Ajker Patrika

দিনে ‘ঘুমিয়ে’ রাতে কাজ করা সেই প্রকৌশলীকে প্রত্যাহার দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের রাজশাহীর নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন অর রশিদকে প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের রাজশাহীর নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন অর রশিদকে প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা

দিনে ‘ঘুমিয়ে’ রাতে কাজ করা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের রাজশাহীর নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন অর রশিদকে প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগী ঠিকাদারেরা। তাঁকে ‘দুর্নীতিবাজ’ ও ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর’ উল্লেখ করে ঠিকাদারেরা তাঁর শাস্তিও দাবি করেছেন।

রাজশাহী ঠিকাদার সমিতির ব্যানারে আজ সোমবার বেলা ১১টা থেকে ঘণ্টাব্যাপী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয়। মানববন্ধন শেষে তাঁকে প্রত্যাহারের দাবিতে বিভাগীয় কমিশনার বরাবর স্মারকলিপি দেন ভুক্তভোগী ও ক্ষতিগ্রস্ত ঠিকাদারেরা।

এর আগে মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর। তিনি জনস্বাস্থ্য কার্যালয়কে জিম্মি করে রেখেছেন। গোপনে দরপত্রের রেট ফাঁস করে এখনো আওয়ামী লীগের ঠিকাদারদের কাজ দিচ্ছেন তিনি। ঠিকাদারদের বিল আটকে অনৈতিক সুবিধা আদায় করেন। হারুন অফিস সময়কে তোয়াক্কা করেন না। রাতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তাঁর বাসভবনে ডেকে নেন। সেখানে গভীর রাত অবধি কাজ করতে বাধ্য করেন। আর দিনে তিনি ঘুমান। কখনো অফিসে এলে পোষা কুকুর নিয়ে ঢোকেন। সেই কুকুরের ভয়ে তটস্থ থাকেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

বক্তারা বলেন, হারুন অর রশিদ ফ্যাসিস্ট সরকারের সময়ে নিজের লোকজনকে কয়েক শ কোটি টাকার কাজ দিয়ে অঢেল অর্থ হাতিয়েছেন। চলতি বছরের মার্চে গোপন রেট জানিয়ে দিয়ে গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের নেতা কামাল হোসেনের প্রতিষ্ঠান মেসার্স মনির ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেডকে ১১ কোটি টাকার ১০টি গ্রুপের ১০টি কাজই দিয়েছেন তিনি। এ ক্ষেত্রে লঙ্ঘন করা হয়েছে সরকারি নির্দেশনা। কামালের নেওয়া গোদাগাড়ী উপজেলায় ২০২২ সালের ১৮ কোটি টাকার প্ল্যানটেশনের কাজ এখনো শেষ হয়নি। এ ছাড়া জেলার নয়টি উপজেলায় ৪০ শতাংশ কাজ অসমাপ্ত। এর ফলে বাড়ছে জনভোগান্তি। কামালের অন্যতম ব্যবসায়িক পার্টনার নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন।

ভুক্তভোগী ঠিকাদারেরা আরও বলেন, ‘অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদ করলে প্রকৌশলী হারুন কাজ বন্ধ করে দেন। এমনকি প্রভাবশালী মহলের নামে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। আমরা নিয়ম মেনে কাজ করতে চাই। কোনো অনৈতিক সুবিধা চাই না। কিন্তু অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে সঠিকভাবে কাজের সুযোগ পাচ্ছি না। তদন্ত করলে সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে।’

এদিকে বিভাগীয় কমিশনারের কাছে দেওয়া স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, হারুন অর রশিদ দীর্ঘ সময় বিল আটকিয়ে ঠিকাদারদের হয়রানি করেন। এরপর তিনি ঠিকাদারদের চেক দেওয়ার সময় বিলের এক শতাংশ উৎকোচ দিতে বাধ্য করেন। এ কারণে তিনি ইতিমধ্যে ‘মিস্টার ওয়ান পারসেন্ট’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। হারুন জামানতের টাকা ফেরত দিতে নানা কৌশলের আশ্রয় নেন। এরপর টাকা ছাড়ের জন্য মোটা অঙ্কের অনৈতিক সুবিধা নেন।

আন্দোলনকারীরা বিভাগীয় কমিশনারের কাছে প্রকৌশলী হারুনকে দ্রুত রাজশাহী থেকে বদলি ও তাঁর দুর্নীতির সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। মানববন্ধন ও স্মারকলিপি দেওয়ার সময় ঠিকাদার তারেক, ফিরোজ, হিমেল, শাহীন, সজিব, রবিন, শাকিল, ফরহাদসহ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অন্য ঠিকাদারেরা উপস্থিত ছিলেন।

অভিযোগের ব্যাপারে নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ বলেন, ‘আমি আজকেও অফিসে আছি। নিয়মিত অফিস করি। এই অভিযোগ বানোয়াট। আমি আওয়ামী লীগের দোসর না। দলমত-নির্বিশেষে বিধি মেনেই টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। আমি ঠিকাদারদের তিন কোটি টাকা ওভার পেমেন্ট (বেশি) নেওয়ার বিষয়টি ধরে ফেলার কারণে তাঁরা সুপরিকল্পিতভাবে আমার বিরুদ্ধে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘জুলাই যোদ্ধাকে’ জুলাই ফাউন্ডেশনে পাইপ দিয়ে মারধর, ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

ভারতের হারে বাংলাদেশের বিদায়, হামজার হতাশা

এবার দলগুলো পেল চূড়ান্ত জুলাই সনদ ও স্বাক্ষরের আমন্ত্রণপত্র

সেনা কর্মকর্তাদের জন্য ‘সাবজেল’ ঘোষণার যৌক্তিকতা কী, টিআইবির প্রশ্ন

ভাবিকে হত্যার ১০ বছর পরে ভাতিজিকে পিটিয়ে হত্যা করলেন হাবিল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত