Ajker Patrika

চাকরি না ছাড়ায় নববধূকে গলা কেটে হত্যা

ঘিওর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
চাকরি না ছাড়ায় নববধূকে গলা কেটে হত্যা

সুমি আক্তার ও মো. রাসেল মোল্লা ওরফে রূপকের বিয়ে হয়েছিল মাত্র আড়াই মাস আগে। কথা ছিল বিয়ের পরও সুমি চাকরি করবেন। কিন্তু বিয়ের পর রূপক ও তাঁর পরিবার তাঁকে চাকরি ছাড়তে চাপ দিতে থাকে। সুমি চাকরি ছাড়তে না চাওয়ায় শেষ পর্যন্ত তাঁকে হত্যা করেন স্বামী রূপক। আজ বুধবার রাজধানীর মালিবাগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গ্রেপ্তার রূপকের দেওয়া স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে এ তথ্য জানায় সিআইডি।

আজ বুধবার দুপুরে মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মানিকগঞ্জের ঘিওরে নববধূর গলা কেটে হত্যা মামলার আসামি স্বামী মো. রাসেল মোল্লা ওরফে রূপক গতকাল মঙ্গলবার গভীর রাতে ধরা পড়েন সিআইডির হাতে। সিআইডির এলআইসি শাখার একটি দলের অভিযানে রূপককে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান।

জিজ্ঞাসাবাদে রূপকের দেওয়া স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির এলআইসি শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, ‘মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুরী ইউনিয়নের কাকজোর গ্রামের সুমি আক্তারকে (২২) বিয়ে করেন পার্শ্ববর্তী শোলধারা গ্রামের মো. রাসেল মোল্লা ওরফে রূপক (২৮)। প্রায় আড়াই মাস আগে উভয় পরিবারের সম্মতিতে গত ১৫ মে তাঁদের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় কথা ছিল, বিয়ের পরও সুমি চাকরি করবেন। কিন্তু বিয়ের পর সুমির চাকরি ছাড়ার বিষয় নিয়ে দফায় দফায় ঝামেলা তৈরি হয় স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে। এ ঘটনার জেরে গত ২১ জুলাই রূপকের সঙ্গে সুমির কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে রূপক সুমিকে মারধর করেন। একপর্যায়ে রূপক সুমি আক্তারকে কিল-ঘুষি ও লাথি মারতে থাকলে রূপকের মা রওশন আরা বেগম তাঁকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু রূপক আরও বেশি উত্তেজিত হয়ে ঘরে থাকা ধারালো দা দিয়ে সুমির গলায় কোপ দিয়ে জখম করলে তিনি মারা যান। সুমির মৃত্যু নিশ্চিত করে ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত পালিয়ে যান রূপক।’

ঘটনার পরদিন নিহত সুমির বাবা রহম আলী (৬০) রূপককে একমাত্র অভিযুক্ত করে মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এ মামলার পর ছায়া তদন্ত শুরু করে সিআইডি। সর্বশেষ গতকাল ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ থানা এলাকা থেকে রূপককে গ্রেপ্তার করে সিআইডি।

জানা গেছে, মানিকগঞ্জ জজ কোর্টে অ্যাডভোকেটের সহকারী হিসেবে রূপক প্রায় নয় বছর ধরে কাজ করতেন। আড়াই মাস আগে উভয় পরিবারের সম্মতিতে  সুমির সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ের আগে থেকেই সুমি আক্তার এসডিআই নামের একটি বেসরকারি সংস্থায় বানিয়াজুরী ইউনিয়নে মাঠকর্মী হিসেবে কাজ করতেন। বিয়ের সময় কথা ছিল, সুমি আক্তার বিয়ের পরও চাকরি করবেন। কিন্তু বিয়ের পর স্বামীর পরিবারের সদস্যদের মত পাল্টে যায়।

এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান বলেন, ‘বিয়ের মাত্র আড়াই মাসের মাথায় চাকরি নিয়ে সৃষ্ট দাম্পত্য কলহের জেরে নববধূ সুমি আক্তারকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় একমাত্র এজাহারনামীয় আসামিকে দ্রুততম সময়ে গ্রেপ্তার বাংলাদেশ পুলিশের একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মতিঝিলে ছিনতাইকারীর কবলে ইডেনের ছাত্রী

ঢামেক প্রতিবেদক
এআই দিয়ে তৈরি প্রতীকী ছবি
এআই দিয়ে তৈরি প্রতীকী ছবি

রাজধানীর মতিঝিল মেট্রোরেল স্টেশন এলাকায় ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে অর্পিতা মুখার্জি (২৪) নামে ইডেন কলেজের শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আজ শনিবার সকাল ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

অর্পিতাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসা সহপাঠী প্রবিতা রায় ও ভুক্তভোগী নিজে জানান, ইডেন কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী তিনি। বর্তমানে আজিমপুরে সরকারি স্টাফ কোয়ার্টারে থাকেন। সকালে গ্রামের বাড়ি রংপুর যাওয়ার উদ্দেশ্যে রিকশা যোগে কমলাপুর স্টেশনে যাচ্ছিলেন। রিকশাটি মতিঝিল মেট্রোরেল রেলস্টেশনের নিচে এলে একটি সিএনজি চালিত অটোরিকশায় আসা ছিনতাইকারীরা তাঁর হাতে থাকা ভ্যানিটি ব্যাগ ধরে টান দেয়। এতে রিকশা থেকে ছিটকে পড়েন অর্পিতা। গুরুতর আঘাত পান তিনি।

পরে সহপাঠীদের ফোনকল করে খবর দিলে তাঁরা অর্পিতাকে উদ্ধার করে প্রথমে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে তাঁর কাছ থেকে ছিনতাইকারীরা কিছু নিতে পারেনি বলে জানান অর্পিতা।

ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. ফারুক জানান, মতিঝিলে ছিনতাইকারীর কবলে পড়া ওই শিক্ষার্থীকে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি সংশ্লিষ্ট থানা-পুলিশকে জানানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাদকের টাকার জন্য মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমরসমান মাটিচাপা দিল প্রতিবেশীরা

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি  
আজ সকালে মাদকাসক্ত যুবককে কোমরসমান মাটিতে পুঁতে রাখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে মাদকাসক্ত যুবককে কোমরসমান মাটিতে পুঁতে রাখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের শ্রীপুরে মাদকের টাকার জন্য মা-বাবাকে নির্যাতনের অভিযোগে এক মাদকাসক্ত যুবককে কোমরসমান মাটিতে পুঁতে রাখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের টেপিরবাড়ি গ্রামের স্মার্ট গার্মেন্টস এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী যুবকের নাম মো. খলিলুর রহমান (২৫)। তিনি ওই গ্রামের মো. নূরউদ্দিনের ছেলে। স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য, খলিলুর দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত।

স্থানীয় বাসিন্দা তোতা মিয়া বলেন, মাদকের টাকার জন্য খলিলুর প্রায়ই তাঁর বৃদ্ধ মা-বাবাকে মারধর করেন। শনিবার সকালে মাদক কেনার টাকার জন্য তিনি মায়ের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ইট দিয়ে মায়ের পা থেঁতলে দেন। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকাবাসী তাঁকে আটক করে মাটি খুঁড়ে কোমরসমান চাপা দেন। পরে আবার উঠিয়ে দেওয়া হয়।

খলিলুরের মা খোদেজা বেগম বলেন, ‘মাদকের টাকার জন্য ছেলে সব সময় আমাকে মারধর করে। আজ সকাল সাড়ে ৮টার দিকে টাকা চাইলে দিতে না পারার কথা বলতেই ইট দিয়ে আমার পা থেঁতলে দেয়। এখন হাঁটতে পারছি না।’

খলিলুরের কাকি আকলিমা বলেন, ‘তার নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে ৯ মাসের শিশুপুত্রকে নিয়ে তার স্ত্রী বাবার বাড়ি চলে গেছে। এলাকাবাসীও তার আচরণে বিরক্ত।’

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাছির আহমদ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সজীব আহমেদ বলেন, ঘটনাটি তাঁর নজরে এসেছে। পুলিশকে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বগুড়ায় ট্রাক-অটোরিকশার সংঘর্ষে চালক নিহত, আহত তিন

আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি
দুর্ঘটনায় দুমড়েমুচড়ে যাওয়া অটোরিকশা। ছবি: আজকের পত্রিকা
দুর্ঘটনায় দুমড়েমুচড়ে যাওয়া অটোরিকশা। ছবি: আজকের পত্রিকা

বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহারে ট্রাক ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে অটোরিকশার চালক সাইদুল ইসলাম (৫৪) নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় অটোরিকশায় থাকা আরও তিন যাত্রী গুরুতর আহত হয়েছেন। শুক্রবার রাত ৮টার দিকে সান্তাহার পৌর শহরের খাড়ির ব্রিজ এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শুক্রবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার ইন্দইল এলাকা থেকে সাইদুল ইসলাম অটোরিকশায় করে তিন যাত্রী নিয়ে সান্তাহারের দিকে যাচ্ছিলেন। খাড়ির ব্রিজ এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সঙ্গে অটোরিকশাটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে অটোরিকশাটি উল্টে গিয়ে দুমড়েমুচড়ে যায়। দুর্ঘটনার পর ট্রাকটি দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।

খবর পেয়ে আদমদীঘি ফায়ার সার্ভিসের একটি দল চালকসহ চারজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসক সাইদুল ইসলামকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত সাইদুল ইসলাম উপজেলার ইন্দইল গ্রামের মৃত আমজাদ হোসেনের ছেলে। আহত ব্যক্তিরা হলেন সান্তাহার ইউনিয়নের দমদমা গ্রামের বেলাল মল্লিকের স্ত্রী রেনুকা খাতুন জ্যোৎস্না (৫৫), একই গ্রামের তয়েজ প্রামাণিকের স্ত্রী রোজিনা বেগম (৪৮) এবং নওগাঁ সদর উপজেলার আদম দুর্গাপুর গ্রামের আবু বক্কর ছিদ্দিকের ছেলে রাফি (১৯)।

সান্তাহার পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক আব্দুল মান্নান ট্রাক ও অটোরিকশার সংঘর্ষে চালক নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যৌথ অভিযানে অস্ত্র ও গুলিসহ গাংনীতে গ্রেপ্তার ১

গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি 
আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ০৬
অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার যুবক। ছবি: আজকের পত্রিকা
অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার যুবক। ছবি: আজকের পত্রিকা

মেহেরপুরের গাংনীতে অস্ত্র ও গুলিসহ মোশারফ হোসেন (৪০) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথ বাহিনী। গতকাল শুক্রবার রাত ৯টার দিকে গাংনী উপজেলার সাহারবাটি ইউনিয়নের জোড়পুকুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে নিজ বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার মোশারফ হোসেন উপজেলার জোড়পুকুর গ্রামের মো. শহিদুল ইসলামের ছেলে।

যৌথ বাহিনী জানায়, গাংনী উপজেলার জোড়পুকুর গ্রামে মেহেরপুর সেনাক্যাম্প ও র‍্যাব-১২-এর সদস্যরা মোশারফ হোসেনের বাড়ি তল্লাশি করে ভারতীয় একটি ওয়ান শুটার পিস্তল ও দুটি তাজা গুলি উদ্ধার করে। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা (মাদক, অবৈধ অস্ত্র ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড) রয়েছে বলে যৌথ বাহিনীর বিবৃতিতে জানানো হয়। মোশারফ হোসেনের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করে গাংনী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উত্তম কুমার দাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, অস্ত্রসহ মোশারফ গ্রেপ্তার হওয়ার ঘটনায় গাংনী থানায় মামলা হয়েছে। তাঁকে দুপুরে আদালতে পাঠানো হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত