Ajker Patrika

আমাদের কর্মীরা বিশৃঙ্খল নয়, দেশ গড়ার ক্ষেত্রেও তারা দায়িত্বশীল: জামায়াতের আমির

নীলফামারী প্রতিনিধি
ডোমারে জামায়াতের সমাবেশে ডা. শফিকুর রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা
ডোমারে জামায়াতের সমাবেশে ডা. শফিকুর রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘৫ তারিখের (আগস্ট) পর আমাদের কর্মীরা বেপরোয়া হয়ে সমাজে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেনি। অথচ সবচেয়ে মজলুম দল হচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। আমরা এখানে ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছি। ইনশা আল্লাহ, দেশ গড়ার ক্ষেত্রেও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেব।’

গতকাল বুধবার বিকেলে নীলফামারীর ডোমার উপজেলা পরিষদের মাঠে উপজেলা জামায়াত আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. শফিকুর রহমান এ কথা বলেন।

জামায়াতের আমির বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদগুলো আওয়ামী লীগের ছিল। জোর করে ভাই-ভাতিজা, শালা-সম্বন্ধী মিলে দখল করেছিল। এরা এখন পালিয়ে গেছে। মেম্বাররা পালিয়ে গেছে। চেয়ারম্যান নাই, মেম্বার নাই, মানুষ যাবে কেন? এতগুলো মানুষের দায়িত্ব প্রশাসক নেবে? যাদের জনগণ নিজেদের প্রতিনিধি মনে করে না। পৌরসভা ভেঙে দেওয়া হয়েছে, সিটি করপোরেশন ভেঙে দেওয়া হয়েছে, সেখানে কোনো জনপ্রতিনিধি নেই। জেলা ও উপজেলা পরিষদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে, সেখানে কোনো জনপ্রতিনিধি নেই। প্রতিদিন মানুষের দুর্ভোগ হচ্ছে। আমাদের রাজনীতি জনগণের দুর্ভোগ বাড়ানোর জন্য নয়, আমাদের রাজনীতি দুর্ভোগ কমানোর জন্য।’

জামায়াতের আমির ডা. শফিক বলেন, “এ অবস্থায় যদি বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হয়, আমার কাছে সাংবাদিক বন্ধুরা জানতে চেয়েছিলেন, ‘আপনি কী মনে করেন?’ আমি বলেছিলাম, ইট উইল বি দ্য জেনোসাইড অব ইলেকশন। একটা ইলেকশনকে একদম খতম করে দেবে। চরম বিশৃঙ্খলা হবে, রক্তের বন্যায় বাংলাদেশ ভেসে যাবে। আমরা এটা চাই না, আমরা চাই সকল ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কার সাধন করে, দেশে আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে জনগণকে স্বস্তির সঙ্গে তার ভোট প্রয়োগের সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে।”

আমিরে জামায়াত বলেন, ‘গত সাড়ে ১৫ বছরে যারা নতুন ভোটার হয়েছে, তাদের প্রত্যেককে ভোটার লিস্টে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। আওয়ামী লীগ যে পৌনে ২ কোটি ফলস ভোটার তৈরি করে গিয়েছিল, তাদের কেটে সাফ করতে হবে। যারা দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন, তাঁদের বাদ দিতে হবে। এবারকার এই আন্দোলনে প্রবাসী বাংলাদেশিরা সারা দুনিয়ায় আমাদের সঙ্গে আন্দোলন করেছেন, তাঁদের প্রত্যেকের ভোট নিশ্চিত করতে হবে। এ কাজগুলো করেই একটা সুষ্ঠু নির্বাচনে যেতে হবে। তবে দৈনন্দিন জীবনে মানুষকে কিছু আইনগত কিছু প্রশাসনিক সহায়তা দিতে হবে।’

নির্বাচনে পেশিশক্তি ও কালো টাকার কথা উল্লেখ করে ডা. শফিক বলেন, “বিভিন্ন আসনে যখন মনোনয়ন দেওয়া হয়, তখন পেশিশক্তি আর কালো টাকার বলে ভোটকে প্রভাবিত করে অযোগ্য সন্ত্রাসীরা অনেক টাকায় নির্বাচিত হয়ে আসে। সংসদে একজন মহিলা গিয়েছেন। তিনি কিছুই পড়তে পারেন না, বলতে পারেন না। তাঁর মেয়ে এক পৃষ্ঠা কাগজ লিখে দিয়ে বলেছে, ‘আম্মা, তুমি এইটা বলিও-এইটা বলিও, এইটা বললে হবে।’ তিনি দাঁড়িয়ে কাঁপছেন, ১৭ মিনিটে এক পৃষ্ঠা পড়েছেন, এক পৃষ্ঠার মধ্যে ২৮টা ভুল পড়েছেন। একজন সংসদ সদস্যের কাজ দেশের আইন রচনা করা। এখন বলেন, এ রকম লোকেরা যদি সংসদ সদস্য হন, তাঁরা কি দেশের ভালো আইন তৈরি করার যোগ্যতা রাখেন? রাখেন না বলেই তো কালো আইনের কবলে পড়ে আমরা শেষ হয়ে যাচ্ছি।”

সমাজের ৪০ ভাগ হচ্ছে যুবক এবং যুবকদের ৬০ ভাগ বেকার উল্লেখ করে এই জামায়াত নেতা বলেন, ‘কেন তারা বেকার থাকে, তার অনেকগুলো কারণের মধ্যে একটা হলো সুশিক্ষার পরিবর্তে কুশিক্ষা। এ শিক্ষা মানুষকে মানুষ বানায় না, এই শিক্ষা যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলে না। এ জন্য সার্টিফিকেটের বস্তা নিয়ে এক অফিস থেকে আরেক অফিসে দৌড়াতে হয়। আমরা যুব সমাজকে কথা দিচ্ছি, আল্লাহ যদি এই দেশ পরিচালনার দায়িত্ব আমাদের দেন, ইনশা আল্লাহ নৈতিক শিক্ষার পাশাপাশি পেশাগত দক্ষ শিক্ষা তোমাদের হাতে এমনভাবে তুলে দেওয়া হবে, যেদিন তোমাদের শিক্ষার পাঠ শেষ হবে, সেই দিন তোমাদের হাতে যেমন সার্টিফিকেট আসবে, তেমনি চাকরির অফার লেটারও চলে আসবে। আমরা একটা বেকারের হাত থাকতে দেব না।’

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা ১৮ কোটি মানুষের মাথা সোজা করে দাঁড়াবার একটা স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে চাই। সেই বাংলাদেশ গড়ার একটু ভালোবাসা আমরা আপনাদের কাছ থেকে চাই। একটু ভালোবাসা আপনারা দিলে আপনাদের সাহায্য চাইব, সমর্থন চাইব, দোয়া চাইব, সঙ্গে চাইব, পাশে চাইব। আমাদের লড়াই আপনাদের জন্য, নিজের জন্য, ১৮ কোটি মানুষের জন্য। ৫ তারিখের (আগস্ট) পর আমাদের কর্মীরা বেপরোয়া হয়ে সমাজে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেনি। অথচ সবচেয়ে মজলুম, বড় মজলুম দল হচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। আমরা এখানে ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছি, ইনশা আল্লাহ দেশ গড়ার ক্ষেত্রেও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেব’।

জামায়াত প্রধান বলেন, ‘আপনারা গর্বিত উত্তরবঙ্গের মানুষ। এখন সন্তানেরা যে স্লোগান দেয় প্রথম নামটি আপনাদের আবু সাঈদের। আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ। আবু সাঈদের নামটাই আগে আসে। অনেকে আবার শহিদদের নিজের দলের দাবি করেন। শহিদেরা জাতীয় সম্পদ, আমরা দলের ভিত্তিতে তাদের ভাগ করতে চাই না। এদের আমরা মাথার ওপর উঠিয়ে রাখতে চাই। আমরাই একমাত্র দল, আল্লাহর শুকরিয়া, প্রত্যেকটি শহীদ পরিবারে আমরা গিয়ে পৌঁছেছি এবং তাদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। আমরা শহীদদের নিয়ে রাজনীতি করতে চাই না। শহীদদের আমরা মাথার তাজ বানিয়ে রাখতে চাই। লড়াইয়ের ময়দানে আবারও দেখা হবে ইনশা আল্লাহ। সেই সব লড়াই হবে মানুষের মুক্তির লড়াই, মানবিক বাংলাদেশ গড়ার লড়াই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

লক্ষ্মীপুর জেলা নির্বাচন অফিসে পেট্রল ঢেলে দুর্বৃত্তদের অগ্নিসংযোগ

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৫৩
লক্ষ্মীপুর জেলা নির্বাচন অফিসে গতকাল দিবাগত রাতে পেট্রোল ঢেলে অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
লক্ষ্মীপুর জেলা নির্বাচন অফিসে গতকাল দিবাগত রাতে পেট্রোল ঢেলে অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

লক্ষ্মীপুর জেলা নির্বাচন অফিসে পেট্রল ঢেলে অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় নিচতলার গুদামে থাকা গুরুত্বপূর্ণ কিছু নথি পুড়ে যায়। শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে এই ঘটনা ঘটে। তবে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ ও নির্বাচন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা এস এম মেহেদী হাসান ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আবদুর রশিদ।

প্রত্যক্ষদর্শী ও জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে জেলা নির্বাচন অফিসের নিচতলায় জানালার কাচ ভেঙে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। এ সময় অফিসের দারোয়ান টের পেয়ে চিৎকার দিলে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে কর্মচারীরা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন। তবে এর আগেই তাঁরা আগুন নেভাতে সক্ষম হন।

লক্ষ্মীপুর জেলা নির্বাচন অফিসে গতকাল দিবাগত রাতে পেট্রোল ঢেলে অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
লক্ষ্মীপুর জেলা নির্বাচন অফিসে গতকাল দিবাগত রাতে পেট্রোল ঢেলে অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আবদুর রশিদ বলেন, আগুনে অফিসের কিছু নথি পুড়ে গেছে। তবে বিষয়টি টের পাওয়ার কারণে বড় ধরনের ক্ষতি হয়নি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. রেজাউল হক বলেন, জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে অভিযান চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কেরানীগঞ্জে জাবালে নূর সুপার মার্কেটে আগুন, উদ্ধার ৪২

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৩০
রাজধানীর উপকণ্ঠে কেরানীগঞ্জে বহুতল ভবনে ভয়াবহ আগুন। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর উপকণ্ঠে কেরানীগঞ্জে বহুতল ভবনে ভয়াবহ আগুন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকার কেরানীগঞ্জের আগানগর এলাকায় জাবালে নূর সুপার মার্কেটে আজ শনিবার ভোর আনুমানিক ৫টার দিকে আগুন লেগেছে। প্রাথমিকভাবে ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, মার্কেটের নিচতলায় থাকা কাপড়ের ঝুট গোডাউন থেকে আগুনের সূত্রপাত। মুহূর্তের মধ্যেই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে পুরো ১০ তলা ভবন এবং আশপাশে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।

খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসনসহ ফায়ার সার্ভিসের ১৪টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার কাজ শুরু করে। ভবনটি একই সঙ্গে আবাসিক এবং বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত হওয়ায় আগুন নেভানোর কাজে ফায়ার সার্ভিস সদস্যদের যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছে।

ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, ভবনের ভেতরে আটকা পড়া ৪২ জন বাসিন্দাকে নিরাপদে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. তাজুল ইসলাম চৌধুরী ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের জানান, বেজমেন্টে দোকান এবং ঝুট গোডাউন থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সমস্যা হচ্ছে। বর্তমানে ভবনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় প্রচুর ধোঁয়ার উপস্থিতি রয়েছে এবং কয়েকটি স্থানে এখনো আগুনের শিখা দেখা যাচ্ছে। ধোঁয়ার কারণে কাজ করতে বেগ পেতে হলেও আগুন যাতে দ্রুত পাশের ভবনে ছড়িয়ে না পড়ে, সে জন্য ইউনিটগুলো একযোগে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১০ তলা ভবনটির মালিক হাজী নূর আলম। এর মধ্যে আটতলা পর্যন্ত আবাসিক কাজে ব্যবহৃত হতো। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভবনটি রাজউকের (রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) কোনো ধরনের বৈধ অনুমোদন ছাড়া নির্মাণ করা হয়েছে এবং এর কোনো বৈধ ছাড়পত্র নেই।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসার পর অবৈধ নির্মাণ এবং অগ্নিকাণ্ডের কারণ ও ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে বিস্তারিত তদন্ত শুরু হবে।

ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া বিভাগের পরিদর্শক আনোয়ারুল ইসলাম এক বার্তায় জানান, ১২ তলাবিশিষ্ট ‘জমেলো টাওয়ার’ নামে ওই ভবনের নিচতলায় আগুন লেগেছে। খবর পেয়ে কেরানীগঞ্জ, সদরঘাট ও সিদ্দিক বাজার ফায়ার স্টেশনের আটটি ইউনিট আগুন নেভাতে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।

সকাল ৭টা ১০ মিনিটের দিকে ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া বিভাগের জ্যেষ্ঠ স্টাফ অফিসার শাহজাহান শিকদার নিশ্চিত করেন, আগুনের তীব্রতা বাড়ায় বর্তমানে ১২টি ইউনিট সম্মিলিতভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গোপালগঞ্জে আদালতপাড়ায় দুটি ককটেল বিস্ফোরণ

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ০৯
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

গোপালগঞ্জের আদালতপাড়ায় পরপর দুটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনের সড়কে এই ঘটনা ঘটে। এতে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

পুলিশ জানায়, শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি বা ব্যক্তিরা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে তিন রাস্তার মোড়ে পরপর দুটি হাতে তৈরি ককটেল নিক্ষেপ করে দ্রুত পালিয়ে যায়। ককটেল বিস্ফোরণে বিকট শব্দ হলেও এতে কেউ হতাহত হয়নি কিংবা কোনো ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেনি।

খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আলামত সংগ্রহ করে। ঘটনাস্থল ও আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে ককটেল নিক্ষেপকারীদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক মো. আরিফ-উজ-জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এই ঘটনায় আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। প্রয়োজনে অভিযান চালানো হবে। পাশাপাশি সেনাসদস্যদের টহলও বাড়ানো হয়েছে। সার্বিক নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাকেরগঞ্জে একই ঘরে ৩ জন অচেতন, বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৫৫
সন্ধ্যা রানী সাহাকে বাকেরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
সন্ধ্যা রানী সাহাকে বাকেরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার কবাই ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মোল্লার বাজার-সংলগ্ন মরণ সাহার বাড়িতে চেতনানাশক স্প্রে করে পরিবারের সবাইকে অচেতন করে মালপত্র লুট করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় ঘরের মালিক মরণ সাহার মা অঞ্জলি রানী সাহা (৯০) মারা গেছেন। গুরুতর অবস্থায় অচেতন মরণ সাহাকে (৫৫) বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে এবং তাঁর স্ত্রী সন্ধ্যা রানী সাহাকে (৪৮) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মোল্লার বাজার-সংলগ্ন ওই ঘরে বসবাস করেন প্রশান্ত কুমার ওরফে মরণ সাহা, তাঁর মা অঞ্জলি সাহা এবং স্ত্রী সন্ধ্যা রানী। প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাঁরা খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। দুপুর পর্যন্ত তাঁদের কাউকে বাইরে দেখা না যাওয়ায় এবং ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ অবস্থায় দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা ডাকাডাকি করেন। কোনো সাড়া না পেয়ে একপর্যায়ে তাঁরা দরজা ভেঙে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করেন। এ সময় ঘরের মেঝেতে তিনজনকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। তাঁদের মধ্যে অঞ্জলি সাহাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। এ সময় ঘরের মালপত্র এলোমেলো অবস্থায় পড়ে ছিল।

স্থানীয় লোকজন দ্রুত তাঁদের উদ্ধার করে বাকেরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক প্রশান্ত সাহাকে শেবাচিম হাসপাতালে পাঠান। সন্ধ্যা রানীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

বাকেরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, মরণ সাহার স্ত্রী সন্ধ্যা রানীর অবস্থা অনেকটা ভালো। তবে মরণ সাহা বেশি অসুস্থ ও অজ্ঞান থাকায় তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম সোহেল রানা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানান, কারা কীভাবে ঘটনা ঘটিয়েছে তা নিশ্চিত নয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, চেতনানাশক ওষুধ দিয়ে চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে। দুষ্কৃতকারীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের জন্য কাজ চলছে এবং ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত