Ajker Patrika

মনিরামপুর-নওয়াপাড়া সড়ক: বড় বড় গর্তে ভোগান্তি

মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি
মনিরামপুর-নওয়াপাড়া সড়কের ভাঙা অংশ যেন মৃত্যুকূপ। ছবি: আজকের পত্রিকা
মনিরামপুর-নওয়াপাড়া সড়কের ভাঙা অংশ যেন মৃত্যুকূপ। ছবি: আজকের পত্রিকা

যশোরের মনিরামপুরের ব্যস্ততম সড়কগুলোর অন্যতম মনিরামপুর-নওয়াপাড়া সড়ক। শিল্পনগরী নওয়াপাড়ার সঙ্গে বেনাপোল স্থলবন্দরে যোগাযোগের সংক্ষিপ্ত পথ এটি। নওয়াপাড়া থেকে মনিরামপুর হয়ে বেনাপোলসহ পশ্চিমাঞ্চলে স্বল্প সময়ে পণ্য সরবরাহে এই পথ ব্যবহার করছিলেন ব্যবসায়ীরা। ফলে একদিকে যেমন তাঁদের খরচ বাঁচত, অন্যদিকে স্বল্প সময়ে পণ্য হাতে পেতেন ব্যবসায়ীরা।

এই সড়কের হোগলাডাঙ্গা থেকে হাজিরহাট ব্রিজ পর্যন্ত তিন কিলোমিটার রাস্তার বিভিন্ন অংশে অন্তত ১৫টি ভাঙন রয়েছে। এসব স্থানে রাস্তা ভেঙে কয়েক ফুট দেবে যাওয়ায় সড়কটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। চার বছর ধরে সড়ক বেহাল থাকলেও তা সংস্কারে নেওয়া হয়নি কোনো উদ্যোগ। ফলে সড়কের এই ভাঙা অংশ এখন মানুষের কাছে মূর্তিমান আতঙ্ক।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মনিরামপুর-নওয়াপাড়া সংযোগ পাকা সড়কের হোগলাডাঙ্গা ঋষিপাড়া থেকে শুরু করে হাজিরহাট ব্রিজের সামনের কিছু অংশ পর্যন্ত তিন কিলোমিটার রাস্তায় ১৫টি অংশে ভেঙে কয়েক ফুট দেবে গেছে। এ ছাড়া সড়কের অভয়নগর উপজেলার অংশেও কয়েকটি ভাঙন দেখা গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, রাস্তা যখন ভালো ছিল, তখন রাতদিন পণ্যবোঝাই ছোট-বড় ট্রাকের শব্দ কানে আসত। রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় এখন সাইকেল, মোটরসাইকেল, ইজিবাইক আর টেকার (যাত্রীবাহী ৪ চাকার ছোট যান) বেশি চোখে পড়ে। রাস্তার ভাঙন এত ভয়ংকর যে চার চাকার গাড়ি পার হতে দেখলে মনে হয় যেকোনো সময় উল্টে পড়বে। 

২০২১ সালের শেষের দিকে আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে হোগলাডাঙ্গা থেকে হাজিরহাট পর্যন্ত ৩ দশমিক ২ কিলোমিটার রাস্তার সংস্কারে কাজ করেন শাহারুল ইসলাম নামের যশোরের এক ঠিকাদার। ওই সময় ঠিকাদারের লোকজন নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে রাস্তা সংস্কার করলেও ঠিকাদার আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা হওয়ায় ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়নি। ফলে রাস্তার কাজ শেষে চলাচল শুরু হতেই রাস্তা দেবে গেছে।

মনিরামপুর-নওয়াপাড়া সড়কের ভাঙা অংশ যেন মৃত্যুকূপ। ছবি: আজকের পত্রিকা
মনিরামপুর-নওয়াপাড়া সড়কের ভাঙা অংশ যেন মৃত্যুকূপ। ছবি: আজকের পত্রিকা

এই সড়কের দুই পাশে ছোট-বড় অনেক জলাশয় রয়েছে। ২০২১ সালে রাস্তা সংস্কারের সময় জলাশয়গুলোর পাশের অংশে প্যালাসাইডিং না করে ওই জলাশয় খুঁড়ে রাস্তার পাড় বাঁধা হয়েছিল। ফলে রাস্তা চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করার ৮-১০ দিনের মধ্যে দেবে গিয়ে কার্পেটিংয়ে ফাটল ধরে। এরপর মাস না পার হতেই রাস্তা কার্পেটিংসহ নিচে দেবে গিয়ে গর্ত সৃষ্টি হয়। তখন উপজেলা প্রকৌশল দপ্তর রাস্তার ভাঙা অংশ পুনরায় সংস্কার না করে ইটের সলিং বসিয়ে দেয়, যা ধীরে ধীরে ভেঙে দেবে গিয়ে মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে। সেই থেকে ঝুঁকি নিয়ে ওই রাস্তায় চলাচল করছে পথচারীরা।

পথচারী রাসেল পারভেজ বলেন, ‘প্রায়ই এই সড়কে নওয়াপাড়া আসা-যাওয়া করি। মোটরসাইকেলে চড়লে তেমন সমস্যা হয় না। কিন্তু ইজিবাইক বা টেকারে উঠলে ভাঙা অংশ পারাপারের সময় মনে হয় গাড়ি উল্টে পড়বে। তখন আতঙ্কে থাকতে হয়।’

মনিরামপুর উপজেলা প্রকৌশলী দপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী খালেকুজ্জামান বলেন, মনিরামপুর-নোয়াপাড়া সড়কের হোগলাডাঙ্গা থেকে হাজিরহাট ব্রিজের সামনের কিছু অংশ পর্যন্ত তিন কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারের জন্য ইতিমধ্যে ২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরের দিকে সংস্কারকাজ শুরু হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত