Ajker Patrika

যশোরে কৃষক দল নেতা খুন: আগুনে ঘর হারা ১৮ পরিবারের মানবেতর জীবন

­যশোর প্রতিনিধি
অভয়নগরে আগুনে ঘর হারা ১৮ পরিবারের মানবেতর জীবন। ছবি: আজকের পত্রিকা
অভয়নগরে আগুনে ঘর হারা ১৮ পরিবারের মানবেতর জীবন। ছবি: আজকের পত্রিকা

যশোরের অভয়নগর কৃষক দল নেতা তরিকুল ইসলাম (৫০) হত্যাকাণ্ডের তিন দিন পার হলেও এখনো কোনো মামলা হয়নি। এ ঘটনার জেরে আগুনে ঘর হারা ১৮ পরিবার খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। নতুন করে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ও সেনা টহল জোরদার করা হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার ডহর মশিয়াহাটি গ্রামের বাড়েদাপাড়েতে ঘের ব্যবসায়ী পিন্টু বিশ্বাসের বাড়িতে তরিকুল ইসলামকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটে। ঘেরের ইজারা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের।

এ ঘটনায় উত্তেজিত একদল লোক ডহর মশিয়াহাটি গ্রামের অন্তত ১৮টি হিন্দুবাড়িতে লুটপাট, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এ ছাড়া উপজেলার সুন্দলী বাজারে দুটি দোকানে অগ্নিসংযোগ এবং চারটি দোকান ভাঙচুর করা হয়। এতে আহত হন অন্তত ১০ জন।

নিহত তরিকুল ইসলাম উপজেলার ধোপাদী গ্রামের ইব্রাহিম সরদারের ছেলে। তিনি উপজেলার নওয়াপাড়া পৌর কৃষক দলের সভাপতি ছিলেন।

জানতে চাইলে অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আলিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তরিকুল হত্যার ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা যায়নি। পরিবার এজাহার না দিলে মামলা হবে কী করে, আমরা তার পরিবারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছি। হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটনে পাঁচজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। দ্রুতই রহস্য উদ্‌ঘাটন হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ডহর মশিয়াহাটির গ্রামের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় কেউ অভিযোগ দেয়নি। সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। সেখানে ২৪ ঘণ্টা পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’

অভয়নগরে আগুনে ঘর হারা ১৮ পরিবারের মানবেতর জীবন। ছবি: আজকের পত্রিকা
অভয়নগরে আগুনে ঘর হারা ১৮ পরিবারের মানবেতর জীবন। ছবি: আজকের পত্রিকা

এদিকে, আজ শনিবার সকালে নিহত কৃষক দল নেতা তরিকুল ইসলামের বাড়িতে যান বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক নার্গিস বেগম, খুলনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেরুল হক সাবু, সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকনসহ উপজেলার নেতৃবৃন্দ।

এ সময় তাঁরা তরিকুল ইসলামের শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। এরপর বিএনপির নেতারা ডহর মশিয়াহাটি গ্রামের যে বাড়িতে তরিকুল ইসলামকে হত্যা করা হয়েছিল, সেই বাড়িতে যান। পরে নেতারা গ্রামের পুড়িয়ে দেওয়া বাড়িগুলো ঘুরে দেখেন এবং বাড়ির লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁরা ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।

ঘেরের ইজারার দ্বন্দ্বে খুন হন তরিকুল

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার সুন্দলী ইউনিয়নের বিল বোকড়ে তরিকুলের একটি মাছের ঘের ছিল। ঘেরটির জমির ইজারার মেয়াদ শেষ হয়েছে। পাশের বিল কাছুরাবাদে অন্য এক ব্যক্তির আরেকটি মাছের ঘের ছিল। বিল কাছুরাবাদের বেশির ভাগ জমি ডহর মশিয়াহাটি গ্রামবাসীর। ঘেরের জমির ইজারার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর মালিক ঘের ছেড়ে দিয়েছেন।

এই ঘেরের জমি ইজারা নিয়ে তরিকুল ইসলাম মাছ চাষ করতে চেয়েছিলেন। অপর দিকে আরও এক ব্যক্তি ঘেরের জমি ইজারা নিয়ে মাছ করতে চেয়েছিলেন। এ নিয়ে দুজনের বিরোধ হয়। বিষয়টি নিয়ে ওই দিন (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায় তরিকুল ইসলামকে ডহর মশিয়াহাটি গ্রামের পিল্টু বিশ্বাসের বাড়িতে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁকে প্রথমে কুপিয়ে এবং পরে গুলি করে হত্যা করা হয়। এর পর থেকে ডহর মশিয়াহাটি গ্রামের পোড়া বাড়িগুলো প্রায় পুরুষশূন্য, আতঙ্কিত নারীরা।

অভয়নগরে আগুনে ঘর হারা ১৮ পরিবারের মানবেতর জীবন। ছবি: আজকের পত্রিকা
অভয়নগরে আগুনে ঘর হারা ১৮ পরিবারের মানবেতর জীবন। ছবি: আজকের পত্রিকা

নিহতের ভাই রবিউল ইসলাম বলেন, ‘আমার ভাই মাছের ঘেরের ব্যবসা করতেন। তাঁর তিনটি মাছের ঘের আছে। তিনি ডহর মশিয়াহাটি এলাকায় একজনের ছেড়ে দেওয়া ঘের ইজারা নিতে চেয়েছিলেন। এ নিয়ে আরেকজনের সঙ্গে তাঁর দ্বন্দ্ব হয়। বৃহস্পতিবার সকালে তরিকুল ইসলাম নওয়াপাড়ার বাড়িতে ছিলেন।

‘তখন ডহর মশিয়াহাটি গ্রামের পিল্টু বিশ্বাস তাঁকে ফোন করেন। ঘেরের ডিড (চুক্তি) হবে বলে পিল্টু বিকেলে তরিকুলকে তাঁর বাড়িতে যেতে বলেন। তরিকুল একজনকে নিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে মোটরসাইকেলে পিল্টুর বাড়িতে যান। সে সময় ছয়জন সন্ত্রাসী পিল্টুর ঘরে তরিকুলকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে।’

খোলা আকাশের নিচে ১৮ পরিবার

ডহর মশিয়াহাটি গ্রামের বাড়েদাপাড়ার অধিকাংশ মতুয়া সম্প্রদায়ের। ক্ষোভের আগুনে দেওয়া বাড়িঘর পুড়ে ভস্মীভূত। ঘরের চার দেয়াল থাকলেও পুড়ে ছাই ছাউনি। ফলে খোলা আকাশের নিচে তিন দিন যাবৎ পার করছেন পাড়াটির বাসিন্দারা।

আজ দিনভর বৃষ্টিতে খোলা আকাশের নিচে পার করেছেন। মাঝবয়সী চণ্ডিকা বিশ্বাস বলেন, ‘গায়ে কাপড় ছাড়া কিছু নেই। ঘরের সবকিছু পুড়ে গেছে। ঘরবাড়িতে থাকার মতো অবস্থা নেই। গাছের পাতাও পুড়ে গেছে। আমরা আতঙ্কে আছি। পাড়া পুরুষশূন্য। আমরা নিরপরাধ এসব মানুষের যারা ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আগারগাঁওয়ে সরকারি কোয়ার্টারে গ্যাস বিস্ফোরণে একই পরিবারের ৭ জন দগ্ধ

ঢামেক প্রতিবেদক
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে সরকারি কোয়ার্টারে গ্যাস লাইন লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে একই পরিবারের ৭ জন দগ্ধ হয়েছেন। তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে।

আজ শনিবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে আগারগাঁও পাকা মার্কেট সড়ক এলাকার সরকারি কোয়ার্টারে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

দগ্ধরা হলেন, শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার মো. আব্দুল জলিল মিয়া (৫০), তাঁর স্ত্রী আরনেজা বেগম (৪০), ছেলে আসিফ (১৯), সাকিব (১৬), আসিফের স্ত্রী মনিরা (১৭) ও নাতনি ইভা (৬) ও ইশা (৬)।

তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে আসা দগ্ধ জলিল মিয়ার মেয়ের স্বামী মো. আরফান মিয়া জানান, রাতে টিনশেড বাসায় পাশাপাশি কক্ষে ঘুমিয়ে ছিলেন পরিবারটির ৭ সদস্য। ভোরের দিকে তাঁর শাশুড়ি আরনেজা বেগম রান্না করতে যান। দেশলাই কাঠি জ্বালাতেই বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। এতে ৭ জনই পুড়ে যান। আরফান ও তাঁর স্ত্রী জনিভা আক্তার পাশের কক্ষে ছিল। তাঁর দুই মেয়ে ইভা ও ইশা নানার কক্ষে ছিল। আসিফের স্ত্রী মনিরা আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা।

তিনি জানান, তাঁদের চিৎকারে প্রতিবেশীরাও ছুটে আসেন। দগ্ধদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। বাসায় গ্যাস লিকেজ থেকে এই বিস্ফোরণ থেকে আগুনের ঘটনা ঘটেছে।

এদিকে দগ্ধ আসিফ জানান, আগারগাঁও সরকারি কোয়ার্টারের বাসায় তাঁরা ভাড়া থাকেন। দেড় মাস ধরে ঘরে গ্যাসের গন্ধ পাচ্ছিলেন। বাড়িওয়ালাকে বারবার বললেও কোনো প্রতিকার পাননি।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের আবাসিক সার্জন ডা. হারুনুর রশীদ জানান, জলিলের ১২ শতাংশ, আরনেজার ১০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। বাকিদের হাত পা দগ্ধ হয়েছে। এ ছাড়া আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক নারীর হাত-পা দগ্ধ হয়েছে। তাঁকে চিকিৎসা দিয়ে গাইনি বিভাগে স্থানান্তর করা হয়েছে। জলিল ও আরনেজা বেগমকে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে অবজারভেশন ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

স্বপ্নের দেশে যাত্রা: এক মাস ধরে যোগাযোগ বন্ধ, অবশেষে বাড়িতে এল নৌকাডুবির খবর!

শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
আহাজারি করছেন নিখোঁজ নিশাতের স্বজনেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
আহাজারি করছেন নিখোঁজ নিশাতের স্বজনেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

স্বপ্নের দেশ ইতালির উদ্দেশে লিবিয়া থেকে রওনা দেওয়ার পর নিখোঁজ হন মাদারীপুর জেলার শিবচরের বেশ কয়েকজন যুবক। এক মাস নিখোঁজ থাকার পর গত বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) খবর এসেছে, নৌকাডুবির ঘটনায় নিখোঁজ তাঁরা। এই যুবকদের একজন নিশাত মাতুব্বর।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাড়িতে খবর এল নিশাতসহ অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বহনকারী ট্রলারটি ডুবে গেছে ভূমধ্যসাগরে। বেশির ভাগই সমুদ্রে ডুবে নিখোঁজ। এমন খবর বাড়িতে পৌঁছানোর পর শোকের ছায়া নেমে এসেছে বাড়িতে। শুধু নিশাতই নন, মাদারীপুর জেলার শিবচরের বিভিন্ন এলাকার আরও তিন যুবকের খোঁজ নেই অনেক দিন ধরে। একই দালালের মাধ্যমে লিবিয়া থেকে ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে রওনা হয়েছিলেন তাঁরা।

শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলার বহেরাতলা দক্ষিণ ইউনিয়নের সিঙ্গাপুর বাজার-সংলগ্ন নিখোঁজ নিশাতের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে স্বজনদের আহাজারি। চলছে মায়ের আর্তনাদ আর বিলাপ। বাড়িভর্তি আশপাশের লোকজন, আত্মীয়স্বজন। ছয় মাসের সন্তান কোলে নিয়ে নির্বাক স্ত্রী মেহেনাজ। নিখোঁজ নিশাত বহেরাতলা দক্ষিণ ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সাবিনা বেগম ও আব্দুল লতিফ মাতুব্বর দম্পতির একমাত্র সন্তান।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় কুদ্দুস দালালের মাধ্যমে গত ৩ অক্টোবর ঘর ছাড়েন নিশাত। প্রথমে সৌদি আরব যান। সেখানে ওমরাহ করেন। পরে সৌদি থেকে কুয়েত হয়ে মিসর পৌঁছান নিশাত। মিসর থেকে লিবিয়া। পুরো প্রক্রিয়ায় ইতালি যেতে ২২ লাখ টাকার চুক্তি হয় কুদ্দুসের সঙ্গে। এই কুদ্দুসের মাধ্যমে শিবচরের বিভিন্ন এলাকার আরও অর্ধডজন যুবক ইতালি যাওয়ার জন্য লিবিয়া গিয়ে নিখোঁজ রয়েছেন।

নিখোঁজ নিশাতের শ্বশুর মিজান মোল্লা বলেন, ‘২২ লাখ টাকায় লিবিয়া দিয়ে ইতালি পাঠাবে বলে কুদ্দুস টাকা নেয়। আমরা সব টাকা অগ্রিম দিয়েছি। প্রথমে সৌদি নেয়। সেখান থেকে কয়েক দেশ ঘুরিয়ে লিবিয়া নেয়। নভেম্বর মাসের ১০ তারিখে গেম (সাগর পাড়ি দিতে ট্রলারে ওঠে) দেয়। এরপর আর যোগাযোগ নাই। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দালাল কুদ্দুস জানায়, ট্রলার ডুবে গেছে। বেশির ভাগের কোনো খোঁজ নাই!’

নিখোঁজ নিশাত মাতুব্বর। ছবি: সংগৃহীত
নিখোঁজ নিশাত মাতুব্বর। ছবি: সংগৃহীত

নিশাতের মা আহাজারি করতে করতে বলেন, ‘কুদ্দুস দালাল আরও ১০ লাখ টাকা চাইছে। আমরা বলেছি, আমার ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করাই দেও। ওরা দেয়নি। এক মাস যোগাযোগ নাই। এখন জানাইছে, গেমের ট্রলার ডুবে গেছে সাগরে। বেশির ভাগই নিখোঁজ। জানি না আমার নিশাতের কী হইছে! আমার ছেলেরে ফেরত চাই!’

নিখোঁজ নিশাতের স্ত্রী মেহেনাজ বলেন, ‘লিবিয়া যাওয়ার পর নিশাতের মোবাইল নিয়ে যায় দালালের লোকজন। পরে অন্যের মোবাইল দিয়ে যোগাযোগ করত। ১০ নভেম্বর দুপুরে গেম দেয়। গেম দেওয়ার আগে আরেকজনের মোবাইল থেকে ভয়েস পাঠায়, ‘ঠিকমতো পৌঁছানোর পর জানাব’। এর পর থেকে আর যোগাযোগ নাই! বৃহস্পতিবার খবর আসে, গেমের ট্রলার ডুবে গেছে। বেশির ভাগই নিখোঁজ। আমরা জানি না, নিশাত বেঁচে আছে কি না। কোনো খোঁজ নাই।’

নিশাত ছাড়াও নিখোঁজ রয়েছেন বাঁশকান্দি ইউনিয়নের ফারহান খান রোমান (২৪), শেখপুরের মুন্সীকান্দি এলাকার মুন্না। এ ছাড়াও শিবচর পৌর এলাকার আরও দুই যুবক নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানা গেছে।

শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুল ইসলাম বলেন, ‘এর আগে লিবিয়ায় আটকে রেখে তিন যুবককে নির্যাতনের ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিও গ্রেপ্তার হয়েছে। তবে এই নিখোঁজের বিষয়ে এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাটহাজারীতে বৈঠকে ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত

হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি 
নিহত রবিউল ইসলাম ওরফে বাবু। ছবি: সংগৃহীত
নিহত রবিউল ইসলাম ওরফে বাবু। ছবি: সংগৃহীত

হাটহাজারীতে বিয়ের সামাজিক বৈঠকে (পানসল্লা) ছুরিকাঘাতে মো. রবিউল ইসলাম ওরফে বাবু (৪০) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুজন। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ৮টার দিকে উপজেলার ফরহাদাবাদ ইউনিয়ন এলাকার মুছা সওদাগরের বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।

নিহত রবিউল ইসলাম মুছা সওদাগর বাড়ির মুক্তিযোদ্ধা জহুরুল হক কোম্পানির বড় ছেলে। তিনি নাজিরহাট ঘাট স্টেশন এলাকার ব্যবসায়ী ছিলেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাতে মুছা সওদাগরের বাড়িতে একটি বিয়ের প্রস্তুতিমূলক সামাজিক বৈঠক (পানসল্লা) চলছিল। এ সময় বৈঠকে রবিউল ইসলামের সঙ্গে একই বাড়ির জসিমের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে জসিম ঘর থেকে চাকু এনে বাবুর গলায় আঘাত করে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ঘটনাস্থলেই রবিউল ইসলামের মৃত্যু হয়।

ছুরিকাঘাতের সময় উপস্থিত রবিউল ইসলাম বাবুর ভাই ইমরুল হোসেন বাচ্চু (৩৫) ও চাচাতো ভাই ইমন (২১) বাবুকে উদ্ধার করতে গেলে জসিম তাঁদেরকেও চাকু দিয়ে আঘাত করেন। আহত দুজনকে নাজিরহাট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয় লোকজন জসিমকে আটক করে হাটহাজারী মডেল থানা-পুলিশকে জানায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।

হাটহাজারী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুর কাদের ভূঁইয়া বলেন, ‘আমি এখন ঘটনাস্থলে আছি। স্থানীয় উত্তেজিত জনতার কারণে এখন পর্যন্ত জসিমকে হেফাজতে নেওয়া সম্ভব হয়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পঞ্চগড়ে আজ মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ১২
হালকা কুয়াশায় ঢেকে আছে চারপাশ। গরুর গায়ে কাপড় জড়িয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা। ছবি: আজকের পত্রিকা
হালকা কুয়াশায় ঢেকে আছে চারপাশ। গরুর গায়ে কাপড় জড়িয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা। ছবি: আজকের পত্রিকা

পঞ্চগড়ে শীতের তীব্রতা প্রতিদিনই বাড়ছে। আজ এই মৌসুমের সর্বনিম্ন ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস। সকাল ৯টায় রেকর্ড হওয়া এই তাপমাত্রায় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৪ শতাংশ।

আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, গত কয়েক দিন তাপমাত্রা ১১ থেকে ১৩ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করছে। শুক্রবার ১২, বৃহস্পতিবার ছিল ১২ দশমিক ৫, বুধবার ১২ দশমিক ২, মঙ্গলবার ১১ দশমিক ৭, সোমবার ১৩ দশমিক ৩, রোববার ১৩ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ২৭ ডিগ্রি।

শনিবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে পঞ্চগড়ের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, হালকা কুয়াশায় ঢেকে আছে চারপাশ। প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া মানুষের চলাচল কম। কেউ কেউ গরম কাপড় জড়িয়ে কাজে বের হলেও অনেকেই শীতের তীব্রতার কারণে ঘরে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। সূর্য ওঠার পরও রোদের তাপ তেমন পাওয়া যাচ্ছে না।

এদিকে নদীতে বালুশ্রমিকেরা শীতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন। সকাল থেকেই নদীতে নেমে বালু তুলতে হয় তাঁদের। শীতের পানিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে কাজ করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে।

করতোয়া নদীর বালুশ্রমিক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ভোরে নদীর পানি এত ঠান্ডা থাকে যে শরীর জমে আসে। তবু কাজ না করলে ঘরে খাবার জুটবে না। হাত-পা অসাড় হয়ে আসে, অনেক সময় দাঁড়িয়েও থাকা যায় না। শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কাজ করাও কষ্টকর হয়ে পড়ছে।’

দিনমজুর আসিমদ্দিন জানান, শীতের জন্য কাজ কমে গেছে। সকালে কুয়াশায় কিছু দেখা যায় না, হাত-পা কাঁপতে থাকে। শরীর ঠিকমতো সাড়া না দেওয়ায় কাজের গতি কমে গেছে।

জেলার বিভিন্ন এলাকায় শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে দ্রুত। সর্দি-কাশি, জ্বর, অ্যালার্জি, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টে শিশু ও বৃদ্ধ রোগীদের ভিড় বেড়েছে হাসপাতালে। চিকিৎসকদের মতে, হঠাৎ তাপমাত্রা কমে যাওয়া এবং দিন-রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য শরীরের ওপর চাপ ফেলছে। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম থাকা মানুষ বেশি ঝুঁকিতে।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় বলেন, ‘শীত আরও কিছুদিন বাড়তে পারে। আজ তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি রেকর্ড হয়েছে; সামনে তাপমাত্রা আরও কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত