Ajker Patrika

দুই এনজিওর বিরুদ্ধে গ্রাহকদের সাড়ে তিন কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

ঘিওর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি  
সম্প্রতি এনজিও দুটির চেয়ারম্যান জগন্নাথ চন্দ্র দাশকে উপজেলা পরিষদের হলরুমের সামনে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখেন গ্রাহকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
সম্প্রতি এনজিও দুটির চেয়ারম্যান জগন্নাথ চন্দ্র দাশকে উপজেলা পরিষদের হলরুমের সামনে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখেন গ্রাহকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মানিকগঞ্জের শিবালয়ে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র দুটি এনজিও খুলে গ্রাহকদের প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, উপজেলার ‘গ্রামের আলো’ ও ‘গ্রামীণ উন্নয়ন মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সমবায় সমিতি’ নামে দুটি এনজিওতে গ্রামের নারী-পুরুষেরা দীর্ঘদিন ধরে টাকা জমিয়েছে। এখন প্রায় এক বছর ধরে এনজিও দুটি বন্ধ রয়েছে। গ্রাহকেরা বারবার ঘুরেও তাঁদের অর্থ ফেরত পাচ্ছেন না।

সম্প্রতি কয়েক শ ভুক্তভোগী গ্রাহক দুটি সংস্থার চেয়ারম্যান জগন্নাথ চন্দ্র দাশকে উপজেলা পরিষদের হলরুমের সামনে রশি দিয়ে বেঁধে রাখেন। আমানতকারীরা টাকা ফেরতের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় জগন্নাথের অন্য সহযোগীরা কৌশলে পালিয়ে যান। একপর্যায়ে সেনাবাহিনী ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। পরে শিবালয় থানায় জগন্নাথকে হস্তান্তর করা হয়।

জানা গেছে, এনজিও দুটির নেতৃত্বে থাকা জগন্নাথ চন্দ্র দাস ও তাঁর সহযোগীরা ২০০৬ ও ২০১১ সালে জেলা সমবায় কার্যালয় থেকে নিবন্ধন নিয়ে কার্যক্রম শুরু করেন। নানা প্রলোভন ও মুনাফার আশ্বাস দিয়ে প্রায় ৪০০ জন গ্রাহকের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা সংগ্রহ করেন তাঁরা। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে আমানত ফেরত না দিয়ে টালবাহানা করতে শুরু করেন তাঁরা। এমনকি গ্রাহকদের হুমকি-ধমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে।

ভুক্তভোগী স্থানীয় শিবরামপুর গ্রামের সাহাজ উদ্দিনের ছেলে শওকত হোসেন সাকিম (৫৬) বাদী হয়ে গত মঙ্গলবার এ ব্যাপারে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় জগন্নাথ চন্দ্র দাস ছাড়াও আসামি করা হয়েছে গ্রামীণ উন্নয়ন মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির কর্মকর্তা মো. আলম হোসেন (৪৪), মো. রজব আলী (৪০), ফলসাটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোহাম্মদ আলী (৪০), জগন্নাথের স্ত্রী সুমা রানী দাস (৩২), বাবা বলাই চন্দ্র দাস (৬০) ও ভাই গোপী নাথ দাসকে (৩৫)। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শিবালয় থানার এসআই অসীম মণ্ডল জানান, প্রধান আসামিকে ভুক্তভোগী আমানতকারীরা পুলিশে সোপর্দ করেছেন। মামলার বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। আসামিকে আদালত থেকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার টেপড়া এলাকায় এক যুগ আগে জগন্নাথ দাস, আলম হোসেন, রজ্জব আলী, স্থানীয় ফলসাটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোহাম্মদ আলী মাস্টারের যৌথ পরিচালনায় গ্রামের আলো ও গ্রামের উন্নয়ন মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি এনজিও দুটি ঋণ, সঞ্চয়পত্র, জামানতসহ বিভিন্ন মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ শুরু করেন। নির্দিষ্ট সময় পার হলে গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে গড়িমসি করতে থাকেন তাঁরা। পরবর্তীকালে এনজিওর কার্যক্রম বন্ধ করে তাঁরা গা ঢাকা দেন। গ্রাহকেরা মামলা করলেও এনজিওর মালিকেরা জামিন নিয়ে প্রকাশ্যে ঘুরতে থাকেন।

ভুক্তভোগী আমানতকারী শওকত হোসেন সাকিম, আব্দুর রাশিদ, সামেলা, রিজিয়া বলেন, ‘আমানতের লভ্যাংশ দূরের কথা, আমাদের মূল টাকাও ফেরত দেননি। আমাদের কষ্টে অর্জিত টাকা হারিয়ে এখন সবাই সর্বস্বান্ত হয়ে গেছি। মামলা দিয়েও টাকা ফেরত পাইনি। মালিকেরা জামিন নিয়ে ঘুরছেন। এ কারণে এনজিওর চেয়ারম্যান জগন্নাথ দাসকে আমরা বেঁধে রাখি। এ টাকা ফেরত না পেলে আমাদের সবাইকে পথে বসতে হবে।’

আজ শনিবার সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) মানিকগঞ্জ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বিশ্বাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, সঠিক আইন প্রয়োগ ও কঠোর নজরদারি থাকলে এত বড় প্রতারণা ঘটত না। মানুষেরও সচেতনতার অভাব আছে। এই সুযোগটাই নিচ্ছে চক্রগুলো।

স্থানীয় উলাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আনিসুর রহমান আনিস আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার এলাকার খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষদের কাছ থেকে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকার আমানত এনজিও দুটি সংগ্রহ করে। এখন মেয়াদ শেষ হলেও টাকা ফেরত দিচ্ছে না। ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা প্রতিদিন আমার কাছে কান্নাকাটি করে টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য। স্থানীয় জগন্নাথ দাশ, আলম, রজ্জব ও মোহাম্মদ মাস্টার এনজিওগুলো পরিচালনা করত। এদের টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।’

এ ব্যাপারে আজ শনিবার শিবালয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ পেয়েছি। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি, যাতে গ্রাহকেরা তাঁদের আমানত ফেরত পান। ঘটনার পর জেলা সমবায় কার্যালয়ের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান জেলা সমবায় কর্মকর্তা ফারহানা ফেরদৌসী।’ তিনি বলেন, তদন্ত রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভবিষ্যতে সমবায় সংস্থার নিবন্ধনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পানিতে ডুবে প্রাণ গেল মামা-ভাগনের

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে পুকুরে ডুবে শাহবাব মন্ডল (আড়াই বছর) ও আবু তোহা মন্ডল (৩) নামের দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের যাদুরচর নতুন গ্রাম এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

শাহবাব মন্ডল উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের ধনারচর নতুন গ্রামের শাহজাহান মন্ডলের ছেলে এবং আবু তোহা মন্ডল একই গ্রা‌মের আবু তালেবের ছেলে। এই দুই শিশু সম্পর্কে মামা-ভাগনে।

পরিবারের বরাত দিয়ে যাদুরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সরবেশ আলী জানান, বুধবার সকালে ওই দুই শিশু তালেব মন্ডলের বাড়িতে খেলা করছিল। এ সময় সবার অজান্তে তারা বাড়ির পা‌শে পুকুরের পানিতে পড়ে যায়। স্বজনেরা পুকুর থে‌কে দুই শিশু‌কে উদ্ধার করে হাসপাতালে নি‌য়ে যান। দা‌য়িত্বরত চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।

খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক একই এলাকার বাসিন্দা ও কুড়িগ্রাম-৪ আসনের বিএনপির মনোনীত সংসদ সদস‌্য প্রার্থী আজিজুর রহমান ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তি‌নি শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।

রৌমারী থানার উপপ‌রিদর্শক শাহ‌নেওয়াজ হো‌সেন ব‌লেন, খবর পে‌য়ে ঘটনাস্থ‌লে পু‌লিশ পাঠা‌নো হ‌য়ে‌ছে। সহকারী ক‌মিশনার (ভূ‌মি) ঘটনাস্থ‌লে গি‌য়ে‌ছেন। দুই শিশুর মৃত‌্যুর ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনি ব‌্যবস্থা নেওয়া হ‌বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ১৩
নিহত লায়লা আফরোজ ও নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ। ছবি: সংগৃহীত
নিহত লায়লা আফরোজ ও নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ। ছবি: সংগৃহীত

‎রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যার ঘটনায় গৃহকর্মী আয়েশাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার দুপুরে ঝালকাঠি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

‎গ্রেপ্তারের বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন তেজগাঁও বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন।

‎মামুন বলেন, গৃহকর্মী আয়েশাকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঝালকাঠি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গত সোমবার সকালে শাহজাহান রোডের ১৪ তলা একটি আবাসিক ভবনের সপ্তম তলায় লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তাঁর মেয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে (১৫) ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।

মা-মেয়ে হত্যায় অভিযুক্ত গৃহকর্মী আয়েশা। ছবি: আজকের পত্রিকা
মা-মেয়ে হত্যায় অভিযুক্ত গৃহকর্মী আয়েশা। ছবি: আজকের পত্রিকা

গতকাল তাঁদের মরদেহ নাটোরে দাফন করা হয়েছে। মামলার এজাহারে বাসা থেকে মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র খোয়া যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।

ভবনের ভেতরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, হত্যাকাণ্ডের পর এক নারী স্কুলড্রেস পরে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। চার দিন আগে আয়েশা পরিচয় দিয়ে ওই বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেওয়া তরুণী (২০) এই জোড়া খুনে জড়িত বলে সন্দেহ স্বজনদের। ঘটনার পর থেকে ওই তরুণী পলাতক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি 
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে মজিরুলের নেতৃত্বে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে মজিরুলের নেতৃত্বে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

জীবন আছে যার, তার মৃত্যু অনিবার্য। মৃত্যুর পর মানুষের শেষ ঠিকানা কবর। মৃতদেহ গোসল করিয়ে কাফন পরানো হয়, জানাজা শেষে তাকে শায়িত করা হয় চিরনিদ্রার ঘরে। এই কবর খোঁড়ার দায়িত্বটি গ্রামের কিছু মানুষ বহু বছর ধরে স্বেচ্ছায়, বিনা পারিশ্রমিকে পালন করে আসছেন, যাঁরা সবার কাছে ‘গোরখোদক’ নামে পরিচিত। আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় তাঁরা করে থাকেন এই কাজ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গোরখোদকেরা কোনো পারিশ্রমিক নেন না। গ্রামের যে কেউ মারা যাক, নিজেদের ব্যস্ততা ফেলে তাঁরা ছুটে আসেন কবর খুঁড়তে। তাঁদের এই মানবিক কাজের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে গ্রামের লোকেরা দোয়া করেন—আল্লাহ যেন তাদের সুস্থ ও ভালো রাখেন।

দেবীপুর গ্রামের বাসিন্দা গোরখোদক মজিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ৫৫ বছর ধরে কবর খুঁড়ছি। যত দিন সুস্থ থাকব, এই কাজ চালিয়ে যাব। আমাদের গ্রাম ছাড়াও অন্য গ্রাম থেকে কেউ ডাকলে সেখানেও যাই। ছোটবেলায় ওস্তাদের কাছে ডালি ধরেই শিখেছি। গরিব মানুষ, মাঠে কাজ করি; কিন্তু কেউ মারা গেলে দ্বিধা করি না—এই কাজ আমার নেশায় পরিণত হয়েছে।’

মজিরুল আরও জানান, এখন তিনি তরুণদেরও এই কাজ শেখাচ্ছেন।

গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

গোরখোদক শাকের আলী বলেন, ‘আমরা নিঃস্বার্থভাবে কাজ করি। কখনো কোনো টাকা নিই না। যেখানেই থাকি, গ্রামের কারও মৃত্যুর সংবাদ শুনলে দ্রুত কবর খুঁড়তে চলে আসি।’

গোরখোদক ফুয়াদ হোসেন বলেন, ‘অন্য গ্রাম থেকে ডাক এলেও আমরা যাই। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই করি এই কাজ। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’

স্থানীয় বাসিন্দা শাজাহান আলী বলেন, ‘কবর খোঁড়া বড় দায়িত্বের কাজ। গ্রামের এসব মানুষ খবর পেলেই দৌড়ে আসে। আমরা তাদের জন্য দোয়া করি।’

মাওলানা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘মৃত ব্যক্তির জন্য কবর খোঁড়া নিঃসন্দেহে সওয়াবের কাজ। হাদিসে এসেছে—যাঁরা কবর খোঁড়েন, আল্লাহ তাদের জন্য জান্নাতে ঘর নির্মাণ করবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে কারখানার ফটকের সামনে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকেরা। আন্দোলনের মুখে কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রধান ফটক তালাবদ্ধ করে সটকে পড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে শিল্প ও থানা-পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসেছেন। আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের সাইটালিয়া গ্রামে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানায় এই ঘটনা ঘটে।

কারখানার নারী শ্রমিক মিনারা আক্তার বলেন, ‘অক্টোবর ও নভেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করে নাই। এক মাসের বেতন না পেলে আমাদের চলা খুবই কঠিন হয়। আমাদের নাওয়া-খাওয়া বন্ধ হয়। আর সেখানে কারখানা কর্তৃপক্ষ দুই মাসের বেতনভাতা বকেয়া রেখেছে। আজ সকালে শ্রমিকেরা জড়ো হলে তারা পালিয়ে যায়।’

মিন্টু নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘এই কারখানায় আমরা তিন বছর ধরে চাকরি করছি। আমাদের বেতনের বাইরে কোনো সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে না। তবু পেটের দায়ে চাকরি করি। দুই মাসের বেতন বকেয়া। আমাদের তো পেট আছে, সন্তান-সংসার আছে। এক মাস দোকান বাকি পরিশোধ করতে না পারলে পরের মাসে আর দোকানি বাকি দেয় না। আমরা কী অবস্থায় আছি, একবার ভাবুন। বেতন পরিশোধ না করে তারা পালিয়ে গেছে।’

আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

মেহেদী হাসান বলেন, ‘এত দিন ধরে ঋণ করে বলে-কয়ে দোকান থেকে বাকি নিয়ে চলছি। আর পারছি না। এখন দোকান বাকি দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। অক্টোবর মাসের বকেয়া বেতন নিয়ে কমপক্ষে ১০টি তারিখ দিছে। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ বেতন পরিশোধ করেনি। শেষে আজ বেতন পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু তারা কারখানা ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে গেছে।’

কারখানার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. বুলবুল হাসান বলেন, ‘ব্যাংকের সমস্যার কারণে বেতন-ভাতা পরিশোধ করা যাচ্ছে না। আশা করি, আজকের মধ্যে নভেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করতে পারব।’ বিনা নোটিশে কারখানার ফটক কেন তালাবদ্ধ? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমি বলতে পারব না।’

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাছির আহমদ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত