Ajker Patrika

যশোরের ৪ আসনে স্বতন্ত্রের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস, ২টিতে নির্ভার নৌকা

জাহিদ হাসান, যশোর
আপডেট : ০৬ জানুয়ারি ২০২৪, ১৭: ১৯
যশোরের ৪ আসনে স্বতন্ত্রের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস, ২টিতে নির্ভার নৌকা

‘ভাগনে হালকা লিকার, চিনি কমায়ে একটা চা দাও।’ চা-দোকানিকে ফরমাশ জানিয়ে বাঁশের তৈরি বেঞ্চিতে বসে পড়লেন চল্লিশোর্ধ্ব এক ক্রেতা। বিড়বিড় করে তিনি আবার বললেন, ‘শীতে তো কাবু করে ফেলতেছে। কাল তো ভোট। কিডা যে পাস করবেনে। সবাই নৌকার লোক হইলেও এবার সব ভোট নৌকায় পড়বে না। অনেক হিসাব-নিকাশ হবেনে ভোটে।’ একটু দূরের বেঞ্চে নজরুল ইসলাম নামের এক যুবক বলে উঠলেন, ‘ভোটের মাঠে এবার খেলা জমবে। আগের মতো কেউ ফাঁকা মাঠে গোল দিতে পারবে না। নৌকার সঙ্গে ঈগলের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে প্রতিটি কেন্দ্রে। যদি ইলেকশন ফেয়ার হয়, তাহলে মিরাকলও ঘটতে পারে। মনে হচ্ছে, এবারে নির্বাচন পুরো জমে যাবেনে।’

আজ শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সদরের দেয়াড়া ইউনিয়নের দত্তপাড়া গ্রামের ‘সাহেব আলী টি স্টোরে’ এভাবেই শুরু হয় নির্বাচনী আলোচনা। তাতে অংশ নেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার কয়েকজন। অবসরের এ আলোচনার ফাঁকে পৌষের কুয়াশা ভেদ করে মিষ্টি রোদ উঠে বেলা বাড়তে থাকে। সকাল গড়িয়ে রোদ চড়তে থাকে, তবু যেন নির্বাচনী আলোচনার শেষ নেই। চা আড্ডার মূল বিষয়, আগামীকাল রোববারের নির্বাচন। কারও মুখে স্বতন্ত্র প্রার্থীর গুণগান, আবার কারও মুখে নৌকার সুনাম।

চায়ের দোকানে কয়েকজন ভোটারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যশোর সদর-৩ আসনে ১০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আসনটিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী টানা দুবারের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ। সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। উপজেলার আওয়ামী লীগের বড় একটি অংশ তাঁর সঙ্গে নেই। ফলে এবারের নির্বাচনে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন নাবিল।

যশোরের বিভিন্ন আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। ছবি: সংগৃহীতনৌকার এই প্রার্থীকে এবার চ্যালেঞ্জ করে স্বতন্ত্র ঈগল প্রতীকের প্রার্থী হয়েছেন নাবিলের প্রথম ও দ্বিতীয়বারের নির্বাচনী প্রধান সমন্বয়ক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহিত কুমার নাথ। মোহিত একসময় যশোর জেলার রাজনীতিতে পরস্পরবিরোধী দুটি বলয়ের একটির নেতা এমপি কাজী নাবিল আহমেদের সঙ্গেই ছিলেন। পরবর্তী সময়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এখনো তিনি সে বলয়েই সক্রিয়।

দীর্ঘদিন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবেও মোহিতের ইউনিয়ন পর্যায়ে একটি পরিচিতি রয়েছে। সেসব কাজে লাগিয়ে নির্বাচনী ময়দান চষে বেড়াচ্ছেন তিনি। নিজের ঈগল প্রতীকের সমর্থনে তিনি সঙ্গে পেয়েছেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও আরবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহারুল ইসলামসহ জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতাকে। কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যানও তাঁর সঙ্গে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিচ্ছেন। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঈগলের সমর্থন দেখে সাধারণ ভোটাররা ঈগলের জয়ই দেখছেন। তবে আবার এ আসনে নৌকা প্রতীক ফ্যাক্ট হতে পারে। অনেক ভোটার আবার প্রতীকেই মূল্যায়ন করছেন।

সব মিলিয়ে কাজী নাবিল আহমেদ এবার যে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হয়েছেন তা তাঁর নির্বাচনী প্রক্রিয়াই বলে দিচ্ছে। তিনিও ছুটেছেন দিন-রাত। গিয়েছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। এই আসনে বিকল্পধারা বাংলাদেশের মারুফ হাসান কাজল, জাতীয় পার্টির মাহবুব আলম, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির সুমন কুমার রায়, খেলাফত আন্দোলনের মো. তৌহিদুজ্জামান, তূণমূল বিএনপি মো. কামরুজ্জামান, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের শেখ নুরুজ্জামানও লড়ছেন।

দেয়াড়া গ্রামের কৃষক ও মুদিদোকানি তোফায়েল হোসেনের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন এখানে জমজমাট হবে। তবে সাধারণ ভোটার যাঁরা আছেন, তাঁদের মনে ভয়ও আছে। ভোট নিয়ে নৌকার সঙ্গে ঈগলের কোনো সংঘর্ষ হয় কি না, তা নিয়ে সবাই চিন্তিত। কারণ, নৌকা কোনোভাবেই আসন হারাতে চাইবে না।’

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোরের ছয়টি সংসদীয় আসনে ভোটযুদ্ধে ৩২ জন প্রার্থী লড়ছেন। নৌকার পাশাপাশি আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র ৮ প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। তবে লড়াইয়ের আভাস মিলেছে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এবং আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে। এর মধ্যে যশোর-২ ও ৪ বাদে বাকি চারটি আসনে নৌকা বনাম স্বতন্ত্রের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস মিলেছে।

হালি পূরণ করবেন আফিল, নাকি লিটনের প্রথম
যশোর-১ (শার্শা) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত শেখ আফিল উদ্দিন, স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম লিটন ও জাতীয় পার্টির আক্তারুজ্জামান ভোটযুদ্ধে নেমেছেন। তবে আসনটিতে লড়াই হতে পারে নৌকার সঙ্গে ট্রাকের। নৌকার আফিলকে ছাড় দিতে নারাজ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও বেনাপোল পৌরসভার সাবেক মেয়র লিটন। ভোটাররা বলছেন, ‘আফিল টানা তিনবারের সংসদ সদস্য। এর আগে মাত্র একবারই তাঁকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছিল। নিজের প্রথম নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী থেকে মাত্র পাঁচ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছিলেন। এরপরের দুই নির্বাচনে তিনি জয়লাভ করেছেন সুস্পষ্ট ব্যবধানে। কিন্তু এবারের নির্বাচনে তাঁকে চ্যালেঞ্জে ফেলেছেন আওয়ামী লীগ নেতা আশরাফুল আলম লিটন। এই আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আক্তারুজ্জামান শুধু খাতা-কলমেই আছেন।’

এর আগে কয়েকটি নির্বাচনে শেখ আফিল উদ্দিন প্রায় একতরফা ভোট করার সুযোগ লাভ করলেও এবার ট্রাক প্রতীকের লিটন সেই সুযোগটি দিচ্ছেন না বলেই মনে করে শার্শাবাসী। অবশ্য স্থানীয় আওয়ামী লীগের বড় অংশ শেখ আফিলের পক্ষে থেকে নিরলস কাজ করেছেন। লিটনের সঙ্গে যাঁরা আছেন, তাঁরাও চষে বেড়িয়েছেন মাঠঘাট।

নির্ভার তৌহিদুজ্জামান তুহিন?
ঝিকরগাছা ও চৌগাছা উপজেলা নিয়ে যশোর-২ আসন। এই আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হলেন ডা. তৌহিদুজ্জামান তুহিন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি মনিরুল ইসলাম ও চৌগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম হাবিবুর রহমান (সংবাদ সম্মেলন করে সম্প্রতি সরে দাঁড়িয়েছেন)। রাজনীতির মাঠে একেবারেই নতুন ডা. তুহিন দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় জয়ের ব্যাপারে প্রথম দিকে কঠিন হলেও বর্তমানে নির্ভার তিনি। কেননা, দলীয় প্রতীকই তাঁর বিজয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি সাবেক এমপি মনিরুলের বিপক্ষে বড় একটি অংশ নৌকাকে সমর্থন দেওয়া এবং আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম হাবিব নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ায় তুহিনের জয়ের পাল্লা ভারী হয়েছে।

আসনটির অন্য তিনজন প্রার্থী জাতীয় পার্টির ফিরোজ শাহ, বাংলাদেশ কংগ্রেসের আব্দুল আওয়াল এবং বিএনএফের শামছুল হক ভোটারদের মধ্যে এখন পর্যন্ত তেমন কোনো প্রভাব ফেলতে পারেননি। তৌহিদুজ্জামান তুহিনের এখন একমাত্র মাথাব্যথার কারণ স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল ইসলাম মনির। সে কারণে তিনি ভোটের মাঠে সক্রিয় থাকার পাশাপাশি দলীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠায়ও মনোনিবেশ করতে বাধ্য হচ্ছেন। নির্বাচনী বক্তব্যেও বিষয়টির আভাস পাওয়া গেছে। নিয়ম মেনে রোগীর সেবা করা এই প্রার্থী এবার কোনো নিয়মের ঘেরাটোপে আর থাকতে পারছেন না। প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টাই যেন তাঁর কাছে কাজের সময়ে পরিণত হয়েছে। ভুলে গেছেন নাওয়া-খাওয়া। ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে।

যশোর-৪ আসনে নিশ্চিত জয়ী নৌকার বাবুল
বাঘারপাড়া-অভয়নগর উপজেলা ও সদরের বসুন্দিয়া ইউনিয়ন নিয়ে যশোর-৪ আসন। এখানে ভোটের মাঠে অনেকটা সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী এনামুল হক বাবুল। যদিও এনামুল দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকে যতটা না প্রচারণায় ব্যস্ত ছিলেন; তার চেয়ে বেশি ঘুরেছেন আদালতের বারান্দাতে। রিটার্নিং কর্মকর্তার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণার পর আওয়ামী লীগের প্রার্থী এনামুল হকের বিরুদ্ধে ঋণখেলাপের অভিযোগ তুলে তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিলের জন্য নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আবেদন করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রার্থী সুকৃতি কুমার মণ্ডল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী রণজিৎ কুমার রায়।

টানা চার ধাপে আদালতে আপিলে প্রার্থিতা ফিরে পান বাবুল। তবে স্বজন ও ত্যাগী নেতা হিসেবে পরিচিত হওয়ায় সর্বস্তরের মানুষ তাঁর পক্ষে মাঠে ছিলেন। তাঁর আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য রণজিৎ রায়। রণজিতের অনিয়ম ও নেতা-কর্মীদের অবমূল্যায়নের প্রভাবে বাবুলকে সর্বোচ্চ ভোটে বিজয়ী করবে নেতা-কর্মীরা এমন আভাস মিলেছে। এ ছাড়া প্রার্থী হয়েছেন তৃণমূল বিএনপির লে. ক. (অব.) এম শাব্বির আহমেদ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সুকৃতি কুমার মণ্ডল, ইসলামী ঐক্যজোটের ইউনুস আলী ও জাতীয় পার্টির (জাপা) জহুরুল হক। ইতিমধ্যে বর্তমান নির্বাচন পরিবেশের সমালোচনা করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন সুকৃতি কুমার মণ্ডল। তবে এ আসনে এবার ভোটের মাঠে জায়গা করে নিতে শক্ত লড়াইয়ে রয়েছেন জাপা প্রার্থী জহুরুল হক।

কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে প্রতিমন্ত্রী স্বপন
যশোর-৫ (মনিরামপুর) আসনে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন বর্তমানসহ পরপর দুবারের এমপি ও প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য। এবারও নৌকা নিয়ে ভোটের ময়দানে থাকা এই বর্ষীয়ান নেতা দিন-রাত চষে বেড়িয়েছেন সংসদীয় আসনের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। ভোটারদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, তাঁর সময়ে করা কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা। আহ্বান জানিয়েছেন অসমাপ্ত উন্নয়নকাজ সমাপ্ত করার সুযোগ দিতে। কিন্তু স্বতন্ত্র প্রার্থী কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক উপকমিটির সদস্য ও জেলা কৃষক লীগের সহসভাপতি এস এম ইয়াকুব আলী বড় ফ্যাক্টর।

ঈগল প্রতীকের প্রার্থী ইয়াকুব আলীও কম যাচ্ছেন না। ভোটারদের কাছে তিনি বলছেন, ‘শাসক নয়, সেবক হতে চাই।’ দীর্ঘ সময় নানা সেবামূলক কাজের মাধ্যমে মনিরামপুরের মানুষের কাছে এস এম ইয়াকুব আলী আগে থেকেই পরিচিত। এবারের নির্বাচনের মাধ্যমে তিনি নিজেকে আরও বেশি সক্রিয় পর্যায়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন। এই আসনে জাতীয় পার্টির এম এ হালিম, ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা নুরুল্লাহ আব্বাসি এবং তৃণমূল বিএনপির মেজর বনিকে নিয়ে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে তেমন কোনো আলোচনাই শোনা যায়নি। তারপরও নিজ নিজ দলের সমালোচনা করে শেষ মুহূর্তে নির্বাচনী মাঠ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন জাতীয় পার্টির এম এ হালিম ও তৃণমূল বিএনপির বনি।

কী হবে কেশবপুরে
কেশবপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত যশোর-৬ আসন। এই আসনের বর্তমান এমপি যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার। তিনি এবারও এই আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তাঁকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এইচ এম আমির হোসেন এবং পদত্যাগী জেলা পরিষদের সদস্য আজিজুল ইসলাম। এ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে জি এম হাসান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও তিনি তেমন একটা আলোচনায় নেই। যশোর-৬ আসনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছে শাহীন চাকলাদারের নৌকার সঙ্গে আমির হোসেনের কাঁচি।

এই আসনের সাবেক এমপি ইসমাত আরা সাদেক দলীয় মনোনয়ন পেয়ে এমপি নির্বাচিত হন। পরে তিনি প্রথমে গণশিক্ষা ও পরে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী হয়েছিলেন। ইসমাত আরা সাদেকের মৃত্যুর পর তাঁর কন্যা এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা মনোনয়ন লাভে তৎপর হলেও ভাগ্যের শিকে ছেঁড়ে শাহীন চাকলাদারের। দলীয় নেতা-কর্মীরা এককাট্টা হয়ে গত নির্বাচনে তাঁকে জয়ী করতে মাঠে ছিলেন। এবার তিনি দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় তা সহজে মেনে নিতে পারেনি দলের একটি বড় অংশ। যার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে এইচ এম আমির হোসেন ও আজিজুল ইসলাম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অবতীর্ণ হয়েছেন। তাতে জমে ওঠে যশোর-৬ আসনের নির্বাচন।

স্থানীয় এমপি চাই—এমন স্লোগান নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা মাঠ চষলেও বিচলিত হননি শাহীন চাকলাদার। তিনিও সমানতালে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন জোরালোভাবে। স্থানীয় কর্মী-সমর্থকদের পাশাপাশি তিনি যশোর থেকেও নেতা-কর্মীদের তাঁর নির্বাচনী প্রচারে সক্রিয় করে তুলেছেন। নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে এবার তিনি দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। সব মিলিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা যশোরের চারটি আসনে ভোটের মাঠকে উৎসবমুখর আর প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করে তুলেছেন।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ৮২৫টি ভোটকেন্দ্রে ৫ হাজার ২১৭টি বুথে ২৩ লাখ ৩৯ হাজার ৫৫ জন ভোটার তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১১ লাখ ৭৬ হাজার ১০৫ জন এবং নারী ১১ লাখ ৬২ হাজার ৯৩৫ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার হলেন ১৫ জন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জোটের ভোটেও দলীয় প্রতীক: বিএনপির আপত্তি যে কারণে, এনসিপির উদ্বেগ

বড়াইগ্রামের একটি গুদামে ১৩ টন গুলির খোসা নিয়ে চাঞ্চল্য

মায়ের সঙ্গে ঝগড়ার জেরে বাবার হাতে খুন হলো নিষ্পাপ দুই শিশু

আবারও পুরান ঢাকায় প্রেমিকার বাসার সিঁড়িতে প্রেমিকের লাশ

ফুটবলে নব্বইয়ের দশকের উন্মাদনা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি: আসিফ মাহমুদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কার্তিকের কুয়াশায় কুড়িগ্রামে শীতের আগমনী বার্তা

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
গতকাল সকালে কুড়িগ্রাম শহরের রেলস্টেশন এলাকায় কুয়াশাচ্ছন্ন অবস্থা। ছবি: আজকের পত্রিকা
গতকাল সকালে কুড়িগ্রাম শহরের রেলস্টেশন এলাকায় কুয়াশাচ্ছন্ন অবস্থা। ছবি: আজকের পত্রিকা

কার্তিকের শুরুতেই কুড়িগ্রামে শীতের আগমনী বার্তা পাওয়া যাচ্ছে। পৌষ আসতে এখনো প্রায় দুই মাস বাকি থাকলেও প্রতি রাতে জেলাজুড়ে কুয়াশার স্পষ্ট উপস্থিতি শীতের আগমনকে ত্বরান্বিত করছে। দিনে সূর্যের দাপুটে উপস্থিতি থাকলেও রাতের আবহাওয়া কুয়াশার চাদরের দখলে যেতে শুরু করেছে। জানান দিচ্ছে শীত এল বলে।

কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার জানায়, জেলায় মধ্য অক্টোবর থেকে শীতের আগমনী বার্তা পাওয়া যাচ্ছে। দিন-রাতের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান কমে এসেছে। শনিবার (২৫ অক্টোবর) দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত এক সপ্তাহে জেলায় সর্বনিম্ন গড় তাপমাত্রা ২৩ ডিগ্রি এবং সর্বোচ্চ ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।

জেলার বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ বছর একটু আগেই শীতের আগমন হচ্ছে। সন্ধ্যার পর কুয়াশা পড়ছে। গাছের পাতা, ফসল ও ঘাস কিংবা খোলা আকাশের নিচে থাকা মোটরসাইকেল বা অন্য কোনো বস্তুতে পড়ে থাকা কুয়াশার ফোঁটা জানান দিচ্ছে শীতের আগমন। রাতের বেলা গাছের পাতা গড়িয়ে কুয়াশা ঘরের টিনের চালে পড়ছে টিপটিপ শব্দে। ভোরবেলা কুয়াশাচ্ছন্ন থাকছে চারপাশ। তবে সে তুলনায় শীতানুভূতি নেই। এখনো বৈদ্যুতিক পাখা ছাড়তে হচ্ছে বাসিন্দাদের। যদিও ইতিমধ্যে বাজারে ও সড়কের পাশের দোকানগুলোতে শীতের কাপড়ের পসরা সাজানো শুরু হয়েছে। যেন শীতকে বরণের প্রস্তুতি।

বিকেল হতেই শহরের বিভিন্ন মোড়ে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ভ্রাম্যমাণ দোকান বসিয়ে নানা রকম শীতের পিঠা তৈরি শুরু করেছেন। ভাপা পিঠার সঙ্গে চলছে চিতই পিঠা বিক্রি।

কুড়িগ্রাম শহরের বাসিন্দা মুকুল বলেন, এ বছর একটু আগাম কুয়াশা পড়তে শুরু করেছে। রাতে ঘরের বাইরে শীত অনুভূত হচ্ছে। সড়কে গাড়ি চালালে কুয়াশার কুণ্ডলীর কারণে পথ চলতে সমস্যা হচ্ছে। জেলায় ইতিমধ্যে শীত শুরু হয়েছে। তবে ঠান্ডা তুলনামূলক কম।

কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র নদের চরাঞ্চলে সকালের কুয়াশা। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র নদের চরাঞ্চলে সকালের কুয়াশা। ছবি: আজকের পত্রিকা

উলিপুর উপজেলার ব্রহ্মপুত্রের তীরবর্তী রসুলপুর গ্রামের বাসিন্দা মিজানুর বলেন, ‘রাতে ভালোই কুয়াশা পড়া শুরু হইছে। এখনো সেই অর্থে ঠান্ডা লাগে না। তবে বোঝা যাচ্ছে যে ঠান্ডা শুরু হচ্ছে।’

কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ আল-আমিন মাসুদ বলেন, ‘আজ (শনিবার) সকালে সড়কপথে চলার সময় কুড়িগ্রামের রাজারহাটে কুয়াশার মাত্রা দেখে মনে হয়েছে যেন পৌষ মাস শুরু হয়েছে। তবে দিনে গরম, কিন্তু রাতের তাপমাত্রা কমছে। এ সময় শিশুদের সুরক্ষায় বাড়তি যত্ন নেওয়া উচিত। রাতে বৈদ্যুতিক পাখার গতি কমিয়ে রাখাসহ শিশুদের বাইরে নিয়ে গেলে ধুলাবালু ও ঠান্ডা এড়িয়ে চলতে হবে।’

রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, দিনের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কমছে। ইতিমধ্যে শীত শুরু হয়েছে। মধ্য নভেম্বর থেকে তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে শীতের তীব্রতা বাড়তে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জোটের ভোটেও দলীয় প্রতীক: বিএনপির আপত্তি যে কারণে, এনসিপির উদ্বেগ

বড়াইগ্রামের একটি গুদামে ১৩ টন গুলির খোসা নিয়ে চাঞ্চল্য

মায়ের সঙ্গে ঝগড়ার জেরে বাবার হাতে খুন হলো নিষ্পাপ দুই শিশু

আবারও পুরান ঢাকায় প্রেমিকার বাসার সিঁড়িতে প্রেমিকের লাশ

ফুটবলে নব্বইয়ের দশকের উন্মাদনা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি: আসিফ মাহমুদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

স্কুলভ্যানকে বাঁশবোঝাই ট্রাকের ধাক্কা, দুই শিশু ও ভ্যানচালক নিহত

পাবনা প্রতিনিধি
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১০: ০৬
পাবনায় ট্রাকচাপায় তিনজন নিহত হয়। রোববার সকালে পাবনা সদরের ডাঙ্গাবাড়িয়া এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
পাবনায় ট্রাকচাপায় তিনজন নিহত হয়। রোববার সকালে পাবনা সদরের ডাঙ্গাবাড়িয়া এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎পাবনায় বাঁশবোঝাই ট্রাকের চাপায় দুই স্কুলশিক্ষার্থীসহ তিনজন নিহত হয়েছে। এই ঘটনায় আরও দুজন গুরুতর আহত হয়েছে। ‎রোববার (২৬ অক্টোবর) সকাল ৭টার দিকে পাবনা সদর উপজেলার গয়েশপুর ইউনিয়নের বাঙ্গাবাড়িয়া এলাকায় ঢাকা-পাবনা মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে। ‎নিহত ব্যক্তিরা হলো পাবনা কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী তাসমিয়া আক্তার, পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র আবু তোহা ও ভ্যানের চালক আকরাম হোসেন।

‎মাধপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ‎

‎‎জানা গেছে, সকাল ৭টার দিকে ৮-১০ জন শিক্ষার্থী ভ্যানগাড়িতে করে পাবনার জালালপুর এলাকার ক্যাডেট কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজে যাওয়ার পথে ঢাকা থেকে পাবনাগামী একটি বাঁশবোঝাই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুই ছাত্র-ছাত্রী ও ভ্যানচালক নিহত হয়। এ সময় গুরুতর আহত হয়েছে আরও দুজন পথচারী। স্থানীয় বাসিন্দারা মাধপুর হাইওয়ে থানা-পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ উদ্ধার করে। ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে। মহাসড়কে যান চলাচল সাময়িক বন্ধ রয়েছে।

ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ভ্যানের ড্রাইভারসহ তিনজন নিহত ও চায়ের দোকানে থাকা দুই ব্যক্তি আহত হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ট্রাক জব্দ করা হয়েছে। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।‎

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জোটের ভোটেও দলীয় প্রতীক: বিএনপির আপত্তি যে কারণে, এনসিপির উদ্বেগ

বড়াইগ্রামের একটি গুদামে ১৩ টন গুলির খোসা নিয়ে চাঞ্চল্য

মায়ের সঙ্গে ঝগড়ার জেরে বাবার হাতে খুন হলো নিষ্পাপ দুই শিশু

আবারও পুরান ঢাকায় প্রেমিকার বাসার সিঁড়িতে প্রেমিকের লাশ

ফুটবলে নব্বইয়ের দশকের উন্মাদনা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি: আসিফ মাহমুদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সিরাজদিখানে ১৪৩ দিনে কোরআন মুখস্থ করল ৯ বছরের শিশু আরফান

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
মোহাম্মদ আরফান হোসাইন। ছবি: সংগৃহীত
মোহাম্মদ আরফান হোসাইন। ছবি: সংগৃহীত

অভূতপূর্ব এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার কুচিয়ামোড়া গ্রামের ৯ বছর বয়সী মোহাম্মদ আরফান হোসাইন। মাত্র ১৪৩ দিনে পুরো পবিত্র কোরআন মুখস্থ করে হাফেজ হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে সে। আরফানের এই অসাধারণ সাফল্যে পরিবার, শিক্ষক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আনন্দ ও গর্বের আবহ বিরাজ করছে।

আরফান বর্তমানে ইসলামপুর কামিল কওমি মাদ্রাসার ছাত্র। এর আগে সে কুচিয়ামোড়া দারুন্নাজাত মাদ্রাসায় অধ্যয়ন করেছে। অল্প বয়সে এমন সাফল্য অর্জন করে স্থানীয়ভাবে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

আরফান কেয়াইন ইউনিয়নের কুচিয়ামোড়া গ্রামের বিশিষ্ট আলেম ও শিক্ষক হাফেজ আব্দুল্লাহ আল মাসরুরের (লাভু হুজুর) ছেলে। লাভু হুজুর বর্তমানে কুচিয়ামোড়া দারুন্নাজাত মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ এবং কুচিয়ামোড়া মিত্রপাড়া বাইতুন নূর জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, তিন ভাইবোনের মধ্যে আরফান সবার ছোট। মাত্র ১৪৩ দিনে সম্পূর্ণ কোরআন মুখস্থ করে সে তার পরিবারসহ পুরো এলাকাকে গর্বিত করেছে।

ইসলামপুর কামিল মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক ফখরুদ্দীন রাজি বলেন, ‘আরফান আমাদের মাদ্রাসার গর্ব। ১৪৩ দিনে কোরআন মুখস্থ করা আমাদের মাদ্রাসার ইতিহাসে এই প্রথম। এটি এক বিরল দৃষ্টান্ত। সবাই তার জন্য দোয়া করবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জোটের ভোটেও দলীয় প্রতীক: বিএনপির আপত্তি যে কারণে, এনসিপির উদ্বেগ

বড়াইগ্রামের একটি গুদামে ১৩ টন গুলির খোসা নিয়ে চাঞ্চল্য

মায়ের সঙ্গে ঝগড়ার জেরে বাবার হাতে খুন হলো নিষ্পাপ দুই শিশু

আবারও পুরান ঢাকায় প্রেমিকার বাসার সিঁড়িতে প্রেমিকের লাশ

ফুটবলে নব্বইয়ের দশকের উন্মাদনা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি: আসিফ মাহমুদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জাবিতে ঘাসকাটা যন্ত্রের ব্লেড ঢুকে গেল যুবকের মাথায়

জাবি প্রতিনিধি 
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১০: ০৮
হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে আহত যুবককে। ছবি: আজকের পত্রিকা
হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে আহত যুবককে। ছবি: আজকের পত্রিকা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ঘাস কাটার যন্ত্র (মেশিন) ভেঙে ব্লেড ছিটকে মাথায় ঢুকে সুমন মিয়া (২৬) নামের এক যুবক গুরুতর আহত হয়েছেন। তিনি সাতক্ষীরা জেলার বাসিন্দা এবং জাবি স্পোর্টস ক্লাব আয়োজিত তিন দিনব্যাপী নাইট ফুটবল টুর্নামেন্ট উপলক্ষে বরাদ্দ স্টলে কাঁকড়া ফ্রাই বিক্রি করতেন।

শনিবার (২৫ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। ঘটনার পরপরই তাঁকে প্রথমে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও সংশ্লিষ্ট একাধিক পক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২৩ অক্টোবর থেকে জাবি স্পোর্টস ক্লাবের ব্যবস্থাপনায় তিন দিনব্যাপী নাইট ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু হয়। শনিবার ছিল খেলার শেষ দিন। টুর্নামেন্টে ক্লাবের সভাপতি আরশাদ হাবিব বিশালের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া এক বন্ধু একটি স্টল বরাদ্দ নেন, যেখানে সুমন মিয়া ও জাবির এক হোটেল কর্মচারী কাজ করতেন।

এদিকে বিশালের অনুরোধে অনানুষ্ঠানিকভাবে মাঠ প্রস্তুতের কাজ করতেন শারীরিক শিক্ষা অফিসের কর্মচারী আবুল হোসেন। গতকাল শেষ দিন উপলক্ষে ক্যাম্পাসে এসে মাঠ প্রস্তুতের কাজ শেষে হাতে সময় থাকায় মেশিন দিয়ে ঘাস কাটা শুরু করেন তিনি। ঘাস কাটার সময় মেশিনের ব্লেড মাটিতে থাকা একটি ইটে লেগে ভেঙে যায়। ব্লেডের সেই অংশ ছিটকে গিয়ে পাশের স্টলে দাঁড়িয়ে থাকা সুমন মিয়ার মাথায় ঢোকে।

সুমন মিয়ার পাশের স্টলে পিঠার দোকান ছিল নাদিয়া মীম নামের সিটি ইউনিভার্সিটির সাবেক এক শিক্ষার্থীর। নাদিয়া বলেন, সুমন স্টলে দাঁড়ানো অবস্থায় ব্লেড ছিটকে এসে লাগার সঙ্গে সঙ্গে ঢলে পড়ে যান। প্রথমে ভয়ে কেউ তাকে উঠায়নি। পরে বিশাল এসে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য মোটরসাইকেলে উঠিয়ে দেন।

কর্মচারী আবুল হোসেন বলেন, ‘হাতে একটু সময় থাকায় ঘাস কাটছিলাম। মেশিনে ইট লেগে এত বড় দুর্ঘটনা ঘটবে, এটা ভাবতে পারছি না।’

শারীরিক শিক্ষা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক নাসরিন বেগম বলেন, ‘আজ ছুটির দিন থাকায় আমি অফিসে ছিলাম না। আমাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারীরাও ছুটিতে ছিল। তবে জাবি স্পোর্টস ক্লাবের নাইট ফুটবল টুর্নামেন্ট চলমান থাকায় তিনি সেখানে ছিলেন। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আমরা দ্রুত আহত ব্যক্তিকে এনাম মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাই। পরে সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। রাত ১টার দিকে তার অপারেশন শুরু হয়।’

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আহত সুমনের মাথায় অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে। তবে তিনি আশঙ্কামুক্ত নন। ৭২ ঘণ্টা অবজারভেশনে থাকবেন তিনি। নিবিড় পরিচর্যার পরামর্শ থাকলেও এখন পর্যন্ত তার ব্যবস্থা হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জোটের ভোটেও দলীয় প্রতীক: বিএনপির আপত্তি যে কারণে, এনসিপির উদ্বেগ

বড়াইগ্রামের একটি গুদামে ১৩ টন গুলির খোসা নিয়ে চাঞ্চল্য

মায়ের সঙ্গে ঝগড়ার জেরে বাবার হাতে খুন হলো নিষ্পাপ দুই শিশু

আবারও পুরান ঢাকায় প্রেমিকার বাসার সিঁড়িতে প্রেমিকের লাশ

ফুটবলে নব্বইয়ের দশকের উন্মাদনা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি: আসিফ মাহমুদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত