Ajker Patrika

বরেন্দ্র অঞ্চলের খাসপুকুর ইজারা না দেওয়ার দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
রাজশাহীতে বেসরকারি সংস্থা ‘পরিবর্তন’ আয়োজিত সংলাপ। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজশাহীতে বেসরকারি সংস্থা ‘পরিবর্তন’ আয়োজিত সংলাপ। ছবি: আজকের পত্রিকা

বরেন্দ্র এলাকার খাসপুকুর মাছ চাষের জন্য ইজারা না দেওয়ার দাবি উঠেছে রাজশাহীর এক সংলাপে। এসব পুকুর ইজারা নিয়ে মাছ চাষের কারণে এলাকার লোকজন তা ব্যবহার করতে পারছেন না। ফলে খরাপ্রবণ বরেন্দ্র অঞ্চলে এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে বলে দাবি করেছেন বক্তারা। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।

বিশ্ব খরা ও মরুকরণ দিবস উপলক্ষে বরেন্দ্র এলাকার কৃষি ও পানি ব্যবস্থাপনার চ্যালেঞ্জ নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার নগরীর একটি হোটেলে এই সংলাপের আয়োজন করে খাদ্যনিরাপত্তা নেটওয়ার্ক-খানি ও বেসরকারি সংস্থা ‘পরিবর্তন’।

‘ভূমি পুনরুদ্ধার’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আয়োজিত সংলাপে প্রধান অতিথি ছিলেন বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) নির্বাহী পরিচালক তরিকুল আলম। মূল আলোচনা উপস্থাপন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক চৌধুরী সারওয়ার জাহান।

সংলাপে জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সম্পাদক বিমল চন্দ্র রাজোয়াড় বলেন, ‘একসময় বরেন্দ্র অঞ্চলের খাসপুকুরগুলো থেকে আদিবাসী জনগোষ্ঠী ঝিনুক, শামুক, কাঁকড়া ও কুচিয়া সংগ্রহ করত। তারা এসব খেয়ে পুষ্টির চাহিদা মেটাত। কিন্তু এখন এগুলো ইজারা দিয়ে দেওয়া হয়। এসব পুকুর আর আদিবাসী জনগোষ্ঠী ব্যবহার করতে পারে না। আমরা চাই, এই পুকুরগুলো এলাকার সব মানুষের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত রাখা হোক।’

কৃষক মীর আনাম বলেন, ‘সব পুকুর ইজারা দেওয়া হচ্ছে। সেগুলোতে মাছ চাষ করার জন্য খাবার হিসেবে মুরগির বিষ্ঠা ও গোবর দেওয়া হচ্ছে। এই পানি এতই দূষিত যে, গোসল তো দূরের কথা, হাতও ধোয়া যায় না। পানিতে হাত দিলেই চুলকানি হয়। বরেন্দ্র অঞ্চলে যখন তীব্র খরা দেখা দিচ্ছে, তখন এসব পুকুর থেকেও কোনো উপকার হচ্ছে না। চাষাবাদের জন্য ভূগর্ভস্থ পানিই তুলতে হচ্ছে। এই পানির পুনর্ভরণ না হওয়ায় সংকট আরও বাড়ছে। তাই এসব পুকুর ইজারা বন্ধ করে দিতে হবে। পানি ব্যবহারের সুযোগ দিতে হবে।’

বারসিকের গবেষক শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘পুকুর ইজারার কারণে আদিবাসী সমাজের খাদ্যের ওপর প্রভাব পড়ছে। তারা আর সেখান থেকে শামুক, ঝিনুক কিংবা কাঁকড়া সংগ্রহ করতে পারে না। একটা জনগোষ্ঠীর ওপর এমন প্রভাব পড়বে, সেটা তো হতে পারে না। পুকুরগুলো উন্মুক্ত থাকলে সেখান থেকে চাষাবাদে পানি পাওয়া যাবে। এটা করা দরকার।’

বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) নির্বাহী পরিচালক তরিকুল আলম বলেন, ‘খরার জন্য বিএমডিএকে নিয়ে অনেক কথা বলা হয়। বিএমডিএ সেচের জন্য ভূগর্ভস্থ পানি তুলে বলে এই অঞ্চলে পানিসংকট বলেও দাবি করা হয়। যদিও এটা নিয়ে বিতর্ক আছে। তবে আমরা এখন ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহার বাড়াতে জোর দিয়েছি। আমাদের জলাধার বাড়াতে হবে।’

মহিলা পরিষদের রাজশাহী শাখার সভাপতি কল্পনা রায়ের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন রুলফাওর নির্বাহী পরিচালক আফজাল হোসেন, রাজশাহী জেলা কৃষক দলের সভাপতি শফিকুল আলম সমাপ্ত ও পরিবর্তনের পরিচালক রাশেদ রিপন।

এ ছাড়া মুক্ত আলোচনায় জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মুস্তাফিজুর রহমান খান, পার্টনার পরিচালক আলিমা খাতুন, আসাউসের নির্বাহী পরিচালক রাজকুমার সাও এবং দিনের আলো হিজড়া সংঘের সভাপতি মোহনা বক্তব্য দেন। এতে স্থানীয় কৃষক, আদিবাসী নেতাসহ আরও অনেকে অংশগ্রহণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শাহজালালে তৃতীয় টার্মিনাল চালুতে বাধা, রাজস্ব ভাগাভাগি নিয়ে টানাপোড়েন

বৈপ্লবিক পরিবর্তন করার সুযোগ হাতছাড়া হয়ে গেছে

ব্যাংকের চাকরি যায় জাল সনদে, একই নথি দিয়ে বাগালেন স্কুল সভাপতির পদ

ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ নিয়ে হাবুডুবু খাচ্ছে এবি ব্যাংক

রাশিয়া খুবই বড় শক্তি, চুক্তি ছাড়া ইউক্রেনের কোনো গতি নেই: ট্রাম্প

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত