Ajker Patrika

কেমন আছেন কবি আবু বক্কর সিদ্দিক?

রায়পুরা (নরসিংদী) হারুনুর রশিদ
আপডেট : ০৬ অক্টোবর ২০২১, ১৪: ১৮
কেমন আছেন কবি আবু বক্কর সিদ্দিক?

ভালো নেই বিটিভির তালিকাভুক্ত গীতিকার ও কবি আবু বক্কর সিদ্দিক। নরসীংদীর এই কবির বিপুল রচনা অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে। নিজের লেখা কবিতা প্রকাশের জন্য জনে জনে ধরনা দিয়ে এখন ক্লান্ত তিনি। 

নরসিংদীর রায়পুরায় ১৯৫৫ সালের ১ জানুয়ারি জন্ম আবু বক্কর সিদ্দিকের। এ পর্যন্ত তাঁর লেখা গজল, গান, লোকগীতি, বিচ্ছেদী, মুর্শীদি, গজল, হামদ-নাত, গীতি-কবিতার সংখ্যা প্রায় কয়েক হাজার। সুরকার হিসেবেও খ্যাতি আছে। তাঁর লেখা গান ও গজলে কণ্ঠ দিয়ে খ্যাতি অর্জন করেছেন মৌলভি তোফাজ্জল হোসেন ভৈরবী, মাওলানা মোজাম্মেল হক, ফরিদা পারভীন, মনির, মোস্তফা প্রমুখ। 

কবি আবু বক্কর সিদ্দিকের লেখা গান ও গজলে কণ্ঠ দিয়ে খ্যাতি অর্জন করেছেন অনেক শিল্পীজীবনের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত দারিদ্র্য থেকে মুক্তি পাননি কখনো। কিন্তু এই দারিদ্র্য তাঁর মননে দারিদ্র্য আনতে পারেনি কখনো। ছোটবেলা থেকেই তিনি নিয়মিত পড়াশোনার পাশাপাশি লেখালেখিতে ছিলেন পারদর্শী। গ্রামের পুরোনো ব্রহ্মপুত্র নদীর পাড়ে নির্জনে বসে আপন মনে তিনি কবিতা লিখতেন। বন্ধুরা খুঁজে না পেলে নিশ্চিন্তে ব্রহ্মপুত্র নদীর পাড়ে চলে যেতেন। কারণ, সেখানেই বেশি পাওয়া যেত তাঁকে। ১৯৭০ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজে পড়ার সময়েই আশুগঞ্জ বিদ্যুৎ পরিকল্পনা রচনা প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক পান। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করতে গিয়ে আহত হন। এরপরও থেমে থাকেনি তাঁর কলম। ২০০৫ সালে তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) তালিকাভুক্ত গীতিকার হন। 

ছোটবেলা থেকেই কবি আবু বক্কর সিদ্দিক পড়াশোনার পাশাপাশি লেখালেখিতে ছিলেন পারদর্শীআবু বক্কর সিদ্দিকের লেখা ৩৫টি গজল নিয়ে ২০১০ সালে প্রকাশিত হয় ‘নবীর প্রেমে পাগল’ নামের একটি অ্যালবাম। তাঁর প্রকাশিত অডিওর সংখ্যা ২৩৫ টি, সিডির সংখ্যা ১৮ টি। আর অপ্রকাশিত পাণ্ডুলিপির সংখ্যা শতাধিক। প্রকাশের পথে রয়েছে বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর নগর কাব্য গ্রন্থ। কিন্তু এই লেখাগুলো প্রকাশের জন্য তাঁকে রীতিমতো গলদঘর্ম হতে হচ্ছে। পাণ্ডুলিপিগুলো অযত্নে-অবহেলায় পড়ে থেকে এখন নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। অথচ আবু বক্কর সিদ্দিকের লেখনীতে মুগ্ধ হয়ে জাতীয় পদকপ্রাপ্ত হাবিবুল্লাহ পাঠান ‘নরসিংদীর লোক-কবি’ বইয়ে তাঁর (আবু বক্কর সিদ্দিক) কর্মময় জীবন নিয়ে লিখেছেন। 

অভাব-অনটনের মধ্য দিয়ে এখন দিন কাটছে আবু বক্কর সিদ্দিকের। স্ত্রী, চার ছেলে ও দুই মেয়ে নিয়ে তাঁর পরিবার। রায়পুরা উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর নগর গ্রামে (রামনগর) কবি আবু বক্কর সিদ্দিকের ঘরে ঢুকতেই দেখা যায়, মেঝেতে বসেই খাতায় লিখছেন তিনি। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, 'অসংখ্য অপ্রকাশিত গান, কবিতা, গজল, কাব্যগ্রন্থ ভাঙা ঘরে অযত্নে-অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে। টাকার অভাবে আমি এগুলো প্রকাশ করতে পারছি না। সর্বশেষ বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান কাব্যগ্রন্থ বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের স্ত্রী মিলি রহমান এক প্রকাশকের কাছে দিয়েছিলেন। মিলি ভাবি দেশের বাইরে থাকায় আমার বইটি প্রকাশক আটকে দেন। তিনি (প্রকাশক) আমার কাছ থেকে টাকা চাইছেন। এই টাকা আমি কী করে দিব? আমি তো নিজেই চলতে পারছি না।’ 

ওই গ্রামের বাসিন্দা অলি মাহমুদ বলেন, ‘আবু বক্কর সিদ্দিকের চমৎকার লেখনীতে মুগ্ধ হয়ে যাই। এমন কীর্তিমান লেখকের মৃত্যুর পর আমরা হয়তো তাঁর মূল্যটা বুঝতে পারব।’ 

কবি আবু বক্কর সিদ্দিকের প্রকাশিত অডিওর সংখ্যা ২৩৫টি, সিডির সংখ্যা ১৮টিআরেক স্থানীয় বাসিন্দা জিল্লুর রহমান বলেন, আবু বক্কর সিদ্দিক রচিত গজল গেয়ে মৌলভি তোফাজ্জল ভৈরবী সরা দেশে জনপ্রিয় হয়েছেন। অনেক বড় বড় গুণী শিল্পী তাঁর লেখা গানে কণ্ঠ দিয়ে অনেক সুনাম কুড়িয়েছেন। অথচ আবু বক্কর সিদ্দিক পড়ে রইলেন দুঃখ-দুর্দশার মাঝে। তিনি খুবই অসহায় জীবনযাপন করছেন। এমন গুণীজনকে কেউ ভালো করে চিনতেও পারেনি। টাকার অভাবে তাঁর বইগুলো আজও অপ্রকাশিত।’

 

 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুমেক হাসপাতালে দালাল চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান, ১০ জনের কারাদণ্ড

 কুমিল্লা প্রতিনিধি 
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দালাল চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দালাল চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দালাল চক্রের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান চালিয়েছে জেলা প্রশাসন ও র‍্যাব। অভিযানে দালালি কার্যক্রমে সরাসরি সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়ে ১০ জনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ২০ দিন করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

আজ সোমবার দুপুর ১২টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লা এবং জেলা প্রশাসন এই অভিযান চালায়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নওরোজ কোরাইশি দৃপ্ত। অভিযানে হাসপাতাল এলাকার দোকান, ওষুধের কাউন্টার, টেস্ট সেন্টার ও গেটের পাশ ঘিরে তল্লাশি চালানো হয়।

অভিযানে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন কুমিল্লা সদর উপজেলার কুচাইতলি এলাকার মো. সোহেল (৩০), মো. তাজুল ইসলাম, মো. নাছের (৩৬) ও মো. ইমন (২১), তেতৌয়ারা এলাকার মাহবুবুর রহমান (২৮), চরপাত্তি এলাকার মো. জাকির (৪৩), চাপাপুর গ্রামের মাহমুদ (৪০), চৌদ্দগ্রাম উপজেলার চিওড়া এলাকার মো. আলাদিন, সদর দক্ষিণ উপজেলার রাজাপাড়া এলাকার মো. অপু (৩৪) এবং ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার উত্তর আজিজ ফাজিলপুর এলাকার আব্দুল আজিজ।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নওরোজ কোরাইশি দৃপ্ত বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দালাল চক্র সক্রিয় ছিল। র‍্যাবের সহায়তায় অভিযান চালিয়ে জড়িত ব্যক্তিদের আটক করা হয়েছে। হাসপাতাল প্রাঙ্গণে দালালদের কোনো স্থান নেই। এ ধরনের অভিযান নিয়মিত চলবে। জেলা প্রশাসন স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন ও রোগী সুরক্ষার স্বার্থে হাসপাতালের ভেতর ও বাইরে নিয়মিত তদারকি করবে।

র‍্যাব-১১, সিপিসি-২ কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম বলেন, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকায় দালাল চক্র এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, ওয়ার্ডবয় থেকে শুরু করে অ্যাম্বুলেন্সচালক পর্যন্ত কেউ কেউ এ চক্রের প্রভাবে ছিল। রোগীরা চিকিৎসাসেবা নিতে এসে বিভ্রান্ত হচ্ছেন, আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এসব অনিয়ম প্রতিরোধে র‍্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, ‘রোগী ও তাঁদের স্বজনদের সঠিক সেবা নিশ্চিত করতে আমরা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করছি। হাসপাতাল এলাকায় দালালদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে এই অভিযান কেবল শুরু, ভবিষ্যতে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

অভিযানে দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের কারাদণ্ড কার্যকরের জন্য কুমিল্লা জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে হাসপাতালের ভেতর ও বাইরে দালালবিরোধী ব্যানার ও সচেতনতামূলক নোটিশ টানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জুলাই নিয়ে কাউকে ব্যবসা করতে দেব না: ছাত্রশিবির সভাপতি

রংপুর প্রতিনিধি
রংপুর কারমাইকেল কলেজে শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। ছবি: আজকের পত্রিকা
রংপুর কারমাইকেল কলেজে শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, ‘আমরা এখনো লক্ষ করছি, জুলাইকে ব্যবহার করে একটা শ্রেণি তাদের নিজেদের আখের গোছানো, নিজেদের পকেট ভারী করা, নিজেদের সম্পদের পাহাড় গড়ার নেশায় মত্ত হয়েছে। কিন্তু আমরা এই প্রজন্ম বিশ্বাস করি, আমরা বেঁচে থাকতে, আবু সাঈদের প্রজন্ম বেঁচে থাকতে কাউকে জুলাই নিয়ে ব্যবসা করতে দেব না।’

আজ সোমবার দুপুরে রংপুরের কারমাইকেল কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি বলেন, ‘আবু সাঈদের যে স্বপ্ন, আবু সাঈদের পিতার যে স্বপ্ন, প্রত্যেক শহীদ পরিবারের যে স্বপ্ন, সেই স্বপ্ন আমরাও আমাদের জীবন দিয়ে রক্ষা করব ইনশা আল্লাহ। এখনো যদি তুমি শহীদ পরিবারের কাছে যাও, তাদের কান্নাগুলো এখনো থামেনি। শহীদ পরিবারের মায়েরা এখনো কান্না করেন। এখনো তাঁদের সন্তানের জন্য তাঁরা আহাজারি করছেন।’

জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘প্রয়োজনে আমরা আবার আবু সাঈদেরা জেগে উঠব। আমরা প্রত্যেকেই শহীদের প্রজন্ম হিসেবে আবার জেগে উঠব, দাঁড়িয়ে যাব। কিন্তু এই সমাজে কোনো ধরনের জুলুমতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হতে দেব না। নতুন কোনো ফ্যাসিবাদকে আমরা এখানে কায়েম হতে দেব না।’

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্যাম্পাস রাজনীতি নিয়ে জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রতিটা ক্যাম্পাসে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতির জায়গা থেকে আমি ঘোষণা দিচ্ছি, কোনো হল দখলের রাজনীতি কোনো ক্যাম্পাসে চলবে না। কোনো ধরনের ফাও খাওয়া, ক্যানটিনগুলোতে ফাও খেয়ে খেয়ে অন্যদের ওপর সেটা চাপিয়ে দেওয়া, বোঝা চাপিয়ে দেওয়া—এই রাজনীতি বাংলাদেশে আর চলবে না। কাউকে গোলামতন্ত্রের মধ্য দিয়ে নিজের মিছিলে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাধ্য করা হবে—এ ধরনের রাজনীতি কোনো ক্যাম্পাসে চলবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় দিনে হুমকি, রাতে হামলা

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি 
যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় স্কুলের নৈশপ্রহরীর ওপর হামলার ঘটনায় মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা
যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় স্কুলের নৈশপ্রহরীর ওপর হামলার ঘটনায় মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা

পাবনার ঈশ্বরদীতে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় স্কুলের নৈশপ্রহরীর ওপর হামলা চালিয়েছে একদল বখাটে। এ ঘটনার প্রতিবাদে পাবনার ঈশ্বরদীতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অংশগ্রহণে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ সোমবার দুপুরে উপজেলার ছলিমপুরে মানিকনগর উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি হয়। এতে শিক্ষক-কর্মচারী, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী অংশ নেয়। বিক্ষোভ থেকে হামলার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানানো হয়। এ সময় বক্তব্য দেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক নূর তরিকুল ইসলাম, সহকারী প্রধান শিক্ষক ওয়াসিম উদ্দিন, স্থানীয় বিএনপি নেতা আল্লেক প্রামাণিক, আলমগীর হোসেন, মোস্তাফা জামান নয়ন, বাবু মজুমদার প্রমুখ।

জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরে বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের যাতায়াতের সময় স্থানীয় কিছু বখাটে উত্ত্যক্ত করে আসছে। এর ধারাবাহিকতায় গত রোববার বিকেলে স্কুল ছুটির পর কয়েকজন বখাটে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছাত্রীদের অশালীন অঙ্গভঙ্গি করে। তখন স্কুলের নৈশপ্রহরী শিহাব উদ্দিন তাদের বাধা দিলে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি দেয়। পরে রাত ১২টার দিকে স্কুল মাঠে ডিউটিরত অবস্থায় ওই নৈশপ্রহরীর ওপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় বখাটেরা। তাঁর চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে গেলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে আহত শিহাব উদ্দিনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

ঘটনার পর সোমবার সকালে বিষয়টি জানাজানি হলে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। দুপুরে তারা বিদ্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে। এ সময় বক্তারা হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেন, একজন কর্মচারী ছাত্রীদের সম্মান রক্ষা করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন, এটা লজ্জাজনক। দ্রুত জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে হবে।

এদিকে মানববন্ধনের খবর পেয়ে ঈশ্বরদী থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এ সময় প্রধান শিক্ষকসহ শিক্ষক-অভিভাবকদের পক্ষে একটি লিখিত অভিযোগপত্র পুলিশকে দেওয়া হয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নূর তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘নৈশপ্রহরীর ওপর হামলার ঘটনায় আমরা মর্মাহত। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।’ এ বিষয়ে ঈশ্বরদী থানার উপপরিদর্শক বিজন কুমার বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, পরিবারের দাবি হত্যাকাণ্ড

কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে স্বপ্না আক্তার (২৫) নামের এক গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ সোমবার সকালে উপজেলার চরমার্টিন ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কোরবান আলী ব্যাপারী বাড়ি থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। স্বপ্নার ভাইয়ের দাবি, ভগ্নিপতিসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁর বোনকে হত্যা করে বাড়ির টয়লেটে ঝুলিয়ে রেখেছেন। এ ঘটনায় স্বপ্নার স্বামী মাইন উদ্দিনসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন পালিয়েছেন।

মৃত স্বপ্না কোরবান আলী ব্যাপারী বাড়ির মাইন উদ্দিনের স্ত্রী। তিনি নোয়াখালী সুধারাম থানার মাইজচরা এলাকার মুনছুর আহমদের মেয়ে।

জানা গেছে, প্রায় ১০ বছর আগে স্বপ্নার সঙ্গে মাইন উদ্দিনের বিয়ে হয়। এই দম্পতির দুই ছেলে রয়েছে।

‎স্বপ্নার ভাই মো. ইউছুপ বলেন, ‘তিন বছর আগে আমার ভগ্নিপতি মাইন উদ্দিন চাকরি করতে ওমানে যান। দুই মাস আগে ওখানে একটি দুর্ঘটনায় তাঁর পা ভেঙে যায়। পরে তিনি দেশে চলে আসেন। দেশে আসার পর থেকে বোনের সঙ্গে ভগ্নিপতি মাইন উদ্দিনের বনিবনা হচ্ছিল না। ভগ্নিপতি মাইন উদ্দিন ও তাঁর মা-বোনদের সঙ্গে সব সময় বোনের ঝগড়া লেগে থাকত। গতকাল রোববার রাতে বোনের শাশুড়ি ও ননদ আমাকে মোবাইল ফোনে বোনের সঙ্গে ঝগড়ার কথা বলেন। একপর্যায়ে তাঁরা আমার বোনকে মেরে ফেলার হুমকিও দেন। আজ সকালে বোনের শাশুড়ি আমাকে ফোন দিয়ে বলেন—স্বপ্না গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।’

‎হাজিরহাট তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. জাহাঙ্গির আলম বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছি। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের পর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। তবে প্রাথমিক তদন্তে আমরা ধারণা করছি, এটি হত্যা নয়, আত্মহত্যা।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত