Ajker Patrika

নেত্রকোনায় শিশুকে লাঠি দিয়ে পেটালেন ইউএনও, ভিডিও ভাইরাল

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ আগস্ট ২০২৫, ১৮: ৩৮
শিশুকে লাঠি দিয়ে পেটাচ্ছেন ইউএনও। ছবি: ভিডিও থেকে
শিশুকে লাঠি দিয়ে পেটাচ্ছেন ইউএনও। ছবি: ভিডিও থেকে

নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রুয়েল সাংমা লাঠি দিয়ে এক শিশুকে পেটানোর ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

যদিও ঘটনাটি আরও পাঁচ মাস আগের বলে জানা গেছে। এদিকে এ ঘটনায় গত রোববার আদালতে মামলাও হয়েছে। তবে মামলার বাদী ওই ভুক্তভোগী শিশুর কাছের কেউ নন, অন্য এক ব্যক্তি। ভুক্তভোগী ওই শিশু (১৭) উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামের বাসিন্দা।

মারধরের অভিযোগে উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রায়হান কবির গত রোববার নেত্রকোনার আটপাড়া আমলি আদালতে মামলাটি করেন।

মামলাটি আমলে নিয়ে আদালত ইতিমধ্যে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।

শিশুকে লাঠি দিয়ে পেটাচ্ছেন ইউএনও। ছবি: ভিডিও থেকে
শিশুকে লাঠি দিয়ে পেটাচ্ছেন ইউএনও। ছবি: ভিডিও থেকে

মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ মার্চ ঈদুল ফিতরের আগে বানিয়াজান ইউনিয়ন পরিষদে ২ হাজার ৩৭ জন উপকারভোগীকে ১০ কেজি করে ভিজিএফের চাল বিতরণ করা হচ্ছিল। সে সময় লাইনে বিশৃঙ্খলা দেখা দিলে ইউএনও ঘটনাস্থলে যান এবং পুলিশের কাছ থেকে লাঠি নিয়ে শিশুকে পেটান।

বাদীর আইনজীবী মিজানুর রহমান জানান, মামলার সঙ্গে মারধরের ভিডিও সংযুক্ত করা হয়েছে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার বাদী রায়হান কবির বলেন, ‘আমি সেদিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম। ইউএনও পুলিশ নিয়ে এসে শিশুটিকে লাঠি দিয়ে পেটান। আমরা থামানোর চেষ্টা করলেও তিনি থামেননি। একজন সরকারি কর্মকর্তার এ ধরনের আচরণ শোভন নয়।’

ভুক্তভোগী শিশু জানায়, ‘আমি সেদিন চাল নিতে গিয়ে ভিড়ের কারণে বাঁশের বেড়া ভেঙে পড়ে যাই। তখন ইউএনও এসে আমাকে মারধর করেন ও বিকেল পর্যন্ত আটকে রাখেন। পরে আমার চাচি গিয়ে ক্ষমা চেয়ে নিয়ে আসেন।’

উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ মার্চ ঈদুল ফিতরের আগে বানিয়াজান ইউনিয়ন পরিষদে উপকারভোগীদের ভিজিএফের চাল বিতরণ করা হচ্ছিল। এ সময় কার আগে কে চাল নেবে—এ নিয়ে কাড়াকাড়ি শুরু হয়। একপর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান ইউএনও রুয়েল সাংমা। তখন তাঁকেও ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় ওই শিশু। তখন পরিস্থিতি সামাল দিতে তিনি লাঠি নিয়ে শিশুকে আঘাত করেন। এতে অন্যরা ভয় পেয়ে শান্ত হয়। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার চাল বিতরণ শুরু হয়।

ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়ার ঘটনায় ইউএনও শিশুকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা দিতে চান। তবে তার আত্মীয়রা এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চাইলে শিশুকে ক্ষমা করেন ইউএনও।

পাশাপাশি ওই ঘটনায় নিজের অপরাধ স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে ইউএনওর কাছ মুচলেকা দেয় শিশুটি।

যোগাযোগ করা হলে ইউএনও রুয়েল সাংমা বলেন, ‘ওখানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল। কয়েকজন চাল লুটের চেষ্টা করছিল, তাই আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য ব্যবস্থা নিয়েছি। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’

শিশুকে লাঠি দিয়ে পেটাচ্ছেন ইউএনও। ছবি: ভিডিও থেকে
শিশুকে লাঠি দিয়ে পেটাচ্ছেন ইউএনও। ছবি: ভিডিও থেকে

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনাটি গত মার্চ মাসের। ভিজিএফের চাল বিতরণে অনিয়ম হচ্ছিল। তখন ইউএনওর কাছে অভিযোগ দেয়। ইউএনও গিয়ে দেখেন, কিছু ছেলে চাল লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। এটা দেখে তিনি নিজের টেম্পার ধরে রাখতে পারেননি। অবশ্যই তিনি অন্যায় করেছেন, তিনি লাঠি ধরতে পারেন না। এটা ঠিক হয়নি।

তিনি আরও বলেন, এটার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ছেলেটি ক্ষমা প্রার্থনার মুচলেকা দিয়েছে। সেটা আছে। মার্চ মাসের ঘটনা আগস্ট মাসে এসে কথা হচ্ছে। এখন কেন? সেটা তো মার্চ মাসেই হতে পারত।

জেলা প্রশাসক বলেন, ‘ওই ইউনিয়নের সচিবকে বিভিন্ন অভিযোগে বদলি করা হয়। পরে ওই সচিব পুরোনো জিনিসটা সামনে নিয়ে আসেন। গত সপ্তাহে তাঁরা ইউএনওর বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল মামলা করেছেন রায়হান নামের একজনকে দিয়ে। সাক্ষী করা হয়েছে শিশুটিকে। যাই হোক, তারপরও আমরা এটাকে (ইউএনওর মারধর) সমর্থন করছি না। এ ঘটনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। ইউএনও অন্যায় করেছেন। কিন্তু ওখানে অনিয়মও (চাল বিতরণে) হয়েছে। সব মিলিয়ে বিষয়টি ভালো হয়নি। বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পানিতে ডুবে প্রাণ গেল মামা-ভাগনের

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে পুকুরে ডুবে শাহবাব মন্ডল (আড়াই বছর) ও আবু তোহা মন্ডল (৩) নামের দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের যাদুরচর নতুন গ্রাম এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

শাহবাব মন্ডল উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের ধনারচর নতুন গ্রামের শাহজাহান মন্ডলের ছেলে এবং আবু তোহা মন্ডল একই গ্রা‌মের আবু তালেবের ছেলে। এই দুই শিশু সম্পর্কে মামা-ভাগনে।

পরিবারের বরাত দিয়ে যাদুরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সরবেশ আলী জানান, বুধবার সকালে ওই দুই শিশু তালেব মন্ডলের বাড়িতে খেলা করছিল। এ সময় সবার অজান্তে তারা বাড়ির পা‌শে পুকুরের পানিতে পড়ে যায়। স্বজনেরা পুকুর থে‌কে দুই শিশু‌কে উদ্ধার করে হাসপাতালে নি‌য়ে যান। দা‌য়িত্বরত চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।

খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক একই এলাকার বাসিন্দা ও কুড়িগ্রাম-৪ আসনের বিএনপির মনোনীত সংসদ সদস‌্য প্রার্থী আজিজুর রহমান ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তি‌নি শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।

রৌমারী থানার উপপ‌রিদর্শক শাহ‌নেওয়াজ হো‌সেন ব‌লেন, খবর পে‌য়ে ঘটনাস্থ‌লে পু‌লিশ পাঠা‌নো হ‌য়ে‌ছে। সহকারী ক‌মিশনার (ভূ‌মি) ঘটনাস্থ‌লে গি‌য়ে‌ছেন। দুই শিশুর মৃত‌্যুর ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনি ব‌্যবস্থা নেওয়া হ‌বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ১৩
নিহত লায়লা আফরোজ ও নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ। ছবি: সংগৃহীত
নিহত লায়লা আফরোজ ও নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ। ছবি: সংগৃহীত

‎রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যার ঘটনায় গৃহকর্মী আয়েশাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার দুপুরে ঝালকাঠি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

‎গ্রেপ্তারের বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন তেজগাঁও বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন।

‎মামুন বলেন, গৃহকর্মী আয়েশাকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঝালকাঠি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গত সোমবার সকালে শাহজাহান রোডের ১৪ তলা একটি আবাসিক ভবনের সপ্তম তলায় লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তাঁর মেয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে (১৫) ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।

মা-মেয়ে হত্যায় অভিযুক্ত গৃহকর্মী আয়েশা। ছবি: আজকের পত্রিকা
মা-মেয়ে হত্যায় অভিযুক্ত গৃহকর্মী আয়েশা। ছবি: আজকের পত্রিকা

গতকাল তাঁদের মরদেহ নাটোরে দাফন করা হয়েছে। মামলার এজাহারে বাসা থেকে মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র খোয়া যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।

ভবনের ভেতরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, হত্যাকাণ্ডের পর এক নারী স্কুলড্রেস পরে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। চার দিন আগে আয়েশা পরিচয় দিয়ে ওই বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেওয়া তরুণী (২০) এই জোড়া খুনে জড়িত বলে সন্দেহ স্বজনদের। ঘটনার পর থেকে ওই তরুণী পলাতক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি 
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে মজিরুলের নেতৃত্বে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে মজিরুলের নেতৃত্বে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

জীবন আছে যার, তার মৃত্যু অনিবার্য। মৃত্যুর পর মানুষের শেষ ঠিকানা কবর। মৃতদেহ গোসল করিয়ে কাফন পরানো হয়, জানাজা শেষে তাকে শায়িত করা হয় চিরনিদ্রার ঘরে। এই কবর খোঁড়ার দায়িত্বটি গ্রামের কিছু মানুষ বহু বছর ধরে স্বেচ্ছায়, বিনা পারিশ্রমিকে পালন করে আসছেন, যাঁরা সবার কাছে ‘গোরখোদক’ নামে পরিচিত। আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় তাঁরা করে থাকেন এই কাজ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গোরখোদকেরা কোনো পারিশ্রমিক নেন না। গ্রামের যে কেউ মারা যাক, নিজেদের ব্যস্ততা ফেলে তাঁরা ছুটে আসেন কবর খুঁড়তে। তাঁদের এই মানবিক কাজের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে গ্রামের লোকেরা দোয়া করেন—আল্লাহ যেন তাদের সুস্থ ও ভালো রাখেন।

দেবীপুর গ্রামের বাসিন্দা গোরখোদক মজিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ৫৫ বছর ধরে কবর খুঁড়ছি। যত দিন সুস্থ থাকব, এই কাজ চালিয়ে যাব। আমাদের গ্রাম ছাড়াও অন্য গ্রাম থেকে কেউ ডাকলে সেখানেও যাই। ছোটবেলায় ওস্তাদের কাছে ডালি ধরেই শিখেছি। গরিব মানুষ, মাঠে কাজ করি; কিন্তু কেউ মারা গেলে দ্বিধা করি না—এই কাজ আমার নেশায় পরিণত হয়েছে।’

মজিরুল আরও জানান, এখন তিনি তরুণদেরও এই কাজ শেখাচ্ছেন।

গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

গোরখোদক শাকের আলী বলেন, ‘আমরা নিঃস্বার্থভাবে কাজ করি। কখনো কোনো টাকা নিই না। যেখানেই থাকি, গ্রামের কারও মৃত্যুর সংবাদ শুনলে দ্রুত কবর খুঁড়তে চলে আসি।’

গোরখোদক ফুয়াদ হোসেন বলেন, ‘অন্য গ্রাম থেকে ডাক এলেও আমরা যাই। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই করি এই কাজ। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’

স্থানীয় বাসিন্দা শাজাহান আলী বলেন, ‘কবর খোঁড়া বড় দায়িত্বের কাজ। গ্রামের এসব মানুষ খবর পেলেই দৌড়ে আসে। আমরা তাদের জন্য দোয়া করি।’

মাওলানা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘মৃত ব্যক্তির জন্য কবর খোঁড়া নিঃসন্দেহে সওয়াবের কাজ। হাদিসে এসেছে—যাঁরা কবর খোঁড়েন, আল্লাহ তাদের জন্য জান্নাতে ঘর নির্মাণ করবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে কারখানার ফটকের সামনে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকেরা। আন্দোলনের মুখে কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রধান ফটক তালাবদ্ধ করে সটকে পড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে শিল্প ও থানা-পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসেছেন। আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের সাইটালিয়া গ্রামে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানায় এই ঘটনা ঘটে।

কারখানার নারী শ্রমিক মিনারা আক্তার বলেন, ‘অক্টোবর ও নভেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করে নাই। এক মাসের বেতন না পেলে আমাদের চলা খুবই কঠিন হয়। আমাদের নাওয়া-খাওয়া বন্ধ হয়। আর সেখানে কারখানা কর্তৃপক্ষ দুই মাসের বেতনভাতা বকেয়া রেখেছে। আজ সকালে শ্রমিকেরা জড়ো হলে তারা পালিয়ে যায়।’

মিন্টু নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘এই কারখানায় আমরা তিন বছর ধরে চাকরি করছি। আমাদের বেতনের বাইরে কোনো সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে না। তবু পেটের দায়ে চাকরি করি। দুই মাসের বেতন বকেয়া। আমাদের তো পেট আছে, সন্তান-সংসার আছে। এক মাস দোকান বাকি পরিশোধ করতে না পারলে পরের মাসে আর দোকানি বাকি দেয় না। আমরা কী অবস্থায় আছি, একবার ভাবুন। বেতন পরিশোধ না করে তারা পালিয়ে গেছে।’

আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

মেহেদী হাসান বলেন, ‘এত দিন ধরে ঋণ করে বলে-কয়ে দোকান থেকে বাকি নিয়ে চলছি। আর পারছি না। এখন দোকান বাকি দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। অক্টোবর মাসের বকেয়া বেতন নিয়ে কমপক্ষে ১০টি তারিখ দিছে। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ বেতন পরিশোধ করেনি। শেষে আজ বেতন পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু তারা কারখানা ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে গেছে।’

কারখানার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. বুলবুল হাসান বলেন, ‘ব্যাংকের সমস্যার কারণে বেতন-ভাতা পরিশোধ করা যাচ্ছে না। আশা করি, আজকের মধ্যে নভেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করতে পারব।’ বিনা নোটিশে কারখানার ফটক কেন তালাবদ্ধ? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমি বলতে পারব না।’

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাছির আহমদ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত