দিতে চেয়েছেন। তাঁরা বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দেবেন যে—এটা দলীয় কোনো ইস্যু নয়, সংখ্যালঘু ইস্যুও নয়।
নবাব আসলেই বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী কি না—জানতে চাইলে হিন্দুপাড়ার এক বাসিন্দা বলেন, ‘জাতে মাতাল তালে ঠিক। এমন হলে সে কীভাবে বলে যে আপনারা বহুদিন ধরে আওয়ামী লীগ করেছেন, এখন আমাদের টাকা দিয়ে থাকতে হবে। এটা তো সম্ভব না। তার কিছু গুরু আছে। তারাই নবাবকে এ রকম বেপরোয়া করে তুলেছিল। এখনো আমরা ভয়ে।’
তাঁতী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নবাবের এমন কর্মকাণ্ড দলীয় সুনাম ও ভাবমূর্তি গুরুতরভাবে ক্ষুণ্ন করেছে, যা সংগঠনের গঠনতন্ত্র ও আদর্শের পরিপন্থী। তাই কেন্দ্রীয় কমিটি তাঁকে সাময়িক বহিষ্কারের জরুরি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তাঁর সঙ্গে দলীয় কোনো নেতা-কর্মীর সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পর্ক ও যোগাযোগ না রাখার জন্য এবং তাঁকে দেখামাত্রই আইনের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, নবাবের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা যাচাই এবং ঘটনা উদ্ঘাটনের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটি একটি তদন্ত টিম গঠন করেছে। এ তদন্ত টিমের রিপোর্টের ভিত্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে স্থায়ী ও চূড়ান্ত সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় হাতে টান পড়লেই হিন্দুপাড়ার বাসিন্দাদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করতেন স্থানীয় এক তাঁতী দল নেতা। ধরে নিয়ে যেতেন পুকুরের মাছ, হাঁস, গাছের কলার কাঁদি। কেউ বাধা দিতে গেলেই হাঁসুয়া নিয়ে তেড়ে যেতেন। বের করতেন ছোরা। সবশেষ চাঁদা দিতে না চাইলে একজনকে মারধরের পর হিন্দুপাড়ার বাসিন্দারা থানা ঘেরাও করেন।
এরপর পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে। আজ বুধবার তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাঁর নাম নবাব হোসেন ওরফে বাচ্চু (৩০)। তিনি উপজেলার গোবিন্দপাড়া ইউনিয়ন তাঁতী দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। আজ তাঁতী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ ও সদস্যসচিব হাজি মজিবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে নবাব হোসেনকে দলীয় পদ থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কারের কথা জানানো হয়েছে।
নবাব হোসেনের বাড়ি চাঁইসাড়া গ্রামে। এ গ্রামের একপাশে প্রায় ১০০টি হিন্দু পরিবারের বাস। এলাকাটি হিন্দুপাড়া নামে পরিচিত। বছর দু-এক আগে হিন্দুপাড়ার পাশে ৩ শতক জায়গা কিনে বাড়ি করেন নবাব। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর নবাব এ পাড়ার বাসিন্দাদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় শুরু করেছিলেন। তা না হলে পাড়ায় থাকতে দেবেন না বলে হুমকি দিতেন। বাধ্য হয়ে সবাই নবাবকে চাঁদা দিয়ে আসছিলেন।
পাড়ার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সপ্তাহখানেক আগে নারায়ণ ভবানী (৬০) নামের এক ব্যক্তির কাছে পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন নবাব। নবাব হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, গ্রামে থাকতে হলে তাঁকে টাকা দিতে হবে। তা না হলে সমস্যায় পড়তে হবে। তবে নারায়ণ ভবানী টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণ ভবানীকে দেখতে পেয়ে নবাব তাঁর পথরোধ করেন। তিনি টাকা না দেওয়ার কারণ জানতে চান। নারায়ণ টাকা দেবেন না বলতেই ক্ষুব্ধ হয়ে নবাব হোসেন তাঁর ওপর হামলা চালান। এ সময় তাঁকে মারধর করে রাস্তায় ফেলে রেখে চলে যান নবাব। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন।
ঘটনাটি জানাজানি হলে চাঁইসাড়া গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের শতাধিক নারী-পুরুষ প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে বাগমারা থানায় গিয়ে বিক্ষোভ করেন। তাঁরা নবাব হোসেনকে গ্রেপ্তার এবং নিজেদের নিরাপত্তা দেওয়ার দাবি জানান। পরে পুলিশ মামলা নেওয়া, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের আশ্বাস দিলে বেলা আড়াইটার দিকে তাঁরা থানা চত্বর ত্যাগ করেন। বিষয়টি জানতে পেরে নবাব পালিয়ে যান। পরে রাতেই নওগাঁর মান্দা উপজেলার কালীনগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে নবাবকে গ্রেপ্তার করে বাগমারা থানা-পুলিশের একটি দল। এর আগে রাতেই নবাব হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ভুক্তভোগী নারায়ণ ভবানী।
এ বিষয়ে বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা অভিযোগ পেয়েই নবাবকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছি। পাড়ার বাসিন্দারা জানিয়েছেন যে অনেক দিন ধরে নবাব চাঁদা নিচ্ছিলেন। টাকা না পেলে মাছ, হাঁস ও মুরগি ধরে নিয়ে যেতেন। তবে তাঁরা আগে আমাদের জানাননি। আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’
অতিষ্ঠ ছিল সংখ্যালঘুরা
তাঁতী দল নেতা নবাবের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন চাঁইসাড়া হিন্দুপাড়ার বাসিন্দারা। নবাব গ্রেপ্তার হলেও আতঙ্ক রয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন, আওয়ামী সরকারের পতনের পর থেকে নবাব তাঁদের ‘আওয়ামী লীগ’ ট্যাগ দিয়ে বলতেন—পাড়ায় থাকতে হলে তাঁকে টাকা দিয়ে থাকতে হবে।
গ্রামের এক স্কুলশিক্ষক বলেন, বাড়ি বাড়ি গিয়ে নবাব নিয়মিত চাঁদা নিয়ে যেতেন। কারও হয়তো পুকুরে মাছ আছে, সে মাছ ধরে নিয়ে যেতেন। পুকুরপাড় থেকে হাঁস নিয়ে যেতেন। গাছের কলার কাঁদি কেটে নিয়ে যেতেন। ধান মাড়াই করলে ধান দিতে হতো। কারও কিছু বলার সাহস ছিল না। কেউ কিছু বললে হাঁসুয়া নিয়ে এসে ভয় দেখাতেন। তাঁর কাছে সব সময় একটা ছোট ছোরা থাকত। টিপ দিলেই ছোরা বড় হয়ে যেত। এভাবে তিনি ভয় দেখাতেন।
ওই স্কুলশিক্ষক বলেন, ‘গ্রামের প্রায় প্রত্যেকেই নবাবকে টাকা দিয়েছে। সবচেয়ে খারাপ ব্যাপার ছিল, টাকা দিতে না চাইলে নবাব বাড়ির বয়স্ক মায়েদের গিয়ে ভয় দেখাত। বলত—আপনার ছেলেকে টাকা দিয়ে দিতে বলবেন। তা না হলে সমস্যা হবে। মায়েরা ভয়ে থাকতেন। রাস্তাঘাটে দেখা হলে ছেলেদের কাছে টাকা চাইত। দিলে ভালো, না দিলে পকেটে হাত দিয়ে যা পেত, সবই জোর করে নিয়ে নিত। বলত—এখন আমরা খাব। এটাই ছিল তার কথা।’
এ নিয়ে দলীয় স্থানীয় নেতাদের জানিয়েও প্রতিকার পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন পাড়ার বাসিন্দারা। গ্রামের আরও এক ব্যক্তি জানান, সম্প্রতি উপেন্দ্রনাথ সরকার নামের এক ব্যক্তি নবাবের এমন উৎপাতের কথা দলের লোকজনকে জানিয়েছিলেন। কয়েক দিন পর উপেন্দ্রনাথের সঙ্গে নবাবের দেখা হলে তিনি তাঁকে লক্ষ্য করে হাঁসুয়ার আঘাত করার চেষ্টা করেন। তবে উপেন্দ্রনাথ কোনো রকমে হাঁসুয়াটি ধরে ফেলেন। হাঁসুয়াটি লাগে হাতে থাকা বাজারের ব্যাগে। সম্প্রতি দামনাশ উচ্চবিদ্যালয়ে গিয়েও হাঙ্গামা করেন নবাব। সেদিন তাঁকে ধরে ধারালো অস্ত্রসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। পরে তিনি ছাড়া পেয়ে যান।
গোবিন্দাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হাবিবুর রহমান বলেন, ‘হিন্দুদের ওপর তার এত অত্যাচার শুরু হয়েছিল, তা বলার মতো না। মুসলমানদেরও যারা দুর্বল মানুষ, তারাও চাঁদা দিতে বাধ্য হচ্ছিল। গতকাল তার হাতে আহত নারায়ণ ভবানীর সঙ্গে আমি দেখা করেছি। আমাকে তিনি জানিয়েছেন যে, তাঁকে মারধর করে নবাব ১৫ হাজার টাকা কেড়ে নিয়েছে। এভাবে তো দলের নাম ভাঙিয়ে চলতে পারে না।’

‘হাফ ম্যাড’ বলছে বিএনপি
গত ৩১ জুলাই গোবিন্দপাড়া ইউনিয়ন তাঁতী দলের কর্মিসভা শেষে নতুন কমিটি গঠন করা হয়। সেদিন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ পান নবাব হোসেন। এই কমিটি নিয়ে সেদিন বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। সেদিন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নবাবেরও নাম প্রকাশ হয়।
তবে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডি এম জিয়াউর রহমান দাবি করেছেন, নবাব ‘হাফ ম্যাড’। তিনি বলেন, ‘যখন যে দলের মিছিল হয়, নবাব সে দলের মিছিলেই যোগ দেয়। সে আসলে হাফ ম্যাড। তাঁতী দলের কর্মিসভার দিন সে এসে বলে তাকে সভাপতির পদ দিতে হবে, সাধারণ সম্পাদকের পদ দিতে হবে। তখন নেতারা বলেন—ঠিক আছে, তুই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এভাবে সে এই পদ পেয়ে যায়। এখন কোনো বিতর্ক উঠলে দল কিছু শুনছে না। দায় এড়াতে সরাসরি বহিষ্কার করছে। নবাবকেও বহিষ্কার করা হয়েছে।’
জিয়াউর রহমান দাবি করেন, নবাব বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। সংখ্যালঘুদেরই যে টার্গেট করে তিনি টাকা নিতেন, এমনটি নয়। তাই হিন্দুপাড়ার বাসিন্দারা গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি দিতে চেয়েছেন। তাঁরা বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দেবেন যে—এটা দলীয় কোনো ইস্যু নয়, সংখ্যালঘু ইস্যুও নয়।
নবাব আসলেই বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী কি না—জানতে চাইলে হিন্দুপাড়ার এক বাসিন্দা বলেন, ‘জাতে মাতাল তালে ঠিক। এমন হলে সে কীভাবে বলে যে আপনারা বহুদিন ধরে আওয়ামী লীগ করেছেন, এখন আমাদের টাকা দিয়ে থাকতে হবে। এটা তো সম্ভব না। তার কিছু গুরু আছে। তারাই নবাবকে এ রকম বেপরোয়া করে তুলেছিল। এখনো আমরা ভয়ে।’
তাঁতী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নবাবের এমন কর্মকাণ্ড দলীয় সুনাম ও ভাবমূর্তি গুরুতরভাবে ক্ষুণ্ন করেছে, যা সংগঠনের গঠনতন্ত্র ও আদর্শের পরিপন্থী। তাই কেন্দ্রীয় কমিটি তাঁকে সাময়িক বহিষ্কারের জরুরি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তাঁর সঙ্গে দলীয় কোনো নেতা-কর্মীর সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পর্ক ও যোগাযোগ না রাখার জন্য এবং তাঁকে দেখামাত্রই আইনের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, নবাবের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা যাচাই এবং ঘটনা উদ্ঘাটনের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটি একটি তদন্ত টিম গঠন করেছে। এ তদন্ত টিমের রিপোর্টের ভিত্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে স্থায়ী ও চূড়ান্ত সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে পুকুরে ডুবে শাহবাব মন্ডল (আড়াই বছর) ও আবু তোহা মন্ডল (৩) নামের দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের যাদুরচর নতুন গ্রাম এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
১ ঘণ্টা আগে
ভবনের ভেতরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, হত্যাকাণ্ডের পর এক নারী স্কুলড্রেস পরে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। চার দিন আগে আয়েশা পরিচয় দিয়ে ওই বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেওয়া তরুণী (২০) এই জোড়া খুনে জড়িত বলে সন্দেহ স্বজনদের। ঘটনার পর থেকে ওই তরুণী পলাতক।
২ ঘণ্টা আগে
জীবন আছে যার, তার মৃত্যু অনিবার্য। মৃত্যুর পর মানুষের শেষ ঠিকানা কবর। মৃতদেহ গোসল করিয়ে কাফন পরানো হয়, জানাজা শেষে তাকে শায়িত করা হয় চিরনিদ্রার ঘরে। এই কবর খোঁড়ার দায়িত্বটি গ্রামের কিছু মানুষ বহু বছর ধরে স্বেচ্ছায়, বিনা পারিশ্রমিকে পালন করে আসছেন, যাঁরা সবার কাছে ‘গোরখোদক’ নামে পরিচিত। আল্লাহর
৩ ঘণ্টা আগে
গাজীপুরের শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে কারখানার ফটকের সামনে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকেরা। আন্দোলনের মুখে কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রধান ফটক তালাবদ্ধ করে সটকে পড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে শিল্প ও থানা-পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসেছেন। আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের সাইটালিয়া গ্রামে
৩ ঘণ্টা আগেকুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে পুকুরে ডুবে শাহবাব মন্ডল (আড়াই বছর) ও আবু তোহা মন্ডল (৩) নামের দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের যাদুরচর নতুন গ্রাম এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
শাহবাব মন্ডল উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের ধনারচর নতুন গ্রামের শাহজাহান মন্ডলের ছেলে এবং আবু তোহা মন্ডল একই গ্রামের আবু তালেবের ছেলে। এই দুই শিশু সম্পর্কে মামা-ভাগনে।
পরিবারের বরাত দিয়ে যাদুরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সরবেশ আলী জানান, বুধবার সকালে ওই দুই শিশু তালেব মন্ডলের বাড়িতে খেলা করছিল। এ সময় সবার অজান্তে তারা বাড়ির পাশে পুকুরের পানিতে পড়ে যায়। স্বজনেরা পুকুর থেকে দুই শিশুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। দায়িত্বরত চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।
খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক একই এলাকার বাসিন্দা ও কুড়িগ্রাম-৪ আসনের বিএনপির মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী আজিজুর রহমান ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তিনি শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
রৌমারী থানার উপপরিদর্শক শাহনেওয়াজ হোসেন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। সহকারী কমিশনার (ভূমি) ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে পুকুরে ডুবে শাহবাব মন্ডল (আড়াই বছর) ও আবু তোহা মন্ডল (৩) নামের দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের যাদুরচর নতুন গ্রাম এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
শাহবাব মন্ডল উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের ধনারচর নতুন গ্রামের শাহজাহান মন্ডলের ছেলে এবং আবু তোহা মন্ডল একই গ্রামের আবু তালেবের ছেলে। এই দুই শিশু সম্পর্কে মামা-ভাগনে।
পরিবারের বরাত দিয়ে যাদুরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সরবেশ আলী জানান, বুধবার সকালে ওই দুই শিশু তালেব মন্ডলের বাড়িতে খেলা করছিল। এ সময় সবার অজান্তে তারা বাড়ির পাশে পুকুরের পানিতে পড়ে যায়। স্বজনেরা পুকুর থেকে দুই শিশুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। দায়িত্বরত চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।
খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক একই এলাকার বাসিন্দা ও কুড়িগ্রাম-৪ আসনের বিএনপির মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী আজিজুর রহমান ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তিনি শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
রৌমারী থানার উপপরিদর্শক শাহনেওয়াজ হোসেন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। সহকারী কমিশনার (ভূমি) ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় হাতে টান পড়লেই হিন্দুপাড়ার বাসিন্দাদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করতেন স্থানীয় এক তাঁতী দল নেতা। ধরে নিয়ে যেতেন পুকুরের মাছ, হাঁস, গাছের কলার কাঁদি। কেউ বাধা দিতে গেলেই হাঁসুয়া নিয়ে তেড়ে যেতেন। বের করতেন ছোরা। সবশেষ চাঁদা দিতে না চাইলে একজনকে মারধরের পর হিন্দুপাড়ার বাসিন্দারা থানা
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ভবনের ভেতরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, হত্যাকাণ্ডের পর এক নারী স্কুলড্রেস পরে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। চার দিন আগে আয়েশা পরিচয় দিয়ে ওই বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেওয়া তরুণী (২০) এই জোড়া খুনে জড়িত বলে সন্দেহ স্বজনদের। ঘটনার পর থেকে ওই তরুণী পলাতক।
২ ঘণ্টা আগে
জীবন আছে যার, তার মৃত্যু অনিবার্য। মৃত্যুর পর মানুষের শেষ ঠিকানা কবর। মৃতদেহ গোসল করিয়ে কাফন পরানো হয়, জানাজা শেষে তাকে শায়িত করা হয় চিরনিদ্রার ঘরে। এই কবর খোঁড়ার দায়িত্বটি গ্রামের কিছু মানুষ বহু বছর ধরে স্বেচ্ছায়, বিনা পারিশ্রমিকে পালন করে আসছেন, যাঁরা সবার কাছে ‘গোরখোদক’ নামে পরিচিত। আল্লাহর
৩ ঘণ্টা আগে
গাজীপুরের শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে কারখানার ফটকের সামনে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকেরা। আন্দোলনের মুখে কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রধান ফটক তালাবদ্ধ করে সটকে পড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে শিল্প ও থানা-পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসেছেন। আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের সাইটালিয়া গ্রামে
৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যার ঘটনায় গৃহকর্মী আয়েশাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার দুপুরে ঝালকাঠি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারের বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন তেজগাঁও বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন।
মামুন বলেন, গৃহকর্মী আয়েশাকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঝালকাঠি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গত সোমবার সকালে শাহজাহান রোডের ১৪ তলা একটি আবাসিক ভবনের সপ্তম তলায় লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তাঁর মেয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে (১৫) ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।

গতকাল তাঁদের মরদেহ নাটোরে দাফন করা হয়েছে। মামলার এজাহারে বাসা থেকে মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাসহ মূল্যবান জিনিস খোয়া যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।
ভবনের ভেতরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, হত্যাকাণ্ডের পর এক নারী স্কুলড্রেস পরে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। চার দিন আগে আয়েশা পরিচয় দিয়ে ওই বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেওয়া তরুণী (২০) এই জোড়া খুনে জড়িত বলে সন্দেহ স্বজনদের। ঘটনার পর থেকে ওই তরুণী পলাতক।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যার ঘটনায় গৃহকর্মী আয়েশাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার দুপুরে ঝালকাঠি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারের বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন তেজগাঁও বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন।
মামুন বলেন, গৃহকর্মী আয়েশাকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঝালকাঠি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গত সোমবার সকালে শাহজাহান রোডের ১৪ তলা একটি আবাসিক ভবনের সপ্তম তলায় লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তাঁর মেয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে (১৫) ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।

গতকাল তাঁদের মরদেহ নাটোরে দাফন করা হয়েছে। মামলার এজাহারে বাসা থেকে মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাসহ মূল্যবান জিনিস খোয়া যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।
ভবনের ভেতরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, হত্যাকাণ্ডের পর এক নারী স্কুলড্রেস পরে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। চার দিন আগে আয়েশা পরিচয় দিয়ে ওই বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেওয়া তরুণী (২০) এই জোড়া খুনে জড়িত বলে সন্দেহ স্বজনদের। ঘটনার পর থেকে ওই তরুণী পলাতক।

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় হাতে টান পড়লেই হিন্দুপাড়ার বাসিন্দাদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করতেন স্থানীয় এক তাঁতী দল নেতা। ধরে নিয়ে যেতেন পুকুরের মাছ, হাঁস, গাছের কলার কাঁদি। কেউ বাধা দিতে গেলেই হাঁসুয়া নিয়ে তেড়ে যেতেন। বের করতেন ছোরা। সবশেষ চাঁদা দিতে না চাইলে একজনকে মারধরের পর হিন্দুপাড়ার বাসিন্দারা থানা
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
কুড়িগ্রামের রৌমারীতে পুকুরে ডুবে শাহবাব মন্ডল (আড়াই বছর) ও আবু তোহা মন্ডল (৩) নামের দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের যাদুরচর নতুন গ্রাম এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
১ ঘণ্টা আগে
জীবন আছে যার, তার মৃত্যু অনিবার্য। মৃত্যুর পর মানুষের শেষ ঠিকানা কবর। মৃতদেহ গোসল করিয়ে কাফন পরানো হয়, জানাজা শেষে তাকে শায়িত করা হয় চিরনিদ্রার ঘরে। এই কবর খোঁড়ার দায়িত্বটি গ্রামের কিছু মানুষ বহু বছর ধরে স্বেচ্ছায়, বিনা পারিশ্রমিকে পালন করে আসছেন, যাঁরা সবার কাছে ‘গোরখোদক’ নামে পরিচিত। আল্লাহর
৩ ঘণ্টা আগে
গাজীপুরের শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে কারখানার ফটকের সামনে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকেরা। আন্দোলনের মুখে কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রধান ফটক তালাবদ্ধ করে সটকে পড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে শিল্প ও থানা-পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসেছেন। আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের সাইটালিয়া গ্রামে
৩ ঘণ্টা আগেগাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি

জীবন আছে যার, তার মৃত্যু অনিবার্য। মৃত্যুর পর মানুষের শেষ ঠিকানা কবর। মৃতদেহ গোসল করিয়ে কাফন পরানো হয়, জানাজা শেষে তাকে শায়িত করা হয় চিরনিদ্রার ঘরে। এই কবর খোঁড়ার দায়িত্বটি গ্রামের কিছু মানুষ বহু বছর ধরে স্বেচ্ছায়, বিনা পারিশ্রমিকে পালন করে আসছেন, যাঁরা সবার কাছে ‘গোরখোদক’ নামে পরিচিত। আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় তাঁরা করে থাকেন এই কাজ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গোরখোদকেরা কোনো পারিশ্রমিক নেন না। গ্রামের যে কেউ মারা যাক, নিজেদের ব্যস্ততা ফেলে তাঁরা ছুটে আসেন কবর খুঁড়তে। তাঁদের এই মানবিক কাজের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে গ্রামের লোকেরা দোয়া করেন—আল্লাহ যেন তাদের সুস্থ ও ভালো রাখেন।
দেবীপুর গ্রামের বাসিন্দা গোরখোদক মজিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ৫৫ বছর ধরে কবর খুঁড়ছি। যত দিন সুস্থ থাকব, এই কাজ চালিয়ে যাব। আমাদের গ্রাম ছাড়াও অন্য গ্রাম থেকে কেউ ডাকলে সেখানেও যাই। ছোটবেলায় ওস্তাদের কাছে ডালি ধরেই শিখেছি। গরিব মানুষ, মাঠে কাজ করি; কিন্তু কেউ মারা গেলে দ্বিধা করি না—এই কাজ আমার নেশায় পরিণত হয়েছে।’
মজিরুল আরও জানান, এখন তিনি তরুণদেরও এই কাজ শেখাচ্ছেন।

গোরখোদক শাকের আলী বলেন, ‘আমরা নিঃস্বার্থভাবে কাজ করি। কখনো কোনো টাকা নিই না। যেখানেই থাকি, গ্রামের কারও মৃত্যুর সংবাদ শুনলে দ্রুত কবর খুঁড়তে চলে আসি।’
গোরখোদক ফুয়াদ হোসেন বলেন, ‘অন্য গ্রাম থেকে ডাক এলেও আমরা যাই। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই করি এই কাজ। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’
স্থানীয় বাসিন্দা শাজাহান আলী বলেন, ‘কবর খোঁড়া বড় দায়িত্বের কাজ। গ্রামের এসব মানুষ খবর পেলেই দৌড়ে আসে। আমরা তাদের জন্য দোয়া করি।’
মাওলানা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘মৃত ব্যক্তির জন্য কবর খোঁড়া নিঃসন্দেহে সওয়াবের কাজ। হাদিসে এসেছে—যাঁরা কবর খোঁড়েন, আল্লাহ তাদের জন্য জান্নাতে ঘর নির্মাণ করবেন।’

জীবন আছে যার, তার মৃত্যু অনিবার্য। মৃত্যুর পর মানুষের শেষ ঠিকানা কবর। মৃতদেহ গোসল করিয়ে কাফন পরানো হয়, জানাজা শেষে তাকে শায়িত করা হয় চিরনিদ্রার ঘরে। এই কবর খোঁড়ার দায়িত্বটি গ্রামের কিছু মানুষ বহু বছর ধরে স্বেচ্ছায়, বিনা পারিশ্রমিকে পালন করে আসছেন, যাঁরা সবার কাছে ‘গোরখোদক’ নামে পরিচিত। আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় তাঁরা করে থাকেন এই কাজ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গোরখোদকেরা কোনো পারিশ্রমিক নেন না। গ্রামের যে কেউ মারা যাক, নিজেদের ব্যস্ততা ফেলে তাঁরা ছুটে আসেন কবর খুঁড়তে। তাঁদের এই মানবিক কাজের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে গ্রামের লোকেরা দোয়া করেন—আল্লাহ যেন তাদের সুস্থ ও ভালো রাখেন।
দেবীপুর গ্রামের বাসিন্দা গোরখোদক মজিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ৫৫ বছর ধরে কবর খুঁড়ছি। যত দিন সুস্থ থাকব, এই কাজ চালিয়ে যাব। আমাদের গ্রাম ছাড়াও অন্য গ্রাম থেকে কেউ ডাকলে সেখানেও যাই। ছোটবেলায় ওস্তাদের কাছে ডালি ধরেই শিখেছি। গরিব মানুষ, মাঠে কাজ করি; কিন্তু কেউ মারা গেলে দ্বিধা করি না—এই কাজ আমার নেশায় পরিণত হয়েছে।’
মজিরুল আরও জানান, এখন তিনি তরুণদেরও এই কাজ শেখাচ্ছেন।

গোরখোদক শাকের আলী বলেন, ‘আমরা নিঃস্বার্থভাবে কাজ করি। কখনো কোনো টাকা নিই না। যেখানেই থাকি, গ্রামের কারও মৃত্যুর সংবাদ শুনলে দ্রুত কবর খুঁড়তে চলে আসি।’
গোরখোদক ফুয়াদ হোসেন বলেন, ‘অন্য গ্রাম থেকে ডাক এলেও আমরা যাই। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই করি এই কাজ। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’
স্থানীয় বাসিন্দা শাজাহান আলী বলেন, ‘কবর খোঁড়া বড় দায়িত্বের কাজ। গ্রামের এসব মানুষ খবর পেলেই দৌড়ে আসে। আমরা তাদের জন্য দোয়া করি।’
মাওলানা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘মৃত ব্যক্তির জন্য কবর খোঁড়া নিঃসন্দেহে সওয়াবের কাজ। হাদিসে এসেছে—যাঁরা কবর খোঁড়েন, আল্লাহ তাদের জন্য জান্নাতে ঘর নির্মাণ করবেন।’

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় হাতে টান পড়লেই হিন্দুপাড়ার বাসিন্দাদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করতেন স্থানীয় এক তাঁতী দল নেতা। ধরে নিয়ে যেতেন পুকুরের মাছ, হাঁস, গাছের কলার কাঁদি। কেউ বাধা দিতে গেলেই হাঁসুয়া নিয়ে তেড়ে যেতেন। বের করতেন ছোরা। সবশেষ চাঁদা দিতে না চাইলে একজনকে মারধরের পর হিন্দুপাড়ার বাসিন্দারা থানা
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
কুড়িগ্রামের রৌমারীতে পুকুরে ডুবে শাহবাব মন্ডল (আড়াই বছর) ও আবু তোহা মন্ডল (৩) নামের দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের যাদুরচর নতুন গ্রাম এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
১ ঘণ্টা আগে
ভবনের ভেতরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, হত্যাকাণ্ডের পর এক নারী স্কুলড্রেস পরে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। চার দিন আগে আয়েশা পরিচয় দিয়ে ওই বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেওয়া তরুণী (২০) এই জোড়া খুনে জড়িত বলে সন্দেহ স্বজনদের। ঘটনার পর থেকে ওই তরুণী পলাতক।
২ ঘণ্টা আগে
গাজীপুরের শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে কারখানার ফটকের সামনে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকেরা। আন্দোলনের মুখে কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রধান ফটক তালাবদ্ধ করে সটকে পড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে শিল্প ও থানা-পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসেছেন। আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের সাইটালিয়া গ্রামে
৩ ঘণ্টা আগেশ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

গাজীপুরের শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে কারখানার ফটকের সামনে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকেরা। আন্দোলনের মুখে কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রধান ফটক তালাবদ্ধ করে সটকে পড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে শিল্প ও থানা-পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসেছেন। আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের সাইটালিয়া গ্রামে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানায় এই ঘটনা ঘটে।
কারখানার নারী শ্রমিক মিনারা আক্তার বলেন, ‘অক্টোবর ও নভেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করে নাই। এক মাসের বেতন না পেলে আমাদের চলা খুবই কঠিন হয়। আমাদের নাওয়া-খাওয়া বন্ধ হয়। আর সেখানে কারখানা কর্তৃপক্ষ দুই মাসের বেতনভাতা বকেয়া রেখেছে। আজ সকালে শ্রমিকেরা জড়ো হলে তারা পালিয়ে যায়।’
মিন্টু নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘এই কারখানায় আমরা তিন বছর ধরে চাকরি করছি। আমাদের বেতনের বাইরে কোনো সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে না। তবু পেটের দায়ে চাকরি করি। দুই মাসের বেতন বকেয়া। আমাদের তো পেট আছে, সন্তান-সংসার আছে। এক মাস দোকান বাকি পরিশোধ করতে না পারলে পরের মাসে আর দোকানি বাকি দেয় না। আমরা কী অবস্থায় আছি, একবার ভাবুন। বেতন পরিশোধ না করে তারা পালিয়ে গেছে।’

মেহেদী হাসান বলেন, ‘এত দিন ধরে ঋণ করে বলে-কয়ে দোকান থেকে বাকি নিয়ে চলছি। আর পারছি না। এখন দোকান বাকি দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। অক্টোবর মাসের বকেয়া বেতন নিয়ে কমপক্ষে ১০টি তারিখ দিছে। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ বেতন পরিশোধ করেনি। শেষে আজ বেতন পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু তারা কারখানা ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে গেছে।’
কারখানার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. বুলবুল হাসান বলেন, ‘ব্যাংকের সমস্যার কারণে বেতন-ভাতা পরিশোধ করা যাচ্ছে না। আশা করি, আজকের মধ্যে নভেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করতে পারব।’ বিনা নোটিশে কারখানার ফটক কেন তালাবদ্ধ? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমি বলতে পারব না।’
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাছির আহমদ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

গাজীপুরের শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে কারখানার ফটকের সামনে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকেরা। আন্দোলনের মুখে কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রধান ফটক তালাবদ্ধ করে সটকে পড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে শিল্প ও থানা-পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসেছেন। আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের সাইটালিয়া গ্রামে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানায় এই ঘটনা ঘটে।
কারখানার নারী শ্রমিক মিনারা আক্তার বলেন, ‘অক্টোবর ও নভেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করে নাই। এক মাসের বেতন না পেলে আমাদের চলা খুবই কঠিন হয়। আমাদের নাওয়া-খাওয়া বন্ধ হয়। আর সেখানে কারখানা কর্তৃপক্ষ দুই মাসের বেতনভাতা বকেয়া রেখেছে। আজ সকালে শ্রমিকেরা জড়ো হলে তারা পালিয়ে যায়।’
মিন্টু নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘এই কারখানায় আমরা তিন বছর ধরে চাকরি করছি। আমাদের বেতনের বাইরে কোনো সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে না। তবু পেটের দায়ে চাকরি করি। দুই মাসের বেতন বকেয়া। আমাদের তো পেট আছে, সন্তান-সংসার আছে। এক মাস দোকান বাকি পরিশোধ করতে না পারলে পরের মাসে আর দোকানি বাকি দেয় না। আমরা কী অবস্থায় আছি, একবার ভাবুন। বেতন পরিশোধ না করে তারা পালিয়ে গেছে।’

মেহেদী হাসান বলেন, ‘এত দিন ধরে ঋণ করে বলে-কয়ে দোকান থেকে বাকি নিয়ে চলছি। আর পারছি না। এখন দোকান বাকি দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। অক্টোবর মাসের বকেয়া বেতন নিয়ে কমপক্ষে ১০টি তারিখ দিছে। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ বেতন পরিশোধ করেনি। শেষে আজ বেতন পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু তারা কারখানা ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে গেছে।’
কারখানার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. বুলবুল হাসান বলেন, ‘ব্যাংকের সমস্যার কারণে বেতন-ভাতা পরিশোধ করা যাচ্ছে না। আশা করি, আজকের মধ্যে নভেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করতে পারব।’ বিনা নোটিশে কারখানার ফটক কেন তালাবদ্ধ? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমি বলতে পারব না।’
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাছির আহমদ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় হাতে টান পড়লেই হিন্দুপাড়ার বাসিন্দাদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করতেন স্থানীয় এক তাঁতী দল নেতা। ধরে নিয়ে যেতেন পুকুরের মাছ, হাঁস, গাছের কলার কাঁদি। কেউ বাধা দিতে গেলেই হাঁসুয়া নিয়ে তেড়ে যেতেন। বের করতেন ছোরা। সবশেষ চাঁদা দিতে না চাইলে একজনকে মারধরের পর হিন্দুপাড়ার বাসিন্দারা থানা
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
কুড়িগ্রামের রৌমারীতে পুকুরে ডুবে শাহবাব মন্ডল (আড়াই বছর) ও আবু তোহা মন্ডল (৩) নামের দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের যাদুরচর নতুন গ্রাম এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
১ ঘণ্টা আগে
ভবনের ভেতরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, হত্যাকাণ্ডের পর এক নারী স্কুলড্রেস পরে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। চার দিন আগে আয়েশা পরিচয় দিয়ে ওই বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেওয়া তরুণী (২০) এই জোড়া খুনে জড়িত বলে সন্দেহ স্বজনদের। ঘটনার পর থেকে ওই তরুণী পলাতক।
২ ঘণ্টা আগে
জীবন আছে যার, তার মৃত্যু অনিবার্য। মৃত্যুর পর মানুষের শেষ ঠিকানা কবর। মৃতদেহ গোসল করিয়ে কাফন পরানো হয়, জানাজা শেষে তাকে শায়িত করা হয় চিরনিদ্রার ঘরে। এই কবর খোঁড়ার দায়িত্বটি গ্রামের কিছু মানুষ বহু বছর ধরে স্বেচ্ছায়, বিনা পারিশ্রমিকে পালন করে আসছেন, যাঁরা সবার কাছে ‘গোরখোদক’ নামে পরিচিত। আল্লাহর
৩ ঘণ্টা আগে