আমানুর রহমান রনি, ঢাকা
ভোলার নির্মাণশ্রমিক মো. রিয়াজ (৩৫)। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার সামনে গুলিতে নিহত হন তিনি। অথচ ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের তিনটি এলাকাকে তাঁর হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থল দেখিয়ে তিনটি আলাদা হত্যা মামলা হয়েছে। তিন মামলায় আসামির সংখ্যা দেড় হাজারের বেশি। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ৩৪টি জেলার রাজনীতিক, প্রবাসী, ব্যবসায়ী, আইনজীবী ও পুলিশ সদস্য।
নিহত শ্রমিকের দরিদ্র পরিবারকে সাহায্য করার কথা বলে তাদের কাছ থেকে সব আসল কাগজপত্র নিয়ে এসব মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। আজকের পত্রিকার অনুসন্ধানে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
রিয়াজের স্ত্রী ফারজানা বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, গত বছরের আন্দোলনের শেষ দিন, ৫ আগস্ট সকালে তাঁর স্বামী যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা এলাকার বাসা থেকে বের হন। বেলা ১১টার দিকে যাত্রাবাড়ী থানার গেটের সামনে গুলি খেয়ে পড়ে ছিলেন রিয়াজ। কয়েক ঘণ্টা পর তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হয়ে তাঁর লাশ ভোলায় নিয়ে দাফন করা হয়।
ভোলায় রিয়াজের পরিবার যখন শোকে বিমূঢ়, তখন এ হত্যা নিয়ে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে দুটি এলাকায় মামলা হয়। প্রথম মামলা হয় ২০২৪ সালের ২৮ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানায়। রিয়াজের স্ত্রী ফারজানা বেগম সেজে একজন এ মামলা করেন। এতে রিয়াজের স্ত্রীর আসল জন্মনিবন্ধন, নিকাহনামা, এনআইডিসহ বিভিন্ন ব্যক্তিগত কাগজপত্র ব্যবহার করা হয়। মামলায় রিয়াজের মৃত্যুর স্থান দেখানো হয় নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসের সামনে। আসামি করা হয় শামীম ওসমানসহ ১৯২ জনকে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ফারজানা বেগম এ মামলা করেননি। তিনি এর খবর জানতেনও না। ফতুল্লা থানার পুলিশ ও আসামিরা তাঁকে মামলার কথা জানিয়েছেন।
ফারজানা বেগম বর্তমানে দুই মেয়েকে নিয়ে ডেমরার মাতুয়াইলে বাবা মো. ফরিদের সঙ্গে এক বাসায় থাকেন। সম্প্রতি সেখানে ফারজানা আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রথম মামলার আসামিরা তাঁকে খুঁজে বের করেন। তিনি তিন আসামিকে নারায়ণগঞ্জ আদালতে গিয়ে জামিন করান। কারণ, নিরপরাধ কেউ তাঁর মৃত স্বামীর জন্য ভুগুক, এটা তিনি চাননি। আদালতে গিয়ে ফারজানা বলেন, স্বামীর মৃত্যুর পর অনেকেই সহায়তার কথা বলে তাঁর কাগজপত্র নিয়েছিলেন। তাঁদেরই কেউ হয়তো মামলাটি করেছেন।
ফতুল্লা থানার মামলায় ফারজানার কাগজপত্র ব্যবহার করলেও অন্য ব্যক্তির একটি মোবাইল নম্বর দেওয়া হয়। আজকের পত্রিকা তথ্যপ্রযুক্তি ও পুলিশের সহায়তায় জানতে পেরেছে মোবাইল নম্বরটি জনৈক সাইফুল ইসলামের এনআইডি দিয়ে নিবন্ধিত। সাইফুলের গ্রামের বাড়ি বরিশালে, থাকেন নারায়ণগঞ্জের বন্দর এলাকায়। আজকের পত্রিকাকে সাইফুল বলেন, এজাহারে তাঁর মোবাইল নম্বরটি কে দিয়েছেন, তিনি তা জানেন না। তিনি কোনো মামলা করেননি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শুভঙ্কর বিশ্বাস বলেন, ‘ঘটনাটি ভুয়া বলে নিশ্চিত হওয়ার পর মামলার তদন্ত আর এগোয়নি। আসামিরা জামিনে আছেন, আমরা হয়তো চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেব।’
রিয়াজের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চলতি বছরের মার্চে ঢাকার সিএমএম আদালতে একটি নালিশি মামলা করেন জাহিদুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি। এই মামলায় রিয়াজকে হত্যার ঘটনাস্থল দেখানো হয় ভাটারা থানার যমুনা ফিউচার পার্কের সামনের সড়ক এলাকা। এ মামলায় রিয়াজের সব আসল কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। বাদী জাহিদুল দাবি করেছেন, তিনি নিহত রিয়াজের ভাই। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রিয়াজের সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পর্ক নেই। মামলায় ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনাসহ ২৮১ জনকে আসামি করা হয়। আদালত মামলাটি ভাটারা থানা-পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দেন। এ মামলায় ৩৪ জেলার শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে, যাঁদের মধ্যে রয়েছেন প্রবাসী, ব্যবসায়ী, আইনজীবী ও পুলিশ কর্মকর্তা। দক্ষিণ কোরিয়াপ্রবাসী ইসমাইল হোসেন এই মামলার ২১৮ নম্বর আসামি। তিনি একমাত্র গ্রেপ্তার হওয়া আসামি।
প্রবাসী ইসমাইল হোসেন আগেই সম্ভাব্য মিথ্যা মামলা থেকে রেহাই পেতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও আইজিপির কাছে আবেদন করেছিলেন। গত ২ ফেব্রুয়ারি তিনি রমনা থানায় জিডিও করেন। এ ছাড়া ডিএমপি কমিশনারের কাছে গত ১৯ মে একটি অভিযোগ দেন ইসমাইলের বড় ভাই খোরশেদ আলম বাবুল। তিনি অভিযোগ করেন, ফরচুন টাওয়ারের ফ্ল্যাট মালিকদের মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরে দুলাল নামে এক ব্যক্তি বিভিন্ন মামলায় তাঁর ভাইয়ের নাম ঢুকিয়ে দিচ্ছেন। এর সঙ্গে জড়িত দালাল হাতকাটা বাহার ও সাদ্দাম।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে ফরচুন টাওয়ারে গিয়ে দুলালকে পাওয়া যায়নি। মোবাইল ফোনে কল করলে তাঁর স্ত্রী রোকসানা আক্তার পলি ধরে বলেন, দুলালের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ বানোয়াট।
রিয়াজের ভাই দাবি করে মামলা করা জাহিদুল ইসলাম নিজের ঠিকানা দিয়েছেন ভাটারা নতুন বাজারের ৯৯১ নম্বর। অনুসন্ধানে জানা যায়, এটি কোনো বাড়ির ঠিকানা নয়, বরং জমির দাগ নম্বর। হাজি আক্কাস আলী নামে এক পুরোনো বাসিন্দাসহ এলাকার কয়েকজন জানান, নতুন বাজারে এমন নম্বরে কোনো নির্দিষ্ট বাড়ি নেই।
জানা গেছে, জাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় অন্তত সাতটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আলোচিত পিএসসির প্রশ্নপত্র ফাঁস, প্রতারণা ও চেক জালিয়াতির মামলা। সিআইডির তদন্তে জানা যায়, দুর্নীতি মামলার আসামি পিএসসির সাবেক গাড়িচালক আবেদ আলীর সহযোগী ছিলেন জাহিদুল।
ভাটারা থানার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আনোয়ার হোসেন বাদী জাহিদুলকে খুঁজে পাননি। আদালতে দেওয়া প্রতিবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, রিয়াজ ভাটারায় নিহত হননি এবং ৫ আগস্ট সেখানে যানওনি। এসআই আনোয়ার বলেন, ‘জাহিদের ঠিকানা মিথ্যা। তাঁকে এখনো খুঁজছি।’
জাহিদের আইনজীবী এম কাওসার আহমেদ বলেন, তিনি নিজেও বাদীকে খুঁজে পাচ্ছেন না।
তবে গ্রামের বাড়ির ঠিকানায় খোঁজ নিয়ে জাহিদের বিষয়ে তথ্য মিলেছে। মামলার নথিতে তাঁর স্থায়ী ঠিকানা ভোলা জেলার শম্ভুপুর ইউনিয়ন। ঠিকানামতো চর কোরালমারা গ্রামে গিয়ে জানা যায়, তিনি এলাকায় ‘জুয়েল’ নামে পরিচিত। স্থানীয় ইউপি মেম্বার মঞ্জু হাওলাদার বলেন, ‘পুলিশ তাঁকে প্রায়ই খুঁজতে আসে। কিন্তু সে বাড়িতে থাকে না।’
স্বামী হত্যার ঘটনায় রিয়াজের স্ত্রী ফারজানা নিজে ঢাকার আদালতে একটি মামলা করেছেন। অভিযোগটি এখনো থানায় নথিভুক্ত হয়নি। আদালত যাত্রাবাড়ী থানাকে ঘটনা যাচাই করে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন। তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মাসুম বিল্লাহ বলেন, মামলার ২১৩ জন আসামির অবস্থান যাচাই শেষে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ফারজানা বেগম দুঃখ করে বলেন, ভুয়া ব্যক্তিরা মামলা করায় তাঁর আসল মামলাই এখন তদন্তাধীন।
এ বিষয়ে ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ ও আইনজীবী এস এম শাহজাহান বলেন, একটি ফৌজদারি ঘটনায় একাধিক মামলা হতে পারে না। ভুয়া মামলা দ্রুত বাতিল করে প্রকৃত মামলাটিরই তদন্ত হওয়া উচিত।
ভোলার নির্মাণশ্রমিক মো. রিয়াজ (৩৫)। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার সামনে গুলিতে নিহত হন তিনি। অথচ ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের তিনটি এলাকাকে তাঁর হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থল দেখিয়ে তিনটি আলাদা হত্যা মামলা হয়েছে। তিন মামলায় আসামির সংখ্যা দেড় হাজারের বেশি। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ৩৪টি জেলার রাজনীতিক, প্রবাসী, ব্যবসায়ী, আইনজীবী ও পুলিশ সদস্য।
নিহত শ্রমিকের দরিদ্র পরিবারকে সাহায্য করার কথা বলে তাদের কাছ থেকে সব আসল কাগজপত্র নিয়ে এসব মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। আজকের পত্রিকার অনুসন্ধানে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
রিয়াজের স্ত্রী ফারজানা বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, গত বছরের আন্দোলনের শেষ দিন, ৫ আগস্ট সকালে তাঁর স্বামী যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা এলাকার বাসা থেকে বের হন। বেলা ১১টার দিকে যাত্রাবাড়ী থানার গেটের সামনে গুলি খেয়ে পড়ে ছিলেন রিয়াজ। কয়েক ঘণ্টা পর তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হয়ে তাঁর লাশ ভোলায় নিয়ে দাফন করা হয়।
ভোলায় রিয়াজের পরিবার যখন শোকে বিমূঢ়, তখন এ হত্যা নিয়ে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে দুটি এলাকায় মামলা হয়। প্রথম মামলা হয় ২০২৪ সালের ২৮ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানায়। রিয়াজের স্ত্রী ফারজানা বেগম সেজে একজন এ মামলা করেন। এতে রিয়াজের স্ত্রীর আসল জন্মনিবন্ধন, নিকাহনামা, এনআইডিসহ বিভিন্ন ব্যক্তিগত কাগজপত্র ব্যবহার করা হয়। মামলায় রিয়াজের মৃত্যুর স্থান দেখানো হয় নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসের সামনে। আসামি করা হয় শামীম ওসমানসহ ১৯২ জনকে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ফারজানা বেগম এ মামলা করেননি। তিনি এর খবর জানতেনও না। ফতুল্লা থানার পুলিশ ও আসামিরা তাঁকে মামলার কথা জানিয়েছেন।
ফারজানা বেগম বর্তমানে দুই মেয়েকে নিয়ে ডেমরার মাতুয়াইলে বাবা মো. ফরিদের সঙ্গে এক বাসায় থাকেন। সম্প্রতি সেখানে ফারজানা আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রথম মামলার আসামিরা তাঁকে খুঁজে বের করেন। তিনি তিন আসামিকে নারায়ণগঞ্জ আদালতে গিয়ে জামিন করান। কারণ, নিরপরাধ কেউ তাঁর মৃত স্বামীর জন্য ভুগুক, এটা তিনি চাননি। আদালতে গিয়ে ফারজানা বলেন, স্বামীর মৃত্যুর পর অনেকেই সহায়তার কথা বলে তাঁর কাগজপত্র নিয়েছিলেন। তাঁদেরই কেউ হয়তো মামলাটি করেছেন।
ফতুল্লা থানার মামলায় ফারজানার কাগজপত্র ব্যবহার করলেও অন্য ব্যক্তির একটি মোবাইল নম্বর দেওয়া হয়। আজকের পত্রিকা তথ্যপ্রযুক্তি ও পুলিশের সহায়তায় জানতে পেরেছে মোবাইল নম্বরটি জনৈক সাইফুল ইসলামের এনআইডি দিয়ে নিবন্ধিত। সাইফুলের গ্রামের বাড়ি বরিশালে, থাকেন নারায়ণগঞ্জের বন্দর এলাকায়। আজকের পত্রিকাকে সাইফুল বলেন, এজাহারে তাঁর মোবাইল নম্বরটি কে দিয়েছেন, তিনি তা জানেন না। তিনি কোনো মামলা করেননি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শুভঙ্কর বিশ্বাস বলেন, ‘ঘটনাটি ভুয়া বলে নিশ্চিত হওয়ার পর মামলার তদন্ত আর এগোয়নি। আসামিরা জামিনে আছেন, আমরা হয়তো চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেব।’
রিয়াজের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চলতি বছরের মার্চে ঢাকার সিএমএম আদালতে একটি নালিশি মামলা করেন জাহিদুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি। এই মামলায় রিয়াজকে হত্যার ঘটনাস্থল দেখানো হয় ভাটারা থানার যমুনা ফিউচার পার্কের সামনের সড়ক এলাকা। এ মামলায় রিয়াজের সব আসল কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। বাদী জাহিদুল দাবি করেছেন, তিনি নিহত রিয়াজের ভাই। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রিয়াজের সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পর্ক নেই। মামলায় ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনাসহ ২৮১ জনকে আসামি করা হয়। আদালত মামলাটি ভাটারা থানা-পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দেন। এ মামলায় ৩৪ জেলার শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে, যাঁদের মধ্যে রয়েছেন প্রবাসী, ব্যবসায়ী, আইনজীবী ও পুলিশ কর্মকর্তা। দক্ষিণ কোরিয়াপ্রবাসী ইসমাইল হোসেন এই মামলার ২১৮ নম্বর আসামি। তিনি একমাত্র গ্রেপ্তার হওয়া আসামি।
প্রবাসী ইসমাইল হোসেন আগেই সম্ভাব্য মিথ্যা মামলা থেকে রেহাই পেতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও আইজিপির কাছে আবেদন করেছিলেন। গত ২ ফেব্রুয়ারি তিনি রমনা থানায় জিডিও করেন। এ ছাড়া ডিএমপি কমিশনারের কাছে গত ১৯ মে একটি অভিযোগ দেন ইসমাইলের বড় ভাই খোরশেদ আলম বাবুল। তিনি অভিযোগ করেন, ফরচুন টাওয়ারের ফ্ল্যাট মালিকদের মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরে দুলাল নামে এক ব্যক্তি বিভিন্ন মামলায় তাঁর ভাইয়ের নাম ঢুকিয়ে দিচ্ছেন। এর সঙ্গে জড়িত দালাল হাতকাটা বাহার ও সাদ্দাম।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে ফরচুন টাওয়ারে গিয়ে দুলালকে পাওয়া যায়নি। মোবাইল ফোনে কল করলে তাঁর স্ত্রী রোকসানা আক্তার পলি ধরে বলেন, দুলালের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ বানোয়াট।
রিয়াজের ভাই দাবি করে মামলা করা জাহিদুল ইসলাম নিজের ঠিকানা দিয়েছেন ভাটারা নতুন বাজারের ৯৯১ নম্বর। অনুসন্ধানে জানা যায়, এটি কোনো বাড়ির ঠিকানা নয়, বরং জমির দাগ নম্বর। হাজি আক্কাস আলী নামে এক পুরোনো বাসিন্দাসহ এলাকার কয়েকজন জানান, নতুন বাজারে এমন নম্বরে কোনো নির্দিষ্ট বাড়ি নেই।
জানা গেছে, জাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় অন্তত সাতটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আলোচিত পিএসসির প্রশ্নপত্র ফাঁস, প্রতারণা ও চেক জালিয়াতির মামলা। সিআইডির তদন্তে জানা যায়, দুর্নীতি মামলার আসামি পিএসসির সাবেক গাড়িচালক আবেদ আলীর সহযোগী ছিলেন জাহিদুল।
ভাটারা থানার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আনোয়ার হোসেন বাদী জাহিদুলকে খুঁজে পাননি। আদালতে দেওয়া প্রতিবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, রিয়াজ ভাটারায় নিহত হননি এবং ৫ আগস্ট সেখানে যানওনি। এসআই আনোয়ার বলেন, ‘জাহিদের ঠিকানা মিথ্যা। তাঁকে এখনো খুঁজছি।’
জাহিদের আইনজীবী এম কাওসার আহমেদ বলেন, তিনি নিজেও বাদীকে খুঁজে পাচ্ছেন না।
তবে গ্রামের বাড়ির ঠিকানায় খোঁজ নিয়ে জাহিদের বিষয়ে তথ্য মিলেছে। মামলার নথিতে তাঁর স্থায়ী ঠিকানা ভোলা জেলার শম্ভুপুর ইউনিয়ন। ঠিকানামতো চর কোরালমারা গ্রামে গিয়ে জানা যায়, তিনি এলাকায় ‘জুয়েল’ নামে পরিচিত। স্থানীয় ইউপি মেম্বার মঞ্জু হাওলাদার বলেন, ‘পুলিশ তাঁকে প্রায়ই খুঁজতে আসে। কিন্তু সে বাড়িতে থাকে না।’
স্বামী হত্যার ঘটনায় রিয়াজের স্ত্রী ফারজানা নিজে ঢাকার আদালতে একটি মামলা করেছেন। অভিযোগটি এখনো থানায় নথিভুক্ত হয়নি। আদালত যাত্রাবাড়ী থানাকে ঘটনা যাচাই করে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন। তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মাসুম বিল্লাহ বলেন, মামলার ২১৩ জন আসামির অবস্থান যাচাই শেষে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ফারজানা বেগম দুঃখ করে বলেন, ভুয়া ব্যক্তিরা মামলা করায় তাঁর আসল মামলাই এখন তদন্তাধীন।
এ বিষয়ে ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ ও আইনজীবী এস এম শাহজাহান বলেন, একটি ফৌজদারি ঘটনায় একাধিক মামলা হতে পারে না। ভুয়া মামলা দ্রুত বাতিল করে প্রকৃত মামলাটিরই তদন্ত হওয়া উচিত।
আমানুর রহমান রনি, ঢাকা
ভোলার নির্মাণশ্রমিক মো. রিয়াজ (৩৫)। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার সামনে গুলিতে নিহত হন তিনি। অথচ ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের তিনটি এলাকাকে তাঁর হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থল দেখিয়ে তিনটি আলাদা হত্যা মামলা হয়েছে। তিন মামলায় আসামির সংখ্যা দেড় হাজারের বেশি। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ৩৪টি জেলার রাজনীতিক, প্রবাসী, ব্যবসায়ী, আইনজীবী ও পুলিশ সদস্য।
নিহত শ্রমিকের দরিদ্র পরিবারকে সাহায্য করার কথা বলে তাদের কাছ থেকে সব আসল কাগজপত্র নিয়ে এসব মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। আজকের পত্রিকার অনুসন্ধানে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
রিয়াজের স্ত্রী ফারজানা বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, গত বছরের আন্দোলনের শেষ দিন, ৫ আগস্ট সকালে তাঁর স্বামী যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা এলাকার বাসা থেকে বের হন। বেলা ১১টার দিকে যাত্রাবাড়ী থানার গেটের সামনে গুলি খেয়ে পড়ে ছিলেন রিয়াজ। কয়েক ঘণ্টা পর তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হয়ে তাঁর লাশ ভোলায় নিয়ে দাফন করা হয়।
ভোলায় রিয়াজের পরিবার যখন শোকে বিমূঢ়, তখন এ হত্যা নিয়ে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে দুটি এলাকায় মামলা হয়। প্রথম মামলা হয় ২০২৪ সালের ২৮ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানায়। রিয়াজের স্ত্রী ফারজানা বেগম সেজে একজন এ মামলা করেন। এতে রিয়াজের স্ত্রীর আসল জন্মনিবন্ধন, নিকাহনামা, এনআইডিসহ বিভিন্ন ব্যক্তিগত কাগজপত্র ব্যবহার করা হয়। মামলায় রিয়াজের মৃত্যুর স্থান দেখানো হয় নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসের সামনে। আসামি করা হয় শামীম ওসমানসহ ১৯২ জনকে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ফারজানা বেগম এ মামলা করেননি। তিনি এর খবর জানতেনও না। ফতুল্লা থানার পুলিশ ও আসামিরা তাঁকে মামলার কথা জানিয়েছেন।
ফারজানা বেগম বর্তমানে দুই মেয়েকে নিয়ে ডেমরার মাতুয়াইলে বাবা মো. ফরিদের সঙ্গে এক বাসায় থাকেন। সম্প্রতি সেখানে ফারজানা আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রথম মামলার আসামিরা তাঁকে খুঁজে বের করেন। তিনি তিন আসামিকে নারায়ণগঞ্জ আদালতে গিয়ে জামিন করান। কারণ, নিরপরাধ কেউ তাঁর মৃত স্বামীর জন্য ভুগুক, এটা তিনি চাননি। আদালতে গিয়ে ফারজানা বলেন, স্বামীর মৃত্যুর পর অনেকেই সহায়তার কথা বলে তাঁর কাগজপত্র নিয়েছিলেন। তাঁদেরই কেউ হয়তো মামলাটি করেছেন।
ফতুল্লা থানার মামলায় ফারজানার কাগজপত্র ব্যবহার করলেও অন্য ব্যক্তির একটি মোবাইল নম্বর দেওয়া হয়। আজকের পত্রিকা তথ্যপ্রযুক্তি ও পুলিশের সহায়তায় জানতে পেরেছে মোবাইল নম্বরটি জনৈক সাইফুল ইসলামের এনআইডি দিয়ে নিবন্ধিত। সাইফুলের গ্রামের বাড়ি বরিশালে, থাকেন নারায়ণগঞ্জের বন্দর এলাকায়। আজকের পত্রিকাকে সাইফুল বলেন, এজাহারে তাঁর মোবাইল নম্বরটি কে দিয়েছেন, তিনি তা জানেন না। তিনি কোনো মামলা করেননি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শুভঙ্কর বিশ্বাস বলেন, ‘ঘটনাটি ভুয়া বলে নিশ্চিত হওয়ার পর মামলার তদন্ত আর এগোয়নি। আসামিরা জামিনে আছেন, আমরা হয়তো চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেব।’
রিয়াজের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চলতি বছরের মার্চে ঢাকার সিএমএম আদালতে একটি নালিশি মামলা করেন জাহিদুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি। এই মামলায় রিয়াজকে হত্যার ঘটনাস্থল দেখানো হয় ভাটারা থানার যমুনা ফিউচার পার্কের সামনের সড়ক এলাকা। এ মামলায় রিয়াজের সব আসল কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। বাদী জাহিদুল দাবি করেছেন, তিনি নিহত রিয়াজের ভাই। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রিয়াজের সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পর্ক নেই। মামলায় ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনাসহ ২৮১ জনকে আসামি করা হয়। আদালত মামলাটি ভাটারা থানা-পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দেন। এ মামলায় ৩৪ জেলার শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে, যাঁদের মধ্যে রয়েছেন প্রবাসী, ব্যবসায়ী, আইনজীবী ও পুলিশ কর্মকর্তা। দক্ষিণ কোরিয়াপ্রবাসী ইসমাইল হোসেন এই মামলার ২১৮ নম্বর আসামি। তিনি একমাত্র গ্রেপ্তার হওয়া আসামি।
প্রবাসী ইসমাইল হোসেন আগেই সম্ভাব্য মিথ্যা মামলা থেকে রেহাই পেতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও আইজিপির কাছে আবেদন করেছিলেন। গত ২ ফেব্রুয়ারি তিনি রমনা থানায় জিডিও করেন। এ ছাড়া ডিএমপি কমিশনারের কাছে গত ১৯ মে একটি অভিযোগ দেন ইসমাইলের বড় ভাই খোরশেদ আলম বাবুল। তিনি অভিযোগ করেন, ফরচুন টাওয়ারের ফ্ল্যাট মালিকদের মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরে দুলাল নামে এক ব্যক্তি বিভিন্ন মামলায় তাঁর ভাইয়ের নাম ঢুকিয়ে দিচ্ছেন। এর সঙ্গে জড়িত দালাল হাতকাটা বাহার ও সাদ্দাম।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে ফরচুন টাওয়ারে গিয়ে দুলালকে পাওয়া যায়নি। মোবাইল ফোনে কল করলে তাঁর স্ত্রী রোকসানা আক্তার পলি ধরে বলেন, দুলালের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ বানোয়াট।
রিয়াজের ভাই দাবি করে মামলা করা জাহিদুল ইসলাম নিজের ঠিকানা দিয়েছেন ভাটারা নতুন বাজারের ৯৯১ নম্বর। অনুসন্ধানে জানা যায়, এটি কোনো বাড়ির ঠিকানা নয়, বরং জমির দাগ নম্বর। হাজি আক্কাস আলী নামে এক পুরোনো বাসিন্দাসহ এলাকার কয়েকজন জানান, নতুন বাজারে এমন নম্বরে কোনো নির্দিষ্ট বাড়ি নেই।
জানা গেছে, জাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় অন্তত সাতটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আলোচিত পিএসসির প্রশ্নপত্র ফাঁস, প্রতারণা ও চেক জালিয়াতির মামলা। সিআইডির তদন্তে জানা যায়, দুর্নীতি মামলার আসামি পিএসসির সাবেক গাড়িচালক আবেদ আলীর সহযোগী ছিলেন জাহিদুল।
ভাটারা থানার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আনোয়ার হোসেন বাদী জাহিদুলকে খুঁজে পাননি। আদালতে দেওয়া প্রতিবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, রিয়াজ ভাটারায় নিহত হননি এবং ৫ আগস্ট সেখানে যানওনি। এসআই আনোয়ার বলেন, ‘জাহিদের ঠিকানা মিথ্যা। তাঁকে এখনো খুঁজছি।’
জাহিদের আইনজীবী এম কাওসার আহমেদ বলেন, তিনি নিজেও বাদীকে খুঁজে পাচ্ছেন না।
তবে গ্রামের বাড়ির ঠিকানায় খোঁজ নিয়ে জাহিদের বিষয়ে তথ্য মিলেছে। মামলার নথিতে তাঁর স্থায়ী ঠিকানা ভোলা জেলার শম্ভুপুর ইউনিয়ন। ঠিকানামতো চর কোরালমারা গ্রামে গিয়ে জানা যায়, তিনি এলাকায় ‘জুয়েল’ নামে পরিচিত। স্থানীয় ইউপি মেম্বার মঞ্জু হাওলাদার বলেন, ‘পুলিশ তাঁকে প্রায়ই খুঁজতে আসে। কিন্তু সে বাড়িতে থাকে না।’
স্বামী হত্যার ঘটনায় রিয়াজের স্ত্রী ফারজানা নিজে ঢাকার আদালতে একটি মামলা করেছেন। অভিযোগটি এখনো থানায় নথিভুক্ত হয়নি। আদালত যাত্রাবাড়ী থানাকে ঘটনা যাচাই করে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন। তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মাসুম বিল্লাহ বলেন, মামলার ২১৩ জন আসামির অবস্থান যাচাই শেষে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ফারজানা বেগম দুঃখ করে বলেন, ভুয়া ব্যক্তিরা মামলা করায় তাঁর আসল মামলাই এখন তদন্তাধীন।
এ বিষয়ে ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ ও আইনজীবী এস এম শাহজাহান বলেন, একটি ফৌজদারি ঘটনায় একাধিক মামলা হতে পারে না। ভুয়া মামলা দ্রুত বাতিল করে প্রকৃত মামলাটিরই তদন্ত হওয়া উচিত।
ভোলার নির্মাণশ্রমিক মো. রিয়াজ (৩৫)। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার সামনে গুলিতে নিহত হন তিনি। অথচ ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের তিনটি এলাকাকে তাঁর হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থল দেখিয়ে তিনটি আলাদা হত্যা মামলা হয়েছে। তিন মামলায় আসামির সংখ্যা দেড় হাজারের বেশি। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ৩৪টি জেলার রাজনীতিক, প্রবাসী, ব্যবসায়ী, আইনজীবী ও পুলিশ সদস্য।
নিহত শ্রমিকের দরিদ্র পরিবারকে সাহায্য করার কথা বলে তাদের কাছ থেকে সব আসল কাগজপত্র নিয়ে এসব মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। আজকের পত্রিকার অনুসন্ধানে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
রিয়াজের স্ত্রী ফারজানা বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, গত বছরের আন্দোলনের শেষ দিন, ৫ আগস্ট সকালে তাঁর স্বামী যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা এলাকার বাসা থেকে বের হন। বেলা ১১টার দিকে যাত্রাবাড়ী থানার গেটের সামনে গুলি খেয়ে পড়ে ছিলেন রিয়াজ। কয়েক ঘণ্টা পর তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হয়ে তাঁর লাশ ভোলায় নিয়ে দাফন করা হয়।
ভোলায় রিয়াজের পরিবার যখন শোকে বিমূঢ়, তখন এ হত্যা নিয়ে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে দুটি এলাকায় মামলা হয়। প্রথম মামলা হয় ২০২৪ সালের ২৮ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানায়। রিয়াজের স্ত্রী ফারজানা বেগম সেজে একজন এ মামলা করেন। এতে রিয়াজের স্ত্রীর আসল জন্মনিবন্ধন, নিকাহনামা, এনআইডিসহ বিভিন্ন ব্যক্তিগত কাগজপত্র ব্যবহার করা হয়। মামলায় রিয়াজের মৃত্যুর স্থান দেখানো হয় নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসের সামনে। আসামি করা হয় শামীম ওসমানসহ ১৯২ জনকে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ফারজানা বেগম এ মামলা করেননি। তিনি এর খবর জানতেনও না। ফতুল্লা থানার পুলিশ ও আসামিরা তাঁকে মামলার কথা জানিয়েছেন।
ফারজানা বেগম বর্তমানে দুই মেয়েকে নিয়ে ডেমরার মাতুয়াইলে বাবা মো. ফরিদের সঙ্গে এক বাসায় থাকেন। সম্প্রতি সেখানে ফারজানা আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রথম মামলার আসামিরা তাঁকে খুঁজে বের করেন। তিনি তিন আসামিকে নারায়ণগঞ্জ আদালতে গিয়ে জামিন করান। কারণ, নিরপরাধ কেউ তাঁর মৃত স্বামীর জন্য ভুগুক, এটা তিনি চাননি। আদালতে গিয়ে ফারজানা বলেন, স্বামীর মৃত্যুর পর অনেকেই সহায়তার কথা বলে তাঁর কাগজপত্র নিয়েছিলেন। তাঁদেরই কেউ হয়তো মামলাটি করেছেন।
ফতুল্লা থানার মামলায় ফারজানার কাগজপত্র ব্যবহার করলেও অন্য ব্যক্তির একটি মোবাইল নম্বর দেওয়া হয়। আজকের পত্রিকা তথ্যপ্রযুক্তি ও পুলিশের সহায়তায় জানতে পেরেছে মোবাইল নম্বরটি জনৈক সাইফুল ইসলামের এনআইডি দিয়ে নিবন্ধিত। সাইফুলের গ্রামের বাড়ি বরিশালে, থাকেন নারায়ণগঞ্জের বন্দর এলাকায়। আজকের পত্রিকাকে সাইফুল বলেন, এজাহারে তাঁর মোবাইল নম্বরটি কে দিয়েছেন, তিনি তা জানেন না। তিনি কোনো মামলা করেননি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শুভঙ্কর বিশ্বাস বলেন, ‘ঘটনাটি ভুয়া বলে নিশ্চিত হওয়ার পর মামলার তদন্ত আর এগোয়নি। আসামিরা জামিনে আছেন, আমরা হয়তো চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেব।’
রিয়াজের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চলতি বছরের মার্চে ঢাকার সিএমএম আদালতে একটি নালিশি মামলা করেন জাহিদুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি। এই মামলায় রিয়াজকে হত্যার ঘটনাস্থল দেখানো হয় ভাটারা থানার যমুনা ফিউচার পার্কের সামনের সড়ক এলাকা। এ মামলায় রিয়াজের সব আসল কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। বাদী জাহিদুল দাবি করেছেন, তিনি নিহত রিয়াজের ভাই। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রিয়াজের সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পর্ক নেই। মামলায় ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনাসহ ২৮১ জনকে আসামি করা হয়। আদালত মামলাটি ভাটারা থানা-পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দেন। এ মামলায় ৩৪ জেলার শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে, যাঁদের মধ্যে রয়েছেন প্রবাসী, ব্যবসায়ী, আইনজীবী ও পুলিশ কর্মকর্তা। দক্ষিণ কোরিয়াপ্রবাসী ইসমাইল হোসেন এই মামলার ২১৮ নম্বর আসামি। তিনি একমাত্র গ্রেপ্তার হওয়া আসামি।
প্রবাসী ইসমাইল হোসেন আগেই সম্ভাব্য মিথ্যা মামলা থেকে রেহাই পেতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও আইজিপির কাছে আবেদন করেছিলেন। গত ২ ফেব্রুয়ারি তিনি রমনা থানায় জিডিও করেন। এ ছাড়া ডিএমপি কমিশনারের কাছে গত ১৯ মে একটি অভিযোগ দেন ইসমাইলের বড় ভাই খোরশেদ আলম বাবুল। তিনি অভিযোগ করেন, ফরচুন টাওয়ারের ফ্ল্যাট মালিকদের মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরে দুলাল নামে এক ব্যক্তি বিভিন্ন মামলায় তাঁর ভাইয়ের নাম ঢুকিয়ে দিচ্ছেন। এর সঙ্গে জড়িত দালাল হাতকাটা বাহার ও সাদ্দাম।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে ফরচুন টাওয়ারে গিয়ে দুলালকে পাওয়া যায়নি। মোবাইল ফোনে কল করলে তাঁর স্ত্রী রোকসানা আক্তার পলি ধরে বলেন, দুলালের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ বানোয়াট।
রিয়াজের ভাই দাবি করে মামলা করা জাহিদুল ইসলাম নিজের ঠিকানা দিয়েছেন ভাটারা নতুন বাজারের ৯৯১ নম্বর। অনুসন্ধানে জানা যায়, এটি কোনো বাড়ির ঠিকানা নয়, বরং জমির দাগ নম্বর। হাজি আক্কাস আলী নামে এক পুরোনো বাসিন্দাসহ এলাকার কয়েকজন জানান, নতুন বাজারে এমন নম্বরে কোনো নির্দিষ্ট বাড়ি নেই।
জানা গেছে, জাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় অন্তত সাতটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আলোচিত পিএসসির প্রশ্নপত্র ফাঁস, প্রতারণা ও চেক জালিয়াতির মামলা। সিআইডির তদন্তে জানা যায়, দুর্নীতি মামলার আসামি পিএসসির সাবেক গাড়িচালক আবেদ আলীর সহযোগী ছিলেন জাহিদুল।
ভাটারা থানার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আনোয়ার হোসেন বাদী জাহিদুলকে খুঁজে পাননি। আদালতে দেওয়া প্রতিবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, রিয়াজ ভাটারায় নিহত হননি এবং ৫ আগস্ট সেখানে যানওনি। এসআই আনোয়ার বলেন, ‘জাহিদের ঠিকানা মিথ্যা। তাঁকে এখনো খুঁজছি।’
জাহিদের আইনজীবী এম কাওসার আহমেদ বলেন, তিনি নিজেও বাদীকে খুঁজে পাচ্ছেন না।
তবে গ্রামের বাড়ির ঠিকানায় খোঁজ নিয়ে জাহিদের বিষয়ে তথ্য মিলেছে। মামলার নথিতে তাঁর স্থায়ী ঠিকানা ভোলা জেলার শম্ভুপুর ইউনিয়ন। ঠিকানামতো চর কোরালমারা গ্রামে গিয়ে জানা যায়, তিনি এলাকায় ‘জুয়েল’ নামে পরিচিত। স্থানীয় ইউপি মেম্বার মঞ্জু হাওলাদার বলেন, ‘পুলিশ তাঁকে প্রায়ই খুঁজতে আসে। কিন্তু সে বাড়িতে থাকে না।’
স্বামী হত্যার ঘটনায় রিয়াজের স্ত্রী ফারজানা নিজে ঢাকার আদালতে একটি মামলা করেছেন। অভিযোগটি এখনো থানায় নথিভুক্ত হয়নি। আদালত যাত্রাবাড়ী থানাকে ঘটনা যাচাই করে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন। তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মাসুম বিল্লাহ বলেন, মামলার ২১৩ জন আসামির অবস্থান যাচাই শেষে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ফারজানা বেগম দুঃখ করে বলেন, ভুয়া ব্যক্তিরা মামলা করায় তাঁর আসল মামলাই এখন তদন্তাধীন।
এ বিষয়ে ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ ও আইনজীবী এস এম শাহজাহান বলেন, একটি ফৌজদারি ঘটনায় একাধিক মামলা হতে পারে না। ভুয়া মামলা দ্রুত বাতিল করে প্রকৃত মামলাটিরই তদন্ত হওয়া উচিত।
চট্টগ্রামে একটি বালু বিক্রয় কেন্দ্রে চাঁদা না পেয়ে প্রতিষ্ঠানটির এক্সকাভেটরসহ মালপত্র লুটের অভিযোগ উঠেছে দক্ষিণ জেলা বিএনপির এক নেতাসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে। গত সোমবার নগর পুলিশের সহকারী কমিশনারের কাছে এক ব্যবসায়ী অভিযোগটি করেন।
২ ঘণ্টা আগেরাজশাহীতে ওয়াসার পাম্পঘর থেকে বৈদ্যুতিক তার চুরির ঘটনা বেড়েই চলেছে। এতে পানি সরবরাহ ব্যাহত হওয়ায় তীব্র ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী। চুরি ঠেকাতে পুলিশের টহল বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়ে গত সোমবার রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) কমিশনারকে চিঠি দেয় ওয়াসা। তারপর ওই রাতেই কাজলা ও খোজাপুর গোরস্তানসংলগ্ন...
২ ঘণ্টা আগেনওগাঁর মান্দা উপজেলায় দুটি ভুয়া প্রকল্পের নামে বার্ষিক উন্নয়ন তহবিল (এডিবি) থেকে ৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা প্রকৌশলী আবু সায়েদের বিরুদ্ধে। প্রকল্পের কাগজপত্রে কাজ সম্পন্ন দেখানো হলেও বাস্তবে এসব প্রকল্পের কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।
২ ঘণ্টা আগেজগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. জোবায়েদ হোসেন হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে নিহত জোবায়েদের বড় ভাই এনায়েত হোসেন সৈকত রাজধানীর বংশাল থানায় এ হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ।
৫ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামে একটি বালু বিক্রয় কেন্দ্রে চাঁদা না পেয়ে প্রতিষ্ঠানটির এক্সকাভেটরসহ মালপত্র লুটের অভিযোগ উঠেছে দক্ষিণ জেলা বিএনপির এক নেতাসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে। গত সোমবার নগর পুলিশের সহকারী কমিশনারের কাছে এক ব্যবসায়ী অভিযোগটি করেন।
মোজাহের হোসেন মিঞা নামের ওই ব্যবসায়ী নিজেকে মেসার্স কর্ণফুলী এন্টারপ্রাইজ প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান দাবি করেস। অভিযোগে তিনি নিজের নিরাপত্তা চেয়ে ও অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করেন। অভিযোগে সুনির্দিষ্টভাবে চারজনের নাম উল্লেখ করেন। তাঁরা হলেন এস এম ফারুক, শাখাওয়াত হোসেন মিশু, গাজী ফোরকান ও মো. জাহাঙ্গীর।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তাদের মধ্যে এস এম ফারুকের প্রকৃত নাম হচ্ছে মোহাম্মদ ফারুক হোসেন। যিনি চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদ্য গঠিত আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। এ ছাড়া শাখাওয়াত হোসেন মিশু কর্ণফুলী উপজেলা ছাত্রদলের একজন আহ্বায়ক পদপ্রার্থী। বাকি দুজন আনোয়ারা ও কর্ণফুলী উপজেলা বিএনপির লোক।
জানতে চাইলে নগর পুলিশের কর্ণফুলী জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) জামাল উদ্দিন চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গতকালই (সোমবার) মাত্র অভিযোগটা হাতে পেয়েছি। আমরা তদন্ত করে দেখছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
অভিযোগে ওই ব্যবসায়ী উল্লেখ করেন, গত ১৬ সেপ্টেম্বর কয়েকজন ব্যক্তি কর্ণফুলী থানার কৈয়গ্রাম সেতু রোডে মেসার্স কর্ণফুলী এন্টারপ্রাইজের বালু বিক্রয় কেন্দ্রে এসে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এ সময় তাঁকে ভয়ভীতি ও প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। পরে তাঁদের কথামতো সময়মতো চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় বালু বিক্রয় কেন্দ্রের বিদ্যুৎ-সংযোগ ও সিসি ক্যামেরার লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেন চাঁদা দাবিকারীরা। ২০ সেপ্টেম্বর এ ঘটনায় কর্ণফুলী থানায় একটি অভিযোগ করা হয়। এ কথা জানতে পেরে ওই ব্যক্তিরা ২৬ সেপ্টেম্বর আবার বালু বিক্রয় কেন্দ্রে এসে কর্ণফুলী এন্টারপ্রাইজের ২৫ লাখ টাকার মূল্যের ১টি এক্সকাভেটর ও ড্রেজার মেশিনের বিভিন্ন যন্ত্রাংশসহ ৩৫ লাখ টাকার মালপত্র লুট করে নিয়ে যায়।
মোজাহের হোসেন অভিযোগ করেন, গত শনিবার রাতে আবার ৫০-৬০ জন লোক এসে কর্ণফুলী কৈয়গ্রামের খালে রাখা খননযন্ত্রে স্টাফদের মারধর করে, পরে সেখানে থাকা খননযন্ত্রটি লুট করে নিয়ে যায়। তাৎক্ষণিক বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে অবহিত করলে থানার সহায়তায় খননযন্ত্র পাশের উপজেলা আনোয়ারার উপকূলে পাওয়া যায়। সেখানে পুলিশ পরে স্থানীয় ও নগর পুলিশের সিটিজেন ফোরামের সদস্য আলমগীর নামের একজনের জিম্মায় যন্ত্রটি রাখা হয়। কিন্তু এখনো প্রতিষ্ঠান খননযন্ত্র বুঝে পায়নি।
ব্যবসায়ী মোজাহের হোসেন মিঞা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খননযন্ত্র আনোয়ারা উপকূলে উদ্ধারের খবরে রোববার তা নিতে গেলে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা বাধা দেন। এ সময় তাঁরা হত্যার হুমকি দেন। পরে ভয়ে খননযন্ত্র না নিয়ে আমরা চলে আসি। ঘটনার বিষয় থানা-পুলিশের পাশাপাশি নৌ পুলিশকে অবহিত করি, তাঁরা আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বস্ত করলেও অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা বা প্রতিষ্ঠানের লুট হওয়া মালপত্র আমরা ফেরত পাইনি।’
অভিযোগের বিষয়ে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মোহাম্মদ ফারুক হোসেন বলেন, ‘যেদিন খননযন্ত্র নিয়ে যাওয়া হয়, সেদিন আমি নিজেই পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করেছিলাম। আমি কেন খননযন্ত্র লুটের সঙ্গে জড়াব।’ এমন অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এখানে মূলত মালিকানা নিয়ে সমস্যা। সেখানে আমি একজন মধ্যস্থতাকারী হিসেবে থেকে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে আসছি। উল্টো আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করা হচ্ছে। আর যিনি অভিযোগ করেছেন, তাঁকে আমি চিনি না।’
বিএনপির নেতার এ বক্তব্য প্রসঙ্গে ব্যবসায়ী মোজাহের হোসেন মিঞা বলেন, ‘ওনারা যখন ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিল। আমরা চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করি। পরে তাঁরা চাঁদা না পেয়ে প্রতিষ্ঠানের মালিকানা দেওয়ার দাবি করেন। এভাবে কারও প্রতিষ্ঠানের কি মালিকানা দাবি করা যায়। প্রতিষ্ঠানটির স্বত্ব সব নথিপত্র তো আমার কাছেই আছে।’
কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শরীফ বলেন, এ বিষয়টি বর্তমানে সহকারী কমিশনার কার্যালয় তদন্ত করছে। তাঁদের নির্দেশনা পেলে পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের সিটিজেন ফোরামের সদস্য মো. আলমগীর বলেন, ‘খননযন্ত্র এখন আমার জিম্মায় আছে। যখন মালিকের জিম্মায় দিতে যাই, তখন সেখানে কয়েকজন আমাদের বাধা দেওয়ায় চলে আসি।’
চট্টগ্রামে একটি বালু বিক্রয় কেন্দ্রে চাঁদা না পেয়ে প্রতিষ্ঠানটির এক্সকাভেটরসহ মালপত্র লুটের অভিযোগ উঠেছে দক্ষিণ জেলা বিএনপির এক নেতাসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে। গত সোমবার নগর পুলিশের সহকারী কমিশনারের কাছে এক ব্যবসায়ী অভিযোগটি করেন।
মোজাহের হোসেন মিঞা নামের ওই ব্যবসায়ী নিজেকে মেসার্স কর্ণফুলী এন্টারপ্রাইজ প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান দাবি করেস। অভিযোগে তিনি নিজের নিরাপত্তা চেয়ে ও অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করেন। অভিযোগে সুনির্দিষ্টভাবে চারজনের নাম উল্লেখ করেন। তাঁরা হলেন এস এম ফারুক, শাখাওয়াত হোসেন মিশু, গাজী ফোরকান ও মো. জাহাঙ্গীর।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তাদের মধ্যে এস এম ফারুকের প্রকৃত নাম হচ্ছে মোহাম্মদ ফারুক হোসেন। যিনি চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদ্য গঠিত আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। এ ছাড়া শাখাওয়াত হোসেন মিশু কর্ণফুলী উপজেলা ছাত্রদলের একজন আহ্বায়ক পদপ্রার্থী। বাকি দুজন আনোয়ারা ও কর্ণফুলী উপজেলা বিএনপির লোক।
জানতে চাইলে নগর পুলিশের কর্ণফুলী জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) জামাল উদ্দিন চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গতকালই (সোমবার) মাত্র অভিযোগটা হাতে পেয়েছি। আমরা তদন্ত করে দেখছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
অভিযোগে ওই ব্যবসায়ী উল্লেখ করেন, গত ১৬ সেপ্টেম্বর কয়েকজন ব্যক্তি কর্ণফুলী থানার কৈয়গ্রাম সেতু রোডে মেসার্স কর্ণফুলী এন্টারপ্রাইজের বালু বিক্রয় কেন্দ্রে এসে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এ সময় তাঁকে ভয়ভীতি ও প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। পরে তাঁদের কথামতো সময়মতো চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় বালু বিক্রয় কেন্দ্রের বিদ্যুৎ-সংযোগ ও সিসি ক্যামেরার লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেন চাঁদা দাবিকারীরা। ২০ সেপ্টেম্বর এ ঘটনায় কর্ণফুলী থানায় একটি অভিযোগ করা হয়। এ কথা জানতে পেরে ওই ব্যক্তিরা ২৬ সেপ্টেম্বর আবার বালু বিক্রয় কেন্দ্রে এসে কর্ণফুলী এন্টারপ্রাইজের ২৫ লাখ টাকার মূল্যের ১টি এক্সকাভেটর ও ড্রেজার মেশিনের বিভিন্ন যন্ত্রাংশসহ ৩৫ লাখ টাকার মালপত্র লুট করে নিয়ে যায়।
মোজাহের হোসেন অভিযোগ করেন, গত শনিবার রাতে আবার ৫০-৬০ জন লোক এসে কর্ণফুলী কৈয়গ্রামের খালে রাখা খননযন্ত্রে স্টাফদের মারধর করে, পরে সেখানে থাকা খননযন্ত্রটি লুট করে নিয়ে যায়। তাৎক্ষণিক বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে অবহিত করলে থানার সহায়তায় খননযন্ত্র পাশের উপজেলা আনোয়ারার উপকূলে পাওয়া যায়। সেখানে পুলিশ পরে স্থানীয় ও নগর পুলিশের সিটিজেন ফোরামের সদস্য আলমগীর নামের একজনের জিম্মায় যন্ত্রটি রাখা হয়। কিন্তু এখনো প্রতিষ্ঠান খননযন্ত্র বুঝে পায়নি।
ব্যবসায়ী মোজাহের হোসেন মিঞা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খননযন্ত্র আনোয়ারা উপকূলে উদ্ধারের খবরে রোববার তা নিতে গেলে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা বাধা দেন। এ সময় তাঁরা হত্যার হুমকি দেন। পরে ভয়ে খননযন্ত্র না নিয়ে আমরা চলে আসি। ঘটনার বিষয় থানা-পুলিশের পাশাপাশি নৌ পুলিশকে অবহিত করি, তাঁরা আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বস্ত করলেও অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা বা প্রতিষ্ঠানের লুট হওয়া মালপত্র আমরা ফেরত পাইনি।’
অভিযোগের বিষয়ে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মোহাম্মদ ফারুক হোসেন বলেন, ‘যেদিন খননযন্ত্র নিয়ে যাওয়া হয়, সেদিন আমি নিজেই পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করেছিলাম। আমি কেন খননযন্ত্র লুটের সঙ্গে জড়াব।’ এমন অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এখানে মূলত মালিকানা নিয়ে সমস্যা। সেখানে আমি একজন মধ্যস্থতাকারী হিসেবে থেকে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে আসছি। উল্টো আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করা হচ্ছে। আর যিনি অভিযোগ করেছেন, তাঁকে আমি চিনি না।’
বিএনপির নেতার এ বক্তব্য প্রসঙ্গে ব্যবসায়ী মোজাহের হোসেন মিঞা বলেন, ‘ওনারা যখন ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিল। আমরা চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করি। পরে তাঁরা চাঁদা না পেয়ে প্রতিষ্ঠানের মালিকানা দেওয়ার দাবি করেন। এভাবে কারও প্রতিষ্ঠানের কি মালিকানা দাবি করা যায়। প্রতিষ্ঠানটির স্বত্ব সব নথিপত্র তো আমার কাছেই আছে।’
কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শরীফ বলেন, এ বিষয়টি বর্তমানে সহকারী কমিশনার কার্যালয় তদন্ত করছে। তাঁদের নির্দেশনা পেলে পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের সিটিজেন ফোরামের সদস্য মো. আলমগীর বলেন, ‘খননযন্ত্র এখন আমার জিম্মায় আছে। যখন মালিকের জিম্মায় দিতে যাই, তখন সেখানে কয়েকজন আমাদের বাধা দেওয়ায় চলে আসি।’
ভোলার নির্মাণশ্রমিক মো. রিয়াজ (৩৫)। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার সামনে গুলিতে নিহত হন তিনি। অথচ ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের তিনটি এলাকাকে তাঁর হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থল দেখিয়ে তিনটি আলাদা হত্যা মামলা হয়েছে। তিন মামলায় আসামির সংখ্যা দেড় হাজারের বেশি। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ৩৪টি জেলার রাজনীতিক...
০৯ আগস্ট ২০২৫রাজশাহীতে ওয়াসার পাম্পঘর থেকে বৈদ্যুতিক তার চুরির ঘটনা বেড়েই চলেছে। এতে পানি সরবরাহ ব্যাহত হওয়ায় তীব্র ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী। চুরি ঠেকাতে পুলিশের টহল বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়ে গত সোমবার রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) কমিশনারকে চিঠি দেয় ওয়াসা। তারপর ওই রাতেই কাজলা ও খোজাপুর গোরস্তানসংলগ্ন...
২ ঘণ্টা আগেনওগাঁর মান্দা উপজেলায় দুটি ভুয়া প্রকল্পের নামে বার্ষিক উন্নয়ন তহবিল (এডিবি) থেকে ৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা প্রকৌশলী আবু সায়েদের বিরুদ্ধে। প্রকল্পের কাগজপত্রে কাজ সম্পন্ন দেখানো হলেও বাস্তবে এসব প্রকল্পের কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।
২ ঘণ্টা আগেজগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. জোবায়েদ হোসেন হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে নিহত জোবায়েদের বড় ভাই এনায়েত হোসেন সৈকত রাজধানীর বংশাল থানায় এ হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ।
৫ ঘণ্টা আগেরিমন রহমান, রাজশাহী
রাজশাহীতে ওয়াসার পাম্পঘর থেকে বৈদ্যুতিক তার চুরির ঘটনা বেড়েই চলেছে। এতে পানি সরবরাহ ব্যাহত হওয়ায় তীব্র ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী। চুরি ঠেকাতে পুলিশের টহল বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়ে গত সোমবার রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) কমিশনারকে চিঠি দেয় ওয়াসা। তারপর ওই রাতেই কাজলা ও খোজাপুর গোরস্তানসংলগ্ন পাম্পঘরে চুরির ঘটনা ঘটে।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ৩০টি ওয়ার্ডে ওয়াসার ১২৩টি পাম্পঘর রয়েছে। কিন্তু বৈদ্যুতিক তার চুরি যাওয়ায় পাম্প বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়ছেন এলাকাবাসী। গত কয়েক মাসে শারীরিক শিক্ষা কলেজ, বিসিক, বুধপাড়া বাইপাস, দায়রাপাক মোড় ও খলিল সরকারের মোড়ের পাম্পঘরে তার চুরি হয়েছে।
রাজশাহী ওয়াসার উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (অর্থ ও প্রশাসন) তৌহিদুর রহমান বলেন, ‘রাতে পাম্প চলে না। এ জন্য অপারেটররা সেখানে থাকেন না। আর আমাদের কোনো নৈশপ্রহরীও নেই। ফলে রাতে চুরির ঘটনা ঘটছে। আমরা সংশ্লিষ্ট থানায় অভিযোগ দিচ্ছি।’
গতকাল মঙ্গলবার ওয়াসা কার্যালয়ে এসেছিলেন খলিল সরকারের মোড়ের পাম্পঘরের চালক মো. চাঁদ। তিনি জানান, গত রোববার রাতে তাঁর পাম্পঘর থেকে তার চুরি হয়। নতুন তার না লাগানো পর্যন্ত পাম্প বন্ধ ছিল।
ওয়াসার কর্মকর্তারা বলছেন, এমনিতেই তাদের জনবল সংকট। ফলে রাতে পাম্পঘরে চালক থাকেন না। এ সুযোগে চুরি হচ্ছে। গতকাল দুপুরে খোজাপুর এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘রাতে তার চুরির পর থেকেই পাম্প বন্ধ। পাম্পও চালু হয়নি। এলাকায় পানি সরবরাহ নেই। এটা পুরো এলাকার মানুষের জন্য দুর্ভোগ।’
আরএমপির মুখপত্র গাজিউর রহমান বলেন, ‘পাম্পগুলো অরক্ষিত থাকে। এই সম্পদ ওয়াসার। তাই এটি রক্ষার পরিকল্পনাও তাদের থাকা দরকার। তবে আমরা চুরির যেসব অভিযোগ পেয়েছি, সেগুলোর তদন্ত চলছে। চোর চক্রকে ধরার চেষ্টা চলছে। ওয়াসা যে ঠিকানাসহ তালিকা দিয়েছে, সেসব এলাকায় ইতিমধ্যে পুলিশের রাত্রীকালীন টহল বাড়ানো হয়েছে।’
রাজশাহীতে ওয়াসার পাম্পঘর থেকে বৈদ্যুতিক তার চুরির ঘটনা বেড়েই চলেছে। এতে পানি সরবরাহ ব্যাহত হওয়ায় তীব্র ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী। চুরি ঠেকাতে পুলিশের টহল বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়ে গত সোমবার রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) কমিশনারকে চিঠি দেয় ওয়াসা। তারপর ওই রাতেই কাজলা ও খোজাপুর গোরস্তানসংলগ্ন পাম্পঘরে চুরির ঘটনা ঘটে।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ৩০টি ওয়ার্ডে ওয়াসার ১২৩টি পাম্পঘর রয়েছে। কিন্তু বৈদ্যুতিক তার চুরি যাওয়ায় পাম্প বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়ছেন এলাকাবাসী। গত কয়েক মাসে শারীরিক শিক্ষা কলেজ, বিসিক, বুধপাড়া বাইপাস, দায়রাপাক মোড় ও খলিল সরকারের মোড়ের পাম্পঘরে তার চুরি হয়েছে।
রাজশাহী ওয়াসার উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (অর্থ ও প্রশাসন) তৌহিদুর রহমান বলেন, ‘রাতে পাম্প চলে না। এ জন্য অপারেটররা সেখানে থাকেন না। আর আমাদের কোনো নৈশপ্রহরীও নেই। ফলে রাতে চুরির ঘটনা ঘটছে। আমরা সংশ্লিষ্ট থানায় অভিযোগ দিচ্ছি।’
গতকাল মঙ্গলবার ওয়াসা কার্যালয়ে এসেছিলেন খলিল সরকারের মোড়ের পাম্পঘরের চালক মো. চাঁদ। তিনি জানান, গত রোববার রাতে তাঁর পাম্পঘর থেকে তার চুরি হয়। নতুন তার না লাগানো পর্যন্ত পাম্প বন্ধ ছিল।
ওয়াসার কর্মকর্তারা বলছেন, এমনিতেই তাদের জনবল সংকট। ফলে রাতে পাম্পঘরে চালক থাকেন না। এ সুযোগে চুরি হচ্ছে। গতকাল দুপুরে খোজাপুর এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘রাতে তার চুরির পর থেকেই পাম্প বন্ধ। পাম্পও চালু হয়নি। এলাকায় পানি সরবরাহ নেই। এটা পুরো এলাকার মানুষের জন্য দুর্ভোগ।’
আরএমপির মুখপত্র গাজিউর রহমান বলেন, ‘পাম্পগুলো অরক্ষিত থাকে। এই সম্পদ ওয়াসার। তাই এটি রক্ষার পরিকল্পনাও তাদের থাকা দরকার। তবে আমরা চুরির যেসব অভিযোগ পেয়েছি, সেগুলোর তদন্ত চলছে। চোর চক্রকে ধরার চেষ্টা চলছে। ওয়াসা যে ঠিকানাসহ তালিকা দিয়েছে, সেসব এলাকায় ইতিমধ্যে পুলিশের রাত্রীকালীন টহল বাড়ানো হয়েছে।’
ভোলার নির্মাণশ্রমিক মো. রিয়াজ (৩৫)। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার সামনে গুলিতে নিহত হন তিনি। অথচ ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের তিনটি এলাকাকে তাঁর হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থল দেখিয়ে তিনটি আলাদা হত্যা মামলা হয়েছে। তিন মামলায় আসামির সংখ্যা দেড় হাজারের বেশি। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ৩৪টি জেলার রাজনীতিক...
০৯ আগস্ট ২০২৫চট্টগ্রামে একটি বালু বিক্রয় কেন্দ্রে চাঁদা না পেয়ে প্রতিষ্ঠানটির এক্সকাভেটরসহ মালপত্র লুটের অভিযোগ উঠেছে দক্ষিণ জেলা বিএনপির এক নেতাসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে। গত সোমবার নগর পুলিশের সহকারী কমিশনারের কাছে এক ব্যবসায়ী অভিযোগটি করেন।
২ ঘণ্টা আগেনওগাঁর মান্দা উপজেলায় দুটি ভুয়া প্রকল্পের নামে বার্ষিক উন্নয়ন তহবিল (এডিবি) থেকে ৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা প্রকৌশলী আবু সায়েদের বিরুদ্ধে। প্রকল্পের কাগজপত্রে কাজ সম্পন্ন দেখানো হলেও বাস্তবে এসব প্রকল্পের কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।
২ ঘণ্টা আগেজগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. জোবায়েদ হোসেন হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে নিহত জোবায়েদের বড় ভাই এনায়েত হোসেন সৈকত রাজধানীর বংশাল থানায় এ হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ।
৫ ঘণ্টা আগেমো. জিল্লুর রহমান, মান্দা (নওগাঁ)
নওগাঁর মান্দা উপজেলায় দুটি ভুয়া প্রকল্পের নামে বার্ষিক উন্নয়ন তহবিল (এডিবি) থেকে ৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা প্রকৌশলী আবু সায়েদের বিরুদ্ধে। প্রকল্পের কাগজপত্রে কাজ সম্পন্ন দেখানো হলেও বাস্তবে এসব প্রকল্পের কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।
জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এডিবির আওতায় প্রসাদপুর বাজারের গোলচত্বর সংস্কারের জন্য ৫ লাখ এবং পাঁজরভাঙা বাজারে নতুন গোলচত্বর নির্মাণের জন্য ৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেখানো হয়েছে। উপজেলা এলজিইডি অফিসের তালিকায় প্রকল্প দুটি যথাক্রমে ৩৪ ও ১৪৫ নম্বরে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
তবে সরেজমিনে দেখা গেছে, সংশ্লিষ্ট দুই স্থানে কোনো ধরনের উন্নয়নকাজ হয়নি। জানতে চাইলে পাঁজরভাঙা বাজারের বাসিন্দা আল আমিন বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘এখানে কোনো গোলচত্বরই নেই। নির্মাণ তো দূরের কথা, কাজের কোনো চিহ্নই নেই।’
উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ জানিয়েছে, প্রসাদপুর গোলচত্বরের কাজ টেন্ডারের মাধ্যমে এবং পাঁজরভাঙা গোলচত্বর নির্মাণ আরএফকিউ পদ্ধতিতে দেখানো হয়েছে। তবে প্রকল্পটি কে বাস্তবায়ন করেছে, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো জবাব দিতে পারেননি এলজিইডি কর্মকর্তারা।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী আবু সায়েদ বলেন, ‘টেন্ডারের পর রেজল্যুশনের মাধ্যমে কাজ পরিবর্তন করা হয়েছে। বর্তমানে আমি ঢাকায় প্রশিক্ষণে আছি। সাক্ষাতে বিস্তারিত জানানো হবে বলে ফোনের সংযোগবিচ্ছিন্ন করে দেন তিনি।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আখতার জাহান সাথী বলেন, ‘প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত থাকলে কাজটি বাস্তবায়ন হওয়ার কথা। বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
নওগাঁর মান্দা উপজেলায় দুটি ভুয়া প্রকল্পের নামে বার্ষিক উন্নয়ন তহবিল (এডিবি) থেকে ৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা প্রকৌশলী আবু সায়েদের বিরুদ্ধে। প্রকল্পের কাগজপত্রে কাজ সম্পন্ন দেখানো হলেও বাস্তবে এসব প্রকল্পের কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।
জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এডিবির আওতায় প্রসাদপুর বাজারের গোলচত্বর সংস্কারের জন্য ৫ লাখ এবং পাঁজরভাঙা বাজারে নতুন গোলচত্বর নির্মাণের জন্য ৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেখানো হয়েছে। উপজেলা এলজিইডি অফিসের তালিকায় প্রকল্প দুটি যথাক্রমে ৩৪ ও ১৪৫ নম্বরে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
তবে সরেজমিনে দেখা গেছে, সংশ্লিষ্ট দুই স্থানে কোনো ধরনের উন্নয়নকাজ হয়নি। জানতে চাইলে পাঁজরভাঙা বাজারের বাসিন্দা আল আমিন বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘এখানে কোনো গোলচত্বরই নেই। নির্মাণ তো দূরের কথা, কাজের কোনো চিহ্নই নেই।’
উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ জানিয়েছে, প্রসাদপুর গোলচত্বরের কাজ টেন্ডারের মাধ্যমে এবং পাঁজরভাঙা গোলচত্বর নির্মাণ আরএফকিউ পদ্ধতিতে দেখানো হয়েছে। তবে প্রকল্পটি কে বাস্তবায়ন করেছে, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো জবাব দিতে পারেননি এলজিইডি কর্মকর্তারা।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী আবু সায়েদ বলেন, ‘টেন্ডারের পর রেজল্যুশনের মাধ্যমে কাজ পরিবর্তন করা হয়েছে। বর্তমানে আমি ঢাকায় প্রশিক্ষণে আছি। সাক্ষাতে বিস্তারিত জানানো হবে বলে ফোনের সংযোগবিচ্ছিন্ন করে দেন তিনি।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আখতার জাহান সাথী বলেন, ‘প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত থাকলে কাজটি বাস্তবায়ন হওয়ার কথা। বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
ভোলার নির্মাণশ্রমিক মো. রিয়াজ (৩৫)। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার সামনে গুলিতে নিহত হন তিনি। অথচ ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের তিনটি এলাকাকে তাঁর হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থল দেখিয়ে তিনটি আলাদা হত্যা মামলা হয়েছে। তিন মামলায় আসামির সংখ্যা দেড় হাজারের বেশি। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ৩৪টি জেলার রাজনীতিক...
০৯ আগস্ট ২০২৫চট্টগ্রামে একটি বালু বিক্রয় কেন্দ্রে চাঁদা না পেয়ে প্রতিষ্ঠানটির এক্সকাভেটরসহ মালপত্র লুটের অভিযোগ উঠেছে দক্ষিণ জেলা বিএনপির এক নেতাসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে। গত সোমবার নগর পুলিশের সহকারী কমিশনারের কাছে এক ব্যবসায়ী অভিযোগটি করেন।
২ ঘণ্টা আগেরাজশাহীতে ওয়াসার পাম্পঘর থেকে বৈদ্যুতিক তার চুরির ঘটনা বেড়েই চলেছে। এতে পানি সরবরাহ ব্যাহত হওয়ায় তীব্র ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী। চুরি ঠেকাতে পুলিশের টহল বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়ে গত সোমবার রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) কমিশনারকে চিঠি দেয় ওয়াসা। তারপর ওই রাতেই কাজলা ও খোজাপুর গোরস্তানসংলগ্ন...
২ ঘণ্টা আগেজগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. জোবায়েদ হোসেন হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে নিহত জোবায়েদের বড় ভাই এনায়েত হোসেন সৈকত রাজধানীর বংশাল থানায় এ হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ।
৫ ঘণ্টা আগেজোবায়েদ হত্যা
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. জোবায়েদ হোসেন হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে নিহত জোবায়েদের বড় ভাই এনায়েত হোসেন সৈকত রাজধানীর বংশাল থানায় এ হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ। তাঁরা হলেন মো. মাহির রহমান (১৯), জোবায়েদের ছাত্রী (১৯) ও ফারদীন আহম্মেদ আয়লান (২০)।
এ তিনজন জোবায়েদ হত্যার দায় স্বীকার করে পুলিশের কাছে এবং আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাঁরা জবানবন্দি দেন। এ দিন বিকেলে বংশাল থানা পুলিশ তিনজনকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে।
আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বংশাল থানার এসআই মো. আশরাফ হোসেন তিনজনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করার জন্য আবেদন করেন। আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এই তিনজনের পরিকল্পনায় জোবায়েদকে হত্যা করা হয় বলে গ্রেপ্তারের পর তাঁরা স্বীকার করেছেন। তাঁরা আদালতেও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে ইচ্ছুক।
পরে তিনজনই ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। জবানবন্দি শেষে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়।
আসামি মাহির জবানবন্দি দেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের কাছে। জোবায়েদের ছাত্রী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম মিয়া এবং আসামি আয়নাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল রানের কাছে জবানবন্দি দেন। বিকেল থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত তাঁরা জবানবন্দি দেন।
আদালতের বংশাল থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা তানভীর মোর্শেদ চৌধুরী জবানবন্দির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
রোববার বিকেলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী জোবায়েদ খুন হওয়ার পর রাতেই মেয়েটিকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। পরে ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও শান্তিনগর থেকে অপর দুজনকে আটক করা হয়।
এজাহারে যা বলা হয়
মামলায় ওই তিনজন ছাড়াও অজ্ঞাতনামা ৪-৫ জনকে আসামি করা হয়। এজাহারে বলা হয়, বাদীর ছোট ভাই জোবায়েদ জবিতে পড়াশোনার পাশাপাশি টিউশনি করতেন। প্রতিদিনের মতো ১৯ অক্টোবর (রোববার) বিকেল সাড়ে ৪টার সময় বংশাল থানার নূর বক্স লেনের ১৫ নম্বর হোল্ডিং রওশন ভিলায় ছাত্রীকে পড়ানোর জন্য যান জোবায়েদ। ওই দিন বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটের সময় ছাত্রীটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সৈকতকে ফোনে জানান, জোবায়েদ স্যার খুন হয়েছেন। কে বা কারা খুন করে ফেলেছে। জানার পর বাদী, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্মকর্তা, শিক্ষক ও অনেক ছাত্র ঘটনাস্থলে গেলে রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওই বাড়ির সিঁড়িতে জোবায়েদের লাশ দেখতে পান।
এজাহারে আরও বলা হয়, স্থানীয় লোকজন ও আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে বাদী জানতে পেরেছেন এজাহারের ৩ আসামি এবং অজ্ঞাতনামা আসামিরা তাঁর ভাইকে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলার ডান পাশে আঘাত করে খুন করেছেন।
আদালতে জবানবন্দি
আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, তিনজনকে গ্রেপ্তারের পর থানা হেফাজতে তাঁদের মুখোমুখি করা হয়। পুলিশের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে তাঁরা হত্যার দায় স্বীকার করেন। পুলিশের কাছে হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে তাঁরা যা বলেছেন আদালতেও সেই রকম স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।
হত্যার দায় স্বীকার পুলিশের কাছে
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) এস এন নজরুল ইসলাম বলেন, ‘জোবায়েদ গত এক বছর ওই ছাত্রীকে (১৯) প্রাইভেট পড়াতেন। এতে তাঁর সঙ্গে ওই ছাত্রীর একটা প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর আগে মাহিরের সঙ্গে মেয়েটির সম্পর্ক ছিল। ফলে এটা মাহির মেনে নিতে পারেনি। পরে মেয়েটির পরিকল্পনা অনুযায়ী জোবায়েদকে হত্যার সিদ্ধান্ত হয়। রোববার জোবায়েদ বিকেল ৪টার দিকে পড়াতে আসবে, তা মাহিরকে জানায় মেয়েটি। মাহির বন্ধু ফারদীন আহম্মেদ আয়লানসহ (২০) বাসার গলিতে অবস্থান নেন। জোবায়েদ আসার পর তাঁদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। এ সময় জোবায়েদকে সম্পর্ক থেকে সরে আসতে বলা হলে তিনি বলেন, ‘মেয়ে তো আমাকে ভালোবাসে আমি কেন সরে যাব।’ একপর্যায়ে জোবায়েদকে চাকু দিয়ে গলায় আঘাত করেন মাহির। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে জোবায়েদ সেখানে মারা যান।
এক প্রশ্নের জবাবে নজরুল ইসলাম বলেন, হত্যার পরিকল্পনা করেছে মেয়েটিই। বরগুনার মিন্নির ঘটনার সঙ্গে অনেকাংশে মিল রয়েছে। মেয়েটা দুজনের কারও কাছ থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলেন না। ফলে তিনি নিজেই হত্যার পরিকল্পনা সাজান। এখানে কোনো রাজনৈতিক বিষয় নেই। এটা সম্পূর্ণ ত্রিভুজ প্রেমের কাহিনি। গত ২৬ সেপ্টেম্বর মাহির বিষয়টি নিয়ে মেয়েটিকে চাপ প্রয়োগ করলে, সেদিনই গৃহশিক্ষক জোবায়েদকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন তাঁরা। এর সঙ্গে পরিবারের কারোর জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া যায়নি বলে জানায় পুলিশ।
পরে ডিএমপির লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মল্লিক আহসান উদ্দিন সামী বলেন, জোবায়েদ যখন মারা যান, তখন ছাত্রীটি সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তদন্তে জানা গেছে, ছাত্রীকে উদ্দেশ করে জোবায়েদের শেষ কথা ছিল, ‘আমাকে বাঁচাও’। ছাত্রী তখন জোবায়েদের উদ্দেশে বলেন, ‘তুমি না সরলে, আমি মাহিরের হব না’ এ ধরনের এক কথা। তদন্তে উঠে এসেছে, দোতলার সিঁড়িতে জোবায়েদকে ছুরিকাঘাত করা হয়। এ সময় তিনি বাঁচার চেষ্টা করছিলেন। ছাত্রীর বাসা পাঁচতলায় হলেও ঘটনার সময় তিনি তিনতলার সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে হত্যাকাণ্ড দেখেন। এ সময় দোতলার দরজায় ধাক্কা দিলে তা না খোলায় জোবায়েদ তিনতলায় যেতে চান। তখন সিঁড়িতে পড়ে যান এবং সেখানেই মারা যান।
আদালত এলাকায় মিছিল
এদিকে তিন আসামিকে আদালতে হাজির করার পর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা আসামিদের ফাঁসির দাবিতে আদালত এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেন। তাঁরা দ্রুত বিচার দাবি করেন এবং এই মামলায় আরও যাঁরা জড়িত তাঁদের শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. জোবায়েদ হোসেন হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে নিহত জোবায়েদের বড় ভাই এনায়েত হোসেন সৈকত রাজধানীর বংশাল থানায় এ হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ। তাঁরা হলেন মো. মাহির রহমান (১৯), জোবায়েদের ছাত্রী (১৯) ও ফারদীন আহম্মেদ আয়লান (২০)।
এ তিনজন জোবায়েদ হত্যার দায় স্বীকার করে পুলিশের কাছে এবং আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাঁরা জবানবন্দি দেন। এ দিন বিকেলে বংশাল থানা পুলিশ তিনজনকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে।
আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বংশাল থানার এসআই মো. আশরাফ হোসেন তিনজনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করার জন্য আবেদন করেন। আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এই তিনজনের পরিকল্পনায় জোবায়েদকে হত্যা করা হয় বলে গ্রেপ্তারের পর তাঁরা স্বীকার করেছেন। তাঁরা আদালতেও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে ইচ্ছুক।
পরে তিনজনই ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। জবানবন্দি শেষে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়।
আসামি মাহির জবানবন্দি দেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের কাছে। জোবায়েদের ছাত্রী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম মিয়া এবং আসামি আয়নাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল রানের কাছে জবানবন্দি দেন। বিকেল থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত তাঁরা জবানবন্দি দেন।
আদালতের বংশাল থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা তানভীর মোর্শেদ চৌধুরী জবানবন্দির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
রোববার বিকেলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী জোবায়েদ খুন হওয়ার পর রাতেই মেয়েটিকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। পরে ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও শান্তিনগর থেকে অপর দুজনকে আটক করা হয়।
এজাহারে যা বলা হয়
মামলায় ওই তিনজন ছাড়াও অজ্ঞাতনামা ৪-৫ জনকে আসামি করা হয়। এজাহারে বলা হয়, বাদীর ছোট ভাই জোবায়েদ জবিতে পড়াশোনার পাশাপাশি টিউশনি করতেন। প্রতিদিনের মতো ১৯ অক্টোবর (রোববার) বিকেল সাড়ে ৪টার সময় বংশাল থানার নূর বক্স লেনের ১৫ নম্বর হোল্ডিং রওশন ভিলায় ছাত্রীকে পড়ানোর জন্য যান জোবায়েদ। ওই দিন বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটের সময় ছাত্রীটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সৈকতকে ফোনে জানান, জোবায়েদ স্যার খুন হয়েছেন। কে বা কারা খুন করে ফেলেছে। জানার পর বাদী, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্মকর্তা, শিক্ষক ও অনেক ছাত্র ঘটনাস্থলে গেলে রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওই বাড়ির সিঁড়িতে জোবায়েদের লাশ দেখতে পান।
এজাহারে আরও বলা হয়, স্থানীয় লোকজন ও আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে বাদী জানতে পেরেছেন এজাহারের ৩ আসামি এবং অজ্ঞাতনামা আসামিরা তাঁর ভাইকে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলার ডান পাশে আঘাত করে খুন করেছেন।
আদালতে জবানবন্দি
আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, তিনজনকে গ্রেপ্তারের পর থানা হেফাজতে তাঁদের মুখোমুখি করা হয়। পুলিশের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে তাঁরা হত্যার দায় স্বীকার করেন। পুলিশের কাছে হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে তাঁরা যা বলেছেন আদালতেও সেই রকম স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।
হত্যার দায় স্বীকার পুলিশের কাছে
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) এস এন নজরুল ইসলাম বলেন, ‘জোবায়েদ গত এক বছর ওই ছাত্রীকে (১৯) প্রাইভেট পড়াতেন। এতে তাঁর সঙ্গে ওই ছাত্রীর একটা প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর আগে মাহিরের সঙ্গে মেয়েটির সম্পর্ক ছিল। ফলে এটা মাহির মেনে নিতে পারেনি। পরে মেয়েটির পরিকল্পনা অনুযায়ী জোবায়েদকে হত্যার সিদ্ধান্ত হয়। রোববার জোবায়েদ বিকেল ৪টার দিকে পড়াতে আসবে, তা মাহিরকে জানায় মেয়েটি। মাহির বন্ধু ফারদীন আহম্মেদ আয়লানসহ (২০) বাসার গলিতে অবস্থান নেন। জোবায়েদ আসার পর তাঁদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। এ সময় জোবায়েদকে সম্পর্ক থেকে সরে আসতে বলা হলে তিনি বলেন, ‘মেয়ে তো আমাকে ভালোবাসে আমি কেন সরে যাব।’ একপর্যায়ে জোবায়েদকে চাকু দিয়ে গলায় আঘাত করেন মাহির। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে জোবায়েদ সেখানে মারা যান।
এক প্রশ্নের জবাবে নজরুল ইসলাম বলেন, হত্যার পরিকল্পনা করেছে মেয়েটিই। বরগুনার মিন্নির ঘটনার সঙ্গে অনেকাংশে মিল রয়েছে। মেয়েটা দুজনের কারও কাছ থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলেন না। ফলে তিনি নিজেই হত্যার পরিকল্পনা সাজান। এখানে কোনো রাজনৈতিক বিষয় নেই। এটা সম্পূর্ণ ত্রিভুজ প্রেমের কাহিনি। গত ২৬ সেপ্টেম্বর মাহির বিষয়টি নিয়ে মেয়েটিকে চাপ প্রয়োগ করলে, সেদিনই গৃহশিক্ষক জোবায়েদকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন তাঁরা। এর সঙ্গে পরিবারের কারোর জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া যায়নি বলে জানায় পুলিশ।
পরে ডিএমপির লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মল্লিক আহসান উদ্দিন সামী বলেন, জোবায়েদ যখন মারা যান, তখন ছাত্রীটি সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তদন্তে জানা গেছে, ছাত্রীকে উদ্দেশ করে জোবায়েদের শেষ কথা ছিল, ‘আমাকে বাঁচাও’। ছাত্রী তখন জোবায়েদের উদ্দেশে বলেন, ‘তুমি না সরলে, আমি মাহিরের হব না’ এ ধরনের এক কথা। তদন্তে উঠে এসেছে, দোতলার সিঁড়িতে জোবায়েদকে ছুরিকাঘাত করা হয়। এ সময় তিনি বাঁচার চেষ্টা করছিলেন। ছাত্রীর বাসা পাঁচতলায় হলেও ঘটনার সময় তিনি তিনতলার সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে হত্যাকাণ্ড দেখেন। এ সময় দোতলার দরজায় ধাক্কা দিলে তা না খোলায় জোবায়েদ তিনতলায় যেতে চান। তখন সিঁড়িতে পড়ে যান এবং সেখানেই মারা যান।
আদালত এলাকায় মিছিল
এদিকে তিন আসামিকে আদালতে হাজির করার পর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা আসামিদের ফাঁসির দাবিতে আদালত এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেন। তাঁরা দ্রুত বিচার দাবি করেন এবং এই মামলায় আরও যাঁরা জড়িত তাঁদের শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।
ভোলার নির্মাণশ্রমিক মো. রিয়াজ (৩৫)। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার সামনে গুলিতে নিহত হন তিনি। অথচ ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের তিনটি এলাকাকে তাঁর হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থল দেখিয়ে তিনটি আলাদা হত্যা মামলা হয়েছে। তিন মামলায় আসামির সংখ্যা দেড় হাজারের বেশি। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ৩৪টি জেলার রাজনীতিক...
০৯ আগস্ট ২০২৫চট্টগ্রামে একটি বালু বিক্রয় কেন্দ্রে চাঁদা না পেয়ে প্রতিষ্ঠানটির এক্সকাভেটরসহ মালপত্র লুটের অভিযোগ উঠেছে দক্ষিণ জেলা বিএনপির এক নেতাসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে। গত সোমবার নগর পুলিশের সহকারী কমিশনারের কাছে এক ব্যবসায়ী অভিযোগটি করেন।
২ ঘণ্টা আগেরাজশাহীতে ওয়াসার পাম্পঘর থেকে বৈদ্যুতিক তার চুরির ঘটনা বেড়েই চলেছে। এতে পানি সরবরাহ ব্যাহত হওয়ায় তীব্র ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী। চুরি ঠেকাতে পুলিশের টহল বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়ে গত সোমবার রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) কমিশনারকে চিঠি দেয় ওয়াসা। তারপর ওই রাতেই কাজলা ও খোজাপুর গোরস্তানসংলগ্ন...
২ ঘণ্টা আগেনওগাঁর মান্দা উপজেলায় দুটি ভুয়া প্রকল্পের নামে বার্ষিক উন্নয়ন তহবিল (এডিবি) থেকে ৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা প্রকৌশলী আবু সায়েদের বিরুদ্ধে। প্রকল্পের কাগজপত্রে কাজ সম্পন্ন দেখানো হলেও বাস্তবে এসব প্রকল্পের কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।
২ ঘণ্টা আগে