Ajker Patrika

ফেনীতে ব্যাংক হিসাব থেকে গ্রাহকের ১৯ লাখ টাকা উধাও, গেটে তালা-মানববন্ধন

সোনাগাজী (ফেনী) প্রতিনিধি 
সোনাগাজী রূপালী ব্যাংকের সামনে ভুক্তভোগী পরিবারের মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা
সোনাগাজী রূপালী ব্যাংকের সামনে ভুক্তভোগী পরিবারের মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফেনীর সোনাগাজী আমির উদ্দিন মুন্সিরহাট শাখা রূপালী ব্যাংকের তিনটি হিসাব থেকে ১৯ লাখের বেশি টাকা অন্য ব্যাংকে স্থানান্তরের ঘটনায় মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা। আজ মঙ্গলবার ব্যাংকের সামনে এ মানববন্ধন করা হয়। এ সময় ব্যাংকের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন তাঁরা।

মানববন্ধনে টাকা উধাওয়ের ঘটনায় ব্যাংকের ব্যবস্থাপক দিদারুল আলম ও সিনিয়র অফিসার আনিসুর রহমানকে দায়ী করে ঘটনার তদন্ত ও টাকা ফেরতের দাবি জানানো হয়।

ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা বলেন, ‘টাকা উদ্ধার করার কথা বললে ব্যাংকের ব্যবস্থাপক ঘুষ দাবি করেন। ছয় লাখ টাকা উদ্ধার হয়েছে জানালে, আমরা টাকা দিতে না পারায় উদ্ধারকাজে অপারগতা প্রকাশ করে আদালতে মামলা করার জন্য বলেন।’

ভুক্তভোগী ও ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভুক্তভোগী আবুল বশরের ৬৩৫৩ হিসাব নম্বর থেকে ৩৩ হাজার টাকা, তাঁর প্রবাসী বড় ছেলে মনসুর আলমের ৮৫১৯ নম্বরের অ্যাকাউন্ট থেকে ১৮ লাখ ৫ হাজার টাকা এবং ছোট ছেলে ইফতেখার আলমের ৮০৮২ নম্বর অ্যাকাউন্ট থেকে ৯৫ হাজার টাকা ইসলামী ব্যাংক, এবি ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, সিটি ব্যাংক ও রূপালী ব্যাংকের বিভিন্ন শাখায় স্থানান্তর করা হয়।

গত ১২ নভেম্বর টাকা স্থানান্তরের বিষয়টি প্রথম টের পান ব্যাংকের কর্মকর্তারা। এরপর অ্যাকাউন্টধারী আবুল বশরের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি কোনো টাকা লেনদেন করেননি বলে জানালে শাখা ব্যবস্থাপক ঊর্ধ্বতন মহলকে অবগত করেন। ইতিমধ্যে প্রধান কার্যালয়ের একটি টিম এই শাখাটি পরিদর্শন করেছে।

ভুক্তভোগী আবুল বশর বলেন, ‘আমি ও আমার দুই ছেলের মোট তিনটি অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা সরানোর ঘটনায় ব্যাংক কর্মকর্তাদের যোগসাজশ থাকতে পারে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আমাকে সহযোগিতা না করে আদালতে মামলা করার জন্য পরামর্শ দিয়ে দায় মুক্ত হতে চায়, অথচ আমাদের টাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ব্যাংকের দায়িত্ব। আমি এই ঘটনায় তদন্ত ও দোষীদের বিচার চাই এবং আমার টাকা ফেরত চাই।’

জানতে চাইলে রূপালী ব্যাংকের ওই শাখার ব্যবস্থাপক দিদারুল আলম বলেন, ‘এই টাকাগুলো অ্যাপসের মাধ্যমে ট্রান্সফার করা হয়েছে। অ্যাপসের লেনদেন হেড অফিস সরাসরি তদারকি করে—তাই এই লেনদেনে আমি বা আমার শাখার কারও দায় নেই।’

সোনাগাজী উপজেলা ব্যাংকার্স ফোরামের সভাপতি ও ইসলামী ব্যাংকের সোনাগাজী শাখার ব্যবস্থাপক মনসুরুল আলম বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যবহার করে একটি প্রতারক চক্র এসব কাজ করে। তবে এই ধরনের ঘটনায় অনেক সময় অ্যাকাউন্টধারীর কাছের লোকও জড়িত থাকে। বিষয়টি পূর্ণাঙ্গ তদন্তের পর প্রকৃত বিষয় বেরিয়ে আসবে।

এ বিষয়ে সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল আলম বলেন, ‘এই ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ আমরা পেয়েছি। ওই অ্যাকাউন্টগুলোর লেনদেনের যাবতীয় তথ্য খতিয়ে দেখছে পুলিশ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ