Ajker Patrika

ময়মনসিংহে নিরাপদ সড়কের দাবিতে অবরোধ, মহাসড়কেই পড়া হলো জানাজা

ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
ময়মনসিংহে নিরাপদ সড়কের দাবিতে অবরোধ, মহাসড়কেই পড়া হলো জানাজা

ময়মনসিংহের ত্রিশালে নিরাপদ সড়কের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করেছেন এলাকাবাসী। আজ সোমবার সকালে তাঁরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের সাইনবোর্ড বাসস্ট্যান্ড এলাকা অবরোধ করেন। কয়েক ঘণ্টার অবরোধে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। মহাসড়কেই পড়া হয় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত তোফায়েল আকন্দের জানাজা নামাজ।

তোফায়েল আকন্দ গত ১ জুন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের সাইনবোর্ড বাসস্ট্যান্ডে গাড়ির ধাক্কায় আহত হয়েছিলেন। গতকাল রোববার তিনি মারা যান।

এদিকে আজ ভোরেও একই এলাকায় ইমাম পরিবহনের একটি বাস ও পণ্যবাহী পিকআপ ভ্যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনায় পড়ে। এলাকাবাসী সকাল ৯টা থেকে সকাল ১১টা পর্যন্ত মহাসড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে ব্যারিকেড দিয়ে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে। পরে মহাসড়কেই তোফায়েল আকন্দের জানাজা নামাজ পড়া হয়।

‘বাঁচার মতো বাঁচতে চাই, নিরাপদ সড়ক চাই’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’-সহ নানা স্লোগান দেয় এলাকাবাসী। বিক্ষোভে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও উপস্থিত ছিল।

মানববন্ধনে উপস্থিত আরিফুল হক এরশাদ বলেন, ‘আজ এ মুহূর্তে মহাসড়ক থেকে এ অপরিকল্পিত পিছ ঢালাই সরিয়ে না নিলে আমরা লাগাতার মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি দেব। এ অপরিকল্পিত পিছ ঢালাইয়ের কারণে গত চার মাস ধরে এখানে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। মহাসড়কের এ স্থানে অপরিকল্পিত অতিরিক্ত পিছ ঢালাইয়ের কারণে দ্রুতগামী বাস-ট্রাক নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে না এবং একটু রোদ-বৃষ্টি হলেই এ স্থানটির পিছ গলে পিছলে হয়ে যায়। এখানে প্রতিনিয়তই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে পথচারীসহ যানবাহন।’

ইমাম পরিবহনের একটি বাস ও পণ্যবাহী পিকআপ ভ্যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনায় পড়ে। ছবি: আজকের পত্রিকাসপ্তম শ্রেণির ছাত্র রুবেল মিয়া বলে, ‘এই জায়গায় প্রায় প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনা হয়। আমাদের বাবা-মা এই দুর্ঘটনার জন্য আতঙ্কিত থাকে। বৃষ্টি কিংবা তীব্র রোদে ঝুঁকির চিন্তা করে আমাদের স্কুলে আসতে দেয় না। এতে আমাদের পড়াশোনার অনেক ক্ষতি হচ্ছে।’

অবরোধের খবরে ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন ঘটনাস্থালে আসেন। তিনি অপরিকল্পিত পিছ ঢালাই আজকের মধ্যে সরিয়ে নেওয়া হবে এবং দুর্ঘটনা প্রবণ এলাকায় গতিরোধক স্থাপনের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেয় এলাকাবাসী। এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে প্রায় ১০ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়।

গাছের গুঁড়ি ফেলে মহাসড়ক অবরোধ করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকাকামাল হোসেন বলেন, দ্রুত মহাসড়কের এ স্থানে স্পিড ব্রেকার দেওয়া হবে।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ সড়ক বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী আব্দুল হালিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ মহাসড়কের এ অংশটি পরিদর্শন করে আপাতত তাৎক্ষণিক এখানে দুটি স্পিড ব্রেকার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর কাজ অলরেডি শুরু হয়েছে। আশা করি এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমে যাবে। এরপরও আমাদের টেকনিক্যাল টিম যাচাই-বাছাই করে আর কী ব্যবস্থা নেওয়া যায় সে আলোকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কাপের অবশিষ্ট কফি ড্রেনে ঢেলে দেওয়ায় নারীকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা

এনসিপিকে ‘নাস্তিকদের সংগঠন’ বলে আমাকে মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে: মুফতি আমিনীর নাতি

সোনার বড় দরপতন, একলাফে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা কমল ভরিতে

নারায়ণগঞ্জে ইট দিয়ে থেঁতলে যুবককে হত্যার ভিডিও ভাইরাল, গ্রেপ্তার ৩

এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরকারি কর্মকর্তাদের সভাপতি মনোনয়নের প্রজ্ঞাপন স্থগিত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ককটেল বিস্ফোরণে যুবক নিহত

ঢামেক প্রতিবেদক
আপডেট : ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ১০: ১৬
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ (২০) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় জাহিদকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে হাসপাতালের চিকিৎসক আজ বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ভোরে বন্ধুরা ওই যুবককে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।

এদিকে মোহাম্মদপুর থানার ডিউটি অফিসার মো. আতিকুর রহমান জুয়েল জানান, ভোরে খবর আসে, জেনেভা ক্যাম্পে দুই গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে। এরপর দ্রুত ঘটনাস্থলে একটি টিম পাঠানো হয়। তবে ততক্ষণে পরিস্থিতি শান্ত হয়ে যায়। সেখানে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে, ঘটনাটিতে একজন আহত হয়েছেন। তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তবে আহত ব্যক্তির বিষয়ে বিস্তারিত কেউ বলতে পারেনি।

অপর দিকে হাসপাতালে নিহত জাহিদের বোনজামাই মো. উজ্জ্বল জানান, জাহিদ কল্যাণপুরে তাঁর দোকানে মোবাইল সার্ভিসিংয়ের কাজ করতেন। তাঁর বাসা জেনেভা ক্যাম্পে। বাবার নাম ইরান। রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রাস্তায় যান। এ সময় দুই গ্রুপের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে যান জাহিদ। তখন তাঁর পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরিত হয়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে তাঁকে দ্রুত ট্রমা হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হলে চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জাহিদকে মৃত ঘোষণা করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কাপের অবশিষ্ট কফি ড্রেনে ঢেলে দেওয়ায় নারীকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা

এনসিপিকে ‘নাস্তিকদের সংগঠন’ বলে আমাকে মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে: মুফতি আমিনীর নাতি

সোনার বড় দরপতন, একলাফে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা কমল ভরিতে

নারায়ণগঞ্জে ইট দিয়ে থেঁতলে যুবককে হত্যার ভিডিও ভাইরাল, গ্রেপ্তার ৩

এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরকারি কর্মকর্তাদের সভাপতি মনোনয়নের প্রজ্ঞাপন স্থগিত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জামালপুর পৌরসভার রাস্তাঘাট বেহাল, চরম দুর্ভোগে পৌরবাসী

জামালপুর প্রতিনিধি 
পৌর এলাকার সরদারপাড়ার রাস্তা। ছবি: আজকের পত্রিকা
পৌর এলাকার সরদারপাড়ার রাস্তা। ছবি: আজকের পত্রিকা

জামালপুর পৌরসভার বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার রাস্তাঘাট দীর্ঘদিন ধরে জনসাধারণের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় পৌরবাসী চরম দুর্ভোগে পড়েছে। খানাখন্দে ভরা এসব রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে এবং অনেকে আহত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, রাস্তাজুড়ে খানাখন্দে ভরা। এসব গর্তে সামান্য বৃষ্টিতেই হাঁটুসমান পানি জমে যায়। বিষয়টি পৌর কর্তৃপক্ষকে বারবার জানানো হলেও কোনো প্রতিকার হয়নি।

জামালপুর পৌরসভার ৪, ৫, ৬ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মুসলিমাবাদ, কাচারীপাড়া, সরদারপাড়া, বোষপাড়া, ডাকপাড়াসহ বেশ কয়েকটি রাস্তা খানাখন্দে জনসাধারণের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় পৌরবাসী চরম দুর্ভোগে পড়েছে।

একটু বৃষ্টি হলে হাঁটুসমান পানিতে নাকানি-চুবানি খেতে হয়। কাচারীপাড়া এলাকা থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
একটু বৃষ্টি হলে হাঁটুসমান পানিতে নাকানি-চুবানি খেতে হয়। কাচারীপাড়া এলাকা থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের অভিযোগ, গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলো দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত। ছাত্র-ছাত্রী আর রোগীদের অসুবিধা হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। পৌরসভার মুসলিমাবাদ, কাচারীপাড়া, সরদারপাড়াসহ বিভিন্ন সড়ক জনসাধারণের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এসব রাস্তা দিয়ে যানবাহন তো দূরের কথা, হেঁটেও চলাচল করা কষ্টকর।

কাচারীপাড়ার আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘অবস্থা এমন হয়েছে যে মনে হয় নর্দমায় বসবাস করছি। একটু বৃষ্টি হলে হাঁটুসমান পানিতে নাকানি-চুবানি খেতে হয়। প্রথম শ্রেণির পৌরসভার নাগরিক হিসেবে ভ্যাট-ট্যাক্স দিয়ে থাকি; কিন্তু নাগরিক সুবিধা তো দেখি না।’

সরদারপাড়া এলাকার সামসুন নাহার বলেন, ‘বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে প্রায় সময় দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়। রিকশা ও অটোরিকশা খানাখন্দে পড়ে উল্টে যায়। অনেকের হাত-পা ভেঙেছে। পৌরসভার কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই। রাতে বাতি থাকে না। পৌরসভার প্রায় এলাকায় চুরি হচ্ছে অহরহ।’ রাস্তা মেরামত করে নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধির দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পৌরসভার প্রশাসক কে এম আব্দুল্লাহ বিন রশিদ বলেন, জলাবদ্ধতার কারণে পিচের রাস্তাগুলো খারাপ হয়ে যাচ্ছে। এর প্রভাব পৌরসভার রাস্তাঘাটের ওপর পড়েছে। যেসব রাস্তা নষ্ট হচ্ছে, সেগুলোর ব্যাপারে ইতিমধ্যে অভিযোগ এসেছে।

আব্দুল্লাহ বিন রশিদ আরও বলেন, ‘আমরা প্রকৌশলীকে প্রাক্কলন (এস্টিমেট) তৈরির নির্দেশ দিয়েছি। যদি পৌরসভার বাজেট দিয়ে সম্ভব হয়, তাহলে দ্রুত কাজ শুরু করব। অথবা ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বরাদ্দ এখনো আসেনি। বরাদ্দ আসামাত্র নিয়মিত বাজেটের মধ্যে এগুলো করার চেষ্টা করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কাপের অবশিষ্ট কফি ড্রেনে ঢেলে দেওয়ায় নারীকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা

এনসিপিকে ‘নাস্তিকদের সংগঠন’ বলে আমাকে মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে: মুফতি আমিনীর নাতি

সোনার বড় দরপতন, একলাফে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা কমল ভরিতে

নারায়ণগঞ্জে ইট দিয়ে থেঁতলে যুবককে হত্যার ভিডিও ভাইরাল, গ্রেপ্তার ৩

এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরকারি কর্মকর্তাদের সভাপতি মনোনয়নের প্রজ্ঞাপন স্থগিত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ছাতিম ফুলের সৌরভে মুগ্ধ পথচারী

মো. আনোয়ারুল ইসলাম, ব্রাহ্মণপাড়া (কুমিল্লা)
ব্রাহ্মণপাড়া থেকে কুমিল্লা যাওয়ার পথে ছাতিমগাছ চোখে পড়ে। সন্ধ্যা হলে এই ফুলের ঘ্রাণে মন ভরে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ব্রাহ্মণপাড়া থেকে কুমিল্লা যাওয়ার পথে ছাতিমগাছ চোখে পড়ে। সন্ধ্যা হলে এই ফুলের ঘ্রাণে মন ভরে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফুলের প্রতি মানুষের ভালোবাসা আবহমানকালের। ফুল শুধু প্রকৃতিকেই শোভিত করে না, এর ঘ্রাণ মানুষকে মোহিত করে। এমনই এক ঘ্রাণময় ফুল হলো ছাতিম, যার মাদকতাময় সৌরভে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার প্রকৃতি এখন মোহনীয়। সন্ধ্যা নামতেই ছাতিম ফুলের তীব্র মিষ্টি ঘ্রাণে ভরে উঠছে চারপাশ, যা মন জুড়াচ্ছে পথচারী ও প্রকৃতিপ্রেমীদের।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ব্রাহ্মণপাড়া-মিরপুর সড়কের দুই পাশ, উপজেলার বিভিন্ন রাস্তা এবং বাড়িঘরের আশপাশে এখন সৌন্দর্য বিলাচ্ছে ছাতিম ফুল। সন্ধ্যা নামলেই এই ফুলের ঘ্রাণে যেন মাতোয়ারা হয়ে ওঠে পুরো পরিবেশ। গাছের নিচে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ঝরা ফুল পথচারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।

স্থানীয় বাসিন্দা আশিকুর রহমান বলেন, ‘ব্রাহ্মণপাড়া থেকে কুমিল্লা যাওয়ার পথে ছাতিমগাছ চোখে পড়ে। সন্ধ্যা হলে এই ফুলের ঘ্রাণে মন ভরে যায়। আগে এই এলাকায় অনেক ছাতিমগাছ ছিল, এখন আর আগের মতো দেখা যায় না।’

আরেক বাসিন্দা হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আগে গ্রামগঞ্জে অনেক ছাতিমগাছ দেখা যেত। এখন সংখ্যা কমে গেছে। তবে আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের সামনে একটি গাছ আছে, সন্ধ্যার পর আশপাশে ফুলের গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে।’

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান তাবাসসুম বলেন, ‘ছাতিম ফুলের ঘ্রাণ মন কেড়ে নেওয়ার মতো আকর্ষণীয়। রাত যত বাড়ে, এর ঘ্রাণ তত তীব্র হয়। আমাদের বাড়ির পাশে একটি গাছ আছে, প্রতিবছর এই ফুল ফোটার অপেক্ষায় থাকি।’

মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হুমায়ুন কবির বলেন, ‘ছাতিম ফুলের ঘ্রাণ মানুষকে বিমোহিত করে। ফুলের সৌন্দর্যের চেয়ে ঘ্রাণই মানুষকে বেশি টানে। গাছের উচ্চতা বেশি হওয়ায় ফুল কাছ থেকে দেখা না গেলেও এর গন্ধে বোঝা যায়, গাছজুড়ে ফুল ফুটেছে।’

ইউনানি চিকিৎসকদের তথ্যমতে, ছাতিম ফুলের শুধু সৌন্দর্যই নয়, এর রয়েছে নানা ঔষধি গুণও। জ্বর উপশম, দীর্ঘস্থায়ী আমাশয় ও পাতলা পায়খানা নিরাময়ে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে, এমনকি চর্মরোগের চিকিৎসায়ও এই গাছের ছাল, পাতা ও কষ ব্যবহৃত হয়। এর ছাল থেকে তৈরি ক্বাথ ম্যালেরিয়া ও টাইফয়েড জ্বরের চিকিৎসায়ও কার্যকর।

ব্রাহ্মণপাড়া থেকে কুমিল্লা যাওয়ার পথে ছাতিমগাছ চোখে পড়ে। সন্ধ্যা হলে এই ফুলের ঘ্রাণে মন ভরে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ব্রাহ্মণপাড়া থেকে কুমিল্লা যাওয়ার পথে ছাতিমগাছ চোখে পড়ে। সন্ধ্যা হলে এই ফুলের ঘ্রাণে মন ভরে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইউনানি চিকিৎসক সোহেল রানা বলেন, ছাতিম ফুলের ঘ্রাণ অনেক দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। সন্ধ্যার পর কোথাও গাছ চোখে না পড়লেও এর গন্ধ জানিয়ে দেয়, আশপাশে ফুটেছে ছাতিম ফুল। এই গাছের ভেষজ গুণও অনেক। তবে দিন দিন এর সংখ্যা কমে যাওয়ায় ফুলের ঘ্রাণের পাশাপাশি চিকিৎসায়ও এর ব্যবহার হ্রাস পাচ্ছে।

বিজ্ঞানসম্মতভাবে ছাতিম গাছের নাম অ্যালস্টনিয়া স্কলাররিস (Alstonia scholaris)। এটি অ্যাপোসাইনেসি (Apocynaceae) পরিবারভুক্ত বহুবর্ষজীবী সপুষ্পক উদ্ভিদ। ইংরেজিতে এটি ‘ডেভিলস ট্রি’ বা ‘ব্ল্যাকবোর্ড ট্রি’ নামে পরিচিত। বাংলায় পরিচিত নামগুলো হলো—ছাতিম, ছাতিয়ান বা ছাতইন। এর সংস্কৃত নাম হলো সপ্তপর্ণী। এর আদিনিবাস ভারতীয় উপমহাদেশ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া। ছাতিমগাছ সাধারণত ২০ থেকে ৪০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। গাছের ছাল ধূসর ও অসমতল। সাতটি পাতা একসঙ্গে গুচ্ছ আকারে থাকে। ফুল হালকা ঘিয়ে রঙের ও গুচ্ছাকারে ফোটে। এই গাছের কাঠ ব্ল্যাকবোর্ড, পেনসিল ও কফিন তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। পাশাপাশি এটি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

একসময় ব্রাহ্মণপাড়ার সর্বত্র যে ছাতিম ফুলের ঘ্রাণ ভেসে বেড়াত, এখন তা সীমিত। তবু বছরের এই সময়ে সন্ধ্যা নামলে ছাতিম ফুলের সুবাসে এখনো মুগ্ধ হয় ব্রাহ্মণপাড়ার প্রকৃতি ও মানুষ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কাপের অবশিষ্ট কফি ড্রেনে ঢেলে দেওয়ায় নারীকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা

এনসিপিকে ‘নাস্তিকদের সংগঠন’ বলে আমাকে মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে: মুফতি আমিনীর নাতি

সোনার বড় দরপতন, একলাফে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা কমল ভরিতে

নারায়ণগঞ্জে ইট দিয়ে থেঁতলে যুবককে হত্যার ভিডিও ভাইরাল, গ্রেপ্তার ৩

এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরকারি কর্মকর্তাদের সভাপতি মনোনয়নের প্রজ্ঞাপন স্থগিত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গাংনীতে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রবাসফেরত যুবক নিহত

গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি
নিহত সুজন আলী। ছবি: সংগৃহীত
নিহত সুজন আলী। ছবি: সংগৃহীত

মেহেরপুরের গাংনীতে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পিলারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে সুজন আলী (৩৫) নামের প্রবাসফেরত এক যুবক নিহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার আড়পাড়া ইউনিয়নের উপস্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত সুজন আলী উপজেলার খড়মপুর গ্রামের ইমদাদুল হকের ছেলে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সুজন আলী খড়মপুর গ্রাম থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে আড়পাড়া যাওয়ার পথে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে হাসপাতালের গেটের সামনে পিলারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে গুরুতর আহত হন। তাঁকে দ্রুত গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত ব্যক্তির বড় ভাই লাল মিয়া জানান, তাঁর ভাই মালয়েশিয়া থেকে সম্প্রতি ছুটিতে বাড়িতে এসেছেন।

গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মো. ফারুক হোসেন বলেন, সুজন আলীকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে।

গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বানী ইসরাইল জানান, দুর্ঘটনার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। পরে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কাপের অবশিষ্ট কফি ড্রেনে ঢেলে দেওয়ায় নারীকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা

এনসিপিকে ‘নাস্তিকদের সংগঠন’ বলে আমাকে মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে: মুফতি আমিনীর নাতি

সোনার বড় দরপতন, একলাফে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা কমল ভরিতে

নারায়ণগঞ্জে ইট দিয়ে থেঁতলে যুবককে হত্যার ভিডিও ভাইরাল, গ্রেপ্তার ৩

এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরকারি কর্মকর্তাদের সভাপতি মনোনয়নের প্রজ্ঞাপন স্থগিত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত