Ajker Patrika

ময়মনসিংহে টাস্কফোর্সের উচ্ছেদ অভিযান, পথচারীদের স্বস্তি

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
ময়মনসিংহ নগরীতে টাস্কফোর্সের উচ্ছেদ অভিযান। ছবি: আজকের পত্রিকা
ময়মনসিংহ নগরীতে টাস্কফোর্সের উচ্ছেদ অভিযান। ছবি: আজকের পত্রিকা

ময়মনসিংহ নগরীর ফুটপাতে অবৈধ দোকান-হকার উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছে টাস্কফোর্স। অভিযানে অস্থায়ী হকার্স মার্কেট উচ্ছেদ ও পাঁচ দোকানিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়া তাজমহলের মোড় থেকে নতুন বাজার এলাকায় ফুটপাতে ভাসমান দোকান ও হকার উচ্ছেদে চলাচলে স্বস্তি ফিরেছে।

আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত এই অভিযান চালানো হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ শাহনেওয়াজ মোর্শেদ অপু।

ময়মনসিংহ নগরীতে টাস্কফোর্সের উচ্ছেদ অভিযান। ছবি: আজকের পত্রিকা
ময়মনসিংহ নগরীতে টাস্কফোর্সের উচ্ছেদ অভিযান। ছবি: আজকের পত্রিকা

স্টেশন রোডে অভিযান শুরুর আগে নিউ হকার্স মার্কেটের ব্যবসায়ীদের মালামাল সরিয়ে নিতে ১৫ মিনিট সময় দেওয়া হয়। তড়িঘড়ি করে ব্যবসায়ীরা দোকান থেকে মালামাল সরান। পরে অস্থায়ীভাবে নির্মিত স্থাপনাটি এক্সকাভেটর দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এ সময় ব্যবসায়ীরা প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান তাঁদের পুনর্বাসনের জন্য।

ব্যবসায়ী নূর আলম বলেন, ‘জেলা প্রশাসক আমাদের এখানে ব্যবসা করার জন্য অস্থায়ীভাবে স্থাপনা নির্মাণ করে দিয়েছিলেন। এখন হঠাৎ করে আমাদের না জানিয়ে ভাঙা হলো, বিষয়টি বুঝতে পারলাম না। বাল-বাচ্চা নিয়ে চলাটা খুব কঠিন হবে।’

বাচ্চু মিয়া নামের আরও এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি, পরিবারের কথা চিন্তা করে পুনর্বাসন করা হোক। আগে রাস্তার পাশে বসার কারণে সমস্যা হতো, যানজট ভোগান্তিতে মানুষ পড়ত। তাই এখানে চলে এসেছিলাম, এটাও আমাদের জন্য স্থায়ী হলো না।’

আরও এক ব্যবসায়ী রুপন মিয়া বলেন, ‘দীর্ঘ বছর ধরে ফুটপাতে ব্যবসা করে পরিবার-পরিজন নিয়ে চলছি। আজ থেকে সবকিছু ভেঙে দেওয়া হলো, এখন কী করব ভেবে পাচ্ছি না। আমাদের বিষয়টি যেন প্রশাসন বিবেচনা করে।’

গাঙ্গিনারপাড় এলাকার বাসিন্দা হামিদুল ইসলাম বলেন, ‘হকার উচ্ছেদে স্বস্তি ফিরেছে গাঙ্গিনারপাড় এলাকায়। প্রতিদিন সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত গাঙ্গিনারপাড় এলাকায় রাস্তার দুপাশে হকার বসার কারণে তীব্র যানজট হতো। ছিনতাইকারীরা ছিনতাইয়ের সুযোগ পেত। এখন আমরা খুব স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল করতে পারছি। এমন পরিবেশ বজায় থাকলে যানজট অনেকটাই কমে যাবে।’

ময়মনসিংহ নগরীতে টাস্কফোর্সের উচ্ছেদ অভিযান। ছবি: আজকের পত্রিকা
ময়মনসিংহ নগরীতে টাস্কফোর্সের উচ্ছেদ অভিযান। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাঙ্গিনারপাড় ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুজ্জামান ছোটন বলেন, ‘সাধারণ মানুষের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তাজমহলের মোড় থেকে নতুন বাজার এলাকা পর্যন্ত রাস্তার দুপাশে ফুটপাতে অবৈধ ভাসমান দোকান ও হকার উচ্ছেদ করা হয়েছে। সে স্থানগুলোতে হকারেরা যেন বসতে না পারে, সে লক্ষ্যে ২৫ জন আনসার সদস্য নিয়োগ করা হয়েছে। তাঁদের ব্যয়ভার বহন করবেন ব্যবসায়ীরা। আশা করি, এতে ফুটপাত স্থায়ীভাবে হকারমুক্ত হবে। মানুষের চলাচল হবে নির্বিঘ্ন।’

জানতে চাইলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ শাহনেওয়াজ মোর্শেদ অপু বলেন, ‘নগরীর প্রধান সড়ক স্টেশন রোড থেকে নতুন বাজার পর্যন্ত ফুটপাতে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা এসব দোকান ও হকারদের কারণে পথচারীদের চলাচলে চরম বিঘ্ন সৃষ্টি হতো। এতে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়। যানজট নিরসনে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। এর আগে এসব সড়কে অবৈধ হকার উচ্ছেদ অভিযানের তথ্য জেলা তথ্য অফিস থেকে সতর্ক করে প্রচার করা হয়।

ময়মনসিংহ নগরীতে টাস্কফোর্সের উচ্ছেদ অভিযান। ছবি: আজকের পত্রিকা
ময়মনসিংহ নগরীতে টাস্কফোর্সের উচ্ছেদ অভিযান। ছবি: আজকের পত্রিকা

অপর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, মূলত মানুষের চলাচলে স্বস্তি দিতে অভিযান চালানো হয়েছে। কোনো হকার যেন অবৈধভাবে রাস্তার পাশে আর বসতে না পারেন, সে লক্ষ্যে অভিযান অব্যাহত থাকবে। হকারদের কোনো দাবিদাওয়া থাকলে তাঁরা জেলা প্রশাসকের কাছে বলতে পারেন।

এ সময় সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন নূর মোহাম্মদ নাহিয়ান ইসলাম, র‍্যাব-১৪ সদর দপ্তরের ডিএডি রফিক, আনসার ও ভিডিপি জেলা কমান্ড্যান্ট রবিউল ইসলাম, ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তাসহ পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদির ওপর হামলাকারীরা সীমান্ত দিয়ে পালিয়েছে কি না—তা শতভাগ নিশ্চিত নয় বিজিবি

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান । ছবি: আজকের পত্রিকা
বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান । ছবি: আজকের পত্রিকা

বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, ঢাকায় শরিফ ওসমান হাদির ওপর গুলি বর্ষণকারী ব্যক্তিরা ময়মনসিংহ সীমান্ত ব্যবহার করে ভারতে পালিয়েছে কি না—তা এখনো শতভাগ নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।

সোমবার ময়মনসিংহ নগরীর খাগডহর বিজিবি ক্যাম্পে তিনি আরও জানান, শুক্রবার ৯টার মধ্যে বিজিবি সদর দপ্তরের নির্দেশনায় সম্ভাব্য পাচারের রুটগুলো চিহ্নিত করে টহল এবং চেকপোস্ট বসানো হয় সীমান্তের অধিকাংশ স্থানে। পরদিন অর্থাৎ শনিবারে পুলিশ এবং বিজিবির সমন্বয়ে যৌথ অপারেশনের প্ল্যান করা হয়। ঢাকা থেকে আগত পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে বিজিবি ময়মনসিংহ সেক্টর কমান্ডারের নিয়মিত যোগাযোগ এবং অপারেশন সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা হয়।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আলোচনায় দুটি স্থানে একসঙ্গে অপারেশনের প্ল্যান করা হয়। সন্দেহভাজন হিসেবে শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে অবস্থানরত ফিলিপ স্নালকে আটকের পরিকল্পনা করা হয়। পুলিশের আরেকটি টিম হালুয়াঘাট এলাকায় অপারেশনের প্ল্যান করে। হালুয়াঘাটে অপারেশনের বিষয়ে বিজিবির সোর্স এবং অন্যান্য বিষয়ে তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহায়তা করেছে। অপর দিকে নালিতাবাড়ীর বারোমারি এলাকায় অপারেশন পরিচালিত হয় বিজিবির নেতৃত্বে এবং ঢাকা হতে আগত ও হালুয়াঘাট থানার পুলিশ সদস্যদের সমন্বয়ে। কিন্তু ফিলিপকে পাওয়া যায়নি। তবে তার স্ত্রী ডেলটা চিরান, শ্বশুর ইয়ারসন রংডি এবং মানব পাচারকারী লুইস লেংমিঞ্জাকে আটক করা হয়। তাদের বাড়ি থেকে একটি মোটরসাইকেলও উদ্ধার করা হয়।’

তাঁদের পরিবারের তিনজনসহ এ পর্যন্ত বিজিবি চারজনকে আটক করেছে। এঁদের মধ্যে সোমবার সকালে মানব পাচারকারী বেঞ্জামিন চিরামকে আটক করা হয়। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বরগুনায় স্বামীকে গলা টিপে হত্যা, স্ত্রী ও পরকীয়া প্রেমিক আটক

বরগুনা প্রতিনিধি
আটক পরকীয়া প্রেমিক আলামিন। ছবি: সংগৃহীত
আটক পরকীয়া প্রেমিক আলামিন। ছবি: সংগৃহীত

বরগুনার বামনা উপজেলায় পরকীয়া প্রেমের জেরে এক প্রবাসফেরত স্বামীকে গলা টিপে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ আব্দুল জলিল (৪৫)। তিনি উপজেলার রামনা ইউনিয়নের ঘোপখালী গ্রামের বাসিন্দা।

এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী নাজমা বেগম (৩৫) ও তাঁর পরকীয়া প্রেমিক আলামিনকে (৩০) আটক করেছে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দুজনই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে আব্দুল জলিলের নিজ বাড়িতে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।

স্থানীয় ও থানা সূত্রে জানা যায়, প্রায় পাঁচ বছর ধরে একই এলাকার আবু খতিবের ছেলে আলামিন নিহতের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করতেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে নাজমা বেগমের পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রায় ১৫ দিন আগে প্রবাস থেকে বাড়িতে ফিরে স্ত্রীর সম্পর্কের বিষয়টি জানতে পারেন আব্দুল জলিল।

অভিযোগ রয়েছে, রোববার বিকেলে স্ত্রী ও ওই গৃহকর্মী মিলে ঘুমন্ত অবস্থায় আব্দুল জলিলকে গলা টিপে হত্যা করেন।

হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করে বামনা থানায় নিয়ে যায়। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

বামনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে নিহতের স্ত্রী ও তাঁর পরকীয়া প্রেমিককে তাৎক্ষণিকভাবে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা দুজনই হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। মামলা দায়েরের পর আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মহান বিজয় দিবসে মেট্রোরেল সাময়িক বন্ধ থাকবে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে আগামী ১৬ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) মেট্রোরেল চলাচল সাময়িক বন্ধ থাকবে। ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দর এলাকায় প্যারাজাম্প অনুষ্ঠিত হওয়ার কারণে প্যারাট্রুপারদের নিরাপত্তার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ডিএমটিসিএল ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে জানিয়েছে, আগামী ১৬ ডিসেম্বর দুপুর ১১টা ৫০ মিনিট হতে ১২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত, অর্থাৎ মোট ৪০ মিনিটের জন্য মেট্রোরেল চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে।

ডিএমটিসিএল সাময়িক অসুবিধার জন্য যাত্রীসাধারণের কাছে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে। যাত্রীদের এই সময়সূচি মেনে প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ইডেনের সেই ছাত্রীকে বিয়ের ছয়মাস পর নোবেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের চার্জশিট

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
নোবেল। ছবি: সংগৃহীত
নোবেল। ছবি: সংগৃহীত

বাসায় আটকে রেখে ইডেন কলেজের এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করার অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় গায়ক নোবেলের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। গত ২৯ নভেম্বর ডেমরা থানার উপপরিদর্শক এসআই মুরাদ হোসেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন প্রসিকিউশন বিভাগের উপপরিদর্শক (এসআই) ইলামনি আজ সোমবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, আগামী ২৮ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্রটি উপস্থাপন করা হবে। পরে এ সংক্রান্ত মামলা বিচারের জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হবে।

নোবেলের আইনজীবী মোসতাক আহমেদ জানান, এই ধর্ষণ মামলার বাদীকে বিয়ে করেছেন নোবেল। তাঁরা সংসার করছেন।

গত ১৯ মে নোবেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, নির্যাতন ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেন ইডেন কলেজের ওই ছাত্রী। নোবেলকে গ্রেপ্তার করার পর কারাগারে পাঠানো হলে বিয়ের শর্তে তিনি জামিন পান। ১৯ জুন ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বসে ১০ লাখ টাকা দেনমোহরে নোবেল ওই ছাত্রীকে বিয়ে করেন।

এই মামলায় অভিযোগ করা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই ছাত্রীর সঙ্গে পরিচয় হয় নোবেলের। এরপর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নোবেল তাঁর স্টুডিও দেখানোর কথা বলে ছাত্রীকে ডেমরার বাসায় নিয়ে যান। সেখানে আটকে রাখেন, মোবাইল ফোন ও টাকা কেড়ে নেন। এরপর ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণ করেন। কথামতো না চললে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয়ও দেখান।

অভিযোগে বলা হয়, ওই তরুণীকে ছয় মাস ধরে ডেমরার ওই বাসায় আটকে রাখা হয়, মারধর করা হতো প্রায়ই। দু-তিন জনের সহায়তায় বাদীকে চুল ধরে টেনেহিঁচড়ে একটি কক্ষে আটকে রাখেন নোবেল। ওই ঘটনার ভিডিও ছড়ালে বাদীর বাবা-মা তাঁকে চিনতে পারেন। এরপর পরিবার পুলিশের সহায়তায় তাঁকে ১৯ মে উদ্ধার করে এবং পুলিশ নোবেলকে গ্রেপ্তার করে।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, নোবেল বাদীকে আটক রেখে ধর্ষণ করেন এবং ধর্ষণের ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে রাখেন। বাসায় না থাকলে ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। নোবেল নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বিভিন্ন সময়ে তাঁকে মারপিট করেছেন।

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, বাদীর অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। আসামি নোবেল জামিনে আছেন।

তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্রে আরও বলেছেন, বাদীকে মারধর ও ধর্ষণে আসামিকে আরও কয়েকজন সহযোগিতা করেছেন। তবে তাঁদের নাম-ঠিকানা উদ্‌ঘাটন করা সম্ভব হয়নি। অদূর ভবিষ্যতে তাঁদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করা সম্ভব হলে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।

এখন কী হবে:

নোবেলের আইনজীবী বলেছেন, নোবেল মামলার বাদীকে বিয়ে করে সংসার করছেন। তাই এই অভিযোগপত্রে নোবেলের কোনো সমস্যা হবে না। বিচারিক ট্রাইব্যুনালে বাদী আপসনামা দেওয়ার পর মামলা নিষ্পত্তি হবে। খালাস পাবেন নোবেল।

উল্লেখ্য, ভারতের সংগীত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান ‘সা রে গা মা’ দিয়ে পরিচিতি পান এই গায়ক। এর আগে মাদকে আসক্ত হয়ে সংগীত ছেড়েছিলেন তিনি। দীর্ঘ বিরতির পর আবারও শ্রোতাদের সামনে হাজির হন। সেবার নোবেল জানিয়েছিলেন, তিনি আর কখনো দর্শকদের হতাশ করবেন না। সব অতীত পেছনে ফেলে নিয়মিত গান উপহার দেবেন।

কিন্তু ২০২৩ সালে অগ্রিম টাকা নিয়ে গান গাইতে না যাওয়ায় প্রতারণার অভিযোগে রাজধানীর মতিঝিল থানায় নোবেলের বিরুদ্ধে মামলা হয়। জানা যায়, ওই বছর ১৬ মে শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ হেডকোয়ার্টার পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি ব্যাচ ২০১৬-এর অনুষ্ঠানে গান গাইতে গিয়ে ১ লাখ ৭২ হাজার টাকা অগ্রিম নেওয়ার প্রতারণায় অভিযোগে আটক হয়েছিলেন। সে সময় একদিন রিমান্ডেও ছিলেন এই গায়ক। পরে আপসের মাধ্যমে ওই মামলা থেকে অব্যাহতিও পান নোবেল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত