Ajker Patrika

খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলা

নির্বিচারে পাহাড় নিধন, মুখ খুললেই ‘ফ্যাসিস্ট’ তকমা

  • পাহাড় থেকে কেটে নেওয়া মাটি দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে বিভিন্ন এলাকার পুকুর ও নিচু জমি।
  • পাহাড় কাটা বন্ধ না হলে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে পাহাড় ধসে প্রাণহানির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
  • জড়িতদের বিষয়ে প্রশাসন ওয়াকিবহাল থাকলেও ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
পানছড়ি (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি  নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
পাহাড়ের ওপর স্থানীয়দের বসতবাড়ি। সেই পাহাড়ের পাদদেশ থেকে অবাধে মাটি কেটে অন্যত্র নেওয়া হচ্ছে ট্রাক্টরে করে। এতে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে পাহাড় ধসে প্রাণহানির আশঙ্কা করা হচ্ছে। ছবিটি সম্প্রতি খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার আইয়ুবনগর এলাকা থেকে তোলা। আজকের পত্রিকা
পাহাড়ের ওপর স্থানীয়দের বসতবাড়ি। সেই পাহাড়ের পাদদেশ থেকে অবাধে মাটি কেটে অন্যত্র নেওয়া হচ্ছে ট্রাক্টরে করে। এতে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে পাহাড় ধসে প্রাণহানির আশঙ্কা করা হচ্ছে। ছবিটি সম্প্রতি খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার আইয়ুবনগর এলাকা থেকে তোলা। আজকের পত্রিকা

পার্বত্য খাগড়াছড়ির সীমান্তবর্তী পানছড়ির বিভিন্ন এলাকায় নির্বিচারে কাটা হচ্ছে পাহাড়। এতে ধ্বংস হচ্ছে জীববৈচিত্র্য। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি চক্র এই পাহাড় কাটায় জড়িত বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

পাহাড় থেকে কেটে নেওয়া মাটি দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে বিভিন্ন এলাকার পুকুর ও নিচু জমি। পাহাড় ধ্বংসে জড়িতদের বিষয়ে প্রশাসন ওয়াকিবহাল থাকলেও ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। আবার জড়িতদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুললেই তাঁকে ‘ফ্যাসিস্ট তকমা’ দিয়ে উল্টো মামলা দেওয়ার ভয়ভীতি দেখানো হয়। এদিকে নির্বিচারে পাহাড় কাটা বন্ধ না হলে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে পাহাড় ধসে প্রাণহানির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পানছড়ি উপজেলার দমদম, নাপিতাপাড়া, আইয়ুবনগর ও সুপারিবাগান এলাকায় নির্বিচারে পাহাড় কাটা হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে এলাকাগুলো পাহাড়শূন্য হতে খুব বেশি সময় লাগবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে মামলা-হামলার ভয়ে পাহাড় কাটায় জড়িতদের নাম বলতে চাননি স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে পানছড়ি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান চন্দ্র দেব চাকমা বলেন, জীববৈচিত্র্য রক্ষা এবং ভবিষ্যৎ প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে পরিবেশ রক্ষায় পাহাড় ও প্রাকৃতিক বনভূমির প্রয়োজন অপরিসীম। নির্বিচারে পাহাড় কাটার ফলে জীববৈচিত্র্য নানাভাবে হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। খাগড়াছড়ির প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অংশ পাহাড়-পর্বত। কিন্তু বর্তমানে পার্বত্য অঞ্চলের অধিকাংশ পাহাড় কেটে চলছে সমতল করার কাজ। এভাবে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে অতিবৃষ্টি, খরা ও ভূমিধসের মতো নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বেশ কয়েকজন বাসিন্দা জানান, হাসিনা সরকারের পতনের পর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পাঁচটি পেলোডার ও এক্সকাভেটর (মাটি কাটার যন্ত্র) দিয়ে পাহাড় কাটার প্রতিযোগিতায় নেমেছে কয়েকটি প্রভাবশালী চক্র। কেউ দিনদুপুরে এক্সকাভেটর দিয়ে পাহাড়ের মাটি কেটে পুকুর ও নিচু জমি ভরাটে ব্যস্ত। কেউবা আবার রাতের আঁধারে কাটছে পাহাড়। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে কয়েক দফায় অবগত করা হলেও কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি; বরং যাঁরা অবগত করেছেন, তাঁদেরই উল্টো ফ্যাসিস্ট তকমা দিয়ে মামলা-হামলার ভয় দেখানো হচ্ছে।

অন্যদিকে ১৩ এপ্রিল রাত ৯টার দিকে উপজেলার দমদম গ্রামের তেঁতুলটিলা এলাকায় সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালায়। এ সময় পাহাড় কাটার কাজে ব্যবহৃত একটি পেলোডার ও তিনটি ট্রাক্টর জব্দ করা হয়। তবে অভিযানের পরদিন সকাল থেকে আবারও একই স্থানে পাহাড় কাটা শুরু করে জড়িত ব্যক্তিরা।

স্থানীয়রা বলছেন, পাহাড় কাটা দেখেও যেখানে প্রশাসন কিছুই করে না, সেখানে প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে কথা বলে নিরীহ জনগণ কেন বিপদে পড়বে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সংবাদকর্মী বলেন, ‘পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে বলা হয়েছে, সরকারি বা আধা সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন, দখলাধীন বা ব্যক্তিমালিকানাধীন পাহাড় ও টিলা কাটা যাবে না। পাহাড় কাটা চলছে—এমন তথ্যসহ ঠিকানা, ছবি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দিয়েছি। সেই ঊর্ধ্বতন প্রশাসনিক কর্মকর্তা শুধু বললেন, “সংশ্লিষ্টদের ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলছি।” পরক্ষণেই আমাকে প্রভাবশালীরা নানা হুমকি-ধমকি দেওয়া শুরু করেন।’

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, পাহাড় কাটা বন্ধ না হলে বর্ষা মৌসুমে পাহাড় ও মাটি ধসে প্রাণহানির ঘটনা ঘটবে। নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে বন্যায় ফসল ও জানমালের ক্ষতি হবে। প্রকৃতি ও পরিবেশের সুরক্ষায় এবং মানবিক বিপর্যয় রোধে প্রভাবশালীদের কবল থেকে পাহাড় রক্ষায় প্রশাসনের জোর নজরদারির পাশাপাশি আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

অবৈধভাবে পাহাড় কাটা বিষয়ে জানতে চাইলে পানছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারহানা নাসরিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পার্বত্য এলাকার সব স্থানে আমার যাওয়া সম্ভব হয় না। এ ছাড়া আমি মাত্র দু-তিন মাস হলো এখানে এসেছি। পরবর্তী সময়ে কোথাও পাহাড় কাটার খবর পেলে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

‎২৮ বছরে সাড়ে ১২ লাখ ব্যাগ রক্ত সরবরাহ করেছে বাঁধন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আজ শুক্রবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে কেক কেটে ও বেলুন উড়িয়ে বাঁধনের ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্‌যাপন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ শুক্রবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে কেক কেটে ও বেলুন উড়িয়ে বাঁধনের ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্‌যাপন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজভিত্তিক দেশের সবচেয়ে বড় স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের সংগঠন ‘বাঁধন’ গত ২৮ বছরে ১২ লাখ ৩৫ হাজার ব্যাগ রক্ত বিনা মূল্যে সরবরাহ করেছে। এ ছাড়া বিনা মূল্যে ২৬ লাখ ৩ হাজার ৯৪৭ জন মানুষকে রক্তের গ্রুপ জানিয়ে দিয়েছে। বর্তমানে দেশের ৬১টি জেলার ৯২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিচালিত হচ্ছে বাঁধন। ‎

আজ শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এসব তথ্য জানায় সংগঠনটি।

আজ বিকেলে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে কেক কেটে ও বেলুন উড়িয়ে উদ্‌যাপন করা হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় র‍্যালি করেন সংগঠনটির কর্মীরা। এতে অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমেদসহ বাঁধনের উপদেষ্টা ও বিভিন্ন স্তরের কর্মীরা।

সংগঠনটির এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্রতিপাদ্য ‘আটাশের আহ্বান, নিঃস্বার্থ হোক রক্তদান’।

র‍্যালি শুরুর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমেদ বলেন, বাঁধন দীর্ঘ ২৮ বছর পারি দিয়েছে। এই ২৮ বছর ধরে সংগঠনটি স্বেচ্ছায় মানবতার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। বাঁধন মানবতার কাজে আরও এগিয়ে আসুক।

‎বাঁধন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মীর আসাদুজ্জামান রিন্টু বলেন, ‘গত ২৮ বছরে আমরা যদিও প্রায় সাড়ে ১২ লাখ ব্যাগ রক্ত বিনা মূল্যে সরবরাহ করেছি, কিন্তু আমাদের সংগঠনের সবচেয়ে বড় অবদান বলতে পারি—রক্তদানে মানুষের মানসিকতা পরিবর্তন করা। দেশের উচ্চশিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তরুণদের এবং রক্তদানে সক্ষম সুস্থ মানুষকে রক্তদানে উদ্বুদ্ধ ও সচেতন করতে পেরেছি। তাই এখন প্রতিবছর দেশে হাজার হাজার মানুষ স্বেচ্ছায় রক্তদান করছে।’

‎‎বাঁধনের ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শুভেচ্ছা জানান সংগঠনটির কেন্দ্রীয় পরিষদের সভাপতি এস এম কামরুজ্জামান কাফি ও সাধারণ সম্পাদক আহমেদ রেযা জুনাইদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাঁধন কেন্দ্রীয় পরিষদের উপদেষ্টারা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাঁধন কর্মীসহ বিভিন্ন ইউনিটের কর্মীরা।

‎১৯৯৭ সালের ২৪ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ্ হল থেকে যাত্রা শুরু করে স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের সংগঠন বাঁধন। স্বেচ্ছায় রক্তদানে উদ্বুদ্ধকরণ, স্বেচ্ছায় রক্তদান, অন্যান্য সেবা ও সচেতনমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সুস্থ সমাজ বিনির্মাণে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে কাজ করছে বাঁধন।

এর পাশাপাশি গত বছর বন্যায় ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, শেরপুর, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, চাঁদপুরসহ সাতক্ষীরা এলাকায় ৭ হাজার ৫০০টির বেশি পরিবারের মধ্যে ত্রাণ সহযোগিতা করেছে সংগঠনটি। এ ছাড়া চলতি বছর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ‘কুইক রেসপন্স টিম’ গঠন করে রক্তদান করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শহীদ আবু সাঈদ কনভেনশন সেন্টারে এনসিপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ১

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
শাহবাগে এনসিপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ। ছবি: সংগৃহীত
শাহবাগে এনসিপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ঢাকা মহানগর ও ঢাকা জেলার সমন্বয় সভায় দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে শহীদ আবু সাঈদ কনভেনশন সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে। এতে একজন আহত হয়েছেন।

প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, অতীতের আর্থিক লেনদেন-সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে বংশাল ও মোহাম্মদপুর থানার নেতা-কর্মীদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কনভেনশন সেন্টারের তৃতীয় তলায় এনসিপি ঢাকা মহানগর ও ঢাকা জেলার সমন্বয় সভা চলছিল। ওই সময় দ্বিতীয় তলায় এনসিপির মোহাম্মদপুর ও বংশাল থানার নেতা-কর্মীরা বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। পরে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। এতে বংশাল থানার কর্মী মোহাম্মদ ইউসুফ আহত হন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত আজকের পত্রিকাকে জানান, দুটি থানার কয়েকজনের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। তাদের থামাতে গিয়েছিল অনেকে। পরে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে।

আর্থিক বিরোধকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষ কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেটা আমি নিশ্চিত না।’

এনসিপির ঢাকা মহানগরীর নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কয়েক মাস আগে বংশাল থানার কয়েকজন নেতার মোহাম্মদপুরের একটি কোম্পানির সঙ্গে আর্থিক লেনদেন নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। বিষয়টি ঢাকা মহানগর উত্তরের শোয়েব নামে এক নেতাকে জানানো হলে তিনি মোহাম্মদপুর থানার রিয়ান নামে এক নেতাকে বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দেন।

অভিযোগ রয়েছে, রিয়ান বংশালের নেতাদের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা নেন। এর পর থেকে রিয়ানের কাছে টাকা ফেরত চাইতে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন বংশালের নেতারা। আজ কনভেনশন হলে রিয়ানের মুখোমুখি হন বংশালের নেতারা। এরপর দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও সংঘর্ষ হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অষ্টগ্রামে খেলার সময় বিলে পড়ে ৩ শিশুর মৃত্যু, পরিবারে শোকের ছায়া

অষ্টগ্রাম (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে বাড়ি সামনে খেলা করার সময় বিলের পানিতে পড়ে তিন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে উপজেলা দেওঘর ইউনিয়নের পশ্চিম আলীনগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

মৃত শিশুরা হলেন দেওঘর ইউনিয়নের পশ্চিম আলীনগর গ্রামের মাইন্না বাড়ির আবুল কালামের ছেলে মিশকাত (৫), মাসুক মিয়ার ছেলে মাহিন (৬) ও সাত্তার মিয়ার ছেলে তানিল মিয়া (৫)।

স্থানীয়রা জানান, আজ বিকেলে আলীনগর পশ্চিমপাড়া মাইন্না বাড়ির তানিল, মাহিন ও মিশকাত—তিন শিশু মিলে বাড়ির সামনে খেলা করছিল। হঠাৎ সবার অজান্তে তিন শিশু পানিতে পড়ে ডুবে যায়।

দীর্ঘ সময় শিশুদের দেখতে না পেয়ে স্বজনেরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। পরে বাড়িসংলগ্ন উত্তর দিকের বিলের পানিতে খোঁজতে গিয়ে মিশকাত ও মাহিনকে উদ্ধার করা হয়। পরে অষ্টগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে খবর পেয়ে অষ্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে অপর শিশু তানিলের মরদেহ উদ্ধার করে।

এ বিষয়ে মাহিনের চাচা মোবারক হোসেন বলেন, প্রতিদিনের মতো তিন শিশু খেলাধুলা করছিল। কিন্তু, কখন যে বিলের পানিতে ডুবে গেল কেউ বোঝেনি। পরে তাদের দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি করে পানিতে প্রথমে দুজন, পরে অন্য জনকে পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে দেওঘর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আক্তার হোসেন বলেন, ‘দুঃখজনক খবর। একই বাড়ির তিনটা শিশুর মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গুলশান থেকে ঋণ জালিয়াতির মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
গ্রেপ্তার আসাদুল ইসলাম আসাদ (৫০)। ছবি: এটিইউ
গ্রেপ্তার আসাদুল ইসলাম আসাদ (৫০)। ছবি: এটিইউ

রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক থেকে ৯ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে তা পরিশোধ না করা ও একাধিক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত এক পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)। গতকাল বৃহস্পতিবার গুলশান-১ এলাকার একটি কফিশপে অভিযান চালিয়ে আসাদুল ইসলাম আসাদ (৫০) নামের ওই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার আসাদ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার মছলন্দপুর গ্রামের মৃত মো. ইব্রাহিম মোল্যার ছেলে।

এটিইউর মিডিয়া অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস উইংয়ের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আসামি আসাদ ২০০৮ সাল থেকে ব্যবসায়িক প্রয়োজন দেখিয়ে সোনালী ব্যাংক থেকে ৯ কোটি টাকা ঋণ নেন। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে ঋণ পরিশোধ না করায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ অর্থঋণ আদালতে মামলা করে। ওই মামলায় আদালত তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

এর আগে তিনি ২০২২ সালে এক ব্যক্তির কাছ থেকে শিল্পকারখানার পণ্য সরবরাহের কথা বলে ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা নেন। কিন্তু পণ্য সরবরাহ না করে অর্থও ফেরত না দেওয়ায় ওই ব্যক্তি মামলা করেন। ওই মামলায় আদালত চলতি বছরের ২ জুলাই আসামিকে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে এক মাসের কারাদণ্ড দেন।

এ ছাড়া আরও একটি মামলায় তাঁকে আদালত এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৪৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেন।

রায় ঘোষণার পর থেকে আসাদ ঢাকার বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে ছিলেন। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানার অনুরোধে এটিইউর একটি দল গতকাল তাঁকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর আসামিকে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে সোনারগাঁ থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত