Ajker Patrika

চাচাতো ভাইয়ের ভোটের ভূরিভোজে শাহীন চাকলাদার

জাহিদ হাসান, যশোর
চাচাতো ভাইয়ের ভোটের ভূরিভোজে শাহীন চাকলাদার

যশোর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের সমর্থিত প্যানেল বিজয়ী করতে আওয়ামী লীগের সহস্রাধিক নেতা–কর্মীকে ভূরিভোজ করিয়েছেন।

সোমবার (৬ মে) বেলা ৩টার দিকে সদর উপজেলার চূড়ামনকাটি বাজার সংলগ্ন একটি মেহগনি বাগানে এই ভূরিভোজের আয়োজন করেন সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান মুন্না। এতে শাহীনের সমর্থিত প্যানেলের তিন প্রার্থীসহ জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের একাংশের নেতা–কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে নির্বাচনে অংশ নেওয়া তিন প্রার্থীকে বিজয়ী করতে নেতা–কর্মীদের দিকনির্দেশনা মূলক বক্তব্য দেন প্রধান অতিথি শাহীন চাকলাদার।

নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যশোর সদর উপজেলার রাজনীতি দুটি গ্রুপে বিভক্ত। একটি পক্ষের নেতৃত্ব দেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার ও অপরটি স্থানীয় সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ। যশোর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের আধিপত্যের লড়াই শুরু হয়েছে। 

শাহীন চেয়ারম্যান পদে তাঁর চাচাতো ভাই তৌহিদ চাকলাদার ফন্টুকে বসাতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। তাঁকে ছাড় দিতে নারাজ যশোর–৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ। তিনিও একক প্রার্থীর প্যানেল ঘোষণা করেছেন। তাঁর ট্রাম্পকার্ড হিসেবে মাঠে রয়েছেন চেয়ারম্যান প্রার্থী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুল। 

উপজেলা নির্বাচনে শাহীন প্যানেলে রয়েছেন—চেয়ারম্যান প্রার্থী তৌহিদ চাকলাদার, ভাইস চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জ্যোৎস্না আরা মিলি। 

নাবিলের প্যানেলে চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুল, ভাইস চেয়ারম্যান জাহিদুর রহমান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বাশিনুর রহমান।

কর্মী ও ভোটারদের মন পেতে ভূরিভোজ। ছবি: আজকের পত্রিকাদুই প্যানেলে দুই শীর্ষ নেতারা তাদের প্রার্থীদের বিজয়ী করতে এরই মধ্যে শহর ও বিভিন্ন ইউনিয়নে সভাসমাবেশ করছেন। তারই অংশ হিসেবে দুপুরে চূড়ামনকাটি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আব্দুল মান্নান মুন্না কর্মী সমাবেশের আয়োজন করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার। বিশেষ অতিথি করা হয় শাহীন সমর্থিত তিন প্রার্থীরা। এ ছাড়া জেলা ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতারা বক্তব্য দেন। 

অনুষ্ঠানে শাহীন চাকলাদার তাঁর সমর্থিত প্রার্থীদের প্রশংসা করে বলেন, ‘দল অনেক দিন ক্ষমতায়, যেকোনো ব্যক্তি প্রার্থী হতে চায়। অনেকে প্রার্থী হয়েছেও। তবে আমরা বলতে চাই, আমরা কাউকে হত্যা করব না, কাউকে মারব না। আমরা জবাব দিব, প্রতিবাদ করব ব্যালটের মাধ্যমে। ওরা বলছে (নাবিল গ্রুপ) চূড়ামনকাটিতে নাকি মুন্নার লোক নেই। ২৯ তারিখে দেখা যাবে কাদের লোক বেশি। শেখ হাসিনা এবার সুযোগ করে দিয়েছে যাচাই বাছাইয়ের। এই সদর উপজেলাতে এই নির্বাচনই সুযোগ করে দিয়েছে কার জনপ্রিয়তা কত। এটা কিন্তু আপনাদের জন্য, আমাদের জন্য জীবনের শেষ লড়াই। নেত্রী অনেক দিন খেলার সুযোগ করে দেয়নি। এবার একটা খেলার সুযোগ পেয়েছি, এই খেলায় এবার আমাকে আপনাদের জিতবে হবে। আমাদের প্রার্থীদের বিজয়ী করতে হবে যেকোনো মূল্যে।’ 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন গ্রাম অঞ্চলে ধান কাটা চলছে। কাজ শেষ করে দুপুরে চূড়ামনকাটি বাজার সংলগ্ন স’ মিলের পেছনে একটি মেহগনি বাগানে নেতা-কর্মী ও সাধারণ ভোটাররা দলে দলে যোগ দেয়। সমাবেশে আসা লোকজনকে খাওয়ানোর জন্য বাগানে সকাল থেকে রান্নার আয়োজন চলতে থাকে। সেখানে গরু, খাসির মাংস, সবজি এবং ভাত রান্না করা হয়। কয়েকজন বাবুর্চি দিয়ে দুপুর পর্যন্ত রান্না চলে। সভা শেষে ওয়ার্ড ভিত্তিকভাবে সেখানে কয়েক পদ দিয়ে সবাইকে আপ্যায়ন করা হয়। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার এক ব্যক্তি বলেন, ‘সভায় আসা লোকজন ও ভোটারদের খাওয়ানোর জন্য সাবেক চেয়ারম্যান মুন্না দুপুরে এ আয়োজন করেন। সেখানে এলাকার অনেকেই এসে খেয়েছেন। সেখানে এলাকার নেতা-কর্মীরা ছাড়াও বাইরে থেকে আসা অতিথি ও স্থানীয় বাসিন্দারা খেয়েছেন।’ 

অনুষ্ঠানের আয়োজক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান মুন্না আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মূলত অনুষ্ঠানটি কর্মিসভা। আমাদের নেতা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন ও সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের প্যানেল পরিচিত সভা। এই সভায় আমাদের ফুল প্যানেল ফন্টু চাকলাদার, সুলতান মাহমুদ বিপুল, জ্যোৎস্না আরা মিলি যাতে বিজয়ী হয় সেই দিকনির্দেশনা দিয়েছে। তিনি বলেন, অনুষ্ঠানে ইউনিয়নের প্রায় ১২ শ’ নেতাকর্মী অংশ নেয়। আলোচনা শেষে এসব নেতা-কর্মীদের খাওয়ার আয়োজন ছিল। ভাত সবজি, ডাল মাংস দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়েছে।’ 

এ বিষয়ে সদর উপজেলা পরিষদ পরিষদের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী শফিকুল ইসলাম জুয়েল অভিযোগ করে বলেন, ‘ভোটারদের আকৃষ্ট করতে আইন ভঙ্গ করে এক প্যানেলের প্রার্থীদের ভূরিভোজ করিয়েছেন। সেখানে কয়েক হাজার মানুষ অংশ নিয়েছেন। দলের প্রভাবশালীর ভাই প্রার্থী হওয়ায় স্থানীয় সাবেক চেয়ারম্যান প্রভাব বিস্তার করতে এসব করছেন। বিষয়টি নির্বাচনী কর্মকর্তাদের দেখা উচিত। আমি কাল আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অভিযোগ করব।’ 

নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী, তফসিল ঘোষণার পর কোনো প্রার্থী দলীয় সমাবেশ ও খাবারের আয়োজন, এমনকি টাকাপয়সা বিতরণ করতে পারবেন না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে যশোর সিনিয়র নির্বাচন কার্যালয়ের অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন অফিসার আব্দুর রশিদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

প্রসঙ্গত, ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল ২ মে। মনোনয়নপত্র যাচাই–বাছাই ৫ মে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১২ মে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ ১৩ মে। ভোটগ্রহণ ২৯ মে। 

চেয়ারম্যান প্রার্থী ফন্টু ছাড়াও শাহীন অনুসারীদের মধ্যে সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহিত কুমার নাথ, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম জুয়েল। আর নাবিল গ্রুপের প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরী, যুব মহিলা লীগ ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের নেতা ফাতেমা আনোয়ার। 

দুই বলয়ের একক প্রার্থী ঘোষণা নিয়ে অভ্যন্তরীণ ‘বিদ্রোহ’ দেখা দিয়েছে। তাই শীর্ষ দুই নেতার সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে দুই বলয়ের আরও ৫ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন। কেউ কাউকে ছাড় দিতে রাজি নয়। উপজেলা নির্বাচন ঘিরে আধিপত্যের লড়াই শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে ঠেকবে সেটি দেখার অপেক্ষায় যশোরবাসী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গ্রেপ্তার হয়ে অবাক ডন, বললেন—‘স্যার আমাকে কীভাবে গ্রেপ্তার করলেন’

১ হাজার টাকায় ৪ থ্রি-পিস দেওয়ার বিজ্ঞাপন দেখে নারীদের ভিড়, বেকায়দায় শোরুম কর্তৃপক্ষ

একাত্তরের হত্যাযজ্ঞে সম্পৃক্ততার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন: জামায়াত

সুদানে ‘গণহত্যা’য় আরব আমিরাতের গোপন তৎপরতা ও কলম্বিয়ার ভাড়াটে সেনা

অবশেষে নতুন ঠিকানায় ১০০ সাজাপ্রাপ্ত বন্দী

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আ.লীগ নেতার মরদেহ উদ্ধার, ছেলেকে ৫ দিনের রিমান্ডে চায় পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট  
আবদুর রাজ্জাক। ছবি: সংগৃহীত
আবদুর রাজ্জাক। ছবি: সংগৃহীত

সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় আওয়ামী লীগ নেতা আবদুর রাজ্জাক হত্যার ঘটনায় শনিবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টা পর্যন্ত পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো মামলা না করায় পুলিশ হত্যা মামলা করেছে। নিহত রাজ্জাকের ছেলে আসাদ আহমদকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছে পুলিশ।

শনিবার (১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় দক্ষিণ সুরমা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আনোয়ারুল কামাল মামলাটি করেন। মামলায় কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। তবে পরিবারের কয়েকজন সদস্যের নাম মামলার বিবরণে সন্দেহজনক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।

তিনি বলেন, হত্যা মামলায় নিহত ব্যক্তির ছেলেকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। তবে রিমান্ড আবেদনের শুনানি হয়নি।

মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘নিহত ব্যক্তির পরিবার প্রথম থেকে ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে দাবি করে আসছে। তবে ঘটনাটি আত্মহত্যা নয়, এটি হত্যাকাণ্ড। যেভাবে নিহত ব্যক্তির শরীরে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে, তাতে আত্মহত্যা মনে হয়নি। পরিবার মামলা না করায় পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে।’

পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, শনিবার দুপুরে আবদুর রাজ্জাকের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা ছুরিটি ফরেনসিকের জন্য পাঠানো হয়েছে।

শুক্রবার সকালে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার মোল্লারগাঁও ইউনিয়নের তেলিরাই গ্রামে নিজ বাসার ছাদের সিঁড়ির পাশে একটি কক্ষ থেকে আবদুর রাজ্জাকের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি দক্ষিণ সুরমা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছিলেন।

পরিবারের বরাতে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার ফজরের নামাজ শেষে আবদুর রাজ্জাক ছাদে হাঁটার জন্য উঠেছিলেন। এরপর সকাল ৯টার দিকে তাঁর রক্তাক্ত মরদেহ দেখার পর পুলিশকে জানানো হয়।

পুলিশ জানায়, আবদুর রাজ্জাকের পেট, বুক ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছুরিকাঘাতের গভীর চিহ্ন পাওয়া গেছে। লাশের পাশ থেকে একটি ২২ ইঞ্চি লম্বা ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে।

বাড়ির সিসিটিভি ক্যামেরা দেখে পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ভোর থেকে লাশ উদ্ধারের আগপর্যন্ত নিহত ব্যক্তির বাড়িতে কাউকে ঢুকতে কিংবা বের হতে দেখা যায়নি। এর মধ্যে শুধু ওই বাড়ির গৃহকর্মী সকাল আটটার দিকে বাড়িতে ঢোকেন। তিনি বাড়িতে যাওয়ার পর আবদুর রাজ্জাককে তাঁর কক্ষে পাননি। একপর্যায়ে সিঁড়ির ঘরে লাশটি দেখতে পান পরিবারের সদস্যরা। এ সময় সিঁড়ির দরজা তালাবদ্ধ ছিল, সিঁড়ির চাবি আবদুর রাজ্জাকের কাছেই ছিল।

পারিবারিক সূত্র জানায়, নিহত আবদুর রাজ্জাকের এক ছেলে ও এক মেয়ে। দুজনেরই বিয়ে হয়ে গেছে। সন্তানদের মধ্যে মাস দুয়েক আগে সম্পত্তি ভাগ-বাঁটোয়ারাও করে দিয়েছিলেন তিনি। শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন তিনি। চিকিৎসার জন্য ভারতেও গিয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে গত বছরের ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে একটি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পরিবার। মামলা থাকলেও তিনি নিজ বাড়িতেই অবস্থান করতেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গ্রেপ্তার হয়ে অবাক ডন, বললেন—‘স্যার আমাকে কীভাবে গ্রেপ্তার করলেন’

১ হাজার টাকায় ৪ থ্রি-পিস দেওয়ার বিজ্ঞাপন দেখে নারীদের ভিড়, বেকায়দায় শোরুম কর্তৃপক্ষ

একাত্তরের হত্যাযজ্ঞে সম্পৃক্ততার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন: জামায়াত

সুদানে ‘গণহত্যা’য় আরব আমিরাতের গোপন তৎপরতা ও কলম্বিয়ার ভাড়াটে সেনা

অবশেষে নতুন ঠিকানায় ১০০ সাজাপ্রাপ্ত বন্দী

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘দুর্ব্যবহারের প্রতিশোধ নিতে’ হোটেলে ঢুকে ৪ কর্মচারীকে কুপিয়ে জখম

খুলনা প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

খুলনা নগরের ডাকবাংলো মোড়ে একটি হোটেলে ঢুকে চার কর্মচারীকে কুপিয়ে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। আজ শনিবার সন্ধ্যায় লাভলু হোটেলে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ বলছে, দুপুরে হোটেলের কর্মচারীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারকে কেন্দ্র করে কয়েক যুবকের কথা-কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। ওই ঘটনার জেরে সন্ধ্যায় ১৫-২০ জন যুবক হোটেলে ঢুকে হামলা চালায়।

আহত কর্মচারীরা হলেন আইয়ুব, মধু, সজল ও টুটুল। তাঁদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে নগরের প্রাণকেন্দ্র ডাকবাংলো মোড়ে প্রকাশ্যে এই হামলার ঘটনা ঘটলেও আধা ঘণ্টা পর পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে বলে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা অভিযোগ তোলেন।

লাভলু হোটেলের কর্মচারী মো. সাইফুল ইসলাম জানান, দুপুরের দিকে দুই যুবক খাওয়ার জন্য ওই হোটেলে আসেন। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হোটেলে কর্মচারীদের সঙ্গে তাঁরা তর্কে জড়ান। এতে উভয়ের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। হোটেল ব্যবস্থাপক গিয়ে তখন পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। তাঁকেও অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন ওই যুবকেরা।

হামলার ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সাইফুল ইসলাম জানান, মাগরিবের নামাজের পর ১৫-২০ জন যুবক ওই হোটেলে প্রবেশ করে ধারালো অস্ত্র নিয়ে কর্মচারীদের ওপর হামলা চালান। এতে চারজন আহত হন। উপস্থিত লোকজন আহত ব্যক্তিদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। ঘটনার পরপরই হোটেলের প্রধান ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হকার বলেন, ‘ডাকবাংলো মোড় একটি জনবহুল এলাকা। প্রায় সময় এখানে পুলিশ অবস্থান করে। কিন্তু এ রকম হামলার পর আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। ডাকবাংলো মোড়ে এ ঘটনার পর পুলিশ ২৫ মিনিট পর ঘটনাস্থলে আসে; যা খুবই দুঃখজনক।’

খুলনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, দুপুরে দুই যুবক ওই হোটেলে খাওয়ার জন্য গেলে কর্মচারীরা তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। সন্ধ্যার দিকে ওই যুবকেরা আরও কয়েকজনকে নিয়ে হোটেলে হামলা চালান। তাঁরা চারজনকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যান। আহত ব্যক্তিদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের আটকের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গ্রেপ্তার হয়ে অবাক ডন, বললেন—‘স্যার আমাকে কীভাবে গ্রেপ্তার করলেন’

১ হাজার টাকায় ৪ থ্রি-পিস দেওয়ার বিজ্ঞাপন দেখে নারীদের ভিড়, বেকায়দায় শোরুম কর্তৃপক্ষ

একাত্তরের হত্যাযজ্ঞে সম্পৃক্ততার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন: জামায়াত

সুদানে ‘গণহত্যা’য় আরব আমিরাতের গোপন তৎপরতা ও কলম্বিয়ার ভাড়াটে সেনা

অবশেষে নতুন ঠিকানায় ১০০ সাজাপ্রাপ্ত বন্দী

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভালুকায় কারখানার বর্জ্য মিশ্রিত পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক, ক্ষতিপূরণের দাবিতে মানববন্ধন

ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
ক্ষতিপূরণের দাবিতে কৃষকদের মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ক্ষতিপূরণের দাবিতে কৃষকদের মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার ভরাডোবা গ্রামে অবস্থিত এক্সপেরিয়েন্স টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের বর্জ্য ও কেমিক্যাল মিশ্রিত রঙের পানি এবং মুলতাজিম স্প্রিনিং মিলের গরুর গোবর ও অন্যান্য বর্জ্যের পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দ্রুত পরিশোধের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন কৃষকেরা।

শনিবার (১ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভরাডোবা এলাকায় কৃষকেরা বিক্ষোভ মিছিল শেষে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করেন।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের দাবি উপজেলার ভরাডোবা গ্রামে অবস্থিত এক্সপেরিয়েন্স মিলের বর্জ্য মিশ্রিত পানি এবং মুলতাজিম স্পিনিং মিলের গরুর খামারের বর্জ্যে স্থানীয় কৃষকদের ৩৩৫.৭৪ একর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে।

উপজেলা প্রশাসন থেকে সুপারিশকৃত ক্ষতিপূরণের টাকা মিল কর্তৃপক্ষ আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পরিশোধ না করলে তাঁরা কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন।

মানববন্ধন শেষে বক্তব্য দেন কৃষক প্রতিনিধি ইঞ্জিনিয়ার রুহুল আমীন, আবদুর রহিম আকন্দ, মনির তালুকদার, নুরুজ্জামান কবির প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গ্রেপ্তার হয়ে অবাক ডন, বললেন—‘স্যার আমাকে কীভাবে গ্রেপ্তার করলেন’

১ হাজার টাকায় ৪ থ্রি-পিস দেওয়ার বিজ্ঞাপন দেখে নারীদের ভিড়, বেকায়দায় শোরুম কর্তৃপক্ষ

একাত্তরের হত্যাযজ্ঞে সম্পৃক্ততার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন: জামায়াত

সুদানে ‘গণহত্যা’য় আরব আমিরাতের গোপন তৎপরতা ও কলম্বিয়ার ভাড়াটে সেনা

অবশেষে নতুন ঠিকানায় ১০০ সাজাপ্রাপ্ত বন্দী

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রেমিকাকে বিয়ে করতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চীনা যুবক

নাসিরনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি 
ওয়াং থাও। ছবি: সংগৃহীত
ওয়াং থাও। ছবি: সংগৃহীত

প্রেমের টানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে এসেছেন ওয়াং থাও (৩৫) নামের এক চীনা যুবক। উপজেলার একটি গ্রামের তরুণীর সঙ্গে এক মাস আগে মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে তাঁর পরিচয় ও প্রেমের সম্পর্ক হয়। তাঁকে বিয়ে করতেই নাসিরনগরে এসেছেন তিনি।

জানা গেছে, ওয়াং থাও চীনের হেনান প্রদেশের বাসিন্দা। গতকাল শুক্রবার এ দেশে আসেন ওই চীনা যুবক। তরুণী ও তাঁর পরিবার তাঁকে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে নাসিরনগরে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসে। আগামীকাল রোববার (২ নভেম্বর) জেলাজজ আদালতে মুসলিম রীতিতে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করবেন ওয়াং থাও। নাম রাখবেন আবদুল্লাহ।

সরেজমিনে দেখা যায়, এ ব্যাপারে তরুণীর গ্রামের বাড়িতে কৌতূহলী মানুষের ভিড় জমেছে। আশপাশের গ্রামের নারী-পুরুষ ও শিশু-বৃদ্ধ সবাই এসেছেন চীনা যুবককে দেখার জন্য। সবার মধ্যে চীনা যুবককে নিয়ে আগ্রহ, কেউ কেউ তাঁর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছেন। কেউ কেউ সেলফি তুলছেন ও ভিডিও করছেন। ওয়াং থাও চীনা ভাষা ছাড়া অন্য কোনো ভাষা বোঝেন না। মোবাইলে ট্রান্সলেট করে সাধারণ মানুষের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন তিনি।

সেই তরুণী বলেন, ‘মোবাইলের একটি অ্যাপসের মাধ্যমে এক মাস আগে আমাদের পরিচয় হয়। সেখানে আস্তে আস্তে আমাদের কথা চলে, পরিচয় রূপ নেয় ভালোবাসায়। পরে সে আমাকে বিয়ে করতে বাংলাদেশে আসছে। সে কোনো ধর্মে বিশ্বাস করে না। এখন আইনানুসারে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে আমাকে বিয়ে করবে। বিয়ের পর আমাকে চীনে নিয়ে যাবে।’

চীনা যুবককে জামাতা হিসেবে পাওয়ায় খুশি তরুণীর পরিবারও। তরুণীর মা বলেন, ‘ছেলে চীন থেকে আমাদের বাড়িতে এসেছে। তার সঙ্গে আমার মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক। আমার মেয়েকে সে বিয়ে করবে।’ তরুণীর বাবা বলেন, ‘আমরা ছেলের ব্যবহারে খুব খুশি। সে অনেক ভালো মানুষ। বাজার থেকে বোয়াল মাছ, দেশি মোরগ কিনে রান্না করে খাওয়াইছি।’

সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দীন বলেন, ‘আমি এ ঘটনা শুনেছি। একজন চীনা নাগরিক প্রেমের টানে এখানে এসেছে।’

নাসিরনগর থানার সহকারী পুলিশ পরিদর্শক জাহান-ই-আলম বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে খোঁজখবর নিয়েছি। সব তথ্য যাচাই করেছি। চীনা ওই যুবক বৈধভাবেই বাংলাদেশ এসেছেন। আমরা বলেছি, কোনো ধরনের সমস্যা হলে আমাদের জানাতে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গ্রেপ্তার হয়ে অবাক ডন, বললেন—‘স্যার আমাকে কীভাবে গ্রেপ্তার করলেন’

১ হাজার টাকায় ৪ থ্রি-পিস দেওয়ার বিজ্ঞাপন দেখে নারীদের ভিড়, বেকায়দায় শোরুম কর্তৃপক্ষ

একাত্তরের হত্যাযজ্ঞে সম্পৃক্ততার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন: জামায়াত

সুদানে ‘গণহত্যা’য় আরব আমিরাতের গোপন তৎপরতা ও কলম্বিয়ার ভাড়াটে সেনা

অবশেষে নতুন ঠিকানায় ১০০ সাজাপ্রাপ্ত বন্দী

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত