আরিফ আহম্মেদ, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ)
‘পরিশ্রম সৌভাগ্যের চাবিকাঠি’ প্রবাদটির জ্বলন্ত উদাহরণ ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার যতীন্দ্র বর্মণ (৬০)। শূন্য থেকে শুরু করে আজ একজন সফল উদ্যোক্তা তিনি। ঘাত-প্রতিঘাতের পথ পেরিয়ে একাধিকবার পেয়েছেন শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি। মাছ চাষে বিশেষ অবদান রাখায় জেলা পর্যায়ে একবার এবং উপজেলা পর্যায়ে চারবার শ্রেষ্ঠ মাছচাষির পুরস্কার পেয়েছেন যতীন্দ্র বর্মণ।
তবে এগিয়ে চলার পথটি মোটেই সহজ ছিল না পৌর শহরের বাগানবাড়ি মহল্লার মাছচাষি যতীন্দ্র বর্মণের জন্য। ১৯৯০ সালে পৌর শহরের সরকারপাড়ায় ৫০০ টাকা দিয়ে কচুরিপানায় ভরা একটি পুকুর ভাড়া নেন তিনি। সেই পুকুর একা পরিষ্কার করে মাছের চাষ শুরু করেন। মাছের রেণু থেকে পোনা উৎপাদন করে কাঁধে নিয়ে গ্রামে-গ্রামে বিক্রি করতে লাগলেন। পোনা মাছ বিক্রেতারাও তার কাছ থেকে পোনা কিনতে শুরু করেন। ‘ভাগ্যদেবী’ সুপ্রসন্ন হলেন। ধীরে ধীরে তিনি সাফল্যের মুখ দেখতে লাগলেন।
পরে ২০০৫ সালে ভবানীপুর গ্রামে ২ একর ৩৭ শতক জমি কিনে চারটি পুকুর খনন করে গড়ে তোলেন ‘বর্মণ মৎস্য প্রজনন হ্যাচারি কেন্দ্র’। সেখানে আজ অর্ধশত শ্রমিক কাজ করছেন দিনরাত। বর্তমানে ২০টি পুকুর রয়েছে যতীন্দ্র বর্মণের। শত শত মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে বর্মণ মৎস্য হ্যাচারিকে কেন্দ্র করে।
কেবল মাছচাষি হিসেবেই নন, মূলধারার একজন গায়ক বলেও সর্বজনবিদিত তিনি। নিজেই রচনা করেন গান। নিজেই সুর দিয়ে গেয়ে শোনান সংগীতপ্রেমীদের আসরে। জীবনের কঠিন সংগ্রামেও নিজের সাধনাকে ভুলে যাননি। বরং যখনই কষ্ট পেয়েছেন, হতাশ হয়েছে, তখনই সংগীতের কাছে আশ্রয় নিয়েছেন।
তাঁর কাছ থেকে জানা যায়, পেশায় মৎস্যজীবী হলেও যতীন্দ্র জীবন শুরু করেছিলেন গান দিয়ে। ১৯৭৫ সালে গৌরীপুর বাগানবাড়ির জমিদার রুহিনী কান্ত লাহিড়ী চৌধুরীকে তিনি গান গেয়ে শোনান। যতীন্দ্রের গানে জমিদারবাবু এতটাই মুগ্ধ হয়েছিলেন যে, তাঁর বাড়ির পাশেই যতীন্দ্রকে একখণ্ড জমি দেন বসবাসের জন্য। পরে জমিদার কলকাতায় চলে গেলে শুধু গান গেয়ে জীবন চালানো দায় হয়ে পড়ে যতীন্দ্রের। তিনি পিতা ধীরেন্দ্র বর্মণের সঙ্গে পারিবারিক পেশা মাছ ধরায় ফিরে যান।
সাত ভাই-বোনের সংসারে লাগামহীন খরচের হাল ধরতে ১ হাজার ২০০ টাকা বেতনে চাকরি নেন এক হ্যাচারিতে। সেখানে মালিকের অমানবিক আচরণের শিকার হয়ে চাকরি থেকে ইস্তফা দেন। ঘুরে দাঁড়ানোর প্রতিজ্ঞা করেন মনে মনে। একটি কনুই জাল সংগ্রহ করে তা দিয়ে মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করা শুরু করেন। এভাবে তিনি কিছু টাকা সঞ্চয় করেন।
প্রথমে ভাড়া করা পুকুরে মাছ চাষ শুরু করলেও আজ তিনি ২০টি পুকুরে মাছ চাষ করছেন। দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন যতীন্দ্র বর্মণ। স্ত্রী, এক ছেলে ও তিন মেয়ে নিয়ে তাঁর সুখী সংসার। ছেলে বাবার সঙ্গে ব্যবসায় সময় দিচ্ছে। পড়াশোনার পাশাপাশি দুই মেয়ে স্থানীয় পর্যায়ে বাবার মতোই মানুষের মন জয় করেছে গানের ভুবনে। বিটিভিসহ বিভিন্ন গানের আসরে তারা পরিচিত মুখ।
যতীন্দ্র বর্মণ তরুণ উদ্যোক্তাদের মাছ চাষের পেশায় আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের সঙ্গে ছোটবেলা থেকেই যুদ্ধ করেছি। জীবনে কখনো অসৎ পথে উপার্জনের চিন্তা করিনি। আজও দিনরাত কাজ করছি। সঠিক নিয়মে এগিয়ে গেলে মাছ চাষে সাফল্য অর্জন সম্ভব।’
গৌরীপুর সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. মোফাজ্জল হোসেন ভূঁইয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, জাতীয় মৎস্য সপ্তাহে গৌরীপুর উপজেলা পর্যায়ে বর্মণ মৎস্য হ্যাচারি শ্রেষ্ঠ হ্যাচারি হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছে। বিশেষ করে গুণগত মানসম্পন্ন রেণু উৎপাদনে অপরিসীম অবদানের জন্য তাঁকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। যতীন্দ্র বর্মণ জেলা পর্যায়ে একবার এবং উপজেলা পর্যায়েও তিনবার শ্রেষ্ঠ হয়েছেন।
গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাসান মারুফ বলেন, বর্মণ মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র হ্যাচারিটি পরিদর্শন করেছি। মানসম্মত মাছের রেণু উৎপাদনে এই হ্যাচারির বিশেষ অবদান রয়েছে গৌরীপুরে।
‘পরিশ্রম সৌভাগ্যের চাবিকাঠি’ প্রবাদটির জ্বলন্ত উদাহরণ ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার যতীন্দ্র বর্মণ (৬০)। শূন্য থেকে শুরু করে আজ একজন সফল উদ্যোক্তা তিনি। ঘাত-প্রতিঘাতের পথ পেরিয়ে একাধিকবার পেয়েছেন শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি। মাছ চাষে বিশেষ অবদান রাখায় জেলা পর্যায়ে একবার এবং উপজেলা পর্যায়ে চারবার শ্রেষ্ঠ মাছচাষির পুরস্কার পেয়েছেন যতীন্দ্র বর্মণ।
তবে এগিয়ে চলার পথটি মোটেই সহজ ছিল না পৌর শহরের বাগানবাড়ি মহল্লার মাছচাষি যতীন্দ্র বর্মণের জন্য। ১৯৯০ সালে পৌর শহরের সরকারপাড়ায় ৫০০ টাকা দিয়ে কচুরিপানায় ভরা একটি পুকুর ভাড়া নেন তিনি। সেই পুকুর একা পরিষ্কার করে মাছের চাষ শুরু করেন। মাছের রেণু থেকে পোনা উৎপাদন করে কাঁধে নিয়ে গ্রামে-গ্রামে বিক্রি করতে লাগলেন। পোনা মাছ বিক্রেতারাও তার কাছ থেকে পোনা কিনতে শুরু করেন। ‘ভাগ্যদেবী’ সুপ্রসন্ন হলেন। ধীরে ধীরে তিনি সাফল্যের মুখ দেখতে লাগলেন।
পরে ২০০৫ সালে ভবানীপুর গ্রামে ২ একর ৩৭ শতক জমি কিনে চারটি পুকুর খনন করে গড়ে তোলেন ‘বর্মণ মৎস্য প্রজনন হ্যাচারি কেন্দ্র’। সেখানে আজ অর্ধশত শ্রমিক কাজ করছেন দিনরাত। বর্তমানে ২০টি পুকুর রয়েছে যতীন্দ্র বর্মণের। শত শত মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে বর্মণ মৎস্য হ্যাচারিকে কেন্দ্র করে।
কেবল মাছচাষি হিসেবেই নন, মূলধারার একজন গায়ক বলেও সর্বজনবিদিত তিনি। নিজেই রচনা করেন গান। নিজেই সুর দিয়ে গেয়ে শোনান সংগীতপ্রেমীদের আসরে। জীবনের কঠিন সংগ্রামেও নিজের সাধনাকে ভুলে যাননি। বরং যখনই কষ্ট পেয়েছেন, হতাশ হয়েছে, তখনই সংগীতের কাছে আশ্রয় নিয়েছেন।
তাঁর কাছ থেকে জানা যায়, পেশায় মৎস্যজীবী হলেও যতীন্দ্র জীবন শুরু করেছিলেন গান দিয়ে। ১৯৭৫ সালে গৌরীপুর বাগানবাড়ির জমিদার রুহিনী কান্ত লাহিড়ী চৌধুরীকে তিনি গান গেয়ে শোনান। যতীন্দ্রের গানে জমিদারবাবু এতটাই মুগ্ধ হয়েছিলেন যে, তাঁর বাড়ির পাশেই যতীন্দ্রকে একখণ্ড জমি দেন বসবাসের জন্য। পরে জমিদার কলকাতায় চলে গেলে শুধু গান গেয়ে জীবন চালানো দায় হয়ে পড়ে যতীন্দ্রের। তিনি পিতা ধীরেন্দ্র বর্মণের সঙ্গে পারিবারিক পেশা মাছ ধরায় ফিরে যান।
সাত ভাই-বোনের সংসারে লাগামহীন খরচের হাল ধরতে ১ হাজার ২০০ টাকা বেতনে চাকরি নেন এক হ্যাচারিতে। সেখানে মালিকের অমানবিক আচরণের শিকার হয়ে চাকরি থেকে ইস্তফা দেন। ঘুরে দাঁড়ানোর প্রতিজ্ঞা করেন মনে মনে। একটি কনুই জাল সংগ্রহ করে তা দিয়ে মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করা শুরু করেন। এভাবে তিনি কিছু টাকা সঞ্চয় করেন।
প্রথমে ভাড়া করা পুকুরে মাছ চাষ শুরু করলেও আজ তিনি ২০টি পুকুরে মাছ চাষ করছেন। দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন যতীন্দ্র বর্মণ। স্ত্রী, এক ছেলে ও তিন মেয়ে নিয়ে তাঁর সুখী সংসার। ছেলে বাবার সঙ্গে ব্যবসায় সময় দিচ্ছে। পড়াশোনার পাশাপাশি দুই মেয়ে স্থানীয় পর্যায়ে বাবার মতোই মানুষের মন জয় করেছে গানের ভুবনে। বিটিভিসহ বিভিন্ন গানের আসরে তারা পরিচিত মুখ।
যতীন্দ্র বর্মণ তরুণ উদ্যোক্তাদের মাছ চাষের পেশায় আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের সঙ্গে ছোটবেলা থেকেই যুদ্ধ করেছি। জীবনে কখনো অসৎ পথে উপার্জনের চিন্তা করিনি। আজও দিনরাত কাজ করছি। সঠিক নিয়মে এগিয়ে গেলে মাছ চাষে সাফল্য অর্জন সম্ভব।’
গৌরীপুর সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. মোফাজ্জল হোসেন ভূঁইয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, জাতীয় মৎস্য সপ্তাহে গৌরীপুর উপজেলা পর্যায়ে বর্মণ মৎস্য হ্যাচারি শ্রেষ্ঠ হ্যাচারি হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছে। বিশেষ করে গুণগত মানসম্পন্ন রেণু উৎপাদনে অপরিসীম অবদানের জন্য তাঁকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। যতীন্দ্র বর্মণ জেলা পর্যায়ে একবার এবং উপজেলা পর্যায়েও তিনবার শ্রেষ্ঠ হয়েছেন।
গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাসান মারুফ বলেন, বর্মণ মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র হ্যাচারিটি পরিদর্শন করেছি। মানসম্মত মাছের রেণু উৎপাদনে এই হ্যাচারির বিশেষ অবদান রয়েছে গৌরীপুরে।
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার বাবুরহাট বাজারে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার এক মাস যেতে না যেতেই উঠে যাচ্ছে সড়কের আরসিসি ঢালাই। এ ছাড়া সড়কটির সম্প্রসারণ জয়েন্টগুলোতে আঁকাবাঁকা ফাটল দেখা দিয়েছে। বিষয়টি বুঝতে পেরে সংশ্লিষ্টরা তাড়াহুড়া করে বিটুমিন দিয়ে ফাটল বন্ধের চেষ্টা চালিয়েছেন বলে জানা গেছে।
২ মিনিট আগেতিন পার্বত্য জেলার মধ্যে আগে থেকেই চিকিৎসাসেবায় পিছিয়ে খাগড়াছড়ি। তার ওপর বছরের পর বছর চিকিৎসক, নার্স, কর্মচারী ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির সংকট থাকায় খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতালে কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না রোগীরা।
৫ মিনিট আগেনেত্রকোনার দুর্গাপুরে এক কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ফয়সাল আহমেদ ওরফে দুর্জয় (২৪) নামে এক ছাত্রদল নেতাকে আটক করেছে পুলিশ। আটক ফয়সাল আহমেদ ওরফে দুর্জয় দুর্গাপুর উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) রাতে দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান...
১৬ মিনিট আগেরাজধানীর খিলগাঁওয়ে একটি নির্মাণাধীন ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় এ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। তবে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই আগুন নিভে গেছে। এতে কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
২ ঘণ্টা আগে