Ajker Patrika

গাজী টায়ার্সে অগ্নিকাণ্ডের ১ বছর

নিখোঁজদের অপেক্ষায় স্বজনেরা

  • ২৫ আগস্ট দ্বিতীয় দফায় হামলা চালানো হয়।
  • লুটপাটের সময় একটি পক্ষ আগুন ধরিয়ে দেয়।
  • স্বজনদের তথ্যে ১৮২ জন নিখোঁজের তালিকা হয়।
সাবিত আল হাসান, নারায়ণগঞ্জ
আপডেট : ২৮ আগস্ট ২০২৫, ০৭: ৩০
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার বরপা মীরাবাড়ির বাসিন্দা আসাদ ভূঁইয়া (৪৫)। কাজ করতেন স্থানীয় এক ওয়ার্কশপে। স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে সংসার চালিয়ে যাচ্ছিলেন কোনোরকমে। গত বছরের ২৫ আগস্ট রূপসী মোড়ে গাজী টায়ার্স কারখানায় লুটপাট ও মারামারি শুরু হলে হাজারো উৎসুক জনতার সঙ্গে তাঁর ১০ বছর বয়সী এক ছেলেও গিয়েছিল সেখানে। খবর পেয়ে সন্তানকে খুঁজতে যান আসাদ, কিন্তু কারখানার ভেতরে প্রবেশের পর আর বের হতে পারেননি। শুধু ফোন করে বলতে পেরেছিলেন, ‘আমারে বাঁচাও রীতা, আমি আটকায়া গেছি।’

ঘটনার এক বছর উপলক্ষে গত মঙ্গলবার বরপা মীরাবাড়ির বাসায় গিয়ে আসাদের স্ত্রী রীতার (৩৬) সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য জানিয়ে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। রীতা জানান, নিজের স্বামীর নিখোঁজের কথা কাউকে মন খুলে বলতেও পারেন না। কিছু বলতে গেলেই প্রতিবেশীদের কেউ কেউ কটাক্ষ করে বলেন, ‘লুটপাট করতে গিয়া মরছে।’ স্বামী হারানোর সঙ্গে সঙ্গে যেন নিজেদের মন খুলে শোক প্রকাশের সুযোগও হারিয়ে গেছে রীতার।

স্থানীয় বাসিন্দাদের তথ্যমতে, গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ওই সরকারের সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর মালিকানাধীন গাজী টায়ার্স কারখানায় ২৫ আগস্ট বিকেলে দ্বিতীয় দফায় হামলা চালানো হয়। মাইকে ঘোষণা দেওয়া হয়, রূপগঞ্জের রূপসী এলাকায় কারখানার ভেতরে দখল করে রাখা জমি বুঝে নেওয়া হবে। এই ঘোষণার পরপরই টায়ার তৈরির প্রতিষ্ঠানটিতে লুটপাট শুরু হয়। একপর্যায়ে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। তখন বেশ কয়েকটি গুলির শব্দও শুনতে পান প্রত্যক্ষদর্শীরা। এ সময় একটি পক্ষ কারখানার ভেতরে লুটপাট চালাতে থাকলে আরেক পক্ষ নিচের শাটার লাগিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে ভেতরে আটকা পড়া লোকজন পুড়ে মারা যায়।

প্রায় তিন দিন টানা আগুন জ্বলে ছয়তলা কারখানা ভবনে। আগুন নেভার পর ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় ভেতরে যাওয়ার সুযোগ পায়নি ফায়ার সার্ভিস। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে পরিদর্শক দল এসেও ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে। পরে ভেতরে ড্রোন পাঠানো হলেও সেখানে মরদেহের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। তবে কারখানার বাইরে অপেক্ষমাণ স্বজনদের দেওয়া তথ্যে ১৮২ জন নিখোঁজের একটি তালিকা প্রস্তুত করা হয়।

এমন নিখোঁজ ব্যক্তিদের একজন বরপা মীরাবাড়ির আবু সাঈদ (৬০)। মঙ্গলবার দুপুরে তাঁর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে চলছে রান্নার প্রস্তুতি। জিজ্ঞাসা করতেই পরিবারের লোকজন জানালেন, সাঈদের সম্ভাব্য মৃত্যুর দিন ধরে নিয়ে তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনায় গরিব-দুঃখীদের জন্য খাবার রান্না করা হচ্ছে।

গাড়িচালক সাঈদের স্ত্রী নাসরিন আক্তার (৪৫) বলেন, ‘ঘটনার দিন সন্ধ্যায় আমাকে ফোন দিয়ে বলল, “রূপসী আসছি, কিছু এনে দিতে হবে?” আমি বললাম কিছু লাগবে না। রাত ৯টায় আবার আমাকে ফোন করে বলল, “আমি কারখানার ভেতরে আটকা পড়ে গেছি। তোমরা লোকজন নিয়ে এসে আমাকে বাঁচাও।” সেই যে ফোন রাখল। পরে রাত ১টা পর্যন্ত ফোন বেজেছে, কিন্তু কেউ ধরে নাই। তিনটা মেয়েকে আমি এখন একাই বড় করছি। ভাইবোনদের সহযোগিতা নিয়ে চলছি।’

একই এলাকার ওয়াকিব শিকদারের ছেলে শাহাদাৎ শিকদারও হারিয়ে যান ওই দিন। প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে পরিবারের সদস্যরা জেনেছেন, শাহাদাৎ তাঁর ছোট ভাইকে খুঁজতে গিয়েছিলেন কারখানায়। পরে সেখান থেকে আর বাড়ি ফেরেননি। ওয়াকিব বলেন, ‘আমার ছেলে হারিয়ে গেছে। কারও কাছে কিছু চাওয়ার নাই। সরকারের কাছেও কিছু চাই না।’

ঘটনার পর নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনেরা কয়েক দফা জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন। বিক্ষুব্ধ হয়ে কারখানায় প্রবেশ করে বের করে এনেছেন পোড়া হাড়গোড়। সেসব পুলিশ উদ্ধার করে অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কাছে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছে।

এ নিয়ে কথা হলে জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার বলেন, ‘ঘটনার তদন্তে পুলিশ কাজ করছে। উদ্ধার করা হাড়গুলো ফরেনসিক পরীক্ষায় পাঠানো হলেও কোনো স্বজনের সঙ্গে তা ম্যাচ করেনি। আমাদের তদন্তের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আশা করছি আগামী মাসে রিপোর্ট দিতে পারব।’

এই ঘটনায় কারা জড়িত বা অগ্নিসংযোগকারীদের বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে পারেনি পুলিশ।

যোগাযোগ করা হলে জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের কাছে নিখোঁজ বেশ কয়েকজনের স্বজনেরা এসেছিলেন। আমরা তাঁদের সন্ধানের বিষয়ে পুলিশকে অবগত করেছি। তবে তারা আমাদের কিছু জানায়নি। নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবারগুলো আমাদের কাছে আর্থিক সহায়তা চায়নি। তারা চাইলে এই বিষয়ে আমরা পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ১৩
নিহত লায়লা আফরোজ ও নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ। ছবি: সংগৃহীত
নিহত লায়লা আফরোজ ও নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ। ছবি: সংগৃহীত

‎রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যার ঘটনায় গৃহকর্মী আয়েশাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার দুপুরে ঝালকাঠি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

‎গ্রেপ্তারের বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন তেজগাঁও বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন।

‎মামুন বলেন, গৃহকর্মী আয়েশাকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঝালকাঠি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গত সোমবার সকালে শাহজাহান রোডের ১৪ তলা একটি আবাসিক ভবনের সপ্তম তলায় লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তাঁর মেয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে (১৫) ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।

মা-মেয়ে হত্যায় অভিযুক্ত গৃহকর্মী আয়েশা। ছবি: আজকের পত্রিকা
মা-মেয়ে হত্যায় অভিযুক্ত গৃহকর্মী আয়েশা। ছবি: আজকের পত্রিকা

গতকাল তাঁদের মরদেহ নাটোরে দাফন করা হয়েছে। মামলার এজাহারে বাসা থেকে মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র খোয়া যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।

ভবনের ভেতরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, হত্যাকাণ্ডের পর এক নারী স্কুলড্রেস পরে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। চার দিন আগে আয়েশা পরিচয় দিয়ে ওই বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেওয়া তরুণী (২০) এই জোড়া খুনে জড়িত বলে সন্দেহ স্বজনদের। ঘটনার পর থেকে ওই তরুণী পলাতক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি 
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে মজিরুলের নেতৃত্বে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে মজিরুলের নেতৃত্বে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

জীবন আছে যার, তার মৃত্যু অনিবার্য। মৃত্যুর পর মানুষের শেষ ঠিকানা কবর। মৃতদেহ গোসল করিয়ে কাফন পরানো হয়, জানাজা শেষে তাকে শায়িত করা হয় চিরনিদ্রার ঘরে। এই কবর খোঁড়ার দায়িত্বটি গ্রামের কিছু মানুষ বহু বছর ধরে স্বেচ্ছায়, বিনা পারিশ্রমিকে পালন করে আসছেন, যাঁরা সবার কাছে ‘গোরখোদক’ নামে পরিচিত। আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় তাঁরা করে থাকেন এই কাজ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গোরখোদকেরা কোনো পারিশ্রমিক নেন না। গ্রামের যে কেউ মারা যাক, নিজেদের ব্যস্ততা ফেলে তাঁরা ছুটে আসেন কবর খুঁড়তে। তাঁদের এই মানবিক কাজের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে গ্রামের লোকেরা দোয়া করেন—আল্লাহ যেন তাদের সুস্থ ও ভালো রাখেন।

দেবীপুর গ্রামের বাসিন্দা গোরখোদক মজিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ৫৫ বছর ধরে কবর খুঁড়ছি। যত দিন সুস্থ থাকব, এই কাজ চালিয়ে যাব। আমাদের গ্রাম ছাড়াও অন্য গ্রাম থেকে কেউ ডাকলে সেখানেও যাই। ছোটবেলায় ওস্তাদের কাছে ডালি ধরেই শিখেছি। গরিব মানুষ, মাঠে কাজ করি; কিন্তু কেউ মারা গেলে দ্বিধা করি না—এই কাজ আমার নেশায় পরিণত হয়েছে।’

মজিরুল আরও জানান, এখন তিনি তরুণদেরও এই কাজ শেখাচ্ছেন।

গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

গোরখোদক শাকের আলী বলেন, ‘আমরা নিঃস্বার্থভাবে কাজ করি। কখনো কোনো টাকা নিই না। যেখানেই থাকি, গ্রামের কারও মৃত্যুর সংবাদ শুনলে দ্রুত কবর খুঁড়তে চলে আসি।’

গোরখোদক ফুয়াদ হোসেন বলেন, ‘অন্য গ্রাম থেকে ডাক এলেও আমরা যাই। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই করি এই কাজ। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’

স্থানীয় বাসিন্দা শাজাহান আলী বলেন, ‘কবর খোঁড়া বড় দায়িত্বের কাজ। গ্রামের এসব মানুষ খবর পেলেই দৌড়ে আসে। আমরা তাদের জন্য দোয়া করি।’

মাওলানা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘মৃত ব্যক্তির জন্য কবর খোঁড়া নিঃসন্দেহে সওয়াবের কাজ। হাদিসে এসেছে—যাঁরা কবর খোঁড়েন, আল্লাহ তাদের জন্য জান্নাতে ঘর নির্মাণ করবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে কারখানার ফটকের সামনে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকেরা। আন্দোলনের মুখে কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রধান ফটক তালাবদ্ধ করে সটকে পড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে শিল্প ও থানা-পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসেছেন। আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের সাইটালিয়া গ্রামে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানায় এই ঘটনা ঘটে।

কারখানার নারী শ্রমিক মিনারা আক্তার বলেন, ‘অক্টোবর ও নভেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করে নাই। এক মাসের বেতন না পেলে আমাদের চলা খুবই কঠিন হয়। আমাদের নাওয়া-খাওয়া বন্ধ হয়। আর সেখানে কারখানা কর্তৃপক্ষ দুই মাসের বেতনভাতা বকেয়া রেখেছে। আজ সকালে শ্রমিকেরা জড়ো হলে তারা পালিয়ে যায়।’

মিন্টু নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘এই কারখানায় আমরা তিন বছর ধরে চাকরি করছি। আমাদের বেতনের বাইরে কোনো সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে না। তবু পেটের দায়ে চাকরি করি। দুই মাসের বেতন বকেয়া। আমাদের তো পেট আছে, সন্তান-সংসার আছে। এক মাস দোকান বাকি পরিশোধ করতে না পারলে পরের মাসে আর দোকানি বাকি দেয় না। আমরা কী অবস্থায় আছি, একবার ভাবুন। বেতন পরিশোধ না করে তারা পালিয়ে গেছে।’

আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

মেহেদী হাসান বলেন, ‘এত দিন ধরে ঋণ করে বলে-কয়ে দোকান থেকে বাকি নিয়ে চলছি। আর পারছি না। এখন দোকান বাকি দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। অক্টোবর মাসের বকেয়া বেতন নিয়ে কমপক্ষে ১০টি তারিখ দিছে। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ বেতন পরিশোধ করেনি। শেষে আজ বেতন পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু তারা কারখানা ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে গেছে।’

কারখানার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. বুলবুল হাসান বলেন, ‘ব্যাংকের সমস্যার কারণে বেতন-ভাতা পরিশোধ করা যাচ্ছে না। আশা করি, আজকের মধ্যে নভেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করতে পারব।’ বিনা নোটিশে কারখানার ফটক কেন তালাবদ্ধ? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমি বলতে পারব না।’

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাছির আহমদ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাছ ধরতে গিয়ে ভারতে আটক ৬ জেলে, ১৩ মাস পর হস্তান্তর

নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি 
১৩ মাস সাজা ভোগের পর হস্তান্তর হওয়া বাংলাদেশি ছয় জেলে। ছবি: আজকের পত্রিকা
১৩ মাস সাজা ভোগের পর হস্তান্তর হওয়া বাংলাদেশি ছয় জেলে। ছবি: আজকের পত্রিকা

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার নাকুগাঁও সীমান্ত দিয়ে ছয় বাংলাদেশি মৎস্যজীবীকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কাছে হস্তান্তর করেছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁদের হস্তান্তর করা হয়।

হস্তান্তর হওয়া মৎস্যজীবীরা কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলার বাসিন্দা। তাঁরা হলেন আবুল হোসেনের ছেলে রাসেল মিয়া (৩৫), বাহাদুর মিয়ার ছেলে বিপ্লব মিয়া (৪৫), ইসহাক আলীর ছেলে মীর জাফর আলী (৪৫), ইছাক আলীর ছেলে বকুল মিয়া (৩২), ফকির আলীর ছেলে আমের আলী (৩৫), সলিমুদ্দিন ব্যাপারীর ছেলে চাঁন মিয়া (৬০)।

বিজিবি ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৪ নভেম্বর জিঞ্জিরাম নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে ভুলক্রমে সীমান্ত অতিক্রম করে তাঁরা ভারতের ভেতরে প্রবেশ করেন। এ সময় স্থানীয় পুলিশ ও বিএসএফ সদস্যরা তাঁদের আটক করে। অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে তাঁরা সেখানে প্রায় ১৩ মাস সাজা ভোগ করেন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সন্ধ্যায় শেরপুর ৩৯ বিজিবির দায়িত্বে থাকা এলাকার হাতিপাগার বিজিবি কোয়ার্টার মাস্টার মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে ভারতের কিল্লাপাড়া বিএসএফ ক্যাম্পের সঙ্গে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে বিএসএফ ছয় বাংলাদেশি নাগরিককে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে। এ সময় নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।

মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান বলেন, আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর তাঁদেরকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত