Ajker Patrika

মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান: নান্দনিক স্টেশন, থামে না ট্রেন

  • পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ উদ্বোধনের দুই বছরেও কোনো ট্রেন থামেনি নিমতলা স্টেশনে
  • জেলার তিন স্টেশনের মধ্যে দুটিতে ট্রেন যাত্রাবিরতি করলেও অব্যবহৃত নিমতলারটি
  • নান্দনিক স্টেশন নির্মাণ করা হলেও সুফল পাচ্ছেন না সিরাজদিখানের লাখো মানুষ
আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮: ২৫
অব্যবহৃত পড়ে আছে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার নিমতলা রেলওয়ে স্টেশন। ছবিটি সম্প্রতি তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
অব্যবহৃত পড়ে আছে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার নিমতলা রেলওয়ে স্টেশন। ছবিটি সম্প্রতি তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ উদ্বোধনের পর দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের সূচনা হয় দুই বছর আগে। ঢাকা-খুলনা ও ঢাকা-বেনাপোল রেলপথে যুক্ত হয় মুন্সিগঞ্জ। এ জন্য জেলার শ্রীনগর, লৌহজং ও সিরাজদিখান উপজেলায় নির্মাণ করা হয় নান্দনিক তিনটি রেলস্টেশন। কিন্তু এর মধ্যে দুটিতে ট্রেন যাত্রাবিরতি করলেও অব্যবহৃত পড়ে আছে সিরাজদিখানের নিমতলা রেলওয়ে স্টেশন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রেলস্টেশনটি নির্মাণের পর থেকে আজও কোনো ট্রেন এখানে যাত্রাবিরতি করেনি। ওঠানামা নেই কোনো যাত্রীর। আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন স্টেশনটিতে রয়েছে কেবল সুনসান নীরবতা। হাতে গোনা কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়া স্টেশনে কোনো যাত্রীও আসেন না।

এদিকে যাত্রীসেবা না থাকলেও স্টেশনটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পেছনে বেতন-ভাতা ব্যয় হচ্ছে সরকারের। এখানে বর্তমানে মোট ১৩ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত আছেন। এর মধ্যে ২ জন স্টেশনমাস্টার, পিয়ন ও গার্ড রয়েছেন ৬ জন। এ ছাড়া সিগন্যাল বিভাগে ১ জন এবং প্রকৌশল বিভাগে ৪ জন কর্মরত রয়েছেন।

জানা গেছে, পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্পের অধীনে মুন্সিগঞ্জে তিনটি স্টেশন নির্মাণ করা হয়। ২০২৩ সালে ১০ অক্টোবর পদ্মা রেল সেতু উদ্বোধন হয়। জেলাটির ওপর দিয়ে ঢাকা-খুলনা ও ঢাকা-বেনাপোল রেল যোগাযোগ রয়েছে। এ ছাড়া জেলাটির ওপর দিয়ে ঢাকা-রাজশাহীগামী ট্রেন চলাচল করছে। ঢাকা-খুলনা ও ঢাকা-বেনাপোল রুটে প্রতিদিন ছয় জোড়া আন্তনগরসহ একাধিক ট্রেন নিয়মিত চলাচল করে আসছে। এসব ট্রেনের মধ্যে বেঁজগাঁওয়ে অবস্থিত শ্রীনগর স্টেশনে শুধু নকশিকাঁথা লোকাল ট্রেন যাত্রাবিরতি করে। লৌহজংয়ের মাওয়া রেলস্টেশনে নকশিকাঁথা লোকাল ও রাজশাহী রুটের মধুমতি এক্সপ্রেস যাত্রাবিরতি করে। ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে শ্রীনগর স্টেশনেও মধুমতি ট্রেন যাত্রাবিরতি করবে বলে ১১ সেপ্টেম্বর রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের এক আদেশে জানানো হয়েছে।

স্টেশন নির্মাণ সত্ত্বেও সিরাজদিখানের লাখো মানুষ ট্রেনে যাতায়াত করতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। তারা দ্রুত নিমতলা স্টেশনে ট্রেনের যাত্রাবিরতির দাবি জানিয়েছে।

উপজেলার কুচিয়ামোড়া এলাকার বাসিন্দা সাংবাদিক ইমতিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘নিমতলা রেলওয়ে স্টেশন ঘিরে আমাদের অনেক আশা ছিল। কিন্তু বাস্তবে এখনো কোনো ট্রেনের যাত্রাবিরতি হয়নি। তাই রেল যোগাযোগের প্রকৃত সুফল পাচ্ছে না এই অঞ্চলের জনসাধারণ।’

বয়রাগাদী ইউনিয়নের দক্ষিণ গোবরদী গ্রামের শিক্ষার্থী আজিম হাওলাদার বলেন, ‘আমরা মাঝে মধ্যে নিমতলা রেলস্টেশনে ঘুরতে যাই। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এখানে কোনো ট্রেনের যাত্রাবিরতি নেই। কোটি টাকা ব্যয়ে এত সুন্দর একটি রেলস্টেশন নির্মাণ হলেও, তা অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। আমাদের দাবি, শিগগির এই স্টেশন কার্যকর করা হোক।’

বড় শিকারপুর গ্রামের গৃহিণী আয়েশা আক্তার বলেন, ‘নিমতলা স্টেশন আমাদের এলাকার জন্য অনেক সম্ভাবনাময়। কিন্তু আন্তনগর ট্রেন না থামায় সাধারণ যাত্রীরা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিশেষ করে নারী ও শিক্ষার্থীদের জন্য এটি বড় কষ্টের কারণ। আমরা চাই, সরকার যেন দ্রুত ট্রেনের যাত্রাবিরতির ব্যবস্থা করে। যাতে আমরাও সহজে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করতে পারি।’

নিমতলা রেলওয়ে স্টেশনমাস্টার মো. আবুল খায়ের চৌধুরী বলেন, ‘এই স্টেশনে বর্তমানে মোট ১৩ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত আছেন। এর মধ্যে ২ জন স্টেশনমাস্টার, পিয়ন ও গার্ড রয়েছেন ৬ জন। এ ছাড়া সিগন্যাল বিভাগে ১ জন এবং প্রকৌশল বিভাগে ৪ জন কর্মরত রয়েছেন। কিন্তু এত জনবল থাকা সত্ত্বেও এখানে কোনো ট্রেনের যাত্রাবিরতির ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এত বড় স্টেশন, অন্তত নকশিকাঁথা লোকাল ট্রেনটির যাত্রাবিরতি রাখা উচিত।’

সিরাজদিখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনা আক্তার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিমতলা রেলস্টেশনে কোনো আন্তনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি নেই। এ বিষয়ে আমরা নিয়মিতভাবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে যাচ্ছি। যাত্রীদের সুবিধার্থে এখানে যাত্রাবিরতির ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। আশা করি, শিগগির যাত্রীদের প্রত্যাশা পূরণ হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পানিতে ডুবে প্রাণ গেল মামা-ভাগনের

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে পুকুরে ডুবে শাহবাব মন্ডল (আড়াই বছর) ও আবু তোহা মন্ডল (৩) নামের দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের যাদুরচর নতুন গ্রাম এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

শাহবাব মন্ডল উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের ধনারচর নতুন গ্রামের শাহজাহান মন্ডলের ছেলে এবং আবু তোহা মন্ডল একই গ্রা‌মের আবু তালেবের ছেলে। এই দুই শিশু সম্পর্কে মামা-ভাগনে।

পরিবারের বরাত দিয়ে যাদুরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সরবেশ আলী জানান, বুধবার সকালে ওই দুই শিশু তালেব মন্ডলের বাড়িতে খেলা করছিল। এ সময় সবার অজান্তে তারা বাড়ির পা‌শে পুকুরের পানিতে পড়ে যায়। স্বজনেরা পুকুর থে‌কে দুই শিশু‌কে উদ্ধার করে হাসপাতালে নি‌য়ে যান। দা‌য়িত্বরত চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।

খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক একই এলাকার বাসিন্দা ও কুড়িগ্রাম-৪ আসনের বিএনপির মনোনীত সংসদ সদস‌্য প্রার্থী আজিজুর রহমান ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তি‌নি শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।

রৌমারী থানার উপপ‌রিদর্শক শাহ‌নেওয়াজ হো‌সেন ব‌লেন, খবর পে‌য়ে ঘটনাস্থ‌লে পু‌লিশ পাঠা‌নো হ‌য়ে‌ছে। সহকারী ক‌মিশনার (ভূ‌মি) ঘটনাস্থ‌লে গি‌য়ে‌ছেন। দুই শিশুর মৃত‌্যুর ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনি ব‌্যবস্থা নেওয়া হ‌বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ১৩
নিহত লায়লা আফরোজ ও নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ। ছবি: সংগৃহীত
নিহত লায়লা আফরোজ ও নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ। ছবি: সংগৃহীত

‎রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যার ঘটনায় গৃহকর্মী আয়েশাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার দুপুরে ঝালকাঠি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

‎গ্রেপ্তারের বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন তেজগাঁও বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন।

‎মামুন বলেন, গৃহকর্মী আয়েশাকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঝালকাঠি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গত সোমবার সকালে শাহজাহান রোডের ১৪ তলা একটি আবাসিক ভবনের সপ্তম তলায় লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তাঁর মেয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে (১৫) ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।

মা-মেয়ে হত্যায় অভিযুক্ত গৃহকর্মী আয়েশা। ছবি: আজকের পত্রিকা
মা-মেয়ে হত্যায় অভিযুক্ত গৃহকর্মী আয়েশা। ছবি: আজকের পত্রিকা

গতকাল তাঁদের মরদেহ নাটোরে দাফন করা হয়েছে। মামলার এজাহারে বাসা থেকে মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র খোয়া যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।

ভবনের ভেতরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, হত্যাকাণ্ডের পর এক নারী স্কুলড্রেস পরে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। চার দিন আগে আয়েশা পরিচয় দিয়ে ওই বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেওয়া তরুণী (২০) এই জোড়া খুনে জড়িত বলে সন্দেহ স্বজনদের। ঘটনার পর থেকে ওই তরুণী পলাতক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি 
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে মজিরুলের নেতৃত্বে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে মজিরুলের নেতৃত্বে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

জীবন আছে যার, তার মৃত্যু অনিবার্য। মৃত্যুর পর মানুষের শেষ ঠিকানা কবর। মৃতদেহ গোসল করিয়ে কাফন পরানো হয়, জানাজা শেষে তাকে শায়িত করা হয় চিরনিদ্রার ঘরে। এই কবর খোঁড়ার দায়িত্বটি গ্রামের কিছু মানুষ বহু বছর ধরে স্বেচ্ছায়, বিনা পারিশ্রমিকে পালন করে আসছেন, যাঁরা সবার কাছে ‘গোরখোদক’ নামে পরিচিত। আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় তাঁরা করে থাকেন এই কাজ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গোরখোদকেরা কোনো পারিশ্রমিক নেন না। গ্রামের যে কেউ মারা যাক, নিজেদের ব্যস্ততা ফেলে তাঁরা ছুটে আসেন কবর খুঁড়তে। তাঁদের এই মানবিক কাজের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে গ্রামের লোকেরা দোয়া করেন—আল্লাহ যেন তাদের সুস্থ ও ভালো রাখেন।

দেবীপুর গ্রামের বাসিন্দা গোরখোদক মজিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ৫৫ বছর ধরে কবর খুঁড়ছি। যত দিন সুস্থ থাকব, এই কাজ চালিয়ে যাব। আমাদের গ্রাম ছাড়াও অন্য গ্রাম থেকে কেউ ডাকলে সেখানেও যাই। ছোটবেলায় ওস্তাদের কাছে ডালি ধরেই শিখেছি। গরিব মানুষ, মাঠে কাজ করি; কিন্তু কেউ মারা গেলে দ্বিধা করি না—এই কাজ আমার নেশায় পরিণত হয়েছে।’

মজিরুল আরও জানান, এখন তিনি তরুণদেরও এই কাজ শেখাচ্ছেন।

গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

গোরখোদক শাকের আলী বলেন, ‘আমরা নিঃস্বার্থভাবে কাজ করি। কখনো কোনো টাকা নিই না। যেখানেই থাকি, গ্রামের কারও মৃত্যুর সংবাদ শুনলে দ্রুত কবর খুঁড়তে চলে আসি।’

গোরখোদক ফুয়াদ হোসেন বলেন, ‘অন্য গ্রাম থেকে ডাক এলেও আমরা যাই। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই করি এই কাজ। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’

স্থানীয় বাসিন্দা শাজাহান আলী বলেন, ‘কবর খোঁড়া বড় দায়িত্বের কাজ। গ্রামের এসব মানুষ খবর পেলেই দৌড়ে আসে। আমরা তাদের জন্য দোয়া করি।’

মাওলানা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘মৃত ব্যক্তির জন্য কবর খোঁড়া নিঃসন্দেহে সওয়াবের কাজ। হাদিসে এসেছে—যাঁরা কবর খোঁড়েন, আল্লাহ তাদের জন্য জান্নাতে ঘর নির্মাণ করবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে কারখানার ফটকের সামনে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকেরা। আন্দোলনের মুখে কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রধান ফটক তালাবদ্ধ করে সটকে পড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে শিল্প ও থানা-পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসেছেন। আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের সাইটালিয়া গ্রামে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানায় এই ঘটনা ঘটে।

কারখানার নারী শ্রমিক মিনারা আক্তার বলেন, ‘অক্টোবর ও নভেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করে নাই। এক মাসের বেতন না পেলে আমাদের চলা খুবই কঠিন হয়। আমাদের নাওয়া-খাওয়া বন্ধ হয়। আর সেখানে কারখানা কর্তৃপক্ষ দুই মাসের বেতনভাতা বকেয়া রেখেছে। আজ সকালে শ্রমিকেরা জড়ো হলে তারা পালিয়ে যায়।’

মিন্টু নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘এই কারখানায় আমরা তিন বছর ধরে চাকরি করছি। আমাদের বেতনের বাইরে কোনো সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে না। তবু পেটের দায়ে চাকরি করি। দুই মাসের বেতন বকেয়া। আমাদের তো পেট আছে, সন্তান-সংসার আছে। এক মাস দোকান বাকি পরিশোধ করতে না পারলে পরের মাসে আর দোকানি বাকি দেয় না। আমরা কী অবস্থায় আছি, একবার ভাবুন। বেতন পরিশোধ না করে তারা পালিয়ে গেছে।’

আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

মেহেদী হাসান বলেন, ‘এত দিন ধরে ঋণ করে বলে-কয়ে দোকান থেকে বাকি নিয়ে চলছি। আর পারছি না। এখন দোকান বাকি দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। অক্টোবর মাসের বকেয়া বেতন নিয়ে কমপক্ষে ১০টি তারিখ দিছে। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ বেতন পরিশোধ করেনি। শেষে আজ বেতন পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু তারা কারখানা ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে গেছে।’

কারখানার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. বুলবুল হাসান বলেন, ‘ব্যাংকের সমস্যার কারণে বেতন-ভাতা পরিশোধ করা যাচ্ছে না। আশা করি, আজকের মধ্যে নভেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করতে পারব।’ বিনা নোটিশে কারখানার ফটক কেন তালাবদ্ধ? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমি বলতে পারব না।’

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাছির আহমদ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত