Ajker Patrika

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে চুরির অভিযোগে যুবককে পিটুনি, চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে চোর সন্দেহে দলবদ্ধ পিটুনিতে নিহত সুজন মিয়া (ইনসেটে)। ছবি: সংগৃহীত
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে চোর সন্দেহে দলবদ্ধ পিটুনিতে নিহত সুজন মিয়া (ইনসেটে)। ছবি: সংগৃহীত

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে চোর সন্দেহে দলবদ্ধ পিটুনিতে আহত সুজন মিয়া (২৮) নামের এক ব্যক্তি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। আজ শুক্রবার দুপুরে হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে তাঁর মৃত্যু হয়।

সুজন মিয়া মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার বাগড়া গ্রামের কাশেম মালের ছেলে। তিনি শ্বশুরবাড়ি ঝিনাইদহের পাওয়ার হাউসপাড়ায় থাকতেন।

জানা গেছে, গত বুধবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের শিশু বিভাগের এক রোগীর স্বজনের ব্যাগ থেকে ৪০০ টাকা চুরি হয়। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে সুজন মিয়াকে ধরে ওই রোগীর স্বজন ও উপস্থিত লোকজন কয়েক দফায় মারধর করে। এরপর তাঁকে আবার হাসপাতালের নিচে নামিয়ে টিকিট কাউন্টারের সামনে এনে বাঁশের লাঠি দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করা হয়। পরদিন গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সুজন পাওয়ার হাউসপাড়ায় তাঁর শ্বশুরবাড়িতে গেলে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। ওই দিন দুপুরে হাসপাতাল চত্বরে আহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে লোকজন সুজনকে হাসপাতালে ভর্তি করান।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, সুজনকে দুজন বাঁশ দিয়ে পেটাচ্ছেন, আরেকজন তাঁকে ধরে রাখেন। পাশেই কেউ ছবি তুলছেন, কেউ তাকিয়ে দেখছেন। তখন হাসপাতালে কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন, কিন্তু কেউ ঠেকাতে এগিয়ে আসেননি।

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ফারহানা শারমিন বলেন, মারপিটের ঘটনায় আহত অজ্ঞাতনামা হিসেবে ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুরে মারা যান।

সুজনের স্ত্রী রুমা আক্তার বলেন, ‘আমি তাঁকে (সুজন) ডিভোর্স দিয়েছি। তবুও তিনি আমাদের বাড়িতেই থাকেন। এর আগেও তিনি কয়েকবার এমন চুরির ঘটনা ঘটিয়েছিলেন। বুধবার সুজনকে হাসপাতালে পিটুনি দিলে পরদিন সকালে তিনি আমাদের বাড়িতে এসেছিলেন। কিন্তু তাঁকে বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হয়নি এবং কোনো মারধর করিনি আমরা।’

সুজনের বড় ভাইয়ের স্ত্রী পরিচয়ে তাহমিনা নামের এক নারী মোবাইল ফোনে বলেন, ‘সুজন বিয়ের পর থেকে শ্বশুরবাড়িতেই থাকতেন। আমরা তাঁর মৃত্যুর খবর শুনেছি। আমাদের বাড়ি থেকে ঘটনাস্থলে লোকজন যাচ্ছে।’

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মোস্তাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, মানুষকে এভাবে কেউ পেটাবে, আইন নিজের হাতে তুলে নেবে, তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। কারা এই গণপিটুনির সঙ্গে জড়িত এবং সেখানে হাসপাতালের কোনো স্টাফ জড়িত কি না বা তাঁদের সামনে এমন ঘটনায় কেন তাঁরা ঠেকাননি, তা ভিডিও দেখে জড়িতদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৫ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি শাহজালালের আগুন, ফ্লাইট ওঠানামা স্থগিত

শাহজালাল বিমানবন্দরে আগুনের সূত্রপাত ও হতাহতের বিষয়ে যা জানা গেল

ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে প্রধান শিক্ষক গ্রেপ্তার

শাহজালালের কার্গো ভিলেজে কী ধরনের পণ্য থাকে

গঙ্গাচড়ায় চাঁদাবাজি ও অপপ্রচারের অভিযোগে ৩৪ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামিসহ গ্রেপ্তার ৩

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত