Ajker Patrika

শিক্ষকেরা ধর্মমন্ত্রীর সংবর্ধনায় গেলেও যায়নি শিক্ষার্থীরা

ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২: ৩৭
শিক্ষকেরা ধর্মমন্ত্রীর সংবর্ধনায় গেলেও যায়নি শিক্ষার্থীরা

জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার গাইবান্ধা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কর্মী সমাবেশে ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান দুলালকে স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকেরা সংবর্ধনা জানালেও সেখানে কোনো বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যায়নি। ওই কর্মী সমাবেশে ধর্মমন্ত্রীকে সংবর্ধনা জানাতে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অংশ নিতে আগে থেকেই তাগিদ দিয়েছিলেন আয়োজকেরা। এতে স্থানীয় বিভিন্ন মহলে সমালোচনা হয়। 

গতকাল বুধবার উপজেলার গাইবান্ধা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উদ্যোগে স্থানীয় নছিমুন্নেছা ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসা মাঠে ওই কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বেলা ৩টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও মূলত সমাবেশ দুপুর থেকেই শুরু হয়। এতে ওই মাদ্রাসার পাঠদান কার্যক্রম সংক্ষিপ্ত করে কর্তৃপক্ষ। 

কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জামালপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ও ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান দুলাল। কর্মী সমাবেশে অংশ নেওয়ার জন্য আয়োজকদের পক্ষ থেকে গাইবান্ধা ইউনিয়নের পোড়ারচর আব্দুস সাত্তার উচ্চবিদ্যালয়, গাইবান্ধা সুরুজ্জাহান উচ্চবিদ্যালয়, গাইবান্ধা সাজেদা-মাহমুদ উচ্চবিদ্যালয়, আহম্মেদপুর উচ্চবিদ্যালয়, পোড়ারচর এসএমএ দাখিল মাদ্রাসা, বটচর নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়, নছিমুন্নেছা ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসা ও পোড়ারচর টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের প্রধানকে দাওয়াত দেওয়া হয় আয়োজকদের পক্ষ থেকে। 

সরেজমিনে জানা গেছে, বিকেল ৪টার দিকে কর্মী সমাবেশে উপস্থিত হন ধর্মমন্ত্রী। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুস সালাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও গাইবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাকছুদুর রহমান আনছারী, কোষাধ্যক্ষ মোরশেদুর রহমান খান মাছুম, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আজিজুর রহমান ফুটু, নাদের হোসেন ও সদস্য আবুল কাশেম। 

সমাবেশে ধর্মমন্ত্রীকে সংবর্ধনা জানান বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকেরা। তবে নছিমুন্নেছা ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের ছাড়া অন্য কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সমাবেশে দেখা যায়নি। 

কর্মী সমাবেশ সফল করতে আগে থেকেই বিভিন্ন জনগুরুত্বপূর্ণ মোড়ে নৌকার তোরণসহ বড় বড় গেট নির্মাণ করা হয়েছে। এসব তোরণ ও গেটে সাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছে ধর্মমন্ত্রীর ছবিসহ ব্যানার। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ধর্মমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে তোরণ ও গেট নির্মাণ করা হয়। 

গাইবান্ধা সাজেদা-মাহমুদ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনিছুর রহমান বলেন, ‘কর্মী সমাবেশে ধর্মমন্ত্রীকে সংবর্ধনা দেওয়ার জন্য আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দাওয়াত দেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতারা। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে সমাবেশস্থলে যেতে বলা হয়েছিল। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি অনেকটাই বাধ্যতামূলক থাকলেও অনুষ্ঠান বিকেলে হওয়ায় সেখানে আমরা প্রধান অতিথি ধর্মমন্ত্রীকে সংবর্ধনা দিতে গেলেও শিক্ষার্থীদের নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি।’ 

আহম্মেদপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহনেওয়াজ বলেন, ‘গাইবান্ধা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আজাদ বারী আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এসে শিক্ষার্থীসহ কর্মীসমাবেশে যেতে বলেছিলেন। সমাবেশ স্থল দূরে হওয়ায় শিশু শিক্ষার্থীদের সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়নি। তবে শিক্ষকেরা ধর্মমন্ত্রীকে সংবর্ধনা জানিয়েছি।’ 

পোড়ারচর আব্দুস সাত্তার উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জিয়াউল হক বলেন, ‘ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিয়ে ধর্মমন্ত্রীর সংবর্ধনার জন্য আওয়ামী লীগের কর্মী সমাবেশে যেতে বলেছিলেন। কিন্তু সেখানে শিক্ষকেরা গেলেও শিক্ষার্থীদের নিয়ে যাইনি।’ 

গাইবান্ধা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আজাদ বারী বলেন, ‘ধর্মমন্ত্রীকে সংবর্ধনা দিতে কর্মী সমাবেশে যোগদান করতে ইউনিয়নের সব হাইস্কুল ও দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষকদের দাওয়াত দিয়েছিলাম। শিক্ষার্থীদের সমাবেশে যোগ দেওয়ার বিষয়টি ছিল তাঁদের মর্জি। তবে শিক্ষকেরা সমাবেশে এসেছিলেন।’ 
 
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ইউনিয়নের সব হাইস্কুল ও দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের নিয়ে কর্মী সমাবেশে যোগদান করতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের বলা হয়। তবে শিক্ষকেরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে আসেননি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত