Ajker Patrika

রাজবাড়ীতে ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি ১১০ জন

রাজবাড়ী প্রতিনিধি
রাজবাড়ীতে ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি ১১০ জন

রাজবাড়ীতে হঠাৎ করেই ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছে ১১০ জন। ওয়ার্ডে জায়গার সংকুলান না হওয়ায় হাসপাতালের বাইরে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে রোগীদের। চিকিৎসা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে নার্স ও চিকিৎসকদের। 

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে জায়গা নেই। রোগীরা হাসপাতালের মেঝে, বারান্দা ও গাছের নিচে মাদুর বিছিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। রোগীর চাপ থাকায় কিছুক্ষণ পর পরই রিকশা, অটোরিকশায় ডায়রিয়া রোগী আসছেন জরুরি বিভাগের সামনে। সেখান থেকে রোগীর স্বজনেরা ধরাধরি করে হাসপাতালের হুইল চেয়ারে করে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে নিয়ে যাচ্ছেন।

কুলসুম বেগম নামে এক রোগী জানায়, শনিবার ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তিনি। সুস্থ হয়ে যাওয়ায় রোববার বিকেলে বাড়িতে চলে যান। কিন্তু সোমবার রাত থেকে ডায়রিয়া বেড়ে গেলে আজ মঙ্গলবার সকালে পুনরায় ভর্তি হন তিনি। কিন্তু হাসপাতালে বেড না পাওয়ায় ওয়ার্ডের বাইরে মাদুর বিছিয়ে রয়েছেন। 

তিনি আরও জানান, ঠিকমতো চিকিৎসা পাচ্ছেন। হাসপাতাল থেকে স্যালাইন, ওষুধ দিচ্ছে চিকিৎসকেরা। তবে খোলা আকাশের নিচে থাকায় রোদ আর গরমে কষ্ট হচ্ছে তাঁদের।

ইসলাম শেখ নামের আরেকজন জানান, তাঁর বাবাকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছে সকাল ৭টায়। কোনো বেড না পেয়ে গাছতলায় মাদুর বিছিয়ে স্যালাইন দেন। পরে সকাল ৯টার দিকে নার্স এসে হাসপাতালের বারান্দায় একটি বেড দেন।

হাসপাতালের বারান্দায় রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন একজন নার্সসুমাইয়া আক্তার বলেন, মাকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছি। দুই দিন ধরে পাতলা পায়খানা হওয়ায় স্থানীয় ফার্মেসি থেকে ওষুধ, স্যালাইন খাওয়াই। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয় নাই। সকালে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসি। বেড না পাওয়ায় বারান্দায় মাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। 

এ সময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, শুধু মাত্র স্যালাইন ছাড়া অন্য কোনো ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে না। সব ওষুধ বাইরে থেকে কিনে আনতে হচ্ছে।

সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের সিনিয়র নার্স আইনুর নাহার বলেন, হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে শয্যা মাত্র ১২টি। শয্যা পূর্ণ হয়ে গেলে ফ্লোরে ১০ জনকে রাখার মতো ব্যবস্থা আছে। গত চার পাঁচ দিন ধরে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১১০ জন ভর্তি হয়েছে। বেড থেকে রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর মধ্যে শিশু তেমন একটা নেই তবে বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন।

রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শেখ মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান বলেন, ‘কী কারণে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে তা বলা সম্ভব নয়। কেন ডায়রিয়ার প্রকোপ সেটা জানার জন্য তদন্ত করা হচ্ছে। রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় সবাইকে বেড দিতে পাচ্ছি না। তারপরও আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য।’ তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে পর্যাপ্ত ওষুধ রয়েছে। ডায়রিয়া প্রভাব কমাতে সবাইকে সচেতন হতে হবে।

ডা. শেখ মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান আরও বলেন, রান্না শেষে ছয় ঘণ্টা অতিক্রম করা কোনো খাবার খাওয়া যাবে না। কারণ ছয় ঘণ্টা পার হলে ওই খাবারে ব্যাকটেরিয়া জন্ম নেয়। সেই সঙ্গে বাইরের ভাজা পোড়া কোনো খাবার না খাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিদ্যুতায়িত হয়ে বাবা-ছেলের মৃত্যু

সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি 
ঘটনাস্থলে লোকজনের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে লোকজনের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে সেচযন্ত্র চালু করতে গিয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে বাবা ও ছেলের মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের পশ্চিম বাছহাটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

মৃত ব্যক্তিরা হলো মো. শহিদুল ইসলাম (৪০) ও তাঁর ছেলে মো. শিয়াব মিয়া (১৪)।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সর্বানন্দ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জহুরুল ইসলাম। মৃত ব্যক্তিদের স্বজনদের বরাতে তিনি বলেন, ধানখেতে পানি দেওয়ার জন্য সকাল ১০টার দিকে বিদ্যুৎ-চালিত সেচযন্ত্র নিয়ে পুকুরপাড়ে যায় বাবা ও ছেলে। ঘণ্টাখানেক পরে শিয়াবের মা ওই পুকুরপাড়ে যান। তিনি সেখানে ছেলের লাশ দেখতে পেয়ে চিৎকার করেন। পরে স্থানীয় লোকজন এসে শিয়াবের লাশ বাড়িতে নেন। এর কিছুক্ষণ পরে শহিদুল ইসলামের খোঁজে পুকুরপাড়ে আবারও যান তাঁর স্বজনেরা। তখন তাঁর লাশও পুকুরে পাওয়া যায়।

সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল হাকিম আজাদ বলেন, ‘বিদ্যুৎচালিত সেচপাম্পে বিদ্যুতায়িত বাবা ও ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাসর রাত শেষে মিলল বরের ঝুলন্ত লাশ

ফরিদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৭: ৩০
পিসনাইল গ্রামে যুবকের মৃত্যুর খবরে এলাকাবাসীর ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
পিসনাইল গ্রামে যুবকের মৃত্যুর খবরে এলাকাবাসীর ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় জামাল ফকির (২৮) নামের নববিবাহিত এক যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের পিসনাইল গ্রামে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার বিয়ে করে বউ নিয়ে আসেন জামাল ফকির। বাসর রাত শেষে আজ সকালে বসতবাড়ির আধা কিলোমিটার দূরে ফাঁকা মাঠে জামালের লাশ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে।

ওই নববধূ বলেন, ‘সকালে মানুষের চিৎকার শুনে দরজা খুলতে চাই, দেখি দরজাটা বাইরে থেকে লাগানো। পরে কেউ দরজা খুলে দিলে দেখি, আমার স্বামী ঘরের বাইরে জমির মধ্যে পড়ে আছে।’

মৃত জামালের বড় ভাই জালাল ফকির বলেন, ‘আমার ভাইয়ের মৃত্যুর বিষয়টি খুবই রহস্যজনক। কারও সঙ্গে কোনো শত্রুতা ছিল না। ঠিক কী কারণে এমন ঘটনা ঘটল, বুঝে উঠতে পারছি না।’

সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান বলেন, ‘বৃহস্পতিবার ওই ছেলে বিয়ে করেন। আজ সকালে বাড়ির পাশে একটি বাঁশের আড়া থেকে তার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পায় পরিবার। ধারণা করা হচ্ছে, যুবক আত্মহত্যা করেছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চমেক হাসপাতালে এসি বিস্ফোরণ: দগ্ধ ৩ কর্মচারীর একে একে সবাই চলে গেলেন

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ। ছবি: সংগৃহীত
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল ভবনে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) মেরামতের সময় বিস্ফোরণে দগ্ধ কর্মচারী মো. তানভীরও মারা গেছেন। আজ শুক্রবার দুপুরে চমেক হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তিনি মারা যান।

তানভীর দুর্ঘটনার পর থেকে ১১ দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। এ নিয়ে এসি বিস্ফোরণের ঘটনায় আহত তিন কর্মচারীর সবাই একে একে মারা গেলেন।

তানভীর চট্টগ্রাম নগরের বাকলিয়া থানার ডিসি রোড এলাকায় থাকতেন। চমেক হাসপাতালে দায়িত্বরত পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক আলাউদ্দিন তালুকদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে ১৩ অক্টোবর বেলা ১১টার দিকে চমেক হাসপাতালের একটি সাততলা ভবনের ছাদে এসি মেরামতের সময় সেটি বিস্ফোরিত হয়। এ সময় শওকত ওসমান নামের একজন কর্মচারী ছাদ থেকে ছিটকে নিচে পড়ে যান। অপর দুজনের মধ্যে মিশকাত ও তানভীর ছাদে দগ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে পড়ে ছিলেন। পরে তিনজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে ভর্তির চার ঘণ্টা পর আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রথমে শওকত মারা যান। পরে ১৭ অক্টোবর মিশকাত ও আজ দুপুরে তানভীরও চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে মারা যান। তাঁরা গণপূর্ত বিভাগের অধীনে হাসপাতালের টেকনিশিয়ান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কর্মচারীদের সবাই চট্টগ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। তাঁদের বয়স ২৮ থেকে ৩২ বছরের মধ্যে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যানজট সচেতনতায় সাইকেল শোভাযাত্রা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
যানজট নিয়ে সচেতনতা তৈরিতে রাজশাহীতে সাইকেল শোভাযাত্রা। ছবি: আজকের পত্রিকা
যানজট নিয়ে সচেতনতা তৈরিতে রাজশাহীতে সাইকেল শোভাযাত্রা। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহীতে যানজট নিয়ে সচেতনতা তৈরিতে ‘নগর হোক সাইকেল বান্ধব, সাইকেল লেন হোক বাধ্যতামূলক’ এই স্লোগানে বর্ণাঢ্য সাইকেল শোভাযাত্রা হয়েছে। দুরন্ত বাইসাইকেলের সহযোগিতায় আজ শুক্রবার রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) ও রাউন্ড টেবিল বাংলাদেশ এ আয়োজন করে।

সকাল সাড়ে ৯টায় রাজশাহী কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠের সামনে থেকে শোভাযাত্রার উদ্বোধন করা হয়। এতে অংশ নেন কয়েক শ সাইক্লিস্ট। সাইকেল শোভাযাত্রাটি ঈদগাহ রোড থেকে ফায়ার সার্ভিস রোড, সিঅ্যান্ডবি মোড়, চিড়িয়াখানা, ডিআইজি অফিসের সামনে হয়ে ইউ-টার্ন নিয়ে আবার সিঅ্যান্ডবি মোড় ও ফায়ার সার্ভিস রোড পেরিয়ে ঈদগাহ মাঠে গিয়ে শেষ হয়।

অংশগ্রহণকারী সাইক্লিস্টরা বলেছেন, সাইকেল মনকে প্রফুল্ল রাখে, এটি একটি উপকারী ব্যায়াম যা শরীরকে বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্ত রাখে। তাই সবারই সাইকেল চালানোর অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত। এ ছাড়া নগরে দিন দিন বাড়ছে যানজট, দূষণ ও কালো ধোঁয়া। এসব সমস্যার স্থায়ী সমাধানে চাই বাইসাইকেলের ব্যবহার এবং এর জন্য প্রয়োজন পৃথক সাইকেল লেন।

এর আগে ভোর থেকেই ঈদগাহ মাঠে জমে ওঠে সাইক্লিস্টদের মিলনমেলা। র‍্যালির আগে আয়োজিত ‘সাইকেল স্ট্যান্ড শো’ দর্শনার্থীদের মধ্যে বাড়তি উৎসাহ জোগায়। পরে সাইক্লিস্টদের সম্মাননা স্মারক দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার নূর আলম সিদ্দিকী।

এ সময় উপপুলিশ কমিশনার বলেন, বাইসাইকেল শুধু একটি যানবাহন নয়, এটি দূষণমুক্ত পরিবেশ গড়ার এক শক্তিশালী মাধ্যম। নিয়মিত সাইক্লিং শরীরচর্চা ও মানসিক প্রশান্তির জন্যও অত্যন্ত উপকারী। তিনি স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রতিদিন সাইকেল চালানোর অভ্যাস গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত