Ajker Patrika

শিশু ধর্ষণের বিচারে সালিস বৈঠক, ‘চড়-থাপ্পড়ে’ মীমাংসা

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
শিশু ধর্ষণের বিচারে সালিস বৈঠক, ‘চড়-থাপ্পড়ে’ মীমাংসা

কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার একটি গ্রামে এক বৃদ্ধের বিরুদ্ধে পাঁচ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার বিচার করতে সালিস বৈঠক করেন গ্রামের মাতুব্বরেরা। সালিস বৈঠকে ওই বৃদ্ধকে চড়-থাপ্পড় মেরে অভিযোগের মীমাংসা করা হয়েছে বলে ভুক্তভোগী পরিবারটি জানিয়েছে। এদিকে গ্রাম্য মাতুব্বরেরা বলছেন, এ ঘটনায় আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হলেও ভুক্তভোগী পরিবারটি তা এড়িয়ে গেছে।

আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ২৫০ শয্যার কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ওই শিশু খেলা করছে। তার পাশে বাবা-মা বসে আছেন। এ সময় মায়ের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘ঘটনার দিন সকাল ৯টার দিকে আমি আমার মাকে বাড়িতে এগিয়ে দিতে গিয়েছিলাম। এই সুযোগে বিশা নামে সম্পর্কে এক প্রতিবেশী দাদা মেয়েকে তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায়। এর কিছুক্ষণ পরে মেয়েকে ওই বাড়ি থেকে খোঁড়াতে খোঁড়াতে আসতে দেখে সন্দেহ হয়। এ সময় কী হয়েছে জিজ্ঞাসা করলে সে বলে, বিশা দাদা আমার সঙ্গে খারাপ কাজ করেছে। বিষয়টি গ্রামের মুরুব্বিদের জানালে তারা পরদিন (বৃহস্পতিবার, ১২ জুন) রাতে বাড়ির ওপর সালিস বসায়। সালিসে বিপাকে চড়-থাপ্পড় দিয়ে মাতুব্বরেরা বলে যে সালিস শেষ। এর পরদিন (শুক্রবার, ১৩ জুন) মেয়ে পেটের ব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করি।’

মামলা করতে কেউ বাঁধে দিয়েছে কি না, জানতে চাইলে শিশুটির মা প্রসঙ্গ এড়িয়ে বলেন, ‘মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে থানায় যাইনি। মেম্বর ও সমাজপ্রধান বলেছে, আগে চিকিৎসা নিয়ে আসো। তারপর মামলা করতে সব ধরনের সহযোগিতা করব। আমিও মামলা করব।’

সালিস বৈঠকে উপস্থিত থাকা ইউপি সদস্য মতিউর রহমান লিওন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘটনাটি জানার পর ভুক্তভোগী পরিবারকে মামলা করতে বলেছিলাম। তারা যায়নি। তবে সালিসে চড়-থাপ্পড় মেরে মীমাংসা করেছিলেন অভিযুক্ত ব্যক্তির ভাই-ভাতিজারা। আমি শুধু উপস্থিত ছিলাম।’

এ ঘটনায় স্থানীয় সমাজপ্রধান রহিম মণ্ডল আজকের পত্রিকাকে বলেন, সামাজিকভাবে আমরা একটা মীমাংসার চেষ্টা করেছিলাম। সেখানে অভিযুক্তকে চর-থাপ্পড় মারা হয়েছিল। ধর্ষণের মতো ঘটনার বিচার সালিস করে সমাধান করতে পারেন কি না, জানতে চাইলে রহিম মণ্ডল বলেন, ‘আমি তাদের মামলাও করতে বলেছিলাম। কিন্তু তারা তা করেনি। আমি সব সময় শিশুটির খবর রাখছি।’

জানা গেছে, বেশ কয়েক বছর আগে স্ত্রী মারা যাওয়ার পর সন্তানদের সঙ্গে একই বাড়িতে থাকেন বিশা। শিশু ধর্ষণের অভিযোগ জানাজানির পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন তিনি। শিশু ধর্ষণ অভিযোগের ব্যাপারে তার পরিবারের কেউ কথা বলতে রাজি হননি।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) হোসেন ইমাম বলেন, শিশুটিকে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। পাটিকাবাড়ী ক্যাম্প পুলিশের ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) নুরনবী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ওসি স্যারের নির্দেশে শিশুটিকে হাসপাতালে দেখে এসেছি। চিকিৎসা শেষে পরিবারকে থানায় আসতে বলা হয়েছে। এরপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মেয়াদের মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয় চালুর পরিকল্পনা সরকারের

ঐকমত্য কমিশনের মঙ্গলবারের সংলাপ ‘বয়কট’ করল জামায়াত

বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধে আইন পরিবর্তন করায় জাতিসংঘের উদ্বেগ

নারীর সঙ্গে এনসিপি নেতা তুষারের কথোপকথন ফাঁস নিয়ে যা বললেন সহযোদ্ধা ইমি

ইরানের পরমাণু স্থাপনা ধ্বংস করা সম্ভব নয়, স্বীকার করল ইসরায়েল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত