Ajker Patrika

নৌকার বিপক্ষে ভোট করতে রাজি না হওয়ায় আ. লীগ নেতাকে প্রাণনাশের হুমকি

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
নৌকার বিপক্ষে ভোট করতে রাজি না হওয়ায় আ. লীগ নেতাকে প্রাণনাশের হুমকি

নৌকার বিপক্ষে ভোট করতে অর্থের প্রলোভন ও এতে রাজি না হওয়ায় প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ঝিনাইদহ-১ আসনের (শৈলকুপা) স্বতন্ত্র প্রার্থী নজরুল ইসলাম দুলাল ও তাঁর স্ত্রী অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী মুনিয়া আফরিনের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় আজ সোমবার বিকেলে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন শৈলকুপা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলার হাকিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শিকদার ওয়াহিদুজ্জামান ইকু। 

অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিকুল ইসলাম চৌধুরী। 

অভিযোগপত্রে ওয়াহিদুজ্জামান ইকু লিখেছেন, ‘ঝিনাইদহ-১ আসনের ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী নজরুল ইসলাম দুলাল ও ফুলকপির প্রার্থী (দুলালের স্ত্রী) মুনিয়া আফরিন আমাকে নৌকার বিপক্ষে ভোট করার জন্য প্রস্তাব দেন। আমি তাতে রাজি না হলে তাঁরা আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের গুজব ছড়াতে থাকেন। এমনকি তাঁরা বিভিন্ন লোক মারফত বলে বেড়ান যে কোটি কোটি টাকা দিয়ে ইকু শিকদারকে কিনে নেব।’ 

অভিযোগপত্রে ওয়াহিদুজ্জামান ইকু আরও লেখেন, ‘মুনিয়া আফরিন নিজে ও তাঁর অনুসারীদের দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। সম্প্রতি ট্রাক প্রতীকের প্রার্থী নজরুল ইসলাম দুলাল আমার ব্যবহৃত হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে কল করে তাঁর পক্ষে কাজ করার জন্য মোটা অঙ্কের টাকা প্রস্তাব দেন। এতে আমি রাজি হয়নি। এরপর তাঁর স্ত্রী মুনিয়া আফরিন পরপর দুদিন আমার শৈলকুপার খালধার পাড়ার বাড়িতে এসে আমাকে না পেয়ে আমার স্ত্রীকে (মেহেরিন শিকদার) ঘুষের প্রস্তাব দেন। এরপর আমার স্ত্রীকে বলে তোমার স্বামীকে ট্রাকে ভোট করতে হবে। এ জন্য কত টাকা দেওয়া লাগবে। এরপর মুনিয়া আফরিন তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে আমার স্ত্রীর কাছে কল করে বলে শেষ বারের মতো সময় দিলাম, তোমার স্বামীকে ট্রাক প্রতীকের পক্ষে ভোট করার জন্য। তা না হলে বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যাবে তোমার স্বামীর। 

ওয়াহিদুজ্জামান ইকু অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, ‘মুনিয়া আফরিন সরাসরি আমার বাসায় প্রবেশ করে স্ত্রী ও আমার অনুপস্থিতিতে ভাতিজা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাওন শিকদারকে বলে, “তুমি তোমার চাচাকে শেষবারের মতো বোঝাও। ট্রাক প্রতীকে ভোট করুক। যত টাকা লাগে আমি দেব। ” এরপর থেকেই তাঁরা দুজন বিভিন্ন জায়গা বলে বেড়াচ্ছেন “ও যখন আমার কথা শুনল না, তো ওই টাকা দিয়েই সন্ত্রাসী ভাড়া করে ওকে শেষ করে দেব। ” এরপর থেকেই আমি ও আমার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’ 

এ বিষয়ে শিকদার ওয়াহিদুজ্জামান ইকু বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগ করি, শেখ হাসিনার দলে কাজ করি। আমি নৌকার বিপক্ষে ভোট করতে পারব না। কিন্তু তাঁদের অর্থের প্রস্তাবে রাজি না হওয়াতেই আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন।’ 

এ বিষয়ে শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিকুল ইসলাম চৌধূরী বলেন, ‘থানায় শিকদার ওয়াহিদুজ্জামান ইকু একটি অভিযোগ দিয়েছেন। শঙ্কা থাকলে একজন জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে অভিযোগ দিতে পারেন। এ বিষয়ে তদন্ত করে সত্যতার ভিত্তিতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

অভিযোগের বিষয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী মুনিয়া আফরিন বলেন, ‘আমি ইকুর বাসায় গিয়েছিলাম ১০ দিন আগে। তবে এটা কোনো অফার করতে না। তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক ভালো, আর যে কারণে সেখানে যাওয়া। আমি বলেছি তাঁকে ট্রাকে ভোট দিতে, কিন্তু কোনো অফার করিনি। একটা জায়গা থেকে আমি সেখানে গিয়ে ভোট চাইতেই পারি।’ 

ট্রাক প্রতীকের প্রার্থী নজরুল ইসলাম দুলাল বলেন, ‘আমি কোনো হুমকি দিইনি। আমাকে হেয় করার জন্য বলছে।’ 

বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ-১ আসনের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য আব্দুল হাই বলেন, ‘নৌকার ভোট ব্যাংক হাকিমপুর ইউনিয়ন, অধিকাংশই আমার সমর্থক। এই ভোট নষ্ট করতে তাঁরা শিকদার ওয়াহিদুজ্জামন ইকুকে হুমকি–ধামকি দিচ্ছে। আমি অবশ্যই এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

নতুন মেট্রো নয়, রুট বাড়ানোর চিন্তা

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত