Ajker Patrika

সুন্দরগঞ্জে সেচ পাম্পের বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন, ক্ষতির মুখে ধানের আবাদ

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
আপডেট : ১৫ মে ২০২৪, ১৪: ০১
সুন্দরগঞ্জে সেচ পাম্পের বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন, ক্ষতির মুখে ধানের আবাদ

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে বিভিন্ন অভিযোগে কয়েকটি সেচ পাম্পের বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ অফিস। এতে পানির অভাবে প্রায় ২০০ বিঘা জমির বোরো ধানের আবাদ ক্ষতির মুখে পড়েছে। 

উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ অফিস জানায়, বিভিন্ন অভিযোগে সর্বশেষ সাতটি সেচ পাম্পের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী বিদ্যুৎ সংযোগ না নিয়ে অনেকে সেচ পাম্প চালাচ্ছেন। সেচ পাম্পের লাইসেন্স ও বৈধতা না থাকলে যেকোনো মুহূর্তে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে। 

কৃষকদের দাবি, সেচ পাম্পের মালিকেরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে একে অপরের বিরুদ্ধে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ করায় সেচ পাম্পের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে বিদ্যুৎ অফিস। যেসব এলাকায় সেচ পাম্পের বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে, সেখানে প্রায় ২০০ বিঘা জমিতে ধানের আবাদ করা হয়েছে। খেতে ঠিকমতো সেচ দিতে না পারলে ফলন ভালো হবে না। এতে তাঁদের লোকসানে পড়তে হবে। 

সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নের দক্ষিণ রাজীবপুর ছাতানের ডাঙ্গী, রামজীবনের সূবর্ণদহ ও হরিপুর ইউনিয়নের চারিতাবাড়ী বিলে গিয়ে দেখা গেছে, দুই শতাধিক বিঘা জমির ধান আধা পাকা অবস্থায় রয়েছে। ধান কাটতে প্রায় ২০ দিনের মতো সময় লাগবে। ধানের ভালো ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কিন্তু শেষ সময়ে এসে সেচ পাম্পের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় কৃষকেরা ধানের জমিতে পর্যাপ্ত পানি দিতে পারছেন না। যদিও কৃষি বিভাগ বলছে, ভালো ফলনের জন্য, ধানের জমিতে নিয়মিত সেচ দিতে হবে। 

দক্ষিণ রাজীবপুর গ্রামের ছাতানের ডাঙ্গী বিল এলাকার ফরিদ মিয়া বলেন, ‘আলু তুলে উচ্চফলনশীল তিন বিঘা জমিতে ধান লাগানো হয়েছে। আমার জমিতে ধান কাটতে আরও সময় লাগবে ১৫ থেকে ২০ দিন। স্থানীয় দুই সেচ পাম্পের মালিকের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে বিদ্যুৎ অফিস থেকে সংযোগ কেটে দিয়ে যায়। প্রায় ১০ দিন জমিতে পানি দিতে পারি নাই। ধানে পানি ঠিকমতো না দিলে শুধু চিটা হবে।’ 

ছাতানের ডাঙ্গী বিল এলাকার কৃষক মাহাবুর রহমান বলেন, ‘পাঁচ বিঘা হিরা ধান লাগাইছি। প্রতিদিন বিদ্যুৎ অফিস থেকে লাইন কাটতে আসে। আর হামরা সোক কৃষকগুলো দিয়ে বাধা দিই। কন তো তোমরা, এলা একটি হুরুস করে লাইন কোনা কাটে দিয়ে গেলে তোমরাই কন তো এই কলাপাকা ধানগুলো ঘরোত তুলমো ক্যামনে?’ 

রামজীবন সুবর্ণদহের কৃষক মো. জহুরল ইসলাম টুটুল বলেন, ‘এক মাস ধরে সেচ পাম্পের বিদ্যুতের লাইন কেটে নিয়ে গেছে। মোটরের মালিক শ্যালোমেশিন দিয়ে জমিতে পানি ঠিকমতো দেয় না। তেলের দাম বেশি, তাই জোরও করা যায় না। শরিষা তুলে জমি লাইছি এই জন্য ধান নমলা হইছে। ধানের ফলন ভালো না হলে সারাটা বছর খাবার নিয়ে কষ্টে ভুগতে হবে।’ 

রামজীবন সুবর্ণদহ এলাকার সেচ পাম্পের মালিক পরিমল চন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘বিদ্যুৎ অফিসের এক ইলেকট্রিশিয়ানের মাধ্যমে আমার কাছে ৫০ হাজার টাকা চাওয়া হয়, আমি দিই নাই। আমার লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ বে লাইন কোনা কাটে দেয়। কাগজের মেয়াদ যে শেষ ধান গাড়ার আগে বললেই তো কাগজ ঠিক নিলাম হয়, না হয় এবার স্কিম চালালাম। অর্ধেক সময়ে এসে বিদ্যুতের লাইন কাটে দিয়ে আমার ব্যাপক ক্ষতি করা হয়েছে।’ 

সুন্দরগঞ্জের একটি মাঠে ধানের আবাদ। ছবি: আজকের পত্রিকাদক্ষিণ রাজীবপুর ছাতানের ডাঙ্গী এলাকার সেচ পাম্পের মালিক মো. মাইদুল ইসলাম বলেন, ‘বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন ঘুষের টাকা চেয়ে না পাওয়ায় আমাদের সঙ্গে তাঁরা অত্যাচার শুরু করছে। একদিকে লাইন কাটা নিয়ে চিন্তা, অন্যদিকে জমিতে ঠিকমতো পানি না দেওয়ার কারণে কৃষকেরা হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। ধানের ফলন ভালো না হলে বা কোনো ধরনের ক্ষতি হলে ক্ষতিপূরণ চাচ্ছেন কৃষকেরা।’ 

সুন্দরগঞ্জ-১ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মো. আব্দুল বারী বলেন, ‘উপজেলায় ৩ হাজার ৪০০-এর মতো সেচ পাম্পে বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া আছে। অনেকে অবৈধভাবে সেচ পাম্প চালাচ্ছে। যাদের নিয়ে অভিযোগ পাচ্ছি, তাদের সংযোগ বন্ধ করা হচ্ছে। কেউ নিয়মনীতির বাইরে সেচ পাম্প চালু করলে আর আমাদের চোখে ধরা পড়লে সংযোগ বন্ধ করব। এতে ফসলের কোনো সমস্যা হলে আমার করার কিছু নেই।’ 

এ বিষয়ে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সেচ পাম্প-সংক্রান্ত বিভিন্ন অভিযোগ আমার কাছে এসেছে। ডিজিএম সাহেবকে বলে দিচ্ছি, কোনো কৃষকের ক্ষতি করে যেন বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা না হয়।’ কমিটি কর্তৃক যাচাই-বাছাই করে সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পানিতে ডুবে প্রাণ গেল মামা-ভাগনের

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে পুকুরে ডুবে শাহবাব মন্ডল (আড়াই বছর) ও আবু তোহা মন্ডল (৩) নামের দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের যাদুরচর নতুন গ্রাম এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

শাহবাব মন্ডল উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের ধনারচর নতুন গ্রামের শাহজাহান মন্ডলের ছেলে এবং আবু তোহা মন্ডল একই গ্রা‌মের আবু তালেবের ছেলে। এই দুই শিশু সম্পর্কে মামা-ভাগনে।

পরিবারের বরাত দিয়ে যাদুরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সরবেশ আলী জানান, বুধবার সকালে ওই দুই শিশু তালেব মন্ডলের বাড়িতে খেলা করছিল। এ সময় সবার অজান্তে তারা বাড়ির পা‌শে পুকুরের পানিতে পড়ে যায়। স্বজনেরা পুকুর থে‌কে দুই শিশু‌কে উদ্ধার করে হাসপাতালে নি‌য়ে যান। দা‌য়িত্বরত চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।

খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক একই এলাকার বাসিন্দা ও কুড়িগ্রাম-৪ আসনের বিএনপির মনোনীত সংসদ সদস‌্য প্রার্থী আজিজুর রহমান ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তি‌নি শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।

রৌমারী থানার উপপ‌রিদর্শক শাহ‌নেওয়াজ হো‌সেন ব‌লেন, খবর পে‌য়ে ঘটনাস্থ‌লে পু‌লিশ পাঠা‌নো হ‌য়ে‌ছে। সহকারী ক‌মিশনার (ভূ‌মি) ঘটনাস্থ‌লে গি‌য়ে‌ছেন। দুই শিশুর মৃত‌্যুর ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনি ব‌্যবস্থা নেওয়া হ‌বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ১৩
নিহত লায়লা আফরোজ ও নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ। ছবি: সংগৃহীত
নিহত লায়লা আফরোজ ও নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ। ছবি: সংগৃহীত

‎রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যার ঘটনায় গৃহকর্মী আয়েশাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার দুপুরে ঝালকাঠি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

‎গ্রেপ্তারের বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন তেজগাঁও বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন।

‎মামুন বলেন, গৃহকর্মী আয়েশাকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঝালকাঠি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গত সোমবার সকালে শাহজাহান রোডের ১৪ তলা একটি আবাসিক ভবনের সপ্তম তলায় লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তাঁর মেয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে (১৫) ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।

মা-মেয়ে হত্যায় অভিযুক্ত গৃহকর্মী আয়েশা। ছবি: আজকের পত্রিকা
মা-মেয়ে হত্যায় অভিযুক্ত গৃহকর্মী আয়েশা। ছবি: আজকের পত্রিকা

গতকাল তাঁদের মরদেহ নাটোরে দাফন করা হয়েছে। মামলার এজাহারে বাসা থেকে মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র খোয়া যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।

ভবনের ভেতরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, হত্যাকাণ্ডের পর এক নারী স্কুলড্রেস পরে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। চার দিন আগে আয়েশা পরিচয় দিয়ে ওই বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেওয়া তরুণী (২০) এই জোড়া খুনে জড়িত বলে সন্দেহ স্বজনদের। ঘটনার পর থেকে ওই তরুণী পলাতক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি 
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে মজিরুলের নেতৃত্বে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে মজিরুলের নেতৃত্বে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

জীবন আছে যার, তার মৃত্যু অনিবার্য। মৃত্যুর পর মানুষের শেষ ঠিকানা কবর। মৃতদেহ গোসল করিয়ে কাফন পরানো হয়, জানাজা শেষে তাকে শায়িত করা হয় চিরনিদ্রার ঘরে। এই কবর খোঁড়ার দায়িত্বটি গ্রামের কিছু মানুষ বহু বছর ধরে স্বেচ্ছায়, বিনা পারিশ্রমিকে পালন করে আসছেন, যাঁরা সবার কাছে ‘গোরখোদক’ নামে পরিচিত। আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় তাঁরা করে থাকেন এই কাজ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গোরখোদকেরা কোনো পারিশ্রমিক নেন না। গ্রামের যে কেউ মারা যাক, নিজেদের ব্যস্ততা ফেলে তাঁরা ছুটে আসেন কবর খুঁড়তে। তাঁদের এই মানবিক কাজের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে গ্রামের লোকেরা দোয়া করেন—আল্লাহ যেন তাদের সুস্থ ও ভালো রাখেন।

দেবীপুর গ্রামের বাসিন্দা গোরখোদক মজিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ৫৫ বছর ধরে কবর খুঁড়ছি। যত দিন সুস্থ থাকব, এই কাজ চালিয়ে যাব। আমাদের গ্রাম ছাড়াও অন্য গ্রাম থেকে কেউ ডাকলে সেখানেও যাই। ছোটবেলায় ওস্তাদের কাছে ডালি ধরেই শিখেছি। গরিব মানুষ, মাঠে কাজ করি; কিন্তু কেউ মারা গেলে দ্বিধা করি না—এই কাজ আমার নেশায় পরিণত হয়েছে।’

মজিরুল আরও জানান, এখন তিনি তরুণদেরও এই কাজ শেখাচ্ছেন।

গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

গোরখোদক শাকের আলী বলেন, ‘আমরা নিঃস্বার্থভাবে কাজ করি। কখনো কোনো টাকা নিই না। যেখানেই থাকি, গ্রামের কারও মৃত্যুর সংবাদ শুনলে দ্রুত কবর খুঁড়তে চলে আসি।’

গোরখোদক ফুয়াদ হোসেন বলেন, ‘অন্য গ্রাম থেকে ডাক এলেও আমরা যাই। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই করি এই কাজ। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’

স্থানীয় বাসিন্দা শাজাহান আলী বলেন, ‘কবর খোঁড়া বড় দায়িত্বের কাজ। গ্রামের এসব মানুষ খবর পেলেই দৌড়ে আসে। আমরা তাদের জন্য দোয়া করি।’

মাওলানা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘মৃত ব্যক্তির জন্য কবর খোঁড়া নিঃসন্দেহে সওয়াবের কাজ। হাদিসে এসেছে—যাঁরা কবর খোঁড়েন, আল্লাহ তাদের জন্য জান্নাতে ঘর নির্মাণ করবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে কারখানার ফটকের সামনে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকেরা। আন্দোলনের মুখে কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রধান ফটক তালাবদ্ধ করে সটকে পড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে শিল্প ও থানা-পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসেছেন। আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের সাইটালিয়া গ্রামে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানায় এই ঘটনা ঘটে।

কারখানার নারী শ্রমিক মিনারা আক্তার বলেন, ‘অক্টোবর ও নভেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করে নাই। এক মাসের বেতন না পেলে আমাদের চলা খুবই কঠিন হয়। আমাদের নাওয়া-খাওয়া বন্ধ হয়। আর সেখানে কারখানা কর্তৃপক্ষ দুই মাসের বেতনভাতা বকেয়া রেখেছে। আজ সকালে শ্রমিকেরা জড়ো হলে তারা পালিয়ে যায়।’

মিন্টু নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘এই কারখানায় আমরা তিন বছর ধরে চাকরি করছি। আমাদের বেতনের বাইরে কোনো সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে না। তবু পেটের দায়ে চাকরি করি। দুই মাসের বেতন বকেয়া। আমাদের তো পেট আছে, সন্তান-সংসার আছে। এক মাস দোকান বাকি পরিশোধ করতে না পারলে পরের মাসে আর দোকানি বাকি দেয় না। আমরা কী অবস্থায় আছি, একবার ভাবুন। বেতন পরিশোধ না করে তারা পালিয়ে গেছে।’

আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

মেহেদী হাসান বলেন, ‘এত দিন ধরে ঋণ করে বলে-কয়ে দোকান থেকে বাকি নিয়ে চলছি। আর পারছি না। এখন দোকান বাকি দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। অক্টোবর মাসের বকেয়া বেতন নিয়ে কমপক্ষে ১০টি তারিখ দিছে। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ বেতন পরিশোধ করেনি। শেষে আজ বেতন পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু তারা কারখানা ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে গেছে।’

কারখানার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. বুলবুল হাসান বলেন, ‘ব্যাংকের সমস্যার কারণে বেতন-ভাতা পরিশোধ করা যাচ্ছে না। আশা করি, আজকের মধ্যে নভেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করতে পারব।’ বিনা নোটিশে কারখানার ফটক কেন তালাবদ্ধ? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমি বলতে পারব না।’

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাছির আহমদ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত