Ajker Patrika

ধরতে গেলেই পুলিশের দিকে তেড়ে আসত যুবক, কারাগারে মৃত্যু

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
আপডেট : ০৪ জুন ২০২৩, ২৩: ০৯
ধরতে গেলেই পুলিশের দিকে তেড়ে আসত যুবক, কারাগারে মৃত্যু

কুড়িগ্রাম কারাগারে বন্দী অবস্থায় একরামুল হোসেন এরশাদ (৩৫) নামে এক হাজতির মৃত্যুকে ঘিরে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। এরশাদের পরিবার পুলিশি নির্যাতনের অভিযোগ করলেও পুলিশ বলছে, তিনি চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তাঁকে ধরতে গেলে উল্টো পুলিশের ওপর হামলা করতেন। মাদক ব্যবসা ও সেবনসহ পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে ১০টি মামলা রয়েছে। 

একরামুল হোসেন এরশাদ ভূরুঙ্গামারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের কামাত আঙ্গারীয়া গ্রামের শওকত আলীর ছেলে। মাদক মামলায় তিনি এক বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়ে উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়েছিলেন।

গত বুধবার (৩১ মে) এরশাদকে ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। সেখানে গতকাল শনিবার তাঁর মৃত্যু হয়। তবে এরশাদের পরিবারের দাবি, পুলিশি নির্যাতনের কারণে কারাগারে এরশাদের মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে আজ রোববার বিকেলে মরদেহ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

থানা সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি বগুড়া আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) সদস্যরা ভূরুঙ্গামারীতে অভিযান চালিয়ে এরশাদকে গ্রেপ্তার করতে গেলে এরশাদ ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এপিবিএন সদ্যস্যদের ওপর হামলা চালায়। সে সময় তাঁর কাছ থেকে ২৪০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। পরে এপিবিএন বাদী হয়ে এরশাদ, তাঁর স্ত্রী আদুরি ও দুই বোনের বিরুদ্ধে ভূরুঙ্গামারী থানায় মামলা করে। সেই মামলা এখনও বিচারাধীন।

এ ছাড়া উপজেলার পাথরডুবি ইউনিয়নে মাদক কেনাবেচা করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের ওপর হামলা করেন এরশাদ। ওই ঘটনায় তৎকালীন চেয়ারম্যান মিঠু বাদী হয়ে মামলা করেন। ২০১৬ সালে ভূরুঙ্গামারী থানায় এরশাদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হয়। 
এসব অভিযোগ ছাড়াও এরশাদের বিরুদ্ধে মাদক চোরাচালান, ব্যবসা, সেবন, স্বর্ণালঙ্কার চুরিসহ বিভিন্ন অভিযোগে কুড়িগ্রাম সদর, ভূরুঙ্গামারী ও লালমনিরহাট থানায় মামলা রয়েছে। 

গত বুধবার এরশাদকে গ্রেপ্তার অভিযানে যাওয়া ভূরুঙ্গামারী থানা পুলিশের একাধিক সদস্য জানান, মাদক চোরাচালান হবে এমন তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযান চালায়। তাঁর বাড়ি ঘিরে ফেলার আগেই পরিবারের সদস্যরা পুলিশের উপস্থিতি টের পায়। বাড়ির কাছে যেতেই এরশাদ পুলিশকে গালিগালাজ শুরু করেন। একপর্যায়ে কোদাল নিয়ে পুলিশের দিকে তেড়ে আসেন। এ সময় ধস্তাধস্তিতে পড়ে গিয়ে আঘাত পান। পরে তাঁকে ভূরুঙ্গামারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

এরশাদের বড় বোন শিউলি বেগমের দাবি, আটকের পর পুলিশের নির্যাতনের কারণে এরশাদ মারা গেছেন। তিনি বলেন, ‘পুলিশ এসে তাকে ধরে পেটাতে পেটাতে নিয়ে গেছে। আমার ভাইয়ের কাছে কোনও কিছু পায় নাই। থানায় নিয়ে গিয়ে আবার পিটিয়েছে। আমার ভাইকে টর্চার করার কারণে সে মারা গেছে। আমরা এর বিচার চাই।’ 

এরশাদ ও পরিবারের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মিথ্যা করে বলে দাবি করেন তিনি।

এরশাদের স্ত্রী আদুরি বেগম বলেন, ‘আমার স্বামীর সাথে অন্যায় হইছে। আমি এর বিচার চাই।’ 

ভূরুঙ্গামারী থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এরশাদ চিহ্নিত ও সাজাপ্রাপ্ত মাদক ব্যবসায়ী। সে নিয়মিত মাদক সেবন করত। তাকে পুলিশি নির্যাতনের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। গ্রেপ্তারের পর তার পরিবার কোনও অভিযোগ করেনি। মৃত্যুর পর এসব অভিযোগ করছে। ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে সুরোতহাল প্রতিবেদনসহ ময়নাতদন্ত হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিয়ের দাবিতে দড়ি হাতে মেয়ের বাড়িতে যুবকের অনশন

হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
বিয়ের দাবিতে দড়ি হাতে মেয়ের বাড়িতে যুবকের অনশন

ছবি: প্রতীকীএক কলেজছাত্রীকে প্রেমিকা দাবি করে বিয়ের দাবিতে তাঁর বাড়িতে ফাঁসির দড়ি হাতে উপস্থিত হয়েছিলেন রবিউল ইসলাম (২৮) নামের এক যুবক। দাবি না মানলে আত্মহত্যার হুমকিও দেন তিনি। পরে তাঁর এক আত্মীয় এসে তাঁকে বুঝিয়ে বাড়ি ফিরিয়ে নেন।

গতকাল মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার একটি বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। রবিউল একই উপজেলার উত্তর মেরুন্ডি এলাকার বাসিন্দা। তিনি একজন ঠিকাদারি ব্যবসায়ী।

রবিউল জানান, ওই কলেজছাত্রীর সঙ্গে তাঁর দীর্ঘদিনের সম্পর্ক থাকলেও এখন তিনি বিয়ে করতে অস্বীকার করছেন। এতে সম্মান ক্ষুণ্ন হয়েছে। তাই তিনি ফাঁসির দড়ি নিয়ে এসেছেন।

অন্যদিকে কলেজছাত্রী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘তার (রবিউল) সঙ্গে শুধু কথাবার্তা ও দু-একবার দেখা-সাক্ষাৎ হয়েছিল। প্রেম বা বিয়ের কোনো সম্পর্ক ছিল না।

সে ইচ্ছাকৃতভাবে আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করছে। আমি এই ছেলেকে বিয়ে করব না। ও মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে হরিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মুজিবুর রহমান বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে শুনেছি। এক আত্মীয় ছেলেকে নিয়ে গেছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পাঁচ দফা দাবিতে ফের শাহবাগে প্রতিবন্ধীদের অবস্থান, পুলিশের বাধা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
গাড়ির সামনে শুয়ে পড়েছে এক চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী যুবক। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাড়ির সামনে শুয়ে পড়েছে এক চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী যুবক। ছবি: আজকের পত্রিকা

বয়সসীমা বাড়ানো, বিশেষ নিয়োগের ব্যবস্থা ও স্বতন্ত্র কোটা পুনর্বহালসহ পাঁচ দফা দাবিতে আবারও রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্রাজুয়েট পরিষদ। আজ বুধবার সকালে চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্রাজুয়েট পরিষদের ব্যানারে অবস্থান নেন তাঁরা। পরে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে যমুনা অভিমুখে যাত্রা করলে শাহবাগ মোড়ে তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ।

‎‎চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধীরা জানান, শিক্ষিত, যোগ্য ও কর্মক্ষম যুব প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন ধরে কর্মসংস্থান থেকে বঞ্চিত। তাঁরা ২০১৮ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে ন্যায্য অধিকার দাবি জানিয়ে আসছে। তবুও কর্মসংস্থানে অন্তর্ভুক্তি ও প্রতিবন্ধী কোটা যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয়নি।

গত রোববার একই দাবিতে শাহবাগে অবস্থানের পর সমাজকল্যাণ উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেও কোনো ধরনের সমাধান না পাওয়ায় আজ আবারও শাহবাগে অবস্থান ও যমুনামুখী পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করা হয়।

‎এ সময় পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন তাঁরা। তাঁদের দাবির মধ্যে রয়েছে—প্রতিবন্ধিতার ধরন অনুযায়ী শিক্ষিত বেকারদের প্রধান উপদেষ্টার নির্বাহী আদেশে বিশেষ নিয়োগ, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে ২ শতাংশ ও তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণিতে ৫ শতাংশ স্বতন্ত্র কোটা বাস্তবায়ন, শ্রুতি লেখক মনোনয়নে স্বাধীনতা নিশ্চিত করে নীতিমালা হালনাগাদ, দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য নির্ধারিত পদে নিয়োগ নিশ্চিত করা এবং সরকারি চাকরিতে প্রতিবন্ধীদের বয়সসীমা ৩৫ বছরে উন্নীত করা; এক্ষেত্রে সাধারণ প্রার্থীদের ক্ষেত্রে ৩৫ হলে তা ৩৭ বছর করার দাবি জানানো হয়।

‎‎এই পাঁচ দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি থেকে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে যমুনা অভিমুখে যাত্রা করে চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধীরা। তবে শাহবাগ মোড়ে যাওয়ার আগেই তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ। এ সময় পুলিশের সঙ্গে তাঁদের ধস্তাধস্তি হয়। কেউ কেউ রাস্তায় শুয়েও পড়েন। পরে পুলিশ তাঁদের সড়ক থেকে সরিয়ে দিলে জাদুঘরের সামনের সড়কে অবস্থান নেন তাঁরা।

চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী গ্রাজুয়েট পরিষদের সদস্য সচিব আলিফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধীদের চাকরির সুযোগ কম থাকায় গ্রাজুয়েট হয়েও অনেকে বেকার। সরকারের উচিত প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা। এই দাবি নিয়ে গত রোববারও শাহবাগে অবস্থান করে যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করি। কিন্তু পুলিশ আমাদের আটকে দেয়। এরপর সমাজকল্যাণ উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আমাদের দাবি জানায়। তাঁর কাছ থেকে কোনো সমাধান না পেয়ে আমরা আবারও যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করি। কিন্তু পুলিশ আমাদের ব্যারিকেড দিয়ে আটকে রাখে।

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ খালিদ মনসুর বলেন, চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধীরা দাবি-দাওয়া নিয়ে সড়কে এসে শুয়ে পড়ায় পুলিশ তাঁদের সরিয়ে দিয়েছে। সড়কে যানচলাচল যেন স্বাভাবিক থাকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

টেকনাফে মানব পাচারের চেষ্টাকালে ২৯ জন উদ্ধার, আটক ৩

 টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
কক্সবাজারের টেকনাফে মানব পাচারের চেষ্টার অভিযোগে আটক ব্যক্তিরা। ছবি: সংগৃহীত
কক্সবাজারের টেকনাফে মানব পাচারের চেষ্টার অভিযোগে আটক ব্যক্তিরা। ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজারের টেকনাফে মানব পাচার চক্রের ৩ সদস্যকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এ সময় পাচারের জন্য একত্র করা ২৯ জনকে উদ্ধার করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার রাতে মানব পাচার ও সংঘবদ্ধ অপরাধ দমনে এই অভিযান চালানো হয়।

আজ বুধবার ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।

মানব পাচার চেষ্টার অভিযোগে আটক ব্যক্তিরা হলেন মো. সলিম (৩৫), মো. নুরুল আবছার (১৯) ও মনসুর আলম (২২)। তাঁদের মধ্যে সলিম ও আবছার টেকনাফ সদর মহেশখালীয়াপাড়ার বাসিন্দা এবং মনসুর উখিয়া কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা।

কক্সবাজারের টেকনাফে মানব পাচারের জন্য একত্র করা ব্যক্তিদের ইঞ্জিনচালিত নৌকা থেকে উদ্ধার করা হয়। ছবি: সংগৃহীত
কক্সবাজারের টেকনাফে মানব পাচারের জন্য একত্র করা ব্যক্তিদের ইঞ্জিনচালিত নৌকা থেকে উদ্ধার করা হয়। ছবি: সংগৃহীত

অভিযান টের পেয়ে পালিয়ে যাওয়া মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য টেকনাফ সদর ইউনিয়নের মহেশখালীয়াপাড়ার বাসিন্দা মো. মাহমুদুল হক (৩১), সৈয়দুল ইসলাম (৩৭), আজিজুল হক (৩০) এবং আরও ৬-৭ জন অজ্ঞাতনামা সদস্য পালিয়ে যান।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান জানান, গতকাল মঙ্গলবার টেকনাফের রাজাছড়া পাহাড়ের দুর্গম চূড়া থেকে একদল জিম্মিকে উদ্ধার করে বিজিবি। পরে পাচারকারীদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে রাতে মেরিন ড্রাইভ সৈকত এলাকায় গভীর সাগরে পাচারের প্রস্তুতিকালে আরও ২৯ জন নিরীহ ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় মানব পাচার চক্রের তিন সদস্যকে দেশীয় অস্ত্রসহ হাতেনাতে আটক করা হয়। অভিযান থেকে একটি ইঞ্জিনচালিত সাম্পান, একটি মোটরসাইকেলসহ একটি দেশীয় চাকু জব্দ করা হয়েছে।

আশিকুর রহমান বলেন, উদ্ধার ২৯ জন ভুক্তভোগীকে আইনি প্রক্রিয়া শেষে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে এবং আটক ৩ মানব পাচারকারীর বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জুলাই শহীদের কন্যাকে দলবদ্ধ ধর্ষণ: তিন কিশোরকে ১৩ ও ১০ বছরের কারাদণ্ড

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১৫: ৫৯
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার বহুল আলোচিত জুলাই শহীদের মেয়েকে ধর্ষণের মামলায় তিন আসামির সাজা ঘোষণা করেছেন আদালত। দুই আসামিকে ১৩ বছর করে এবং একজনকে ১০ বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

আজ বুধবার সকালে পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নিলুফার শিরিন এই রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলো সাকিব মুন্সী ও সিফাত মুন্সী (প্রত্যেকে ১৩ বছর) এবং ইমরান মুন্সী (১০ বছর)।

রায়ে আদালত বলেন, আসামিরা ঘটনার সময় অপ্রাপ্তবয়স্ক ছিল। ফলে শিশু আদালত আইনের আওতায় তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হয়েছে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী কলেজশিক্ষার্থীর বাবা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত বছরের ১৯ জুলাই রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন। ১০ দিন পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তাঁকে দুমকী উপজেলার গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়। গত ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় বাবার কবর জিয়ারত করে নানাবাড়িতে ফেরার পথে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন ওই কলেজশিক্ষার্থী (১৮)।

ঘটনার পর ভুক্তভোগী বাদী হয়ে তিনজনের বিরুদ্ধে দুমকী থানায় মামলা করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। ধর্ষণের ঘটনার মানসিক আঘাত ও সামাজিক লজ্জায় গত ২৬ এপ্রিল ঢাকার শেখেরটেক এলাকার একটি ভাড়া বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন ভুক্তভোগী। তাঁর মরদেহ নিজ গ্রামে নিয়ে শহীদ বাবার কবরের পাশে দাফন করা হয়। দীর্ঘ সাক্ষ্য গ্রহণ, জেরা ও যুক্তিতর্ক শেষে আজ এই রায় ঘোষণা করা হলো।

রায়ের পর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘আমরা মামলাটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পেরেছি। আদালত যে ন্যায়বিচার করেছেন, তা ভুক্তভোগীর আত্মার শান্তির জন্য কিছুটা হলেও সান্ত্বনা এনে দেবে।’

আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. শহিদুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ‘আমার মক্কেলরা নির্দোষ। রায়ের কপি হাতে পাওয়ার পর আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।’

রায় ঘোষণার পর আদালত প্রাঙ্গণে সাধারণ মানুষ, নারী অধিকারকর্মী ও মানবাধিকার সংগঠনের সদস্যরা সন্তোষ প্রকাশ করেন। তাঁরা বলেন, এই রায় সমাজে ন্যায়বিচারের প্রতি আস্থা আরও জোরদার করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত