Ajker Patrika

কাটা গলা নিয়ে রিকশা চালিয়ে ৩ কিলোমিটার, হাসপাতালে মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ১৬: ৪৩
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রিকশাচালক ফজলুর রহমানের (৩৫) গলা কেটে দেওয়া হয়েছিল। তারপরও রিকশা চালিয়ে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে তিনি বাজারে আসেন। এরপর হাসপাতালে পাঠানো হলে তিনি মারা যান। গতকাল শনিবার রাতে রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলায় এই ঘটনা ঘটে।

ফজলুর রহমানের বাড়ি তানোর উপজেলার অমৃতপুর গ্রামে। তাঁর বাবার নাম ইবরাহিম আলী। ফজলুর রহমানের ব্যাটারিচালিত রিকশাটি ছিনিয়ে নিতে ছুরি দিয়ে তাঁর গলা কেটে দেওয়া হয় বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। তবে মৃত্যুর আগে তিনি কিছু বলে যেতে পারেননি।

মোহনপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোদাচ্ছের হোসেন খান জানান, শনিবার সন্ধ্যার পর শিয়ালকোলা এলাকায় রিকশাচালক ফজলুর রহমানের গলায় ছুরিকাঘাত করা হয়। এরপর তিনি নিজেই রিকশা চালিয়ে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরের কেশরহাট বাজারে আসেন। সেখান থেকে স্থানীয় লোকজন তাঁকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠান। এরপর রাত ১০টার দিকে রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

এসআই মোদাচ্ছের হোসেন খান জানান, রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে মরদেহের ময়নাতদন্ত হচ্ছে। এরপর মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। স্বজনেরা থানায় আসার পর এ ব্যাপারে হত্যা মামলা দায়ের করা হবে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

১০-১২ নভেম্বর বেলুন উড়িয়ে প্রচারের পরিকল্পনা আ.লীগের, ২৫ জনকে গ্রেপ্তারের পর জানাল ডিএমপি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
১০-১২ নভেম্বর বেলুন উড়িয়ে প্রচারের পরিকল্পনা আ.লীগের, ২৫ জনকে গ্রেপ্তারের পর জানাল ডিএমপি

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পৃথক স্থানে অভিযান চালিয়ে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের ২৫ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানিয়েছেন, ১০ থেকে ১২ নভেম্বর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনাসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের স্লোগানযুক্ত এক লাখ গ্যাস বেলুন ওড়ানোর পরিকল্পনা করেছিলেন তাঁরা।

আজ রোববার (৯ নভেম্বর) বিকেলে ডিএমপির জনসংযোগ ও গণমাধ্যম শাখার উপপুলিশ কমিশনার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।

বিজ্ঞপ্তিতে গোয়েন্দা সূত্রের বরাতে বলা হয়েছে, কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ঢাকায় ঝটিকা মিছিলের মাধ্যমে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি ও আইনশৃঙ্খলা বিঘ্ন করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন। ১০ থেকে ১২ নভেম্বর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনাসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের স্লোগানযুক্ত এক লাখ গ্যাস বেলুন ওড়ানোর পরিকল্পনা করেছিলেন তাঁরা।

ডিবির নয়টি বিভাগের সমন্বয়ে এই অভিযান পরিচালিত হয়। এর মধ্যে ডিবি মিরপুর বিভাগে তিনজন, রমনা বিভাগে তিনজন, সাইবার বিভাগে দুজন, মতিঝিল বিভাগে চারজন, ওয়ারী বিভাগে পাঁচজন, উত্তরা বিভাগে দুজন, তেজগাঁও বিভাগে দুজন, লালবাগ বিভাগে তিনজন ও গুলশান বিভাগে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন নওপাড়া ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সভাপতি রূপচান ব্যাপারী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক আবরার খান তাহমিদ, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রায়হান খান আজাদ, শেরেবাংলা নগর থানা আওয়ামী লীগের সাবেক কোষাধ্যক্ষ এ বি এম নুরুল হক ওরফে ছোটন চৌধুরী, শাহবাগ থানা আওয়ামী লীগের সাবেক শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য গিয়াস উদ্দিন খোকন, মিরপুর থানা আওয়ামী লীগের সহসাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান ভূঁইয়া ও ভাষানটেক থানা যুবলীগের সদস্য সিরাজুল ইসলাম।

আরও গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মোহাম্মদপুর শ্রমিক লীগের সাবেক সহসভাপতি জসিম ওরফে বিল্লাল, গেন্ডারিয়া মৎস্যজীবী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুব রহমান, শ্যামপুর যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আবুল কালাম, আশুলিয়া ছাত্রলীগের সহসভাপতি শাহজালাল, রায়েরবাগ যুবলীগের সেক্রেটারি দেলোয়ার হোসেন পলাশ, শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার আওয়ামী লীগ নেতা ইউনুস সরদার, পল্টন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আকবর হোসেন, একই থানার সাবেক সভাপতি আবু সাঈদ, নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সামছুদ্দিন আহমেদ সেলিম, হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলা কৃষক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রায়হান উদ্দিন রেহান, আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটির সহসম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন প্রিন্স।

অন্যরা হলেন সিলেট মহানগর যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক মরিয়ম পারভীন, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসির সরকার ওরফে গলাকাটা নাছির, নেত্রকোনার পূর্বধলা শ্রমিক লীগের সদস্য আলী হোসেন, কুমিল্লার নিকলি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মানিক খন্দকার এবং বরগুনার তালতলী যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান কামাল।

রাজধানীর বিভিন্ন থানায় পৃথক অভিযান চালিয়ে এসব নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। নাশকতা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি রোধে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে ডিবি। তাঁদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হত্যার হুমকি: বিএনপি নেতা খোকনের বিরুদ্ধে মহিলা দল নেত্রীর মামলা

­যশোর প্রতিনিধি
দেলোয়ার হোসেন খোকন। ছবি: সংগৃহীত
দেলোয়ার হোসেন খোকন। ছবি: সংগৃহীত

হত্যার হুমকির অভিযোগে যশোরে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আজ রোববার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সদর আমলি) আদালতে মামলাটি দায়ের করেন জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী রাশিদা রহমান। আদালত বাদীর অভিযোগ আমলে নিয়ে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ওসিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

আদালতে বাদীর আইনজীবী মোহাম্মদ আবদুল্লাহ এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

বাদীর অভিযোগ, ৮ নভেম্বর দুপুরে যশোর রেড ক্রিসেন্ট অফিসের দ্বিতীয় তলায় সভা শুরুর আগে আলাপ-আলোচনার একপর্যায়ে উপস্থিত অ্যাডভোকেট আবু ইসহ্‌ক, ব্যবসায়ী গোলাম রেজা দুলু, প্রেসক্লাবের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন ব্যক্তিবর্গের সামনে বাদীকে থাপ্পড় মারার জন্য তেড়ে আসেন আসামি।

এ সময় তিনি বাদীকে বলেন, ‘বেয়াদব, নষ্টা মহিলা; মেরে তোর আর তোর ছেলের পাছার চামড়া তুলে নেব এবং ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তোকে আর তোর ছেলেকে পুলিশ দিয়ে তুলে আনব।’

তখন উপস্থিত ব্যক্তিবর্গ আসামির হাত থেকে বাদীকে কোনোমতে রক্ষা করেন। বাদী এবং আসামির হট্টগোলের বিষয়ে জ্ঞাত হয়ে ২ ও ৩ নম্বর সাক্ষী দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান।

আসামি বাদীকে লক্ষ্য করে বলেন, ‘অত্র বিষয় লইয়া কোনো মামলা-মোকদ্দমা করিলে তোকে প্রাণে খুন করিয়া ফেলিব।’ বাদী লজ্জায় দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পরে বাদী কোতোয়ালি থানায় মামলা করতে গেলে আদালতে মামলার করার পরামর্শ দেন কর্মকর্তারা।

এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মামলা হয়েছে শুনেছি। অভিযোগে যা বলা হয়েছে; তেমন কিছু ঘটেনি। তার অভিযোগ মিথ্যা।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চাঁদাবাজির অভিযোগে ইউপিডিএফের সদস্যকে গণপিটুনি, পুলিশে সোপর্দ

রামগড় (খাগড়াছড়ি), প্রতিনিধি
অস্ত্রসহ আটক দুর্গা চাকমা। ছবি: আজকের পত্রিকা
অস্ত্রসহ আটক দুর্গা চাকমা। ছবি: আজকের পত্রিকা

খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার খাগড়াবিল এলাকায় অস্ত্রসহ চাঁদাবাজির সময় ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) এক সদস্যকে স্থানীয় জনতা হাতেনাতে আটক করেছে। পরে তাঁকে গণপিটুনির পর গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে। খবর পেয়ে সিন্দুকছড়ি জোনের সেনাসদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে আহত অবস্থায় ওই যুবককে উদ্ধার করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

আটক ব্যক্তির নাম দুর্গা চাকমা (২৫)। পুলিশ জানিয়েছে, তিনি স্থানীয় ইউপিডিএফ নেতা জিয়ন চাকমার অধীনে অনেক দিন ধরে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ এবং চাঁদাবাজি করছেন।

স্থানীয় কয়েকজন জানান, আজ রোববার দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটের দিকে খাগড়াবিল বাজারে দুর্গা চাকমা অস্ত্র নিয়ে চাঁদাবাজি করার চেষ্টা করছিলেন। এ সময় কয়েকজন লোক তাঁকে ধাওয়া করে ধরে ফেলেন। পরে উত্তেজিত জনতা তাঁকে গণপিটুনি দিয়ে একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে। তাঁরা আরও জানান, দুর্গা চাকমা অনেক দিন ধরে বাজার এলাকায় চাঁদাবাজি ও নানা অপরাধমূলক কাজ চালাচ্ছেন।

রামগড় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মঈন উদ্দিন জানান, দুর্গা চাকমার কাছ থেকে একটি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্র ও চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা প্রক্রিয়াধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গণভোট, সনদ—এইসব আমরা বুঝি না কিছু: মির্জা ফখরুল

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
ঠাকুরগাঁওয়ে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন বিএনপি মহাসচিব। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঠাকুরগাঁওয়ে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন বিএনপি মহাসচিব। ছবি: আজকের পত্রিকা

গণভোট, সনদ—এইসব আমরা বুঝি না; কিছু উঁচু তলার শিক্ষিত লোক এগুলো আমাদের ঘাড়ের ওপর চাপাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ রোববার ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার দৌলতপুর বালিকা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ মন্তব্য করেন। অসুস্থতা বোধ করায় মির্জা ফখরুল ইসলাম উপস্থিত নেতা-কর্মীদের অনুমতি নিয়ে চেয়ারে বসে বক্তব্য দেন।

চলমান রাজনৈতিক টানাহেঁচড়ার কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বর্তমানে রাজনৈতিক একটা টানাহেঁচড়া চলছে। একটা দল বলছে, গণভোট হতে হবে...গণভোট, সনদ—এইসব কি আমরা বুঝি?’

জনগণের কাছ থেকে নেতিবাচক উত্তর আসার পর বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বুঝি না কিছু। এইসব বোঝা শিক্ষিত উঁচু তলা থেকে কিছু লোক আসছে, আইসা আমাদের ঘাড়ের ওপর চাপাচ্ছে।’ তবে তিনি জানান, যতগুলো পরিবর্তন বা সংস্কার দরকার, সেগুলোতে বিএনপি রাজি আছে।

বর্তমান সরকার প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যেই সরকারটা এখন আছে, তাকে বলে অন্তর্বর্তী সরকার। অর্থাৎ ওই সরকার ভোট করে আসে নাই। কিন্তু আমরা সবাই মিলে তাকে দায়িত্ব দিয়েছি যে, হাসিনা পালানোর পরে সে দেশ চালাবে এবং একটি নির্বাচন করবে।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘দুঃখের কথা হচ্ছে, এই সরকারের পেছনে মানুষ নাই। মানুষের যে কষ্ট, সেটা সরকার বোঝে না। কৃষকের কষ্ট কোথায়, সমস্যা কোথায়, এই সরকার বোঝে না।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘২০২৪ সালের ৫ আগস্টে ছাত্রদের ওপর গুলি চালিয়ে হত্যাকাণ্ড এবং ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় হত্যাকাণ্ড—উভয়ই গণহত্যা। এই দুইটার মধ্যে পার্থক্য একটাই—তখন পশ্চিম পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী আমাদের এখানকার কিছু লোকজনকে নিয়ে গণহত্যা করেছিল আর এইবার শেখ হাসিনা তার প্রশাসনকে দিয়ে আমাদের ছেলেগুলোকে মারছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ৫ আগস্টে হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর একেবারে অসহায় অবস্থায় রেখে গেছেন তাঁর দলের লোকজনকে। এতে বোঝা যায়, আগের যে প্রধানমন্ত্রী হাসিনা ছিলেন, তাঁর কর্মী ও জনগণের প্রতি কোনো দরদ নেই। দরদ থাকলে তিনি পালিয়ে যেতেন না।

মির্জা ফখরুল দেশের মাটি ও জনগণের সঙ্গে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমরা ওই রাজনীতি করি না। আমাদের এই মাটিতে জন্ম, এই মাটিতে আমরা থাকি, এই মাটিতে সুখ-দুঃখের সঙ্গে থাকি এবং মারা গেলে এখানেই মারা যাব। আমরা গুলি খেয়ে মরলে এখানেই মরব। দেশের মাটি ছেড়ে আমরা কখনো যাব না।’ নিজের রাজনৈতিক কষ্টের কথা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি ১১ বার জেলে গেছেন এবং তাঁকে পাঁচ দিন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের সেলে আটক করে রাখা হয়েছিল।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ছয় বছর বিনা দোষে কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছে। আমাদের ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে।’

আসন্ন নির্বাচন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল উপস্থিত জনগণের কাছে জানতে চান, ‘এই নির্বাচনে আপনারা ভোট দেবেন তো? এবার ভোটের ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে তো? সবাই ভোট দিতে পারবেন তো?’ এ সময় নেতা-কর্মীরা ‘ইনশা আল্লাহ’ বলে উত্তর দেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এবার মার্কা কয়টা?...মার্কা একটা দেখতেছেন ধানের শীষ, নৌকাটা এবার দেখা যাচ্ছে না। আরেকটা দেখা যায় দাঁড়িপাল্লা।’

কৃষকের দুর্দশার কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ধানের দাম নেই। আলুতে এবার মার খেয়েছেন কৃষক, আলু হিমাগার থেকে আনছেন না তাঁরা, তার মানে, কৃষিকাজ করে লাভবান হতে পারছেন না।

বিএনপি সরকারে এলে কৃষকদের জন্য ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা যদি সরকারে আসি, কৃষক যেন তার ধান-আলু যেটাই ফলাবে, তার যেন ন্যায্য দাম পায়, সেই ব্যবস্থাটা আমরা করতে চাই।’

বিএনপি মহাসচিব বঞ্চিত মা-বোনদের জন্য ‘ফ্যামিলি কার্ড’-এর প্রতিশ্রুতি দেন। এই কার্ডের মাধ্যমে মায়েরা ন্যায্যমূল্যে চাল, ডাল, তেল ও লবণ কিনতে পারবেন এবং স্বাস্থ্যসেবা পাবেন। এ ছাড়া কৃষকদের জন্য ‘ফার্মার কার্ড’ চালু করার কথা বলেন, যার মাধ্যমে কৃষকেরা ন্যায্যমূল্যে সার, কীটনাশক ও সেচের পানি পাবেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘১৯৭১ সালে যখন এ দেশের মানুষ দিশেহারা হয়ে গেছিল, শেখ মুজিব বন্দী হয়েছিলেন পাকিস্তানে আর আওয়ামী লীগের নেতারা পালিয়ে গিয়েছিল ইন্ডিয়াতে, তখন শহীদ জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিলেন। সেই লোকের দল আমরা। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দল আমরা। আমরা কথায় বিশ্বাস করি, কাজে বিশ্বাস করি, আমরা কোনো মুনাফিকিতে বিশ্বাস করি না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত