Ajker Patrika

খাগড়াছড়িতে সহিংসতা: ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি, অবরোধ ও ১৪৪ ধারা অব্যাহত

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি 
গুইমারায় সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত রামসু বাজার এলাকা পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক। ছবি: আজকের পত্রিকা
গুইমারায় সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত রামসু বাজার এলাকা পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক। ছবি: আজকের পত্রিকা

জুম্ম ছাত্র-জনতার ডাকা অবরোধ তুলে নিলে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার। একই সঙ্গে গুইমারার রামসু বাজারে সহিংসতার ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করার কথা জানান তিনি।

আজ মঙ্গলবার গুইমারায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনের সময় জেলা প্রশাসক এসব কথা জানান। এ সময় তাঁর কাছে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন।

তাঁদের পাশে থাকার অঙ্গীকার করে জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার বলেন, ‘আজকে আমরা এখানে এসেছি ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সমবেদনা জানানোর জন্য। আমরা তাদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। তাদের পুনর্বাসন করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। যারা চিকিৎসাধীন রয়েছে, আমরা তাদের চিকিৎসার দায়িত্ব নেব। যারা নিহত হয়েছে, তাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলব।’

আইনশৃঙ্খলা প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আমাদের আলাপ হয়েছে। তারা আমাদের ১৪৪ ধারা প্রত্যাহারের অনুরোধ করেছে। আমরা বলেছি, তারা অবরোধ প্রত্যাহার করলে আমরাও ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করব।’

জেলা পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল বলেন, গুইমারায় সহিংসতায় যাঁরা হতাহত হয়েছেন, তাঁদের পরিবারকে মামলা করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। তারা না করলে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করবে।

খাগড়াছড়ির পরিস্থিতি

আজ চতুর্থ দিনের মতো খাগড়াছড়িতে জুম্ম ছাত্র-জনতার ডাকা অনির্দিষ্টকালের সড়ক অবরোধ অব্যাহত রয়েছে। খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম ও খাগড়াছড়ি-ঢাকা সড়কে অবরোধ শিথিল করা হলেও দূরপাল্লার বাস চলাচল করতে দেখা যায়নি।

অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোতেও অল্পসংখ্যক ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল করছে। প্রয়োজন ছাড়া মানুষ বাইরে বের হচ্ছে না। প্রশাসনের জারি করা ১৪৪ ধারাও বহাল রয়েছে জেলার সদর ও গুইমারা উপজেলায়। পরিস্থিতি এখনো থমথমে।

শহরের শাপলা চত্বর ও চেঙ্গী স্কয়ার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, শহরে ঢুকতে বা বের হতে মুখোমুখি হতে হচ্ছে তল্লাশির। মোড়ে মোড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন রয়েছেন। একাধিক ব্যক্তিকে একসঙ্গে দেখলেই তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে যেতে দেওয়া হচ্ছে। ওষুধের ফার্মেসি ছাড়া অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ রয়েছে।

এ বিষয়ে খাগড়াছড়ি সদর জোন কমান্ডার লে. কর্নেল মো. খাদেমুল ইসলাম বলেন, শহরে বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঝুঁকিমুক্ত। ১৪৪ ধারা কার্যক্রমে সেনাবাহিনী তৎপর রয়েছে। এই শহরে অপ্রীতিকর ঘটনার সম্ভাবনা আপাতত নেই। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি বিজিবি, পুলিশ ও এপিবিএন সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।

সদর সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মো. আব্দুল মোত্তাকিম বলেন, ৯ প্লাটুন বিজিবি খাগড়াছড়ি শহরে দিনে ও রাতে সার্বক্ষণিক ঢহল পরিচালনা করছে। এ ছাড়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য আরও দুই প্লাটুন স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছে। খাগড়াছড়ি পৌরসভা, সদর উপজেলা ও গুইমারা উপজেলায় এখনো ১৪৪ ধারা বহাল রয়েছে।

পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল বলেন, জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল রয়েছে। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। যারা অবরোধ দিয়েছে, সেটা প্রত্যাহার করলে আমরাও ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করব।’

জেলা প্রশাসক বলেন, ‘অবরোধকারীদের সঙ্গে আমাদের একটা বৈঠক হয়েছে। তাদের যে আট দফা রয়েছে, এর মধ্যে আমরা সাতটা অ্যাড্রেস করেছি। আমরা চাই, আলোচনার টেবিলে যেন বিষয়টির সমাধান হয়।’

খাগড়াছড়ি রিজিয়নের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান মাহমুদ বলেছেন, খাগড়াছড়ির ধর্ষণের ঘটনাকে পুঁজি করে পাহাড়কে অশান্ত করার পরিকল্পনা করেছে ইউপিডিএফ। শহরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের পর গুইমারায় গিয়ে সংঘর্ষ ও গুলির ঘটনায় তিনজন নিহতের ঘটনা ঘটে। এর জন্য দায়ী ইউপিডিএফ।

হাসান মাহমুদ আরও বলেন, সামনে দেশে জাতীয় নির্বাচন রয়েছে। এগুলো বানচালের জন্য ইউপিডিএফ এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছে।

এর আগে গত রোববার গুইমারায় সহিংসতায় নিহত তিন পাহাড়ির মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল সোমবার রাতে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। রাতেই তাঁদের দাহক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে বলে জানান গুইমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক চৌধুরী।

এ ছাড়া গতকাল পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমার উপস্থিতিতে জুম্ম ছাত্র-জনতার প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রশাসনের বৈঠক হলেও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে বৈঠকে জুম্ম ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে আট দফা দাবি তুলে ধরা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পানিতে ডুবে প্রাণ গেল মামা-ভাগনের

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে পুকুরে ডুবে শাহবাব মন্ডল (আড়াই বছর) ও আবু তোহা মন্ডল (৩) নামের দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের যাদুরচর নতুন গ্রাম এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

শাহবাব মন্ডল উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের ধনারচর নতুন গ্রামের শাহজাহান মন্ডলের ছেলে এবং আবু তোহা মন্ডল একই গ্রা‌মের আবু তালেবের ছেলে। এই দুই শিশু সম্পর্কে মামা-ভাগনে।

পরিবারের বরাত দিয়ে যাদুরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সরবেশ আলী জানান, বুধবার সকালে ওই দুই শিশু তালেব মন্ডলের বাড়িতে খেলা করছিল। এ সময় সবার অজান্তে তারা বাড়ির পা‌শে পুকুরের পানিতে পড়ে যায়। স্বজনেরা পুকুর থে‌কে দুই শিশু‌কে উদ্ধার করে হাসপাতালে নি‌য়ে যান। দা‌য়িত্বরত চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।

খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক একই এলাকার বাসিন্দা ও কুড়িগ্রাম-৪ আসনের বিএনপির মনোনীত সংসদ সদস‌্য প্রার্থী আজিজুর রহমান ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তি‌নি শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।

রৌমারী থানার উপপ‌রিদর্শক শাহ‌নেওয়াজ হো‌সেন ব‌লেন, খবর পে‌য়ে ঘটনাস্থ‌লে পু‌লিশ পাঠা‌নো হ‌য়ে‌ছে। সহকারী ক‌মিশনার (ভূ‌মি) ঘটনাস্থ‌লে গি‌য়ে‌ছেন। দুই শিশুর মৃত‌্যুর ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনি ব‌্যবস্থা নেওয়া হ‌বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ৫৭
নিহত লায়লা আফরোজ ও নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ। ছবি: সংগৃহীত
নিহত লায়লা আফরোজ ও নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ। ছবি: সংগৃহীত

‎রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যার ঘটনায় গৃহকর্মী আয়েশাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার দুপুরে ঝালকাঠি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

‎গ্রেপ্তারের বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন তেজগাঁও বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন।

‎মামুন বলেন, গৃহকর্মী আয়েশাকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঝালকাঠি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গত সোমবার সকালে শাহজাহান রোডের ১৪ তলা একটি আবাসিক ভবনের সপ্তম তলায় লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তাঁর মেয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে (১৫) ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।

মা-মেয়ে হত্যায় অভিযুক্ত গৃহকর্মী আয়েশা। ছবি: আজকের পত্রিকা
মা-মেয়ে হত্যায় অভিযুক্ত গৃহকর্মী আয়েশা। ছবি: আজকের পত্রিকা

গতকাল তাঁদের মরদেহ নাটোরে দাফন করা হয়েছে। মামলার এজাহারে বাসা থেকে মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাসহ মূল্যবান জিনিস খোয়া যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।

ভবনের ভেতরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, হত্যাকাণ্ডের পর এক নারী স্কুলড্রেস পরে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। চার দিন আগে আয়েশা পরিচয় দিয়ে ওই বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেওয়া তরুণী (২০) এই জোড়া খুনে জড়িত বলে সন্দেহ স্বজনদের। ঘটনার পর থেকে ওই তরুণী পলাতক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি 
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে মজিরুলের নেতৃত্বে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে মজিরুলের নেতৃত্বে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

জীবন আছে যার, তার মৃত্যু অনিবার্য। মৃত্যুর পর মানুষের শেষ ঠিকানা কবর। মৃতদেহ গোসল করিয়ে কাফন পরানো হয়, জানাজা শেষে তাকে শায়িত করা হয় চিরনিদ্রার ঘরে। এই কবর খোঁড়ার দায়িত্বটি গ্রামের কিছু মানুষ বহু বছর ধরে স্বেচ্ছায়, বিনা পারিশ্রমিকে পালন করে আসছেন, যাঁরা সবার কাছে ‘গোরখোদক’ নামে পরিচিত। আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় তাঁরা করে থাকেন এই কাজ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গোরখোদকেরা কোনো পারিশ্রমিক নেন না। গ্রামের যে কেউ মারা যাক, নিজেদের ব্যস্ততা ফেলে তাঁরা ছুটে আসেন কবর খুঁড়তে। তাঁদের এই মানবিক কাজের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে গ্রামের লোকেরা দোয়া করেন—আল্লাহ যেন তাদের সুস্থ ও ভালো রাখেন।

দেবীপুর গ্রামের বাসিন্দা গোরখোদক মজিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ৫৫ বছর ধরে কবর খুঁড়ছি। যত দিন সুস্থ থাকব, এই কাজ চালিয়ে যাব। আমাদের গ্রাম ছাড়াও অন্য গ্রাম থেকে কেউ ডাকলে সেখানেও যাই। ছোটবেলায় ওস্তাদের কাছে ডালি ধরেই শিখেছি। গরিব মানুষ, মাঠে কাজ করি; কিন্তু কেউ মারা গেলে দ্বিধা করি না—এই কাজ আমার নেশায় পরিণত হয়েছে।’

মজিরুল আরও জানান, এখন তিনি তরুণদেরও এই কাজ শেখাচ্ছেন।

গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

গোরখোদক শাকের আলী বলেন, ‘আমরা নিঃস্বার্থভাবে কাজ করি। কখনো কোনো টাকা নিই না। যেখানেই থাকি, গ্রামের কারও মৃত্যুর সংবাদ শুনলে দ্রুত কবর খুঁড়তে চলে আসি।’

গোরখোদক ফুয়াদ হোসেন বলেন, ‘অন্য গ্রাম থেকে ডাক এলেও আমরা যাই। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই করি এই কাজ। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’

স্থানীয় বাসিন্দা শাজাহান আলী বলেন, ‘কবর খোঁড়া বড় দায়িত্বের কাজ। গ্রামের এসব মানুষ খবর পেলেই দৌড়ে আসে। আমরা তাদের জন্য দোয়া করি।’

মাওলানা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘মৃত ব্যক্তির জন্য কবর খোঁড়া নিঃসন্দেহে সওয়াবের কাজ। হাদিসে এসেছে—যাঁরা কবর খোঁড়েন, আল্লাহ তাদের জন্য জান্নাতে ঘর নির্মাণ করবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে কারখানার ফটকের সামনে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকেরা। আন্দোলনের মুখে কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রধান ফটক তালাবদ্ধ করে সটকে পড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে শিল্প ও থানা-পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসেছেন। আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের সাইটালিয়া গ্রামে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানায় এই ঘটনা ঘটে।

কারখানার নারী শ্রমিক মিনারা আক্তার বলেন, ‘অক্টোবর ও নভেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করে নাই। এক মাসের বেতন না পেলে আমাদের চলা খুবই কঠিন হয়। আমাদের নাওয়া-খাওয়া বন্ধ হয়। আর সেখানে কারখানা কর্তৃপক্ষ দুই মাসের বেতনভাতা বকেয়া রেখেছে। আজ সকালে শ্রমিকেরা জড়ো হলে তারা পালিয়ে যায়।’

মিন্টু নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘এই কারখানায় আমরা তিন বছর ধরে চাকরি করছি। আমাদের বেতনের বাইরে কোনো সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে না। তবু পেটের দায়ে চাকরি করি। দুই মাসের বেতন বকেয়া। আমাদের তো পেট আছে, সন্তান-সংসার আছে। এক মাস দোকান বাকি পরিশোধ করতে না পারলে পরের মাসে আর দোকানি বাকি দেয় না। আমরা কী অবস্থায় আছি, একবার ভাবুন। বেতন পরিশোধ না করে তারা পালিয়ে গেছে।’

আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

মেহেদী হাসান বলেন, ‘এত দিন ধরে ঋণ করে বলে-কয়ে দোকান থেকে বাকি নিয়ে চলছি। আর পারছি না। এখন দোকান বাকি দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। অক্টোবর মাসের বকেয়া বেতন নিয়ে কমপক্ষে ১০টি তারিখ দিছে। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ বেতন পরিশোধ করেনি। শেষে আজ বেতন পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু তারা কারখানা ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে গেছে।’

কারখানার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. বুলবুল হাসান বলেন, ‘ব্যাংকের সমস্যার কারণে বেতন-ভাতা পরিশোধ করা যাচ্ছে না। আশা করি, আজকের মধ্যে নভেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করতে পারব।’ বিনা নোটিশে কারখানার ফটক কেন তালাবদ্ধ? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমি বলতে পারব না।’

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাছির আহমদ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত