Ajker Patrika

তিউনিসিয়া উপকূলে নৌকাডুবি: নিহত ৮ বাংলাদেশির তিনজনই গোপালগঞ্জের

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১: ৪৯
তিউনিসিয়া উপকূলে নৌকাডুবি: নিহত ৮ বাংলাদেশির তিনজনই গোপালগঞ্জের

নৌ-পথে ইতালি যাওয়ার সময় তিউনিসিয়ায় নৌকাডুবিতে মৃত্যুবরণ করা আট বাংলাদেশির মধ্যে তিনজনের বাড়িই গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলায়। 

তাঁরা হলেন—উপজেলার রাগদী ইউনিয়নের বড়দিয়া গ্রামের দাদন মজুমদারের ছেলে রিফাত মাতুব্বর (১৮), উপজেলার দিগনগর ইউনিয়নের ফতেপট্টি গ্রামের আবুল কাশেম শেখের ছেলে রাসেল শেখ (১৮) এবং উপজেলার গোহালা ইউনিয়নের গঙ্গারামপুরের গয়লাকান্দি গ্রামের মো. পান্নু শেখের ছেলে ইমরুল কায়েস আপন (২৪)। 

ইমরুল কায়েস আপনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন ইমরুল কায়েস আপন। গত ৯ মাস আগে তাঁর বাবা স্ট্রোক করেন। লেখাপড়ার খরচ জোগাতে না পেরে ৬ মাস আগে বাড়িতে চলে আসে আপন। বাবার চিকিৎসা ও পরিবারের হাল ধরতে অবৈধ পথে ইতালি যেতে মনস্থির করেন। এ বিষয়ে আপন ও তাঁর পরিবার লিবিয়া প্রবাসী দালাল রহিমের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ১১ লাখ টাকায় ইতালি পাঠানোর চুক্তি হয়। 

চুক্তি অনুযায়ী প্রথমে ২০২৩ সালের ৬ ডিসেম্বর বাড়ি থেকে লিবিয়ার উদ্দেশ্যে বের হন আপন। লিবিয়াতে গিয়ে ওই দালালের কাছে আশ্রয় নেন। সেখানে অবস্থানকালে ২০২৪ সালের ৮ জানুয়ারি ১১ লাখ টাকা দালালের কথা মতো একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রেরণ করেন আপনের বাবা। টাকা পাওয়ার পরে আপনকে ইতালি পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করে দালাল। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকেলে মুঠোফোনে আপন তাঁর বাবাকে জানায়, বাড়ির সবাই যেন তাঁর জন্য দোয়া করে। কিছু সময় পরে নৌকাযোগে ইতালির উদ্দেশ্যে রওনা করবে। সেখানে পৌঁছাতে পারলে পরিবারের সঙ্গে কথা হবে তাঁর। কিন্তু ইতালি যাওয়ার পথে তিউনিসিয়ায় নৌকাডুবিতে প্রাণ হারান আপন। 

আপনের বাড়িতে রয়েছে অসুস্থ বাবা-মা ও ৫ বছরের বোন মিম। আপনের মৃত্যুর খবরে বাড়িতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। শুধু আপন নন; নিহত অন্যদের বাড়িতেও চলছে শোকের মাতম। নৌকাডুবিতে মৃত্যুর খবর শুনে নিহতদের বাড়িতে ভিড় করছেন এলাকাবাসী। 

নিহত ইমরুল কায়েস আপনের অসুস্থ বাবা মো. পান্নু শেখ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এসএসসি ও এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছিল আমার ছেলে। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করত। অভাবের কারণে লেখাপড়া বাদ দিয়ে বাড়ি চলে আসে। আত্মীয়-স্বজন অনেকে ইতালিতে গিয়ে ভাগ্য পরিবর্তন করেছে। এ কারণে আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে ধার-দেনা করে ১১ লাখ টাকা গুছিয়ে, আমি আপনকে ইতালিতে পাঠাতে চেয়েছি। এ জন্য আমার আত্মীয়র মাধ্যমে লিবিয়া পাঠাই। সেখান থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি মোবাইলে আমার সঙ্গে কথা হয়। সে কিছু সময় পরে ইতালির দিকে রওনা করবে এ জন্য দোয়া চায়। এরপর আর আমার সঙ্গে কোনো কথা হয়নি। আমি আমার ছেলেকে ফিরে পেতে চাই।’ 

আপনের বাবা বলেন, ‘আমার অনেক আত্মীয়-স্বজন আছে যারা এভাবে ইতালিতে গিয়েছে। এতে ভয় আছে জানি; তবে ভাগ্যের ওপর ভরসা করেছিলাম—যদি ভাগ্যে থাকে তাহলে ভালো দিন ফিরবে আমাদের। এ জন্য ছেলেকে পাঠিয়েছি।’ 

প্রতিবেশী লিলি বেগম বলেন, ‘আপন ভালো ছেলে ছিল, লেখাপড়ায়ও ভালো ছিল। এদের বাড়িতে কান্নাকাটি শুনে আইছি। শুনেছি নৌকা ডুইবগে গেছে। বাইচে আছে না মইরে গেছে কইতে পারি না। কেউ কয় মইরে গেছে, কেউ কয় হাসপাতালে আছে কেউ কয় খোঁজ পাওয়া যায় নাই।’ 

আপনের প্রতিবেশী এনামুল মাতুব্বর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আপন কখনো মাথা উঁচু করে কথা বলেনি। অভাবের কারণেই সে বিদেশে পাড়ি দেছে। কিন্তু আল্লাহ তায়ালা কেন যে ভাগ্যে এমনটা রাখল। তবে অবৈধভাবে যেন কেউ বিদেশে না যায় সেই কথাই বলব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পানিতে ডুবে প্রাণ গেল মামা-ভাগনের

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে পুকুরে ডুবে শাহবাব মন্ডল (আড়াই বছর) ও আবু তোহা মন্ডল (৩) নামের দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের যাদুরচর নতুন গ্রাম এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

শাহবাব মন্ডল উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের ধনারচর নতুন গ্রামের শাহজাহান মন্ডলের ছেলে এবং আবু তোহা মন্ডল একই গ্রা‌মের আবু তালেবের ছেলে। এই দুই শিশু সম্পর্কে মামা-ভাগনে।

পরিবারের বরাত দিয়ে যাদুরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সরবেশ আলী জানান, বুধবার সকালে ওই দুই শিশু তালেব মন্ডলের বাড়িতে খেলা করছিল। এ সময় সবার অজান্তে তারা বাড়ির পা‌শে পুকুরের পানিতে পড়ে যায়। স্বজনেরা পুকুর থে‌কে দুই শিশু‌কে উদ্ধার করে হাসপাতালে নি‌য়ে যান। দা‌য়িত্বরত চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।

খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক একই এলাকার বাসিন্দা ও কুড়িগ্রাম-৪ আসনের বিএনপির মনোনীত সংসদ সদস‌্য প্রার্থী আজিজুর রহমান ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তি‌নি শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।

রৌমারী থানার উপপ‌রিদর্শক শাহ‌নেওয়াজ হো‌সেন ব‌লেন, খবর পে‌য়ে ঘটনাস্থ‌লে পু‌লিশ পাঠা‌নো হ‌য়ে‌ছে। সহকারী ক‌মিশনার (ভূ‌মি) ঘটনাস্থ‌লে গি‌য়ে‌ছেন। দুই শিশুর মৃত‌্যুর ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনি ব‌্যবস্থা নেওয়া হ‌বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ১৩
নিহত লায়লা আফরোজ ও নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ। ছবি: সংগৃহীত
নিহত লায়লা আফরোজ ও নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ। ছবি: সংগৃহীত

‎রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যার ঘটনায় গৃহকর্মী আয়েশাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার দুপুরে ঝালকাঠি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

‎গ্রেপ্তারের বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন তেজগাঁও বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন।

‎মামুন বলেন, গৃহকর্মী আয়েশাকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঝালকাঠি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গত সোমবার সকালে শাহজাহান রোডের ১৪ তলা একটি আবাসিক ভবনের সপ্তম তলায় লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তাঁর মেয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে (১৫) ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।

মা-মেয়ে হত্যায় অভিযুক্ত গৃহকর্মী আয়েশা। ছবি: আজকের পত্রিকা
মা-মেয়ে হত্যায় অভিযুক্ত গৃহকর্মী আয়েশা। ছবি: আজকের পত্রিকা

গতকাল তাঁদের মরদেহ নাটোরে দাফন করা হয়েছে। মামলার এজাহারে বাসা থেকে মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র খোয়া যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।

ভবনের ভেতরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, হত্যাকাণ্ডের পর এক নারী স্কুলড্রেস পরে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। চার দিন আগে আয়েশা পরিচয় দিয়ে ওই বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেওয়া তরুণী (২০) এই জোড়া খুনে জড়িত বলে সন্দেহ স্বজনদের। ঘটনার পর থেকে ওই তরুণী পলাতক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি 
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে মজিরুলের নেতৃত্বে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে মজিরুলের নেতৃত্বে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

জীবন আছে যার, তার মৃত্যু অনিবার্য। মৃত্যুর পর মানুষের শেষ ঠিকানা কবর। মৃতদেহ গোসল করিয়ে কাফন পরানো হয়, জানাজা শেষে তাকে শায়িত করা হয় চিরনিদ্রার ঘরে। এই কবর খোঁড়ার দায়িত্বটি গ্রামের কিছু মানুষ বহু বছর ধরে স্বেচ্ছায়, বিনা পারিশ্রমিকে পালন করে আসছেন, যাঁরা সবার কাছে ‘গোরখোদক’ নামে পরিচিত। আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় তাঁরা করে থাকেন এই কাজ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গোরখোদকেরা কোনো পারিশ্রমিক নেন না। গ্রামের যে কেউ মারা যাক, নিজেদের ব্যস্ততা ফেলে তাঁরা ছুটে আসেন কবর খুঁড়তে। তাঁদের এই মানবিক কাজের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে গ্রামের লোকেরা দোয়া করেন—আল্লাহ যেন তাদের সুস্থ ও ভালো রাখেন।

দেবীপুর গ্রামের বাসিন্দা গোরখোদক মজিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ৫৫ বছর ধরে কবর খুঁড়ছি। যত দিন সুস্থ থাকব, এই কাজ চালিয়ে যাব। আমাদের গ্রাম ছাড়াও অন্য গ্রাম থেকে কেউ ডাকলে সেখানেও যাই। ছোটবেলায় ওস্তাদের কাছে ডালি ধরেই শিখেছি। গরিব মানুষ, মাঠে কাজ করি; কিন্তু কেউ মারা গেলে দ্বিধা করি না—এই কাজ আমার নেশায় পরিণত হয়েছে।’

মজিরুল আরও জানান, এখন তিনি তরুণদেরও এই কাজ শেখাচ্ছেন।

গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

গোরখোদক শাকের আলী বলেন, ‘আমরা নিঃস্বার্থভাবে কাজ করি। কখনো কোনো টাকা নিই না। যেখানেই থাকি, গ্রামের কারও মৃত্যুর সংবাদ শুনলে দ্রুত কবর খুঁড়তে চলে আসি।’

গোরখোদক ফুয়াদ হোসেন বলেন, ‘অন্য গ্রাম থেকে ডাক এলেও আমরা যাই। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই করি এই কাজ। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’

স্থানীয় বাসিন্দা শাজাহান আলী বলেন, ‘কবর খোঁড়া বড় দায়িত্বের কাজ। গ্রামের এসব মানুষ খবর পেলেই দৌড়ে আসে। আমরা তাদের জন্য দোয়া করি।’

মাওলানা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘মৃত ব্যক্তির জন্য কবর খোঁড়া নিঃসন্দেহে সওয়াবের কাজ। হাদিসে এসেছে—যাঁরা কবর খোঁড়েন, আল্লাহ তাদের জন্য জান্নাতে ঘর নির্মাণ করবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে কারখানার ফটকের সামনে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকেরা। আন্দোলনের মুখে কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রধান ফটক তালাবদ্ধ করে সটকে পড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে শিল্প ও থানা-পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসেছেন। আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের সাইটালিয়া গ্রামে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানায় এই ঘটনা ঘটে।

কারখানার নারী শ্রমিক মিনারা আক্তার বলেন, ‘অক্টোবর ও নভেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করে নাই। এক মাসের বেতন না পেলে আমাদের চলা খুবই কঠিন হয়। আমাদের নাওয়া-খাওয়া বন্ধ হয়। আর সেখানে কারখানা কর্তৃপক্ষ দুই মাসের বেতনভাতা বকেয়া রেখেছে। আজ সকালে শ্রমিকেরা জড়ো হলে তারা পালিয়ে যায়।’

মিন্টু নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘এই কারখানায় আমরা তিন বছর ধরে চাকরি করছি। আমাদের বেতনের বাইরে কোনো সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে না। তবু পেটের দায়ে চাকরি করি। দুই মাসের বেতন বকেয়া। আমাদের তো পেট আছে, সন্তান-সংসার আছে। এক মাস দোকান বাকি পরিশোধ করতে না পারলে পরের মাসে আর দোকানি বাকি দেয় না। আমরা কী অবস্থায় আছি, একবার ভাবুন। বেতন পরিশোধ না করে তারা পালিয়ে গেছে।’

আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

মেহেদী হাসান বলেন, ‘এত দিন ধরে ঋণ করে বলে-কয়ে দোকান থেকে বাকি নিয়ে চলছি। আর পারছি না। এখন দোকান বাকি দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। অক্টোবর মাসের বকেয়া বেতন নিয়ে কমপক্ষে ১০টি তারিখ দিছে। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ বেতন পরিশোধ করেনি। শেষে আজ বেতন পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু তারা কারখানা ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে গেছে।’

কারখানার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. বুলবুল হাসান বলেন, ‘ব্যাংকের সমস্যার কারণে বেতন-ভাতা পরিশোধ করা যাচ্ছে না। আশা করি, আজকের মধ্যে নভেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করতে পারব।’ বিনা নোটিশে কারখানার ফটক কেন তালাবদ্ধ? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমি বলতে পারব না।’

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাছির আহমদ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত