Ajker Patrika

আড়াইহাজারে বিএনপি ও যুবদলের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধসহ আহত ৩০

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের খালিয়ারচর পশ্চিমপাড়া গ্রামে আজ শনিবার দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। ছবি: সংগৃহীত
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের খালিয়ারচর পশ্চিমপাড়া গ্রামে আজ শনিবার দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। ছবি: সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র বিএনপি ও যুবদলের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৩০ জন আহত হন। তাঁদের মধ্যে ছয়জনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

উপজেলার কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের খালিয়ারচর পশ্চিমপাড়া গ্রামে আজ শনিবার সকাল ১০টার দিকে এই সংঘর্ষ শুরু হয়ে অন্তত দেড় ঘণ্টা চলে।

নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার মেহেদী ইসলাম বলেন, উভয় পক্ষ আগ্নেয়াস্ত্র, টেঁটা, বল্লম ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি কবির হোসেনে সঙ্গে ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি ফকির জহিরুল ইসলামের অনুসারীদের দ্বন্দ্ব রয়েছে। গত বছরের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দুজনই এলাকায় প্রভাব বিস্তারের জন্য নতুন লোকজনকে দলে ভেড়াতে শুরু করেন। এ নিয়ে ‘ফ্যাসিস্টের দোসরদের পুনর্বাসন চলছে’ অভিযোগ তুলে উভয় পক্ষের অনুসারীরা আগেও একাধিকবার বাগ্‌বিতণ্ডা ও মারামারির ঘটনায় জড়িয়েছেন। সম্প্রতি গ্রামের একটি হত্যা মামলাকে কেন্দ্র করে তাঁদের মধ্যে দ্বন্দ্ব আরও বাড়ে।

গতকাল শুক্রবার বিকেলে জহিরুল ও কবিরের অনুসারীদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়, যা আজ সকালের সংঘর্ষে রূপ নেয়। খালিয়ারচর পশ্চিমপাড়া গ্রামের ফকির বাড়ি জামে মসজিদের সামনে উভয় পক্ষের লোকজন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। এই সময় কয়েকটি গুলির শব্দও শুনতে পেয়েছেন বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান।

আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ২২ জনের নাম জানা গেছে। তাঁরা হলেন খায়ের উদ্দিন (৪২), আব্দুল মতিন (৫০), জোনায়েত মিয়া (২৫), কালু মিয়া (৩৭), খলিলুর রহমান (৪০), আল আমিন (২৫), পশিদ মিয়া, (৫০), মনির হোসেন (৩৫), মজিবুর রহমান (৫০), সালাউদ্দিন মিয়া (৩৫), বিল্লাল হোসেন (৩৫), শুভ মিয়া (২৫), জুনায়েদুর রহমান জুনায়েত (২৫), রাজীব মিয়া (১৫), আহাদ মিয়া (১৮), তামিম মিয়া (১৪), আব্দুর রহিম (৪৫), আলমগীর হোসেন (৪২), স্বপন মিয়া (৪০), আমির আলী (৬০), জমির আলী (৫০) ও রাফি মিয়া (২৪)। তাঁদের মধ্যে খায়ের, মতিন, জোনায়েত, কালু, খলিলুর ও আল আমিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। অন্যদের আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়।

এদিকে, বিএনপি ও যুবদলের দুই নেতার অনুসারীদের মধ্যে এই সংঘর্ষের পর কালাপাহাড়িয়ার ওই গ্রামে উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় লোকজন পুনরায় সংঘর্ষের আতঙ্কে রয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি ফকির জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘হত্যা মামলার আসামিদের প্রশ্রয় দিচ্ছেন কবিরের লোকজন। তাঁরা মামলায় জামিন না নিয়েই এলাকায় ঘোরাফেরা করলে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁদের আটক করতে যান। এ সময় এলাকাবাসীর ওপর হামলা করে কবিরের লোকজন। এলাকাবাসী তখন প্রতিরোধ করে।’

অভিযোগ অস্বীকার করে কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি কবির হোসেন বলেন, ‘কোনো ধরনের উসকানি ছাড়াই মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে আমার অনুসারী লোকজনের ওপর হামলা করেন জহিরুলের লোকজন। হামলায় আমাদের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।’

জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার মেহেদী ইসলাম বলেন, ‘সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে গোয়েন্দা নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শাহজালাল বিমানবন্দরে আগুনের সূত্রপাত ও হতাহতের বিষয়ে যা জানা গেল

প্রায় ২৫০ কারখানার পণ্য পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছি: বিজিএমইএ সভাপতি

শাহজালালের কার্গো ভিলেজে কী ধরনের পণ্য থাকে

বিমানবন্দরের মতো কৌশলগত স্থাপনায় আগুন নিরাপত্তা ঘাটতির স্পষ্ট প্রমাণ: জামায়াত আমির

এখনো যথেষ্ট আগুন রয়েছে, তবে নিয়ন্ত্রণে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত