Ajker Patrika

রাজশাহী নগর: শহরের বর্জ্যে বিষাক্ত বারনই নদ

  • প্রায় তিন লাখ মানুষ জটিল চর্মরোগে আক্রান্ত— জরিপের ফল।
  • ঝুঁকিতে পড়েছে নদের জীববৈচিত্র্য।
  • বিপন্ন জেলে সম্প্রদায়ের জীবন ও জীবিকা।
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৯: ৪৭
খাল হয়ে রাজশাহী শহরের বর্জ্যমিশ্রিত পানি চলে যাচ্ছে বারনই নদে। এতে ঝুঁকিতে পড়েছে জীববৈচিত্র্য। সম্প্রতি রাজশাহীর পবা উপজেলার পাকুড়িয়া এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
খাল হয়ে রাজশাহী শহরের বর্জ্যমিশ্রিত পানি চলে যাচ্ছে বারনই নদে। এতে ঝুঁকিতে পড়েছে জীববৈচিত্র্য। সম্প্রতি রাজশাহীর পবা উপজেলার পাকুড়িয়া এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহী শহরের বর্জ্যে বিষাক্ত হয়ে উঠেছে বারনই নদ। নদের পানি ব্যবহার করায় চর্মসহ জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। ছোঁয়াচে হওয়ায় অনেক রোগ ছড়াচ্ছে দ্রুত। রাজশাহীর ‘বাঁচার আশা সাংস্কৃতিক সংগঠন’ রাজশাহী ও নাটোরের সাতটি উপজেলায় সম্প্রতি জরিপ চালিয়ে এমন তথ্য পেয়েছে।

সংগঠনটির তথ্য অনুযায়ী, বারনই নদের বিষাক্ত পানির কারণে শিশু-বৃদ্ধসহ প্রায় তিন লাখ মানুষ জটিল চর্মরোগে আক্রান্ত। তারা দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে। চিকিৎসা ব্যয়বহুল হওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষের কষ্ট আরও বেড়েছে। পাশাপাশি ঝুঁকিতে পড়েছে নদের জীববৈচিত্র্য। নদের মাছ মারা যাচ্ছে। বিপন্ন হয়ে পড়েছে জেলে সম্প্রদায়ের জীবন ও জীবিকা।

সরেজমিন দেখা গেছে, রাজশাহী শহরের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের অপরিশোধিত বর্জ্য, বিসিক শিল্প এলাকার বর্জ্য, বিভিন্ন কলকারখানার রাসায়নিকমিশ্রিত পানি, গৃহস্থালি বর্জ্য এবং পয়োনিষ্কাশনের বিষাক্ত পানি সরাসরি সিটি হাটের পাশের ড্রেন, পবা উপজেলার দুয়ারি খাল, পবা গাঙ্গপাড়া ও বায়া-মহনন্দখালী খালের মাধ্যমে নওহাটায় গিয়ে বারনই নদে মিশছে। ফলে নদের পানি ভয়াবহভাবে দূষিত হচ্ছে।

এই নদের পানি ব্যবহার করে রাজশাহী ও নাটোর জেলার নদপারের গ্রামগুলোর মানুষ দাদ, ফাঙ্গাস, স্ক্যাবিস, খোসপাঁচড়া, শুকনো চুলকানি, চর্মদল ও জকইচসহ নানা জটিল চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছে। সঠিক চিকিৎসা না হওয়ায় দিনের পর দিন এসব চর্মরোগ শরীরেই থেকে যাচ্ছে। অনেক মানুষ দিনের পর দিন কষ্ট সহ্য করছে। এমনকি ছোঁয়াচে হওয়ায় অনেক রোগ ছড়াচ্ছে অন্যদের মধ্যে।

রাজশাহীর পবা উপজেলার নওহাটা পৌরসভার বিভিন্ন মহল্লার মানুষ নানা ধরনের চর্মরোগে আক্রান্ত। পৌরসভার পুঠিয়াপাড়া এলাকার ভ্যানচালক শাহীন আলম জানান, মহল্লায় পাঁচ শতাধিক মানুষ চর্মরোগে আক্রান্ত। তিনি বলেন, ‘এক বছর ধরে আমি এবং আমার বাড়ির তিনজন দাদে আক্রান্ত। সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়েছে। অনেক ডাক্তার দেখিয়েছি, টাকাও খরচ হয়েছে, কিন্তু ভালো হয়নি। আমার পাশের বাড়ির হেলালের বাড়ির নয়জনেরও একই অবস্থা। ছোট্ট একটা শিশু রাহুল, সে-ও ছয় মাস ধরে ভুগছে।’

বারনইয়ের সঙ্গে যুক্ত তানোরের শিব নদের পানিও এখন দূষিত হয়ে পড়ছে। তানোরের বাসিন্দা মোস্তফা সরকার বলেন, ‘শিব নদে এক মাস গোসল করার পর আমি ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হই। অনেক চিকিৎসা করিয়েও ভালো হইনি। ভীষণ রকমের যন্ত্রণা হয়।’

নদী গবেষক মাহবুব সিদ্দিকী জানান, বারনই নদের উৎপত্তি নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার আত্রাই নদ থেকে। এটি মান্দার বিল ও তানোরের শিব নদ পেরিয়ে রাজশাহীর পবা উপজেলার শিতলাই এলাকায় জামদহ নদীতে মিশেছে। এরপর নওহাটা এলাকায় এটি বারনই নামে পরিচিতি পেয়েছে। বারনই রাজশাহীর পবা, মোহনপুর, দুর্গাপুর, বাগমারা এবং নাটোরের নলডাঙ্গা ও সিংড়া উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে চলনবিলে গিয়ে মিশেছে।

নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার বাঁশিলা ইসলাপাড়ার বাসিন্দা রুবিনা বেগম বলেন, ‘আমার বাড়ির ছয়জন প্রায় দেড় বছর ধরে চর্মরোগে আক্রান্ত। আশপাশের মানুষেরও এটা আছে। ওষুধে কাজ হচ্ছে না।’

বাঁচার আশা সাংস্কৃতিক সংগঠনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা বিজলী বলেন, ‘শুধু পবা উপজেলার নওহাটা এলাকার নিম্ন আয়ের কয়েক হাজার মানুষ বিভিন্ন চর্মরোগে আক্রান্ত। আমরা গত ১৯ আগস্ট একটি স্বাস্থ্য ক্যাম্পের মাধ্যমে ৫০ জনকে চিকিৎসা দিয়েছি। এটা আক্রান্তের তুলনায় অতি সামান্য।’

রাজশাহীর সিভিল সার্জন এস আই এম রাজিউল করিম বলেন, ‘বারনই নদের পানি ব্যবহার ও ওই নদের মাছ খাওয়ার কারণে মানুষ চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। প্রয়োজনে জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় স্বাস্থ্য ক্যাম্প পরিচালনা করা হবে। আপাতত এই পানির ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।’

এদিকে দূষণের কারণে জেলে সম্প্রদায়ের জীবনও বিপন্ন হয়ে পড়েছে। সিংড়া উপজেলার শেরকোল এলাকার জেলে আবদুল আলিম বলেন, ‘বছর কয়েক ধরে বিষাক্ত পানির কারণে মাছ মরে যাচ্ছে। আগে নদের মাছ ধরে সংসার চলত, এখন হয় না। তাই পাঁচ বছর ধরে ভ্যান চালাই।’

নদী গবেষক মাহবুব সিদ্দিকী বলেন, রাজশাহী সিটি করপোরেশন ও ওয়াসাকে বর্জ্য শোধনাগার নির্মাণ করতে হবে। তা না হলে ভবিষ্যতে আরও বড় বিপর্যয় দেখা দেবে। ইতিমধ্যে মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়েছে। জীববৈচিত্র্যও পড়েছে ঝুঁকিতে। এখনই উদ্যোগ নিতে হবে।

রাজশাহী ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী পারভেজ মাসুদ বলেন, ‘মানুষকে চর্মরোগ থেকে বাঁচাতে এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় আমরা বর্জ্য শোধনাগার নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছি।’

আর সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী আহমদ আল মঈন জানিয়েছেন, রাজশাহী শহরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে নতুন একটি প্রকল্প প্রণয়ন পর্যায়ে আছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পানিতে ডুবে প্রাণ গেল মামা-ভাগনের

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে পুকুরে ডুবে শাহবাব মন্ডল (আড়াই বছর) ও আবু তোহা মন্ডল (৩) নামের দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের যাদুরচর নতুন গ্রাম এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

শাহবাব মন্ডল উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের ধনারচর নতুন গ্রামের শাহজাহান মন্ডলের ছেলে এবং আবু তোহা মন্ডল একই গ্রা‌মের আবু তালেবের ছেলে। এই দুই শিশু সম্পর্কে মামা-ভাগনে।

পরিবারের বরাত দিয়ে যাদুরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সরবেশ আলী জানান, বুধবার সকালে ওই দুই শিশু তালেব মন্ডলের বাড়িতে খেলা করছিল। এ সময় সবার অজান্তে তারা বাড়ির পা‌শে পুকুরের পানিতে পড়ে যায়। স্বজনেরা পুকুর থে‌কে দুই শিশু‌কে উদ্ধার করে হাসপাতালে নি‌য়ে যান। দা‌য়িত্বরত চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।

খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক একই এলাকার বাসিন্দা ও কুড়িগ্রাম-৪ আসনের বিএনপির মনোনীত সংসদ সদস‌্য প্রার্থী আজিজুর রহমান ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তি‌নি শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।

রৌমারী থানার উপপ‌রিদর্শক শাহ‌নেওয়াজ হো‌সেন ব‌লেন, খবর পে‌য়ে ঘটনাস্থ‌লে পু‌লিশ পাঠা‌নো হ‌য়ে‌ছে। সহকারী ক‌মিশনার (ভূ‌মি) ঘটনাস্থ‌লে গি‌য়ে‌ছেন। দুই শিশুর মৃত‌্যুর ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনি ব‌্যবস্থা নেওয়া হ‌বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ০৪
নিহত লায়লা আফরোজ ও নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ। ছবি: সংগৃহীত
নিহত লায়লা আফরোজ ও নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ। ছবি: সংগৃহীত

‎রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যার ঘটনায় গৃহকর্মী আয়েশাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার দুপুরে ঝালকাঠি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

‎গ্রেপ্তারের বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন তেজগাঁও বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন।

‎মামুন বলেন, গৃহকর্মী আয়েশাকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঝালকাঠি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গত সোমবার সকালে শাহজাহান রোডের ১৪ তলা একটি আবাসিক ভবনের সপ্তম তলায় লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তাঁর মেয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে (১৫) ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।

মা-মেয়ে হত্যায় অভিযুক্ত গৃহকর্মী আয়েশা। ছবি: আজকের পত্রিকা
মা-মেয়ে হত্যায় অভিযুক্ত গৃহকর্মী আয়েশা। ছবি: আজকের পত্রিকা

গতকাল তাঁদের মরদেহ নাটোরে দাফন করা হয়েছে। মামলার এজাহারে বাসা থেকে মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাসহ মূল্যবান জিনিস খোয়া যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।

ভবনের ভেতরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, হত্যাকাণ্ডের পর এক নারী স্কুলড্রেস পরে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। চার দিন আগে আয়েশা পরিচয় দিয়ে ওই বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেওয়া তরুণী (২০) এই জোড়া খুনে জড়িত বলে সন্দেহ স্বজনদের। ঘটনার পর থেকে ওই তরুণী পলাতক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি 
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে মজিরুলের নেতৃত্বে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে মজিরুলের নেতৃত্বে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

জীবন আছে যার, তার মৃত্যু অনিবার্য। মৃত্যুর পর মানুষের শেষ ঠিকানা কবর। মৃতদেহ গোসল করিয়ে কাফন পরানো হয়, জানাজা শেষে তাকে শায়িত করা হয় চিরনিদ্রার ঘরে। এই কবর খোঁড়ার দায়িত্বটি গ্রামের কিছু মানুষ বহু বছর ধরে স্বেচ্ছায়, বিনা পারিশ্রমিকে পালন করে আসছেন, যাঁরা সবার কাছে ‘গোরখোদক’ নামে পরিচিত। আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় তাঁরা করে থাকেন এই কাজ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গোরখোদকেরা কোনো পারিশ্রমিক নেন না। গ্রামের যে কেউ মারা যাক, নিজেদের ব্যস্ততা ফেলে তাঁরা ছুটে আসেন কবর খুঁড়তে। তাঁদের এই মানবিক কাজের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে গ্রামের লোকেরা দোয়া করেন—আল্লাহ যেন তাদের সুস্থ ও ভালো রাখেন।

দেবীপুর গ্রামের বাসিন্দা গোরখোদক মজিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ৫৫ বছর ধরে কবর খুঁড়ছি। যত দিন সুস্থ থাকব, এই কাজ চালিয়ে যাব। আমাদের গ্রাম ছাড়াও অন্য গ্রাম থেকে কেউ ডাকলে সেখানেও যাই। ছোটবেলায় ওস্তাদের কাছে ডালি ধরেই শিখেছি। গরিব মানুষ, মাঠে কাজ করি; কিন্তু কেউ মারা গেলে দ্বিধা করি না—এই কাজ আমার নেশায় পরিণত হয়েছে।’

মজিরুল আরও জানান, এখন তিনি তরুণদেরও এই কাজ শেখাচ্ছেন।

গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

গোরখোদক শাকের আলী বলেন, ‘আমরা নিঃস্বার্থভাবে কাজ করি। কখনো কোনো টাকা নিই না। যেখানেই থাকি, গ্রামের কারও মৃত্যুর সংবাদ শুনলে দ্রুত কবর খুঁড়তে চলে আসি।’

গোরখোদক ফুয়াদ হোসেন বলেন, ‘অন্য গ্রাম থেকে ডাক এলেও আমরা যাই। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই করি এই কাজ। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’

স্থানীয় বাসিন্দা শাজাহান আলী বলেন, ‘কবর খোঁড়া বড় দায়িত্বের কাজ। গ্রামের এসব মানুষ খবর পেলেই দৌড়ে আসে। আমরা তাদের জন্য দোয়া করি।’

মাওলানা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘মৃত ব্যক্তির জন্য কবর খোঁড়া নিঃসন্দেহে সওয়াবের কাজ। হাদিসে এসেছে—যাঁরা কবর খোঁড়েন, আল্লাহ তাদের জন্য জান্নাতে ঘর নির্মাণ করবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে কারখানার ফটকের সামনে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকেরা। আন্দোলনের মুখে কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রধান ফটক তালাবদ্ধ করে সটকে পড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে শিল্প ও থানা-পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসেছেন। আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের সাইটালিয়া গ্রামে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানায় এই ঘটনা ঘটে।

কারখানার নারী শ্রমিক মিনারা আক্তার বলেন, ‘অক্টোবর ও নভেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করে নাই। এক মাসের বেতন না পেলে আমাদের চলা খুবই কঠিন হয়। আমাদের নাওয়া-খাওয়া বন্ধ হয়। আর সেখানে কারখানা কর্তৃপক্ষ দুই মাসের বেতনভাতা বকেয়া রেখেছে। আজ সকালে শ্রমিকেরা জড়ো হলে তারা পালিয়ে যায়।’

মিন্টু নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘এই কারখানায় আমরা তিন বছর ধরে চাকরি করছি। আমাদের বেতনের বাইরে কোনো সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে না। তবু পেটের দায়ে চাকরি করি। দুই মাসের বেতন বকেয়া। আমাদের তো পেট আছে, সন্তান-সংসার আছে। এক মাস দোকান বাকি পরিশোধ করতে না পারলে পরের মাসে আর দোকানি বাকি দেয় না। আমরা কী অবস্থায় আছি, একবার ভাবুন। বেতন পরিশোধ না করে তারা পালিয়ে গেছে।’

আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

মেহেদী হাসান বলেন, ‘এত দিন ধরে ঋণ করে বলে-কয়ে দোকান থেকে বাকি নিয়ে চলছি। আর পারছি না। এখন দোকান বাকি দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। অক্টোবর মাসের বকেয়া বেতন নিয়ে কমপক্ষে ১০টি তারিখ দিছে। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ বেতন পরিশোধ করেনি। শেষে আজ বেতন পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু তারা কারখানা ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে গেছে।’

কারখানার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. বুলবুল হাসান বলেন, ‘ব্যাংকের সমস্যার কারণে বেতন-ভাতা পরিশোধ করা যাচ্ছে না। আশা করি, আজকের মধ্যে নভেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করতে পারব।’ বিনা নোটিশে কারখানার ফটক কেন তালাবদ্ধ? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমি বলতে পারব না।’

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাছির আহমদ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত