Ajker Patrika

গাজীপুরের শ্রীপুর: শীতলক্ষ্যার চর দখল করে পাকা স্থাপনা

  • চরের অন্তত দুই বিঘা জমি ঘিরে প্রাচীর নির্মাণের মাধ্যমে দখলচেষ্টার অভিযোগ
  • স্থানীয় ইউপি সদস্য বলছেন, সরকারের প্রয়োজনে জমি ছেড়ে দেওয়া হবে
  • তদন্ত করে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন
রাতুল মণ্ডল, (শ্রীপুর) গাজীপুর
আপডেট : ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৮: ৫৪
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গোসিঙ্গা ইউনিয়নের গোসিঙ্গা বাজারের পাশে শীতলক্ষ্যার চরে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গোসিঙ্গা ইউনিয়নের গোসিঙ্গা বাজারের পাশে শীতলক্ষ্যার চরে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের শ্রীপুরে শীতলক্ষ্যা নদীর চরের অন্তত দুই বিঘা জমি দখলচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এরই মধ্যে চরের এক পাশে ১০ ফুট উঁচু সীমানাপ্রাচীর নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। উপজেলার গোসিঙ্গা ইউনিয়নের গোসিঙ্গা বাজারের পাশের চরে এই স্থাপনা নির্মাণ করা হয়।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, গোসিঙ্গা বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া শীতলক্ষ্যা তীরের অন্তত দুই বিঘা জমি ঘিরে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের কাজ করেন শ্রমিকেরা। পাশে রাখা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের নির্মাণসামগ্রী। প্রাচীরঘেরা জমির একপাশে খেয়াঘাট রয়েছে। সেখানে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অস্থায়ী যাত্রীছাউনি করা হয়েছে। অপর পাশে ভূমিহীন এক ব্যক্তি কলাগাছ রোপণ করেছেন। যদিও খাসজমিতে সবুজায়নের ক্ষেত্রে আইনি কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই বলে জানিয়েছেন নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান মনজুর আহমেদ চৌধুরী।

প্রাচীরের কাজ করা নির্মাণশ্রমিকেরা জানান, ওই জমি ঈদগাহ মাঠ হিসেবে ব্যবহার হবে। এ জন্য তাঁদের এই স্থাপনা নির্মাণ করতে বলা হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, চরের যে অংশ দখল হচ্ছে, তা বর্ষার সময় নদীর পানি ছাপিয়ে তলিয়ে যায়। তাঁদের অভিযোগ, গোসিঙ্গা বাজারে পাশে মাদ্রাসা মাঠে একটি ঈদগাহ এবং উত্তর পাশে বাজার ঘেঁষে আরেকটি ঈদগাহ রয়েছে। বাজারের পাশে দুটি ঈদগাহ থাকার পরও একটি মহল চর দখলের জন্য এই স্থাপনা নির্মাণ করছে।

গোসিঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা সোহরাব হোসেন বলেন, ‘আমাদের গোসিঙ্গা বাজার ঘেঁষে দুই পাশে দুটি বড় ঈদগাহ মাঠ রয়েছে। নদীর চরে ঈদগাহ মাঠ কেন করা হচ্ছে, কারা করছে, তার কিছুই জানি না।’

গোসিঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি জমিতেই তো বেশির ভাগ মাঠ হয়। আমাদের তো কোনো ঈদগাহ মাঠ নেই, তাই করা হচ্ছে। যদি সরকার নিয়ে যায়, আমরা ছেড়ে দেব। ঈদগাহ মাঠ করার জন্য উপজেলা পরিষদ থেকে একটা বরাদ্দ দেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তা আটকে গেছে।’

রিভার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মো. মনির হোসেন বলেন, নদী বা চর সরকারি সম্পদ। এখানে সবার অবাধ বিচরণ থাকবে। কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। শুধু বনায়ন করা যাবে, তা-ও সরকারি ব্যবস্থাপনায়।

নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান মনজুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘নদীর চরে কোনো অবস্থাতেই স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। চর রক্ষায় সরকারি ব্যবস্থাপনায় শুধু সবুজায়ন করতে পারবে। নদীর শ্রেণিভুক্ত জমিতে স্থাপনা নির্মাণ কোনোভাবেই আইন সমর্থন করে না। এটা দখলের কৌশল।’

শ্রীপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সজীব আহমেদ বলেন, ‘নদীর চর দখল করে স্থাপনা নির্মাণের সুযোগ নেই। চরে ঈদগাহ মাঠ নির্মাণের অনুমতি নেই। এ বিষয়ে তদন্ত করে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত