Ajker Patrika

বাবাকে কুপিয়ে হত্যা, মাদকাসক্ত ছেলে আটক

পাবনা প্রতিনিধি
আটক করতে গেলে পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা চালান অভিযুক্ত ব্যক্তি। ছবি: আজকের পত্রিকা
আটক করতে গেলে পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা চালান অভিযুক্ত ব্যক্তি। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাজারে দুধ বিক্রি করে সন্ধ্যার পর বাসায় ফেরেন বাবা নিজাম প্রামাণিক (৬০)। পরে খাওয়া-দাওয়া শেষে এশার নামাজ পড়তে জায়নামাজে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। এ সময় সুযোগ বুঝে হাঁসুয়া দিয়ে বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করেন ছেলে মোস্তফা প্রামাণিক। এমনই এক লোমহর্ষ ঘটনা ঘটেছে পাবনা সদর উপজেলার চরতারাপুর ইউনিয়নের পুরোনো ভাদুরডাঙ্গি গ্রামে।

গতকাল রোববার রাতে এ ঘটনা ঘটে। পরে মোস্তফাকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ সোমবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এদিকে তাঁকে আটক করতে গিয়ে আহত হয়েছেন সদর থানার তিন উপপরিদর্শক (এসআই)। ‎নিহত নিজাম প্রামাণিক পুরোনো ভাদুরডাঙ্গি গ্রামের মৃত ইন্তাজ প্রামাণিকের ছেলে। তিনি কৃষিকাজ করতেন। অভিযুক্ত ছেলে মোস্তফা ছিলেন মাদকাসক্ত।

‎পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, রাতের খাবার শেষে ঘরে এশার নামাজ পড়ার জন্য জায়নামাজে দাঁড়িয়েছিলেন বাবা নিজাম। এ সময় দরজা আটকে হাঁসুয়া দিয়ে বাবাকে কুপিয়ে হত্যার পর ঘর থেকে বের হন ছেলে মোস্তফা। এরপর নিজেই পাশের কক্ষ দরজা বন্ধ করে বসে থাকেন তিনি। বাড়ির লোকজন টের পেয়ে ঘরে গিয়ে নিজামের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। এরপর মোস্তফাকে ঘরের ভেতরে তালাবদ্ধ অবস্থায় রেখে পুলিশে খবর দেন স্বজন ও এলাকাবাসী। পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। এরপর মোস্তফাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

আটকের সময় অভিযুক্তের ছুরিকাঘাতে সদর থানার এসআই আবু বকর সিদ্দিক, এসআই জিয়াউর রহমান ও এসআই আবু রায়হান আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। তাঁদের মধ্যে এসআই জিয়াউর রহমানকে সুজানগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি দুজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

‎নিহতের আরেক ছেলে মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা খাওয়া-দাওয়া শেষে রুমে শুয়েছিলাম। এ সময় রুম আটকে নামাজরত অবস্থায় বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করে মোস্তফা। এর আগে সে আমাকেও মেহগনি ডাল দিয়ে মারাত্মক আহত করেছিল। আজকেও গামছার মধ্যে হাঁসুয়া নিয়ে আমাকে মারার জন্য মাঠের মধ্যে গিয়ে খোঁজাখুঁজি করেছে। সে মাদকের জন্য প্রায়ই বাবা ও আমাদের কাছে টাকা চাইত। না দিলেই বাড়িতে ভাঙচুর চালাত। তাঁর শাস্তি হওয়া উচিত।’

এ বিষয়ে ‎পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম বলেন, লাশ উদ্ধারের পর সোমবার পাবনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে মিজানুর রহমান বাদী হয়ে অভিযুক্ত মোস্তফাকে একমাত্র আসামি করে মামলা করেছেন। পরে সেই মামলায় আটক মোস্তফাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে সোমবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...