অশান্ত পাহাড়
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের প্রতিবাদে অবরোধ এবং ১৪৪ ধারার মধ্যে খাগড়াছড়ির গুইমারায় গতকাল রোববার হামলায় তিনজন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া ১৩ সেনাসদস্য, সাংবাদিকসহ অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। এ সময় আগুন দেওয়া হয়েছে একটি বাজারের দোকানপাটে। এ ঘটনার জন্য ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) ও এর অঙ্গসংগঠনগুলো দায়ী বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী।
খাগড়াছড়ি জেলা সিভিল সার্জন মো. সাবের জানান, গুইমারা থেকে তিনজন পুরুষের মরদেহ এনে জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। সোমবার (আজ) সকালে ময়নাতদন্ত করা হবে। এ ছাড়া গুইমারা থেকে আহত অবস্থায় চারজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
খাগড়াছড়ির ঘটনার বিষয়ে গতকাল বিবৃতি দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিবৃতিতে বলা হয়, গুইমারা উপজেলায় দুষ্কৃতকারীদের হামলায় পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর তিনজন নিহত হয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেজরসহ ১৩ জন সদস্য, গুইমারা থানার ওসি, তিনজন পুলিশ সদস্যসহ অনেকে আহত হয়েছেন।
বিবৃতিতে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে, এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে শিগগির তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোনো অপরাধীকেই ছাড় দেওয়া হবে না। ততক্ষণ পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধৈর্য ধারণ করে শান্ত থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
অবরোধ বাড়ল, পর্যটন বন্ধ
গতকাল রাতে এক বিবৃতিতে ৮ দফা দাবি জানিয়েছে জুম্ম ছাত্র-জনতা। তারা ঘোষণা দিয়েছে, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অবরোধের আওতা বাড়িয়ে তিন পার্বত্য জেলায় করা হয়েছে এবং সেটা চলবে অনির্দিষ্টকালের জন্য। এ সময় সব পর্যটন কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
জুম্ম ছাত্র-জনতার ৮ দফা দাবির মধ্যে আছে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার ও বিচার; আন্দোলনের সময় হামলার ঘটনার তদন্ত ও বিচার; আটক করা সব জুম্ম ছাত্র-জনতাকে অবিলম্বে ও নিঃশর্ত মুক্তি।
গুইমারায় হামলা-আগুন
গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জেলা সদরের সিঙ্গিনালা এলাকায় অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রী প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফেরার পথে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয় বলে অভিযোগ ওঠে। ওই দিন রাত ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় একটি খেত থেকে তাকে উদ্ধার করেন স্বজনেরা। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁকে ছয় দিনের রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) গতকাল রাতে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, শনিবার খাগড়াছড়ি পৌরসভায় দাঙ্গা সৃষ্টির অপচেষ্টা করা হলে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সারা রাত ধৈর্য ও সংযমের সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দাঙ্গা বাধাতে ব্যর্থ হলে ইউপিডিএফ ও তাদের অঙ্গসংগঠন রোববার সকাল থেকে গুইমারা উপজেলার রামসু বাজার এলাকায় ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে সাধারণ মানুষকে উসকে দিয়ে রাস্তা অবরোধ করে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ইউপিডিএফ কর্মীরা স্থানীয় বাঙালি জনগোষ্ঠীর সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ায় লিপ্ত হয়।
এ সময় সেনাবাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গেলে তাঁদের ওপর দেশীয় অস্ত্র, ইটপাটকেল, গুলতি ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালানো হয়। এতে তিনজন অফিসারসহ ১০ জন সেনাসদস্য আহত হন। একই সময়ে রামগড় এলাকায় বিজিবির গাড়ি ভাঙচুর করা হয় এবং কয়েকজন বিজিবি সদস্য আহত হন।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, সংঘর্ষ চলাকালে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রামসু বাজারের পশ্চিমের একটি উঁচু পাহাড় থেকে ইউপিডিএফ (মূল) সশস্ত্র দলের সদস্যরা ৪-৫ দফা অটোমেটিক অস্ত্র ব্যবহার করে আনুমানিক ১০০-১৫০টি গুলি ছোড়ে। এতে পাহাড়ি ও বাঙালি সাধারণ মানুষসহ সেনাসদস্যরা গুলিবিদ্ধ হন। পরে সেনাবাহিনীর টহল দল দ্রুত সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের ধাওয়া দেয়। সেনাবাহিনীর তৎপরতায় সশস্ত্র দলটি এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়।
স্থানীয়রা জানান, অবরোধকারীরা সকালে উপজেলার খাদ্যগুদামের সামনে জড়ো হয়ে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। এ সময় দোকানপাটে অগ্নিসংযোগও করা হয়। খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘটনাস্থলে গেলে উত্তেজিত বিক্ষোভকারীরা তাদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সশস্ত্র হামলা করে। এ সময় গুলিতে নিহত হন তিনজন। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের পরিচয় জানা যায়নি।
স্থানীয় লোকজন বলেছেন, সেনাবাহিনীর ওপর প্রথমে অতর্কিত হামলা হয়। এতে কয়েকজন সেনাসদস্য ও স্থানীয় অনেকজন আহত হন। পরবর্তী সময়ে স্থানীয়রা অবরোধকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুললে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সেনাবাহিনীর সিন্দুকছড়ি জোনের উপ-অধিনায়ক মেজর মো. মাজহার হোসেন রাব্বানী বলেন, ‘১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে অবরোধকারীরা সড়কে বিক্ষোভ ও দোকানপাটে অগ্নিসংযোগ করে। আমরা পরিস্থিতি শান্ত করতে গেলে তারা সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে আমাদের লক্ষ্য করে হামলা চালায়। এতে আমিসহ আমাদের ১১ জন সেনাসদস্য আহত হয়েছেন।’
মেজর মাজহার আরও বলেন, ‘অবরোধকারীরা প্রথমে সংখ্যায় ২০-২৫ জন ছিল। সেনাসদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী পেছন দিক থেকে কয়েক শ লোক এসে আমাদের ওপর সশস্ত্র হামলা করে।’
সংঘর্ষে হামলার শিকার হন দায়িত্ব পালনরত সাংবাদিকেরাও। বিজয় টিভির জেলা প্রতিনিধি এম সাইফুর রহমান গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
গুইমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনামুল হক চৌধুরী গতকাল রাতে জানান, পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গেও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি এখনো উত্তপ্ত, বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
গুইমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আইরিন আক্তার বলেন, পরিস্থিতি থমথমে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে।
খাগড়াছড়ি সদরেও গতকাল অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এর মধ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ও জানমালের নিরাপত্তায় খাগড়াছড়ি পৌর শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে মোতায়েন ছিল সেনাবাহিনী ও পুলিশের পাশাপাশি এপিবিএন। এ ছাড়া খাগড়াছড়িতে জেলা সদরে মোতায়েন করা হয় সাত প্লাটুন বিজিবি। তবে সকাল থেকে জেলা সদরে কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
সকাল থেকে বিভিন্ন পয়েন্টে চলাচলকারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। বন্ধ ছিল শহরের দোকানপাট। গত রাতে সাজেকে আটকা পড়া দুই হাজারের বেশি পর্যটককে সেনা নিরাপত্তায় গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হয়।
জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার বলেন, পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা বহাল থাকবে এবং স্থিতিশীল পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সব পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখা হয়েছে।
আইএসপিআরের বিবৃতিতে জানানো হয়, ২০২৪ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়িতে মোটরসাইকেলচালক মামুন হত্যাকে কেন্দ্র করে ইউপিডিএফ ও এর অঙ্গসংগঠনগুলো দীঘিনালা ও রাঙামাটিতে সাম্প্রদায়িক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা করে এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। বিবৃতিতে বলা হয়, ওই ঘটনার এক বছর পূর্তিতে ইউপিডিএফ এবং এর সহযোগীরা চলতি বছর পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ মিছিল আয়োজন করে এবং অনুরূপ ঘটনার পুনরাবৃত্তি করার চেষ্টা চালায়।
কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের প্রতিবাদে অবরোধ এবং ১৪৪ ধারার মধ্যে খাগড়াছড়ির গুইমারায় গতকাল রোববার হামলায় তিনজন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া ১৩ সেনাসদস্য, সাংবাদিকসহ অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। এ সময় আগুন দেওয়া হয়েছে একটি বাজারের দোকানপাটে। এ ঘটনার জন্য ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) ও এর অঙ্গসংগঠনগুলো দায়ী বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী।
খাগড়াছড়ি জেলা সিভিল সার্জন মো. সাবের জানান, গুইমারা থেকে তিনজন পুরুষের মরদেহ এনে জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। সোমবার (আজ) সকালে ময়নাতদন্ত করা হবে। এ ছাড়া গুইমারা থেকে আহত অবস্থায় চারজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
খাগড়াছড়ির ঘটনার বিষয়ে গতকাল বিবৃতি দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিবৃতিতে বলা হয়, গুইমারা উপজেলায় দুষ্কৃতকারীদের হামলায় পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর তিনজন নিহত হয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেজরসহ ১৩ জন সদস্য, গুইমারা থানার ওসি, তিনজন পুলিশ সদস্যসহ অনেকে আহত হয়েছেন।
বিবৃতিতে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে, এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে শিগগির তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোনো অপরাধীকেই ছাড় দেওয়া হবে না। ততক্ষণ পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধৈর্য ধারণ করে শান্ত থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
অবরোধ বাড়ল, পর্যটন বন্ধ
গতকাল রাতে এক বিবৃতিতে ৮ দফা দাবি জানিয়েছে জুম্ম ছাত্র-জনতা। তারা ঘোষণা দিয়েছে, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অবরোধের আওতা বাড়িয়ে তিন পার্বত্য জেলায় করা হয়েছে এবং সেটা চলবে অনির্দিষ্টকালের জন্য। এ সময় সব পর্যটন কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
জুম্ম ছাত্র-জনতার ৮ দফা দাবির মধ্যে আছে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার ও বিচার; আন্দোলনের সময় হামলার ঘটনার তদন্ত ও বিচার; আটক করা সব জুম্ম ছাত্র-জনতাকে অবিলম্বে ও নিঃশর্ত মুক্তি।
গুইমারায় হামলা-আগুন
গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জেলা সদরের সিঙ্গিনালা এলাকায় অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রী প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফেরার পথে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয় বলে অভিযোগ ওঠে। ওই দিন রাত ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় একটি খেত থেকে তাকে উদ্ধার করেন স্বজনেরা। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁকে ছয় দিনের রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) গতকাল রাতে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, শনিবার খাগড়াছড়ি পৌরসভায় দাঙ্গা সৃষ্টির অপচেষ্টা করা হলে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সারা রাত ধৈর্য ও সংযমের সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দাঙ্গা বাধাতে ব্যর্থ হলে ইউপিডিএফ ও তাদের অঙ্গসংগঠন রোববার সকাল থেকে গুইমারা উপজেলার রামসু বাজার এলাকায় ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে সাধারণ মানুষকে উসকে দিয়ে রাস্তা অবরোধ করে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ইউপিডিএফ কর্মীরা স্থানীয় বাঙালি জনগোষ্ঠীর সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ায় লিপ্ত হয়।
এ সময় সেনাবাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গেলে তাঁদের ওপর দেশীয় অস্ত্র, ইটপাটকেল, গুলতি ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালানো হয়। এতে তিনজন অফিসারসহ ১০ জন সেনাসদস্য আহত হন। একই সময়ে রামগড় এলাকায় বিজিবির গাড়ি ভাঙচুর করা হয় এবং কয়েকজন বিজিবি সদস্য আহত হন।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, সংঘর্ষ চলাকালে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রামসু বাজারের পশ্চিমের একটি উঁচু পাহাড় থেকে ইউপিডিএফ (মূল) সশস্ত্র দলের সদস্যরা ৪-৫ দফা অটোমেটিক অস্ত্র ব্যবহার করে আনুমানিক ১০০-১৫০টি গুলি ছোড়ে। এতে পাহাড়ি ও বাঙালি সাধারণ মানুষসহ সেনাসদস্যরা গুলিবিদ্ধ হন। পরে সেনাবাহিনীর টহল দল দ্রুত সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের ধাওয়া দেয়। সেনাবাহিনীর তৎপরতায় সশস্ত্র দলটি এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়।
স্থানীয়রা জানান, অবরোধকারীরা সকালে উপজেলার খাদ্যগুদামের সামনে জড়ো হয়ে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। এ সময় দোকানপাটে অগ্নিসংযোগও করা হয়। খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘটনাস্থলে গেলে উত্তেজিত বিক্ষোভকারীরা তাদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সশস্ত্র হামলা করে। এ সময় গুলিতে নিহত হন তিনজন। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের পরিচয় জানা যায়নি।
স্থানীয় লোকজন বলেছেন, সেনাবাহিনীর ওপর প্রথমে অতর্কিত হামলা হয়। এতে কয়েকজন সেনাসদস্য ও স্থানীয় অনেকজন আহত হন। পরবর্তী সময়ে স্থানীয়রা অবরোধকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুললে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সেনাবাহিনীর সিন্দুকছড়ি জোনের উপ-অধিনায়ক মেজর মো. মাজহার হোসেন রাব্বানী বলেন, ‘১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে অবরোধকারীরা সড়কে বিক্ষোভ ও দোকানপাটে অগ্নিসংযোগ করে। আমরা পরিস্থিতি শান্ত করতে গেলে তারা সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে আমাদের লক্ষ্য করে হামলা চালায়। এতে আমিসহ আমাদের ১১ জন সেনাসদস্য আহত হয়েছেন।’
মেজর মাজহার আরও বলেন, ‘অবরোধকারীরা প্রথমে সংখ্যায় ২০-২৫ জন ছিল। সেনাসদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী পেছন দিক থেকে কয়েক শ লোক এসে আমাদের ওপর সশস্ত্র হামলা করে।’
সংঘর্ষে হামলার শিকার হন দায়িত্ব পালনরত সাংবাদিকেরাও। বিজয় টিভির জেলা প্রতিনিধি এম সাইফুর রহমান গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
গুইমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনামুল হক চৌধুরী গতকাল রাতে জানান, পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গেও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি এখনো উত্তপ্ত, বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
গুইমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আইরিন আক্তার বলেন, পরিস্থিতি থমথমে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে।
খাগড়াছড়ি সদরেও গতকাল অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এর মধ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ও জানমালের নিরাপত্তায় খাগড়াছড়ি পৌর শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে মোতায়েন ছিল সেনাবাহিনী ও পুলিশের পাশাপাশি এপিবিএন। এ ছাড়া খাগড়াছড়িতে জেলা সদরে মোতায়েন করা হয় সাত প্লাটুন বিজিবি। তবে সকাল থেকে জেলা সদরে কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
সকাল থেকে বিভিন্ন পয়েন্টে চলাচলকারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। বন্ধ ছিল শহরের দোকানপাট। গত রাতে সাজেকে আটকা পড়া দুই হাজারের বেশি পর্যটককে সেনা নিরাপত্তায় গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হয়।
জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার বলেন, পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা বহাল থাকবে এবং স্থিতিশীল পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সব পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখা হয়েছে।
আইএসপিআরের বিবৃতিতে জানানো হয়, ২০২৪ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়িতে মোটরসাইকেলচালক মামুন হত্যাকে কেন্দ্র করে ইউপিডিএফ ও এর অঙ্গসংগঠনগুলো দীঘিনালা ও রাঙামাটিতে সাম্প্রদায়িক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা করে এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। বিবৃতিতে বলা হয়, ওই ঘটনার এক বছর পূর্তিতে ইউপিডিএফ এবং এর সহযোগীরা চলতি বছর পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ মিছিল আয়োজন করে এবং অনুরূপ ঘটনার পুনরাবৃত্তি করার চেষ্টা চালায়।
ফরিদপুরের সালথায় দুটি মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে ইব্রাহিম হুসাইন (৪৭) নামের এক স্কুলশিক্ষক নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় দুই শিক্ষার্থীসহ আহত হয়েছে আরও চারজন। তাদের মধ্যে দুজনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
৫ মিনিট আগেটিকটকে পরিচয়ের সূত্রে বিয়ের প্রলোভনে কিশোরীকে ডেকে নেন যুবক। এরপর মাদকের আখড়ায় আটকে রেখে তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। রাঙামাটি শহরের বাস টার্মিনাল সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
১ ঘণ্টা আগেপাবনার ঈশ্বরদীতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে কর্মরত আনোয়ার আহমেদ (৫২) নামের এক দোভাষীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (১৮ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার দিয়ার সাহাপুর গ্রামের একটি ভাড়া বাসা থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
১ ঘণ্টা আগেকুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া ও বুড়িচং উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রায় ২ কোটি ৫৪ লাখ টাকা মূল্যের ভারতীয় অবৈধ পণ্য জব্দ করেছে সুলতানপুর ব্যাটালিয়ন (৬০ বিজিবি)। রোববার (১৯ অক্টোবর) সকালে বিজিবির বিশেষ অভিযানে বিপুল পরিমাণ এই চোরাই পণ্য জব্দ করা হয়।
১ ঘণ্টা আগে