Ajker Patrika

শার্শায় ১৫ বছরে ১৬০ হত্যা, রাজনৈতিকই বেশি

  • দলীয় প্রভাব বিস্তার, ঘাট-বাঁওড় দখলসহ বিভিন্ন বিরোধে এসব হত্যাকাণ্ড।
  • হত্যার শিকার ৭৭ জনই আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী, বিএনপির ২৬ জন।
  • আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা না হওয়ায় হত্যার মতো অপরাধ বাড়ছে: মানবাধিকারকর্মী
আজিজুল হক, বেনাপোল (যশোর) 
আপডেট : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১: ৫৪
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

আওয়ামী লীগের শাসনামলে গত ১৫ বছরে যশোরের শার্শায় দলীয় প্রভাব বিস্তার, ঘাট-বাঁওড় দখল, মাদক কারবার, পারিবারিক কলহসহ নানান অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে ১৬০ জন হত্যার শিকার হন। এঁদের মধ্যে জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা ও সাংবাদিকও ছিলেন। এ ঘটনায় শার্শা থানায় ৭৩ এবং বেনাপোল বন্দর থানায় ৮৭টি মামলা হয়। অন্তত ৩০০ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্রও দেয় পুলিশ। তবে অধিকাংশ আসামি এখন জামিনে মুক্ত।

এদিকে প্রিয়জন হারানোর ব্যথা এবং বিচার না পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন স্বজনেরা। খুনিরা জামিনে মুক্ত হয়ে ফিরে এসে চোখের সামনে ঘুরে বেড়ানোয় স্থানীয়দের মধ্যে বিরাজ করছে ক্ষোভ। তবে পুলিশ বলছে, অপরাধীদের গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত আছে। এ ছাড়া সহিংসতা এড়াতে তারা মানুষকে সচেতন করছে।

তথ্য বলছে, শার্শা উপজেলাতে হত্যার শিকার ১৬০ জনের মধ্যে ৭৭ জন আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী, বিএনপির ২৬ জন এবং একজন সাংবাদিক। এ ছাড়া মাদক কারবার, পারিবারিক কলহসহ বিভিন্ন অপরাধে ৫৬ নারী, পুরুষ ও শিশু প্রতিপক্ষের হাতে খুন হয়।

জানা যায়, যশোর শহর থেকে ৩৪ কিলোমিটার দূরে ভারত সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত শার্শা উপজেলা। এ অঞ্চলে দেশের সবচেয়ে বড় স্থলবন্দরটি গড়ে ওঠায় বন্দরের নিরাপত্তাজনিত কারণে শার্শা থানার পাশাপাশি ২০০১ সালে বেনাপোল পোর্ট থানা নামে আরেকটি থানা গড়ে ওঠে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বন্দর, ঘাট, বাঁওড় ও গরু খাটাল দখল নিয়ে প্রভাব বিস্তারের দ্বন্দ্বে বেশি হত্যার শিকার হয় দলটির নেতা-কর্মীরা। প্রতিশোধ ও আক্রোশমূলক হত্যা করা হয় বিএনপির অনেক নেতা-কর্মীকে। এ ছাড়া পারিবারিক কলহ ও মাদক কারবার নিয়ে বিরোধেও ঘটেছে হত্যাকাণ্ড।

ভারত সীমান্তবর্তী শার্শার কনেদাহ আতঙ্কের একটি গ্রাম। শুধু বিএনপি করার অপরাধে আক্রোশমূলক গত ১৫ বছরে গ্রামের একই পরিবারের চার বিএনপি নেতা-কর্মী খুন হন। সর্বশেষ খুন হন বিএনপির কর্মী মুকুল। এর আগে বেনাপোলে হত্যা করা হয় তাঁর বাবা বিএনপির কর্মী আব্দুল আজিজকে। পরে আজিজের চাচা নূর ইসলাম, ভাই মুজাম গাজী হত্যার শিকার হন।

হত্যার শিকার কনেদাহ গ্রামের নুর ইসলাম গাইনের ছেলে রোকনুজ্জামান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আমলে বিচার পাইনি। বর্তমান সরকারের কাছে বিচার চাই।’

২০১৫ সালে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে হত্যা করে পুটখালী ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সেক্রেটারি আব্দুল খালেককে। এ ঘটনায় করা মামলার সব আসামি জামিনে ছাড়া পেয়েছেন। খালেকের ছেলে লিটন অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ন্যায়বিচার চান।

২০২২ সালের ১০ মে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার নিয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের হাতে খুন হন আওয়ামী লীগ নেতা মগর আলী; তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে খুন হয় নাতি ইয়াসিন। আসামি গ্রেপ্তার হলেও জামিনে ছাড়া পেয়ে এসে মহড়া দেন ভুক্তভোগীদের বাড়ির সামনে। হত্যাকারীদের দাপটে এখন এলাকাছাড়া ভুক্তভোগী পরিবারের অনেকে।

মগর আলীর ছেলে হাসান বলেন, ‘আসামি গ্রেপ্তার হলেও জামিনে ছাড়া পেয়ে এসে মহড়া দেয় বাড়ির সামনে। হত্যাকারীদের দাপটে বাড়িঘর ছেড়ে এখনো আমরা এলাকাছাড়া। ভিটাবাড়িতে থেকে মা শুধু অসহায়ের মতো পাহারা দেন।’

মানবাধিকার সংস্থা রাইটস যশোরের নির্বাহী পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক বলেন, ‘সামাজিক অবক্ষয় ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা না হওয়ায় হত্যার মতো অপরাধ দিন দিন বাড়ছে।’

শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আলিম জানান, কয়েক দিন হলো তিনি যোগদান করেছেন। তবে ইতিপূর্বে যেসব মামলা হয়েছে, তার অনেক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে। অপরাধমূলক যেকোনো ঘটনা এড়াতে মানুষকে সচেতন করতে কাজ করছেন তাঁরা। একই বক্তব্য বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি রাসেল মিয়ার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে গুলিতে নিহত মামুন শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের প্রধান সহযোগী

আসিফ ক্ষমা না চাইলে অ্যাকশনে যাওয়ার হুমকি ফুটবলারদের

গাজীপুরে রাস্তা আটকে চলাচল করা পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম বরখাস্ত

দিনদুপুরে রাজধানীতে হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা

উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পীরগাছায় যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

পীরগাছা (রংপুর) প্রতিনিধি
আমজাদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
আমজাদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

রংপুরের পীরগাছায় কৈকুড়ী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আমজাদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

পীরগাছা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শফিকুল ইসলাম আকন্দের নেতৃত্বে গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার বকশির দীঘি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ জানায়, ১৩ নভেম্বর লকডাউন সফল করার লক্ষ্যে নাশকতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পরিকল্পনার অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

পীরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রোমেল বড়ুয়া গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সরকারবিরোধী কার্যক্রমের অংশ হিসেবে পরিকল্পিতভাবে লকডাউন বাস্তবায়নে অস্থিরতা সৃষ্টির অভিযোগে আমজাদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এ বিষয় আইনগত প্রক্রিয়া শেষে তাঁকে বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে গুলিতে নিহত মামুন শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের প্রধান সহযোগী

আসিফ ক্ষমা না চাইলে অ্যাকশনে যাওয়ার হুমকি ফুটবলারদের

গাজীপুরে রাস্তা আটকে চলাচল করা পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম বরখাস্ত

দিনদুপুরে রাজধানীতে হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা

উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘নাগরিক সেবা’ প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হলো ডিএনসিসির আরও দুটি সেবা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ডিএনসিসির সেবা ইন্টিগ্রেশনের লক্ষ্যে ডিএনসিসি ও আইসিটি বিভাগের মধ্যে সমঝোতা স্বাক্ষরিত হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
ডিএনসিসির সেবা ইন্টিগ্রেশনের লক্ষ্যে ডিএনসিসি ও আইসিটি বিভাগের মধ্যে সমঝোতা স্বাক্ষরিত হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

‘নাগরিক সেবা’ প্ল্যাটফর্মে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) সেবা ইন্টিগ্রেশনের লক্ষ্যে ডিএনসিসি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। আজ সোমবার (১০ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁও আইসিটি ভবনে এ সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়।

ডিএনসিসির পক্ষে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন করপোরেশনের সচিব মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের পক্ষে স্বাক্ষর করেন যুগ্ম সচিব মো. মজিবর রহমান।

নতুন এই সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে ডিএনসিসির হোল্ডিং ট্যাক্স ও ট্রেড লাইসেন্স-সম্পর্কিত সেবাগুলো ‘নাগরিক সেবা’ প্ল্যাটফর্মে অন্তর্ভুক্ত হবে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে নগরবাসী আরও দ্রুত, কার্যকর ও স্বচ্ছ নাগরিক সেবা পাবেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ। বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, সরকারি সেবায় দুর্নীতি রোধ ও নাগরিক সুবিধা বাড়াতে ডিজিটাল সেবার বিকল্প নেই। নাগরিক সেবা ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে হিউম্যান ইন্টারেকশন কমিয়ে আনলে মানুষ দ্রুত ও ঝামেলামুক্তভাবে সেবা নিতে পারবে। আজকের এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর সরকারি সেবাকে আরও সহজ ও স্বচ্ছ করে তুলবে।

বর্তমানে ‘নাগরিক সেবা’ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে রাজধানীতে ছয়টি কেন্দ্র থেকে ৪৬৫টি সরকারি সেবা দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে ভূমিসেবা, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন, পাসপোর্টসেবা, বিআরটিএ সেবা এবং বিভিন্ন ভাতার আবেদন সেবা উল্লেখযোগ্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে গুলিতে নিহত মামুন শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের প্রধান সহযোগী

আসিফ ক্ষমা না চাইলে অ্যাকশনে যাওয়ার হুমকি ফুটবলারদের

গাজীপুরে রাস্তা আটকে চলাচল করা পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম বরখাস্ত

দিনদুপুরে রাজধানীতে হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা

উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পশুর নদে পড়ে নিখোঁজ নারী পাইলটের লাশ উদ্ধার

মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি
নিহত রিয়ানা আবজাল। ছবি: সংগৃহীত
নিহত রিয়ানা আবজাল। ছবি: সংগৃহীত

মোংলার পশুর নদে পড়ে নিখোঁজ হওয়া আমেরিকাপ্রবাসী ও বিমানবাহিনীর সাবেক পাইলট নারী পর্যটক রিয়ানা আবজালের (২৮) মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ সোমবার সকাল ৭টার দিকে জয়মনিরঘোলের সরকারি খাদ্যগুদামের জেটি এলাকার পশুর নদ থেকে ভাসমান এ লাশটি উদ্ধার করে কোস্ট গার্ড। পরে লাশ চাঁদপাই নৌ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।

কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক জানান, গত শনিবার ১৩ জন পর্যটক সুন্দরবনের করমজল ভ্রমণের উদ্দেশ্যে জালি বোটে যাত্রা শুরু করেন। বোটটি বেলা ১টার দিকে সুন্দরবনের ঢাংমারি খালসংলগ্ন এলাকায় পৌঁছালে প্রবল ঢেউয়ে বোটটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। এরপর স্থানীয় বোটের সহায়তায় ১২ জন ট্যুরিস্টকে জীবিত উদ্ধার করা হলেও একজনকে (রিয়ানা আবজাল) উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

পরবর্তীতে বোটে থাকা এক ব্যক্তি বিষয়টি কোস্ট গার্ডকে অবগত করেন। তার ভিত্তিতে কোস্ট গার্ডের দুটি উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে। ৩ দিনের ধারাবাহিক অনুসন্ধানের পর সোমবার সকাল ৭টার দিকে মোংলার জয়মনি এলাকার সাইলোর জেটিসংলগ্ন পশুর নদ থেকে ভাসমান অবস্থায় নিখোঁজ পর্যটক রিয়ানা আবজালের মৃতদেহ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।

জানা গেছে, রিয়ানা আবজাল তাঁর বাবা-মা, ভাই-বোন ও অন্যান্য আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সুন্দরবন ভ্রমণে এসেছিলেন। রিয়ানার বাবা ঢাকার উত্তরার বাসিন্দা। তিনি পেশায় বিমানবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার। আর রিয়ানা বিমানবাহিনীর পাইলট ছিলেন। স্বামীসহ বসবাস করতেন আমেরিকায়। গত মাসের মাঝামাঝি আমেরিকা থেকে ঢাকায় আসেন রিয়ানা। ২০২১ সালে রিয়ানার বিয়ে হয় আমেরিকাপ্রবাসী স্বামীর সঙ্গে। তাঁদের কোনো সন্তান ছিল না।

এদিকে স্ত্রী নিখোঁজের খবর পাওয়ার পর গতকাল রোববার স্বামী তৌহিদুল ইসলাম ঢাকায় আসেন। রিয়ানার বাবা আবুল কালাম আজাদ বলেন, রিয়ানাকে কুমিল্লার লাঙ্গলকোটে শ্বশুরবাড়িতে দাফন করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে গুলিতে নিহত মামুন শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের প্রধান সহযোগী

আসিফ ক্ষমা না চাইলে অ্যাকশনে যাওয়ার হুমকি ফুটবলারদের

গাজীপুরে রাস্তা আটকে চলাচল করা পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম বরখাস্ত

দিনদুপুরে রাজধানীতে হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা

উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মানুষের ডাকে জঙ্গল থেকে ছুটে আসে শিয়াল

কাপাসিয়া (গাজীপুর) প্রতিনিধি 
কৃষক গিয়াস উদ্দিন ডাক দিলেই ছুটে আসে ‘লালু’। ছবি: আজকের পত্রিকা
কৃষক গিয়াস উদ্দিন ডাক দিলেই ছুটে আসে ‘লালু’। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার সূর্যনারায়ণপুর গ্রামের কাওলারটেক এলাকায় কৃষক গিয়াস উদ্দিন (৪০) ও এক শিয়ালের মধ্যে গড়ে উঠেছে এক অনন্য বন্ধুত্বের সম্পর্ক। মানুষ ও বন্য প্রাণীর পারস্পরিক ভয়ের দেয়াল পেরিয়ে বিশ্বাসের এই ব্যতিক্রমী বন্ধন এখন এলাকায় আলোড়ন তুলেছে।

পেশায় কৃষক গিয়াস উদ্দিন স্ত্রী-সন্তানদের থেকে আলাদা নির্জন পরিবেশে বসবাস করেন। গরু, ছাগল, মুরগি, ভেড়ার পাশাপাশি তাঁর বিশেষ সঙ্গী এখন একটি শিয়াল, যার নাম তিনি দিয়েছেন ‘লালু’। প্রায় এক বছর আগে গিয়াস উদ্দিনের এক বন্ধু বনের ভেতর থেকে একটি সদ্য চোখ ফোটা শিয়াল ছানাটি পরিত্যক্ত অবস্থায় খুঁজে পান। সেই ছানাটিকে বাড়িতে এনে লালনপালনের দায়িত্ব নেন গিয়াস উদ্দিন। এর পর থেকেই লালু তাঁর জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ওঠে।

এখন লালুর বয়স এক বছরের বেশি। সে রান্না করা ভাত, তরকারি, মাংস, পাউরুটি, বিস্কুট—সবই খেতে পারে। দিনের অধিকাংশ সময় লালু থাকে গিয়াস উদ্দিনের বাড়ির উঠানে কিংবা ঘরের ভেতরে। মাঝে মাঝে বনে চলে গেলেও গিয়াস উদ্দিনের ডাক শুনলেই ছুটে ফিরে আসে।

গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘লালুকে ছোট থেকে লালন করছি। তার প্রতি মায়া জন্মেছে। মনে হয়, যেন সে আমার বন্ধু। ফসলের খেতে কাজ করতে গেলে সে পাশে বসে থাকে। আমি যেখানেই যাই, সে আমাকে খুঁজে বের করে সেখানে হাজির হয়।’

প্রতিবেশী মো. আজিজুল বলেন, ‘দৃশ্যটা সত্যিই অসাধারণ। মানুষের এত কাছে এসে বন্য প্রাণীর এমন আচরণ বিরল। শিয়ালটি গিয়াস উদ্দিনকে বিশ্বাস করে বলেই সে মানুষের সঙ্গেই থাকে।’

তবে বন্য প্রাণীকে এত কাছাকাছি রাখা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ রয়েছে। কাপাসিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এ কে এম আতিকুর রহমান বলেন, ‘শিয়াল রেবিস ভাইরাস বহন করতে পারে, যা জলাতঙ্কের মতো মারাত্মক রোগ সৃষ্টি করতে পারে। তাই এ ধরনের প্রাণীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বিপজ্জনক। এ ছাড়া বন্য প্রাণী সংরক্ষণের দিক থেকেও বন বিভাগকে বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত।’

প্রকৃতি ও মানবতার এই অদ্ভুত সহাবস্থান এখন সূর্যনারায়ণপুর গ্রামে কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে। কেউ একে দেখছেন এক অসাধারণ বন্ধুত্বের গল্প হিসেবে, কেউবা ভাবছেন এর সম্ভাব্য ঝুঁকি নিয়ে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাজধানীতে গুলিতে নিহত মামুন শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের প্রধান সহযোগী

আসিফ ক্ষমা না চাইলে অ্যাকশনে যাওয়ার হুমকি ফুটবলারদের

গাজীপুরে রাস্তা আটকে চলাচল করা পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম বরখাস্ত

দিনদুপুরে রাজধানীতে হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা

উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত