Ajker Patrika

মধ্যরাতে ফোন করে জানানো হয় স্বামীকে মেরে ফেলা হয়েছে: সংবাদ সম্মেলনে গৃহবধূ

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০২৩, ২২: ১৫
মধ্যরাতে ফোন করে জানানো হয় স্বামীকে মেরে ফেলা হয়েছে: সংবাদ সম্মেলনে গৃহবধূ

‘রাত আড়াইটায় হঠাৎ মোবাইলে ফোন করে এক ব্যক্তি বলেন, আপনার স্বামী রিপন মেম্বারকে হত্যা করা হয়েছে! রাস্তার পাশে পড়ে আছে, এসে নিয়ে যান। তখন গিয়ে দেখি রিপন রক্তাক্ত অবস্থায় কাতরাচ্ছে। সেখান থেকে তাকে সদর হাসপাতালে নিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি, সকালেই মারা যায় সে।’ 

দুই শিশু সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথাগুলো বলছিলেন নিহত হাবিবুর রহমান রিপনের স্ত্রী তানিয়া খাতুন। 

নিহত হাবিবুর রহমান রিপন ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার আবাইপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ছিলেন। তাঁর বাড়ি উপজেলার মীন গ্রামে। তাঁর স্ত্রী তানিয়া খাতুন উপজেলার মীন গ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। 

আজ মঙ্গলবার দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নজরুল ইসলাম দুলালের বিরুদ্ধে এই হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ তুলে ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে শৈলকুপা উপজেলা আওয়ামী লীগ। সেখানে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহত হাবিবুর রহমান রিপনের স্ত্রী তানিয়া খাতুন। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিয়ার রহমান, সাধারণ সম্পাদক হাকিম আহমেদ, নিহতের বাবা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদসহ অন্যরা। 

হাবিবুর রহমান রিপনতিন মাসের শিশু সন্তানকে কোলে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তানিয়া খাতুন বলেন, ‘আমাদের পরিবার স্বাধীনতার আগে থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। বর্তমানে আমার শ্বশুর আবুল কালাম আজাদ আবাইপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। ছয় ভাইয়ের মধ্যে আমার স্বামী আমার শ্বশুরের সঙ্গে বাড়ির জমি দেখাশোনা করতেন।’ 

তিনি বলেন, ‘প্রকৃত আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের ঘায়েল করতে কিছু বিএনপি ও নব্য আওয়ামী লীগ নেতারা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন। শুনেছি একসময় বিএনপি করলেও বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি পদ পেয়েছেন বিশ্বাস বিল্ডার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নজরুল ইসলাম দুলাল। পদ পাওয়ার পর অন্যদের সঙ্গে নিয়ে উপজেলায় তাঁর অবস্থান শক্ত করতে প্রকৃত আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন। আমার স্বামী হাবিবুর রহমান রিপনকে তাঁরা পিটিয়ে হত্যা করেন।’ 
 
তানিয়া খাতুন আরও বলেন, ‘মৃত্যুর দুই থেকে তিন মাস আগে তাঁরা বিভিন্ন সময় রিপনকে হত্যার হুমকিও দিয়েছেন। মৃত্যুর কিছুদিন আগে একটি দাওয়াত খেয়ে বাড়ি ফেরার পথে মীন গ্রাম বাজারে তাঁকে আক্রমণও করেন তারা। তখন প্রাণে বেঁচে গেলেও এবার বাঁচতে পারেনি আমার স্বামী। মামলার পর কিছু আসামি জামিন পেয়ে ঢাকা নিউমার্কেট এলাকায় নজরুল ইসলাম দুলালের বাসায় বৈঠক করেন। আমরা জানতে পারি, পরিকল্পিতভাবেই তাঁকে হত্যার নির্দেশে ছিল নজরুল ইসলাম দুলাল ও তাঁর ভাই আবাইপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন বিশ্বাস। এই পরিকল্পনা তাঁদের বাড়িতেই হয়েছিল।’ 

লিখিত বক্তব্যে নিহতের স্ত্রী বলেন, ‘ঘটনার পর সুজন নামের এক ব্যক্তি ফোন করে বলে, রিপন মেম্বারকে মেরে ফেলা হয়েছে, এসে নিয়ে যান। জামিন পাওয়া আসামিরা এখন আমাদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। এ বিষয়ে থানায় একটি অভিযোগও দেওয়া হয়েছে।’ 

রিপনের স্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে তাঁর স্বামী হত্যার নির্দেশদাতাসহ অন্যদের সঠিক বিচার দাবি করে বলেন, ‘৩ মাসের শিশু তাবিব আহনাফ ও ৫ বছরের শিশু আবিদ আহনাফ, তারা এখনো জানে না তাদের বাবা আর কখনো ফিরে আসবে না। এখন বড় ছেলে বলে বাবা কোথায় গেছে মা? কিন্তু তার প্রশ্নের কোনো উত্তর দিতে পারি না। বর্তমানে আমার দুই শিশু সন্তান খুবই অসহায়ের মতো দিন যাপন করছে।’ 

অভিযোগের বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নজরুল ইসলাম দুলাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রিপন ঘটনাস্থলে মরেছিল নাকি হাসপাতালে আনার পথে যারা সঙ্গে ছিল তারা মেরেছে, এটা নিয়ে সন্দেহ আছে আমার। সামনে নির্বাচন, আমি মনোনয়নপ্রত্যাশী, এখন এমন নানা ষড়যন্ত্র হতেই থাকবে। তবে রিপন হত্যায় জড়িতরা শাস্তি পাক এটা আমি নিজেও চাই।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘এলাকার মানুষ বিভিন্ন সময় আমার কাছে আসে, আমি সহযোগিতা করি। তারা জামিনে মুক্ত হয়ে অফিসে এসেছে এটা দোষের কিছু না। তারা তো দোষী প্রমাণিত হয়নি।’ 

এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিয়ার রহমান ও সাধারণ সম্পাদক হাকিম আহমেদ জানান, মূলত এটি তাঁর পরিবারের সংবাদ সম্মেলন। এটাকে সমর্থন জানিয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগ। 

শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ঠাকুরদাস মণ্ডল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মামলার ৫ জন ব্যতীত সকল আসামি জামিনে আছে। তদন্ত শেষে দ্রুত প্রতিবেদন দাখিলে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে।’ 

উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলছিল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ঝিনাইদহ-১ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল হাই সমর্থক হাবিবুর রহমান রিপন এবং জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও ঝিনাইদহ-১ আসন থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী নজরুল ইসলাম দুলালের সমর্থকদের মধ্যে। 

এই দ্বন্দ্বের জেরে গত অক্টোবর মাসের ১৬ তারিখ ভোররাতে আবাইপুর বাজার পার হলেই প্রতিপক্ষের সমর্থকেরা হাবিবুর রহমান রিপনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকালেই তাঁর মৃত্যু হয়। ঘটনার পর নিহতের সমর্থকদের অর্ধশতাধিক বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। 

পরদিন নিহতের ভাই বাদী হয়ে শৈলকুপা থানায় ৩২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১০-১২ জনের নামে মামলা করেন। তবে এই মামলায় জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও বিশ্বাস বিল্ডার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নজরুল ইসলাম দুলাল ও ইউপি চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন বিশ্বাসের নাম নেই। 

তবে আজ মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে তাঁদের বিরুদ্ধে হত্যার নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুমেক হাসপাতালে দালাল চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান, ১০ জনের কারাদণ্ড

 কুমিল্লা প্রতিনিধি 
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দালাল চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দালাল চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দালাল চক্রের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান চালিয়েছে জেলা প্রশাসন ও র‍্যাব। অভিযানে দালালি কার্যক্রমে সরাসরি সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়ে ১০ জনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ২০ দিন করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

আজ সোমবার দুপুর ১২টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লা এবং জেলা প্রশাসন এই অভিযান চালায়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নওরোজ কোরাইশি দৃপ্ত। অভিযানে হাসপাতাল এলাকার দোকান, ওষুধের কাউন্টার, টেস্ট সেন্টার ও গেটের পাশ ঘিরে তল্লাশি চালানো হয়।

অভিযানে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন কুমিল্লা সদর উপজেলার কুচাইতলি এলাকার মো. সোহেল (৩০), মো. তাজুল ইসলাম, মো. নাছের (৩৬) ও মো. ইমন (২১), তেতৌয়ারা এলাকার মাহবুবুর রহমান (২৮), চরপাত্তি এলাকার মো. জাকির (৪৩), চাপাপুর গ্রামের মাহমুদ (৪০), চৌদ্দগ্রাম উপজেলার চিওড়া এলাকার মো. আলাদিন, সদর দক্ষিণ উপজেলার রাজাপাড়া এলাকার মো. অপু (৩৪) এবং ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার উত্তর আজিজ ফাজিলপুর এলাকার আব্দুল আজিজ।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নওরোজ কোরাইশি দৃপ্ত বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দালাল চক্র সক্রিয় ছিল। র‍্যাবের সহায়তায় অভিযান চালিয়ে জড়িত ব্যক্তিদের আটক করা হয়েছে। হাসপাতাল প্রাঙ্গণে দালালদের কোনো স্থান নেই। এ ধরনের অভিযান নিয়মিত চলবে। জেলা প্রশাসন স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন ও রোগী সুরক্ষার স্বার্থে হাসপাতালের ভেতর ও বাইরে নিয়মিত তদারকি করবে।

র‍্যাব-১১, সিপিসি-২ কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম বলেন, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকায় দালাল চক্র এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, ওয়ার্ডবয় থেকে শুরু করে অ্যাম্বুলেন্সচালক পর্যন্ত কেউ কেউ এ চক্রের প্রভাবে ছিল। রোগীরা চিকিৎসাসেবা নিতে এসে বিভ্রান্ত হচ্ছেন, আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এসব অনিয়ম প্রতিরোধে র‍্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, ‘রোগী ও তাঁদের স্বজনদের সঠিক সেবা নিশ্চিত করতে আমরা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করছি। হাসপাতাল এলাকায় দালালদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে এই অভিযান কেবল শুরু, ভবিষ্যতে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

অভিযানে দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের কারাদণ্ড কার্যকরের জন্য কুমিল্লা জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে হাসপাতালের ভেতর ও বাইরে দালালবিরোধী ব্যানার ও সচেতনতামূলক নোটিশ টানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জুলাই নিয়ে কাউকে ব্যবসা করতে দেব না: ছাত্রশিবির সভাপতি

রংপুর প্রতিনিধি
রংপুর কারমাইকেল কলেজে শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। ছবি: আজকের পত্রিকা
রংপুর কারমাইকেল কলেজে শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, ‘আমরা এখনো লক্ষ করছি, জুলাইকে ব্যবহার করে একটা শ্রেণি তাদের নিজেদের আখের গোছানো, নিজেদের পকেট ভারী করা, নিজেদের সম্পদের পাহাড় গড়ার নেশায় মত্ত হয়েছে। কিন্তু আমরা এই প্রজন্ম বিশ্বাস করি, আমরা বেঁচে থাকতে, আবু সাঈদের প্রজন্ম বেঁচে থাকতে কাউকে জুলাই নিয়ে ব্যবসা করতে দেব না।’

আজ সোমবার দুপুরে রংপুরের কারমাইকেল কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি বলেন, ‘আবু সাঈদের যে স্বপ্ন, আবু সাঈদের পিতার যে স্বপ্ন, প্রত্যেক শহীদ পরিবারের যে স্বপ্ন, সেই স্বপ্ন আমরাও আমাদের জীবন দিয়ে রক্ষা করব ইনশা আল্লাহ। এখনো যদি তুমি শহীদ পরিবারের কাছে যাও, তাদের কান্নাগুলো এখনো থামেনি। শহীদ পরিবারের মায়েরা এখনো কান্না করেন। এখনো তাঁদের সন্তানের জন্য তাঁরা আহাজারি করছেন।’

জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘প্রয়োজনে আমরা আবার আবু সাঈদেরা জেগে উঠব। আমরা প্রত্যেকেই শহীদের প্রজন্ম হিসেবে আবার জেগে উঠব, দাঁড়িয়ে যাব। কিন্তু এই সমাজে কোনো ধরনের জুলুমতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হতে দেব না। নতুন কোনো ফ্যাসিবাদকে আমরা এখানে কায়েম হতে দেব না।’

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্যাম্পাস রাজনীতি নিয়ে জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রতিটা ক্যাম্পাসে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতির জায়গা থেকে আমি ঘোষণা দিচ্ছি, কোনো হল দখলের রাজনীতি কোনো ক্যাম্পাসে চলবে না। কোনো ধরনের ফাও খাওয়া, ক্যানটিনগুলোতে ফাও খেয়ে খেয়ে অন্যদের ওপর সেটা চাপিয়ে দেওয়া, বোঝা চাপিয়ে দেওয়া—এই রাজনীতি বাংলাদেশে আর চলবে না। কাউকে গোলামতন্ত্রের মধ্য দিয়ে নিজের মিছিলে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাধ্য করা হবে—এ ধরনের রাজনীতি কোনো ক্যাম্পাসে চলবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় দিনে হুমকি, রাতে হামলা

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি 
যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় স্কুলের নৈশপ্রহরীর ওপর হামলার ঘটনায় মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা
যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় স্কুলের নৈশপ্রহরীর ওপর হামলার ঘটনায় মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা

পাবনার ঈশ্বরদীতে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় স্কুলের নৈশপ্রহরীর ওপর হামলা চালিয়েছে একদল বখাটে। এ ঘটনার প্রতিবাদে পাবনার ঈশ্বরদীতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অংশগ্রহণে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ সোমবার দুপুরে উপজেলার ছলিমপুরে মানিকনগর উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি হয়। এতে শিক্ষক-কর্মচারী, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী অংশ নেয়। বিক্ষোভ থেকে হামলার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানানো হয়। এ সময় বক্তব্য দেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক নূর তরিকুল ইসলাম, সহকারী প্রধান শিক্ষক ওয়াসিম উদ্দিন, স্থানীয় বিএনপি নেতা আল্লেক প্রামাণিক, আলমগীর হোসেন, মোস্তাফা জামান নয়ন, বাবু মজুমদার প্রমুখ।

জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরে বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের যাতায়াতের সময় স্থানীয় কিছু বখাটে উত্ত্যক্ত করে আসছে। এর ধারাবাহিকতায় গত রোববার বিকেলে স্কুল ছুটির পর কয়েকজন বখাটে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছাত্রীদের অশালীন অঙ্গভঙ্গি করে। তখন স্কুলের নৈশপ্রহরী শিহাব উদ্দিন তাদের বাধা দিলে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি দেয়। পরে রাত ১২টার দিকে স্কুল মাঠে ডিউটিরত অবস্থায় ওই নৈশপ্রহরীর ওপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় বখাটেরা। তাঁর চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে গেলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে আহত শিহাব উদ্দিনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

ঘটনার পর সোমবার সকালে বিষয়টি জানাজানি হলে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। দুপুরে তারা বিদ্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে। এ সময় বক্তারা হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেন, একজন কর্মচারী ছাত্রীদের সম্মান রক্ষা করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন, এটা লজ্জাজনক। দ্রুত জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে হবে।

এদিকে মানববন্ধনের খবর পেয়ে ঈশ্বরদী থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এ সময় প্রধান শিক্ষকসহ শিক্ষক-অভিভাবকদের পক্ষে একটি লিখিত অভিযোগপত্র পুলিশকে দেওয়া হয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নূর তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘নৈশপ্রহরীর ওপর হামলার ঘটনায় আমরা মর্মাহত। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।’ এ বিষয়ে ঈশ্বরদী থানার উপপরিদর্শক বিজন কুমার বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, পরিবারের দাবি হত্যাকাণ্ড

কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে স্বপ্না আক্তার (২৫) নামের এক গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ সোমবার সকালে উপজেলার চরমার্টিন ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কোরবান আলী ব্যাপারী বাড়ি থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। স্বপ্নার ভাইয়ের দাবি, ভগ্নিপতিসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁর বোনকে হত্যা করে বাড়ির টয়লেটে ঝুলিয়ে রেখেছেন। এ ঘটনায় স্বপ্নার স্বামী মাইন উদ্দিনসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন পালিয়েছেন।

মৃত স্বপ্না কোরবান আলী ব্যাপারী বাড়ির মাইন উদ্দিনের স্ত্রী। তিনি নোয়াখালী সুধারাম থানার মাইজচরা এলাকার মুনছুর আহমদের মেয়ে।

জানা গেছে, প্রায় ১০ বছর আগে স্বপ্নার সঙ্গে মাইন উদ্দিনের বিয়ে হয়। এই দম্পতির দুই ছেলে রয়েছে।

‎স্বপ্নার ভাই মো. ইউছুপ বলেন, ‘তিন বছর আগে আমার ভগ্নিপতি মাইন উদ্দিন চাকরি করতে ওমানে যান। দুই মাস আগে ওখানে একটি দুর্ঘটনায় তাঁর পা ভেঙে যায়। পরে তিনি দেশে চলে আসেন। দেশে আসার পর থেকে বোনের সঙ্গে ভগ্নিপতি মাইন উদ্দিনের বনিবনা হচ্ছিল না। ভগ্নিপতি মাইন উদ্দিন ও তাঁর মা-বোনদের সঙ্গে সব সময় বোনের ঝগড়া লেগে থাকত। গতকাল রোববার রাতে বোনের শাশুড়ি ও ননদ আমাকে মোবাইল ফোনে বোনের সঙ্গে ঝগড়ার কথা বলেন। একপর্যায়ে তাঁরা আমার বোনকে মেরে ফেলার হুমকিও দেন। আজ সকালে বোনের শাশুড়ি আমাকে ফোন দিয়ে বলেন—স্বপ্না গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।’

‎হাজিরহাট তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. জাহাঙ্গির আলম বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছি। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের পর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। তবে প্রাথমিক তদন্তে আমরা ধারণা করছি, এটি হত্যা নয়, আত্মহত্যা।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত