Ajker Patrika

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান দায়িত্ব শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে এনে বিচারের সম্মুখীন করা: প্রেস সচিব

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
আপডেট : ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯: ০৮
‘জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা ও গণমাধ্যম’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য দেন উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ছবি: আজকের পত্রিকা
‘জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা ও গণমাধ্যম’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য দেন উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ছবি: আজকের পত্রিকা

শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের সম্মুখীন করাই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান দায়িত্ব বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনতে যত রকম আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করা যায়, তা-ই করছে সরকার।

আজ শনিবার (১৮ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত ‘জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা ও গণমাধ্যম’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘জাতি যদি সোচ্চার থাকে এবং প্রেসারে রাখতে পারি, তাহলে শেখ হাসিনাকে ঠিকই দেশে আনা হবে। তার (শেখ হাসিনা) বাবার খুনিকে যেভাবে খুঁজে খুঁজে নিয়ে আসছে, ঠিক তেমনি অন্তর্বর্তী সরকার এবং পরবর্তী সরকারের প্রধান দায়িত্ব হবে, শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে এনে বিচারের সম্মুখীন করা। এর জন্য যত রকমের ইন্টারন্যাশনাল প্রেসার তৈরি করা যায়, সেটা অন্তর্বর্তী সরকার করছে।’

শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে একটা হার্ডলাইনে গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে। সুফি ইসলামকে তারা গুঁড়িয়ে দিচ্ছে। বিদেশে আমাদের যারা শত্রু, তারা এটাকে নিয়ে খেলছে।’ তিনি বলেন, ‘আপনি মাজার পছন্দ করেন না, সেখানে যাইয়েন না। কিন্তু আপনি ভাঙতে যাওয়াটা মানে হচ্ছে বিদেশে একটা মেসেজ দেওয়া হচ্ছে। তাদের মতপক্ষকে আপনি সম্মান করেন না। এটা খুব ভয়াবহ মেসেজ। এই মেসেজ দেওয়া মানে বিদেশিরা বাংলাদেশের সম্পর্কে একটি খুব বাজে ধারণা নেবে। এটা আমাদের কোনোমতেই হতে দেওয়া যাবে না।’

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, ‘জুলাইয়ের যে মহৎ বিপ্লব, সেই বিপ্লবের বড় একটা জিনিস হলো আমরা রাষ্ট্র সংস্কার করতে চাই এবং সেই সংস্কারটা আমরা করছি। কিন্তু আমরা কিছু কিছু জিনিস দেখছি, এমন কিছু কাজ হচ্ছে, যেখানে মানুষ ভাবছে আমাদের বিপ্লবটা কী বেহাত হয়ে গেল?’ তিনি যোগ করেন, ‘জুলাই বিপ্লব বেহাত হয়নি। জুলাই বিপ্লব তার যে আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি করেছিল, সে রকমই আছে এবং সেই অনুযায়ী কাজ হচ্ছে।’

প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘হাসিনার অপকর্ম আমরা শুধু পত্রিকায় দেখেছি না, হলে-ফেসবুকে শুনছি। কিন্তু এটাকে নিয়মতান্ত্রিকভাবে একটা রিপোর্টিংয়ের মাধ্যমে জানুন। সেটা জানার জন্য শ্বেতপত্র রয়েছে।’

সেমিনারে প্রধান আলোচক ও অতিথিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
সেমিনারে প্রধান আলোচক ও অতিথিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

শফিকুল আলম শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘শ্বেতপত্রটি ডাউনলোড করে পড়ে নেবেন। এটা ৪০০ পৃষ্ঠার একটি অনন্ত দলিল। এটা আমাদেরকে পড়তে হবে। আমার-আপনার টাকা তারা কীভাবে চুরি করেছে, কীভাবে বিদেশে পাঠিয়েছে, সেটার ভয়াবহ দলিল এটা।’

শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘আমরা একটা রোডম্যাপ দিয়েছি। জনআকাঙ্ক্ষা ছিল রাষ্ট্র নির্মাণ করতে হবে। আমাদেরকে এখন রাষ্ট্র সংস্কার করতে হচ্ছে। এই রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য প্রধান উপদেষ্টা বড় রকমের পদক্ষেপ নিয়েছেন। চার সংস্কার কমিশন প্রতিবেদন দিয়েছে। আশা করি, আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ঠিকঠাক সব রিপোর্ট আমরা পাব।’

জন-আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বলেন, ‘পুলিশ কী আগের মতোই থাকবে, পলিটিক্যাল গভর্নমেন্টের হয়ে খুনোখুনি করবে, মানুষের এগেনেস্টে ফেক কেস দিয়ে হেরাস করবে, নাকি পুলিশ হবে বাংলাদেশের মানুষের বন্ধু। সেটা নিয়েও কাজ করা হচ্ছে।’

বর্তমান সরকার রাষ্ট্র সংস্কারের কাজে অনেক উন্নয়ন ঘটিয়েছে জানিয়ে শফিকুল আলম বলেন, বিশেষ করে প্রতি মাসে অর্থনীতিতে উন্নয়ন, যা একটি দেশের জন্য অনেক বড় অর্জন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (ইবিসাস) যৌথ উদ্যোগে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. রশিদুজ্জামান এতে সভাপতিত্ব করেন।

সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. নকীব মো. নসরুল্লাহ। এ ছাড়াও সেমিনারে আলোচক ছিলেন বাসসের বিশেষ সংবাদদাতা ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ে সংযুক্ত এস এম রাশিদুল ইসলাম। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক সমিতির সভাপতি তাইমুল হক জায়িম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘জনতার জন্য হিজাব আইন, খামেনির উপদেষ্টার মেয়ের জন্য ডানাকাটা জামা’

স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের সাপ্লাই চেইন বিভাগে চাকরির সুযোগ

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বন্ধ করবে: আমীর খসরু

ত্রিভুজ প্রেম থেকে মুক্তি পেতেই জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করে ছাত্রী: পুলিশ

সিটি করপোরেশন হচ্ছে সাভার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জোবায়েদ হত্যা

এক মাস আগে হত্যার পরিকল্পনা মাহির-বর্ষার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জবি শিক্ষার্থী জোবায়েদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
জবি শিক্ষার্থী জোবায়েদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. জোবায়েদ হোসেন হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে নিহত জোবায়েদের বড় ভাই এনায়েত হোসেন সৈকত রাজধানীর বংশাল থানায় এ হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ। তাঁরা হলেন মো. মাহির রহমান (১৯), জোবায়েদের ছাত্রী (১৯) ও ফারদীন আহম্মেদ আয়লান (২০)।

এ তিনজন জোবায়েদ হত্যার দায় স্বীকার করে পুলিশের কাছে এবং আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাঁরা জবানবন্দি দেন। এ দিন বিকেলে বংশাল থানা পুলিশ তিনজনকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে।

আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বংশাল থানার এসআই মো. আশরাফ হোসেন তিনজনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করার জন্য আবেদন করেন। আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এই তিনজনের পরিকল্পনায় জোবায়েদকে হত্যা করা হয় বলে গ্রেপ্তারের পর তাঁরা স্বীকার করেছেন। তাঁরা আদালতেও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে ইচ্ছুক।

পরে তিনজনই ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। জবানবন্দি শেষে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়।

আসামি মাহির জবানবন্দি দেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের কাছে। জোবায়েদের ছাত্রী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম মিয়া এবং আসামি আয়নাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল রানের কাছে জবানবন্দি দেন। বিকেল থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত তাঁরা জবানবন্দি দেন।

আদালতের বংশাল থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা তানভীর মোর্শেদ চৌধুরী জবানবন্দির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

রোববার বিকেলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী জোবায়েদ খুন হওয়ার পর রাতেই মেয়েটিকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। পরে ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও শান্তিনগর থেকে অপর দুজনকে আটক করা হয়।

এজাহারে যা বলা হয়

মামলায় ওই তিনজন ছাড়াও অজ্ঞাতনামা ৪-৫ জনকে আসামি করা হয়। এজাহারে বলা হয়, বাদীর ছোট ভাই জোবায়েদ জবিতে পড়াশোনার পাশাপাশি টিউশনি করতেন। প্রতিদিনের মতো ১৯ অক্টোবর (রোববার) বিকেল সাড়ে ৪টার সময় বংশাল থানার নূর বক্স লেনের ১৫ নম্বর হোল্ডিং রওশন ভিলায় ছাত্রীকে পড়ানোর জন্য যান জোবায়েদ। ওই দিন বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটের সময় ছাত্রীটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সৈকতকে ফোনে জানান, জোবায়েদ স্যার খুন হয়েছেন। কে বা কারা খুন করে ফেলেছে। জানার পর বাদী, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্মকর্তা, শিক্ষক ও অনেক ছাত্র ঘটনাস্থলে গেলে রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওই বাড়ির সিঁড়িতে জোবায়েদের লাশ দেখতে পান।

এজাহারে আরও বলা হয়, স্থানীয় লোকজন ও আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে বাদী জানতে পেরেছেন এজাহারের ৩ আসামি এবং অজ্ঞাতনামা আসামিরা তাঁর ভাইকে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলার ডান পাশে আঘাত করে খুন করেছেন।

আদালতে জবানবন্দি

আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, তিনজনকে গ্রেপ্তারের পর থানা হেফাজতে তাঁদের মুখোমুখি করা হয়। পুলিশের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে তাঁরা হত্যার দায় স্বীকার করেন। পুলিশের কাছে হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে তাঁরা যা বলেছেন আদালতেও সেই রকম স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।

হত্যার দায় স্বীকার পুলিশের কাছে

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) এস এন নজরুল ইসলাম বলেন, ‘জোবায়েদ গত এক বছর ওই ছাত্রীকে (১৯) প্রাইভেট পড়াতেন। এতে তাঁর সঙ্গে ওই ছাত্রীর একটা প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর আগে মাহিরের সঙ্গে মেয়েটির সম্পর্ক ছিল। ফলে এটা মাহির মেনে নিতে পারেনি। পরে মেয়েটির পরিকল্পনা অনুযায়ী জোবায়েদকে হত্যার সিদ্ধান্ত হয়। রোববার জোবায়েদ বিকেল ৪টার দিকে পড়াতে আসবে, তা মাহিরকে জানায় মেয়েটি। মাহির বন্ধু ফারদীন আহম্মেদ আয়লানসহ (২০) বাসার গলিতে অবস্থান নেন। জোবায়েদ আসার পর তাঁদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। এ সময় জোবায়েদকে সম্পর্ক থেকে সরে আসতে বলা হলে তিনি বলেন, ‘মেয়ে তো আমাকে ভালোবাসে আমি কেন সরে যাব।’ একপর্যায়ে জোবায়েদকে চাকু দিয়ে গলায় আঘাত করেন মাহির। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে জোবায়েদ সেখানে মারা যান।

এক প্রশ্নের জবাবে নজরুল ইসলাম বলেন, হত্যার পরিকল্পনা করেছে মেয়েটিই। বরগুনার মিন্নির ঘটনার সঙ্গে অনেকাংশে মিল রয়েছে। মেয়েটা দুজনের কারও কাছ থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলেন না। ফলে তিনি নিজেই হত্যার পরিকল্পনা সাজান। এখানে কোনো রাজনৈতিক বিষয় নেই। এটা সম্পূর্ণ ত্রিভুজ প্রেমের কাহিনি। গত ২৬ সেপ্টেম্বর মাহির বিষয়টি নিয়ে মেয়েটিকে চাপ প্রয়োগ করলে, সেদিনই গৃহশিক্ষক জোবায়েদকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন তাঁরা। এর সঙ্গে পরিবারের কারোর জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া যায়নি বলে জানায় পুলিশ।

পরে ডিএমপির লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মল্লিক আহসান উদ্দিন সামী বলেন, জোবায়েদ যখন মারা যান, তখন ছাত্রীটি সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তদন্তে জানা গেছে, ছাত্রীকে উদ্দেশ করে জোবায়েদের শেষ কথা ছিল, ‘আমাকে বাঁচাও’। ছাত্রী তখন জোবায়েদের উদ্দেশে বলেন, ‘তুমি না সরলে, আমি মাহিরের হব না’ এ ধরনের এক কথা। তদন্তে উঠে এসেছে, দোতলার সিঁড়িতে জোবায়েদকে ছুরিকাঘাত করা হয়। এ সময় তিনি বাঁচার চেষ্টা করছিলেন। ছাত্রীর বাসা পাঁচতলায় হলেও ঘটনার সময় তিনি তিনতলার সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে হত্যাকাণ্ড দেখেন। এ সময় দোতলার দরজায় ধাক্কা দিলে তা না খোলায় জোবায়েদ তিনতলায় যেতে চান। তখন সিঁড়িতে পড়ে যান এবং সেখানেই মারা যান।

আদালত এলাকায় মিছিল

এদিকে তিন আসামিকে আদালতে হাজির করার পর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা আসামিদের ফাঁসির দাবিতে আদালত এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেন। তাঁরা দ্রুত বিচার দাবি করেন এবং এই মামলায় আরও যাঁরা জড়িত তাঁদের শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘জনতার জন্য হিজাব আইন, খামেনির উপদেষ্টার মেয়ের জন্য ডানাকাটা জামা’

স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের সাপ্লাই চেইন বিভাগে চাকরির সুযোগ

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বন্ধ করবে: আমীর খসরু

ত্রিভুজ প্রেম থেকে মুক্তি পেতেই জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করে ছাত্রী: পুলিশ

সিটি করপোরেশন হচ্ছে সাভার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জবি ছাত্র জোবায়েদের কবর জিয়ারত পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের

হোমনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধি 
জবি শিক্ষার্থী জোবায়েদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
জবি শিক্ষার্থী জোবায়েদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হোসেনের কবর জিয়ারত করেছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সন্ধ্যার আগে কুমিল্লার হোমনা উপজেলার কলাগাছিয়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে জিয়ারতের এই আয়োজন করা হয়।

এ সময় পরিবারের সদস্যরা জোবায়েদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করেন। এতে নিহত জোবায়েদের বাবা মোবারক হোসেন, চাচা সাংবাদিক মোহাম্মদ আক্তার হোসেনসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

ভেজা কণ্ঠে জোবায়েদের চাচা সাংবাদিক মোহাম্মদ আক্তার হোসেন বলেন, ‘জোবায়েদকে তো হারিয়েই ফেলেছি। কিন্তু যারা নির্মমভাবে হত্যা করেছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই—যেন ভবিষ্যতে আর কেউ এমন অপরাধ করতে সাহস না পায়।’

গত রোববার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পুরান ঢাকায় তাঁর এক ছাত্রীর বাসার সিঁড়িতে খুন হন জবি ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হোসেন। বাসার নিচতলা থেকে তিনতলা পর্যন্ত রক্তের দাগ পাওয়া যায়। পরে তিনতলার সিঁড়িতে উপুড় হয়ে থাকা অবস্থায় পুলিশ তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে।

পরদিন গতকাল সোমবার ময়নাতদন্ত শেষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জোবায়েদের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে বাদ মাগরিব নিজ গ্রাম কলাগাছিয়া উচ্চবিদ্যালয় মাঠে দ্বিতীয় জানাজা শেষে তাঁকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

ভাই হত্যার ঘটনায় আজ সকালে নিহত জোবায়েদের বড় ভাই এনায়েত হোসেন সৈকত বংশাল থানায় তিনজননামীয় ও চার–পাঁচজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেন। পুলিশ ইতিমধ্যে এজাহারভুক্ত তিনজন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে।

মামলার বাদী এনায়েত হোসেন সৈকত বলেন, ‘আমরা মামলায় প্রকৃত আসামিদের নামই উল্লেখ করেছি। চাই না কোনো নির্দোষ ব্যক্তি ফেঁসে যাক। যারা অপরাধ করেছে, তারাই যেন শাস্তি পায়। ইতিমধ্যে তিনজন আসামিকে গ্রেপ্তার করায় পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আমরা সুষ্ঠু বিচার আশা করছি।’

নিহত জোবায়েদ হোসেন হোমনা উপজেলার কলাগাছিয়া কৃষ্ণপুর গ্রামের মোবারক হোসেনের ছেলে। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এবং কুমিল্লা কল্যাণ সমিতির সভাপতি ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘জনতার জন্য হিজাব আইন, খামেনির উপদেষ্টার মেয়ের জন্য ডানাকাটা জামা’

স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের সাপ্লাই চেইন বিভাগে চাকরির সুযোগ

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বন্ধ করবে: আমীর খসরু

ত্রিভুজ প্রেম থেকে মুক্তি পেতেই জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করে ছাত্রী: পুলিশ

সিটি করপোরেশন হচ্ছে সাভার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দুদকের মামলায় খালাস লুৎফর রহমান বাদল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় আইএফআইসি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান বাদলকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আবদুল্লাহ আল মামুন এ রায় ঘোষণা করেন।

রমনা থানায় ২০১৭ সালে হওয়া ওই মামলায় দুদক বাদল ও তাঁর স্ত্রী সোমা আলম রহমানের নামে থাকা সব স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ জব্দ করেছিল। ২০২৪ সালের ৩০ আগস্ট এ মামলায় তিনি স্থায়ী জামিন পান। প্রায় এক বছর দুই মাস পর আদালতের রায়ে তিনি পুরোপুরি খালাস পেলেন।

মামলার নথি থেকে জানা গেছে, দুদক আইনের ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় ২০১৭ সালের ২৮ মে ৫৯ কোটি ৭০ লাখ ৩৪ হাজার ২৯০ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেন দুদকের পরিচালক শেখ আব্দুস সালাম। পরে তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ৯ এপ্রিল অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদক কর্মকর্তা মো. মোশারফ হোসাইন মৃধা। ২০২২ সালের ৭ জানুয়ারি অভিযোগ গঠন করেন আদালত।

রায়ে আদালত পর্যবেক্ষণ দেন, তৎকালীন সরকার উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাদলের বিরুদ্ধে মামলা করে তাঁকে হয়রানি করেছে। আরাফাত রহমান কোকোর ব্যবসায়িক অংশীদার ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে ব্যক্তিগত পরিচয় থাকার কারণে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছিলেন তিনি। আদালতের ভাষায়, বিএনপির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কারণে আগের সরকার তাঁকে ব্যক্তিগতভাবে হয়রানি করেছে।

ব্যবসায়ী বাদলের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. বোরহান উদ্দীন রায় ঘোষণার পর বলেন, ২০১৭ সালে দুদক তাঁর মক্কেলকে সম্পদ বিবরণী জমা দেওয়ার নোটিশ পাঠিয়েছিল। সে সময় লুৎফর রহমান বিদেশে থাকায় তাঁর স্ত্রী সোমা আলম রহমান আদালতে সম্পদের বিবরণী দাখিল করেন।

আইনজীবী জানান, আদালতে মোট ৬৭টি দলিল জমা দেওয়া হয়, যেখানে সব স্থাবর সম্পদের তথ্য উল্লেখ ছিল। তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেই আগের সরকার মিথ্যা মামলা দিয়েছিল। অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি খারাপ থাকায় লুৎফর রহমান বাদল তখন দেশে ফিরতে পারেননি। কিন্তু আইনের প্রতি আস্থা রেখে তিনি ফিরে এসে ন্যায়বিচার পেয়েছেন।

আইনজীবীর ভাষায়, লুৎফর রহমান বাদল আশা করছেন, তাঁর বিরুদ্ধে করা অন্যান্য হয়রানিমূলক মামলায়ও তিনি আদালতের কাছ থেকে একইভাবে ন্যায়বিচার পাবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘জনতার জন্য হিজাব আইন, খামেনির উপদেষ্টার মেয়ের জন্য ডানাকাটা জামা’

স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের সাপ্লাই চেইন বিভাগে চাকরির সুযোগ

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বন্ধ করবে: আমীর খসরু

ত্রিভুজ প্রেম থেকে মুক্তি পেতেই জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করে ছাত্রী: পুলিশ

সিটি করপোরেশন হচ্ছে সাভার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ছাত্রদল নেতাকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
জাহাঙ্গীর আলম। ছবি: সংগৃহীত
জাহাঙ্গীর আলম। ছবি: সংগৃহীত

নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় জাহাঙ্গীর আলম (৩০) নামের ছাত্রদলের এক নেতাকে হাত–পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

গতকাল সোমবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার কেন্দুয়া–আঠারবাড়ী সড়কের পাশে বড় কালিয়ান এলাকা থেকে তাঁকে উদ্ধার করা হয়।

জাহাঙ্গীর আলম গন্ডা ইউনিয়ন ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি। তিনি মরিচপুর এলাকার আজিজুল হকের ছেলে।

কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জাহাঙ্গীর আলম গতকাল সন্ধ্যার পর বাড়ি থেকে বের হন। এর কিছুক্ষণ পর তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল। তখন পরিবারের লোকজন তাঁকে খুঁজতে শুরু করেন। একপর্যায়ে রাত ৯টার দিকে স্থানীয় লোকজন কেন্দুয়া–আঠারবাড়ী সড়কের কালিয়ান এলাকায় একটি ইটভাটায় হাত–পা বাঁধা অচেতন অবস্থায় তাঁকে পড়ে থাকতে দেখেন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।

জাহাঙ্গীর আলমের চাচাতো ভাই হাসান মিয়া বলেন, ‘হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার পর গভীর রাতে জাহাঙ্গীরের জ্ঞান ফিরে আসে। তিনি এখনো কথা বলতে পারছেন না। কীভাবে এমন হলো, তা তিনি এখনো বলতে পারছেন না। তবে আমরা ধারণা করছি, গন্ডা ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে বিরোধ চলছে। আমার ভাইয়ের বিপক্ষের কিছু লোক তাঁকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিল। তিনি পুরোপুরি সুস্থ হলে তাঁর কাছ থেকে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘জনতার জন্য হিজাব আইন, খামেনির উপদেষ্টার মেয়ের জন্য ডানাকাটা জামা’

স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের সাপ্লাই চেইন বিভাগে চাকরির সুযোগ

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বন্ধ করবে: আমীর খসরু

ত্রিভুজ প্রেম থেকে মুক্তি পেতেই জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করে ছাত্রী: পুলিশ

সিটি করপোরেশন হচ্ছে সাভার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত