Ajker Patrika

বৈশাখের রঙে রঙিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ঢাবি সংবাদদাতা
বৈশাখের এই রঙিন রূপে নিজেকে রাঙিয়ে নিচ্ছেন এক বিদেশিনী। ছবি: আজকের পত্রিকা
বৈশাখের এই রঙিন রূপে নিজেকে রাঙিয়ে নিচ্ছেন এক বিদেশিনী। ছবি: আজকের পত্রিকা

‘আইলো আইলো আইলো রে, রঙে ভরা বৈশাখ আবার আইলো রে’ শিল্পী ইশতিয়াকের এ গানে জেগে উঠেছে বাংলার প্রতিটি প্রাণ। পুরোনো সব গ্লানি মুছে নতুন করে পথচলার তাড়না সবার। ভরা বৈশাখের ছোঁয়ায় জীবনের ম্লান হয়ে যাওয়া অধ্যায়গুলোকে সজীব করে নেওয়ার এই তো সুযোগ! দেশের সর্বত্রই জাগ্রত সে প্রাণের বহিঃপ্রকাশ দেখা যায়। প্রতি বছর দেশের শীর্ষস্থানীয় বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এ আমেজ থাকে সবচেয়ে বেশি।

নববর্ষকে বরণ করে নিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা বৈশাখের সর্ববৃহৎ আকর্ষণ। বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বর, বটতলা, হাকিম চত্বর, নাটমণ্ডল ইত্যাদি নানা স্থানে নববর্ষকে ঘিরে থাকে নানা কর্মসূচি। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে রাজধানীর বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এ সব কর্মসূচির অংশ হতে ছুটে আসে। রঙিন এসব উৎসবে যোগ দেয় বন্ধু-বান্ধব, পরিবার-পরিজন এবং প্রিয়জনদের নিয়ে।

নববর্ষকে নিজেদের মতো করে উদ্যাপন করে মানুষজন। কেনাকাটা, ছবি তোলা, পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে মিলিত হওয়া, চারুকলা-টিএসসি-বটতলায় বসে আড্ডা দেওয়াসহ নানা ব্যস্ততায় সময় কেটে যায়।

আজ সোমবার (১৪ এপ্রিল) পয়লা বৈশাখের দুপুরে চারুকলা অনুষদে গিয়ে দেখা যায় উৎসবমুখর মানুষের হিড়িক। রঙে রঙে রঙিন হয়ে উঠেছে চারুকলা। শাড়ি-পাঞ্জাবি পরে সেজেগুজে বৈশাখের রঙিন এ দিনকে উপভোগ করছে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাই। শোভাযাত্রায় বহন করা মোটিফগুলোর সঙ্গে ছবি তোলায় ব্যস্ত অনেকে। আবার অনেকে বকুলতলায় বসে প্রিয়জনদের সঙ্গে হাস্যরসে মেতেছেন। একপাশে নাগরদোলায় চড়ছে কিশোর-কিশোরীরা। শিশুরা ব্যস্ত বিভিন্ন খেলনা নিয়ে।

চারুকলার সামনে ফুটপাতে বসেছে নানা দোকান। বাঁশি, বাদ্যযন্ত্র, চুড়ি, হাতপাখা শৌখিন নানা জিনিসের সমাহার ঘটেছে সেখানে। বেচা-কেনায় ব্যস্ত সময় পার করছে ক্রেতা-বিক্রেতারা। নববর্ষ উপলক্ষে কেউ কেউ বিশেষ ছাড়ও দিচ্ছেন।

নানা বয়স-পেশা-ধর্মের মানুষের অংশগ্রহণে নানা রঙে রঙিন হয়ে আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
নানা বয়স-পেশা-ধর্মের মানুষের অংশগ্রহণে নানা রঙে রঙিন হয়ে আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

নববর্ষ উদ্যাপনে চারুকলায় এসেছেন শিল্পী ও ব্যবসায়ী জামিল আহমেদ চৌধুরী। তিনি আনন্দ প্রকাশ করে বলেন, ‘নববর্ষ বাঙালির প্রাণের সঙ্গে সম্পৃক্ত। আনন্দ-মিলনের নব উপলক্ষ নববর্ষ। এ দেশীয় সংস্কৃতিকে ভিন্ন মাত্রায় ভালোবাসার সুযোগ আসে নববর্ষে। সে সুযোগকে কাজে লাগাতে আমরা ছুটে আসি এখানে। যেখানে নানা প্রান্ত থেকে বহু প্রাণের মিলন ঘটে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাফিসা নুজহাত বলেন, ‘বৈশাখের আনন্দ আমাদের মনে নবশক্তি জোগায়। মন খারাপের অবসান ঘটায়। আজ আমি সবকিছুতে অনেক বেশি আনন্দ পাচ্ছি। কেনাকাটা করতে গিয়েও বৈশাখ উপলক্ষে বিশেষ ছাড় পেয়েছি।’

নানা বয়স-পেশা-ধর্মের মানুষের অংশগ্রহণে নানা রঙে রঙিন হয়ে আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
নানা বয়স-পেশা-ধর্মের মানুষের অংশগ্রহণে নানা রঙে রঙিন হয়ে আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানীর মালিবাগ থেকে দুই মেয়েকে নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছেন হারুনুর রশিদ। মেয়েদের নিয়ে ঘুরে ঘুরে দেখছিলেন শোভাযাত্রার মোটিফগুলো। তিনি বলেন, ‘মেয়েদের নিয়ে প্রথমবার নববর্ষের উৎসবমুখর এমন পরিবেশে এসেছি। নতুন বছর বরণে এখানকার আয়োজন দেখে সন্তানদের সঙ্গে আমিও মুগ্ধ।’

এমন উৎসবমুখর সংস্কৃতি দেশের প্রতিটি কোণে ছড়িয়ে পড়ুক এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

এ দিকে টিএসসির পাশে স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে খেলাঘর। দুপুরে শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে নাচ-গানের বর্ণিল আমেজ দেখা যায় খেলাঘরের মঞ্চে।

নানা বয়স-পেশা-ধর্মের মানুষের অংশগ্রহণে নানা রঙে রঙিন হয়ে আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
নানা বয়স-পেশা-ধর্মের মানুষের অংশগ্রহণে নানা রঙে রঙিন হয়ে আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

এর আগে সকালে বটতলায় সাংস্কৃতিক উৎসবের আয়োজন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগ। বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বৈশাখের আবহমান কালের আগমনী সংগীতগুলো পরিবেশনের মধ্য দিয়ে স্বাগত জানান নববর্ষকে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সুরে উদিত হয় নববর্ষের সোনালি সূর্য।

দুপুরে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পেছনে নাটমণ্ডলের আয়োজন ছিল ব্যতিক্রমধর্মী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগ নাটমণ্ডলে বৈশাখকে স্বাগত জানিয়ে মঞ্চ অভিনয়ের আয়োজন করে। উৎসুক মানুষের দৃষ্টিও এ দিকে নিবদ্ধ হয়। নববর্ষকে স্বাগত জানিয়ে আয়োজন করা এ মঞ্চ অভিনয় দেখতে নাটমণ্ডলে মানুষ ভিড় করে।

এ দিকে বটতলায় বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ আয়োজন করেছে বৈশাখী মেলা। মেলায় বিভিন্ন স্টলে বই, পোশাক, খাবার, কসমেটিকস এবং বিভিন্ন শৌখিন পণ্য বিক্রি করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ উদ্যোক্তারা। গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের আয়োজিত এ মেলা চলবে দিনভর। এ ছাড়াও নববর্ষের আনন্দকে দ্বিগুণ করতে মেলায় রাখা হয়েছে নাগরদোলা। নববর্ষে পান্তা ইলিশ খাওয়ার আবহমান কালের সংস্কৃতি চর্চার ব্যবস্থাও করেছে সংগঠনটি।

নববর্ষ উপলক্ষে দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি হলের শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর ঐতিহ্যবাহী পান্তা ইলিশ ভোজসহ নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বৈশাখের আয়োজন প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: অভিযুক্ত গৃহকর্মীর আসল নাম-পরিচয় শনাক্ত

দেড় বছরে ১০ বার থমকে গেছে মেট্রোরেল চলাচল

সাবেক সেনা কর্মকর্তার কাছে দুঃখ প্রকাশ করলেন তারেক রহমান

ভারত যেন হুঁশে থাকে, এবার পাল্টা আঘাত হবে দ্রুত ও মারাত্মক—পাকিস্তানের সিডিএফ হয়েই আসিম মুনিরের গর্জন

জাতীয় সংসদ নির্বাচন ১২ ফেব্রুয়ারি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাছ ধরতে গিয়ে ভারতে আটক ৬ জেলে, ১৩ মাস পর হস্তান্তর

নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি 
১৩ মাস সাজা ভোগের পর হস্তান্তর হওয়া বাংলাদেশি ছয় জেলে। ছবি: আজকের পত্রিকা
১৩ মাস সাজা ভোগের পর হস্তান্তর হওয়া বাংলাদেশি ছয় জেলে। ছবি: আজকের পত্রিকা

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার নাকুগাঁও সীমান্ত দিয়ে ছয় বাংলাদেশি মৎস্যজীবীকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কাছে হস্তান্তর করেছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁদের হস্তান্তর করা হয়।

হস্তান্তর হওয়া মৎস্যজীবীরা কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলার বাসিন্দা। তাঁরা হলেন আবুল হোসেনের ছেলে রাসেল মিয়া (৩৫), বাহাদুর মিয়ার ছেলে বিপ্লব মিয়া (৪৫), ইসহাক আলীর ছেলে মীর জাফর আলী (৪৫), ইছাক আলীর ছেলে বকুল মিয়া (৩২), ফকির আলীর ছেলে আমের আলী (৩৫), সলিমুদ্দিন ব্যাপারীর ছেলে চাঁন মিয়া (৬০)।

বিজিবি ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৪ নভেম্বর জিঞ্জিরাম নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে ভুলক্রমে সীমান্ত অতিক্রম করে তাঁরা ভারতের ভেতরে প্রবেশ করেন। এ সময় স্থানীয় পুলিশ ও বিএসএফ সদস্যরা তাঁদের আটক করে। অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে তাঁরা সেখানে প্রায় ১৩ মাস সাজা ভোগ করেন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সন্ধ্যায় শেরপুর ৩৯ বিজিবির দায়িত্বে থাকা এলাকার হাতিপাগার বিজিবি কোয়ার্টার মাস্টার মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে ভারতের কিল্লাপাড়া বিএসএফ ক্যাম্পের সঙ্গে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে বিএসএফ ছয় বাংলাদেশি নাগরিককে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে। এ সময় নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।

মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান বলেন, আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর তাঁদেরকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: অভিযুক্ত গৃহকর্মীর আসল নাম-পরিচয় শনাক্ত

দেড় বছরে ১০ বার থমকে গেছে মেট্রোরেল চলাচল

সাবেক সেনা কর্মকর্তার কাছে দুঃখ প্রকাশ করলেন তারেক রহমান

ভারত যেন হুঁশে থাকে, এবার পাল্টা আঘাত হবে দ্রুত ও মারাত্মক—পাকিস্তানের সিডিএফ হয়েই আসিম মুনিরের গর্জন

জাতীয় সংসদ নির্বাচন ১২ ফেব্রুয়ারি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

উত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ১৬
কারওয়ান বাজারের বিএফডিসি রেলগেট এলাকা থেকে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার মো. আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে কালা সিদ্দিক এবং মো. মিলন। ছবি: উত্তরা আর্মি ক্যাম্প
কারওয়ান বাজারের বিএফডিসি রেলগেট এলাকা থেকে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার মো. আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে কালা সিদ্দিক এবং মো. মিলন। ছবি: উত্তরা আর্মি ক্যাম্প

রাজধানীর কারওয়ান বাজার থেকে বিদেশি পিস্তল, গুলিসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে সেনাবাহিনী। তাঁরা হলেন মো. আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে কালা সিদ্দিক এবং মো. মিলন।

সেনাবাহিনী জানায়, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে জড়িত ছিলেন।

গতকাল মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) কারওয়ান বাজারের বিএফডিসি রেলগেট এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে এই দুজনকে গ্রেপ্তার করে সেনাবাহিনীর ৬ স্বতন্ত্র এডি ব্রিগেডের অধীনস্থ উত্তরা আর্মি ক্যাম্প।

উত্তরা আর্মি ক্যাম্প থেকে আজ বুধবার পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে কারওয়ান বাজারের বিএফডিসি রেলগেট সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাদক সেবনরত অবস্থায় শীর্ষ সন্ত্রাসী আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে কালা সিদ্দিক এবং মিলনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই স্থানে তল্লাশি চালিয়ে তাঁদের কাছ থেকে একটি স্প্যানিশ পিস্তল ও তিনটি গুলি উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এই দুজনকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে সেনাবাহিনী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: অভিযুক্ত গৃহকর্মীর আসল নাম-পরিচয় শনাক্ত

দেড় বছরে ১০ বার থমকে গেছে মেট্রোরেল চলাচল

সাবেক সেনা কর্মকর্তার কাছে দুঃখ প্রকাশ করলেন তারেক রহমান

ভারত যেন হুঁশে থাকে, এবার পাল্টা আঘাত হবে দ্রুত ও মারাত্মক—পাকিস্তানের সিডিএফ হয়েই আসিম মুনিরের গর্জন

জাতীয় সংসদ নির্বাচন ১২ ফেব্রুয়ারি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৫ দিন ধরে পঞ্চগড়ে তাপমাত্রার পারদ ১০ ডিগ্রির ঘরে

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ০১
পঞ্চগড় সদর উপজেলার ধাক্কামাড়া এলাকা থেকে আজ সকাল ৮টার দিকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
পঞ্চগড় সদর উপজেলার ধাক্কামাড়া এলাকা থেকে আজ সকাল ৮টার দিকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

টানা পাঁচ দিন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে থাকায় পঞ্চগড়ে শীতের তীব্রতা আরও বেড়েছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ, যা শীতের অনুভূতিকে আরও বাড়িয়েছে।

আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে পঞ্চগড়ের তাপমাত্রা ছিল বুধবার ১০ দশমিক ৭, মঙ্গলবার ১০ দশমিক ৭, সোমবার ১০ দশমিক ৬, রোববার ১০ দশমিক ৫, শনিবার ১০ দশমিক ৫, শুক্রবার ১২, বৃহস্পতিবার ১২ দশমিক ৫ এবং গত বুধবার ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

সকালে সূর্য ওঠার পর কিছুটা উষ্ণতা ফিরে আসে। তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে থাকলেও দিনের বেলা তেমন শীত অনুভূত হয় না বললে চলে। তবে সন্ধ্যার পর নেমে আসে শীতের তীব্রতা, আর তা চলতে থাকে পরদিন সকালে সূর্য উঁকি না দেওয়া পর্যন্ত।

সদর উপজেলার ভ্যানচালক আবুল হোসেন বলেন, ‘ভাই, এই শীতটা একদম সওয়া যায় না। ভোরে ভ্যান লইয়া বের হইলেই হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যায়। কুয়াশার মধ্যে রাস্তা দেখা যায় না ঠিকমতো। বেলা বাড়লে তহন একটু আরাম লাগে, কিন্তু সন্ধ্যার লগে লগে আবার জমাট শীত। কাম-কাজ না করলেও চলে না।’

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, আজ তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ, যা শীতের অনুভূতি আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: অভিযুক্ত গৃহকর্মীর আসল নাম-পরিচয় শনাক্ত

দেড় বছরে ১০ বার থমকে গেছে মেট্রোরেল চলাচল

সাবেক সেনা কর্মকর্তার কাছে দুঃখ প্রকাশ করলেন তারেক রহমান

ভারত যেন হুঁশে থাকে, এবার পাল্টা আঘাত হবে দ্রুত ও মারাত্মক—পাকিস্তানের সিডিএফ হয়েই আসিম মুনিরের গর্জন

জাতীয় সংসদ নির্বাচন ১২ ফেব্রুয়ারি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সেতু যেন মৃত্যুফাঁদ

বান্দরবান প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৫৬
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নে ১৩ বছর ধরে ভাঙা অবস্থায় পড়ে আছে সেতুটি। ছবি: আজকের পত্রিকা
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নে ১৩ বছর ধরে ভাঙা অবস্থায় পড়ে আছে সেতুটি। ছবি: আজকের পত্রিকা

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নে ১৩ বছর ধরে ভাঙা অবস্থায় পড়ে আছে একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু। পাহাড়ি ছড়া বেয়ে নেমে আসা বন্যার পানির তোড়ে ২০১২ সালে গর্জনিয়া উত্তর বড়বিল-দক্ষিণ বাইশারী সংযোগ সেতুটি ভেঙে যায়। এর পর থেকে কাঠ-বাঁশের অস্থায়ী সাঁকো দিয়ে চলাচল করছে দুই ইউনিয়নের মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে সেতুটি পুনর্নির্মাণ না হওয়ায় ভোগান্তির শেষ নেই।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, যাতায়াতের সময় অস্থায়ী সাঁকোটি প্রায়ই কেঁপে ওঠে। বৃষ্টি বা পাহাড়ি স্রোত এলে ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। এই সাঁকো দিয়েই প্রতিদিন দুই ইউনিয়নের বাসিন্দারা চলাচল করে। বাজার, চিকিৎসা, স্কুল—সবকিছুর জন্য এটি তাঁদের একমাত্র পথ। ২০২৩ সালে এই সাঁকো থেকে পড়ে এক স্কুলছাত্র আহত হয়েছিল।

বাইশারী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. জমির বলেন, ‘১৩ বছর ধরে একটি ব্রিজ কীভাবে পড়ে থাকে, তা আমাদের জানা ছিল না। মানুষের জীবন নিয়ে যেন কারও কোনো ভাবনাই নেই!’

স্থানীয় বাসিন্দা মো. ইউসুফ বলেন, ‘ব্রিজটির দুরবস্থা নিয়ে আমরা বারবার বলেছি, লিখেছি, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। ব্রিজ না থাকায় আমাদের কৃষিপণ্য বাজারে নিতে সমস্যা হচ্ছে।’

জানা যায়, ১৯৯৬ সালে নির্মিত সেতুটি ধসে যাওয়ার পর একাধিকবার বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন-নিবেদন করলেও এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভ, ১৩ বছর ধরে তাঁরা চলাচল করছেন ঝুঁকি নিয়ে, কিন্তু এটি পুনর্নির্মাণে এলজিইডি বা পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।

অন্যদিকে গর্জনিয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের স্থানীয় বাসিন্দা মো. সিরাজ বলেন, ‘গর্জনিয়া থেকে উৎপাদিত শাকসবজি ও তরিতরকারি বাইশারী বাজারে আনতে ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হয়। মাঝেমধ্যে ভাঙা ব্রিজের ওপরের সাঁকো ভেঙে গেলে কয়েক দিনের জন্য আমাদের যাতায়াত বন্ধ থাকে।’

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নে ১৩ বছর ধরে ভাঙা অবস্থায় পড়ে আছে সেতুটি। ছবি: আজকের পত্রিকা
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নে ১৩ বছর ধরে ভাঙা অবস্থায় পড়ে আছে সেতুটি। ছবি: আজকের পত্রিকা

নাইক্ষ্যংছড়ির বাইশারী ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. নুরুল কবির বলেন, ‘দুই ইউনিয়নের হাজারো মানুষের যাতায়াতের কী দুর্ভোগ তা আমি জানি। শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে। দ্রুত এই ব্রিজ পুনর্নির্মাণ করতে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

গর্জনিয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. ফিরোজ আহমদ বলেন, ‘অনেকবার বিভিন্ন কর্মকর্তা এসে দেখে গেছেন। সাংবাদিকেরা লেখালেখি করেছেন, কিন্তু ফল হয়নি।’

বাইশারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আলম বলেন, ‘ব্রিজটি পুনর্নির্মাণের জন্য আমি বান্দরবান জেলা পরিষদে আবেদন করেছি। কিন্তু এখনো কোনো অগ্রগতি চোখে পড়েনি।’

এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রকৌশলী মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ব্রিজটি ঠিক কোন উপজেলার আওতাধীন তা নিশ্চিত নই। যে উপজেলার অধীনে পড়বে, তাদেরই কাজটি করতে হবে। যদি নাইক্ষ্যংছড়ির অন্তর্ভুক্ত হয়, তাহলে আমরা যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সেতুটি দুই জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় হওয়ায় দায়িত্বের প্রশ্নে প্রশাসনের গাফিলতি চলছে। ফলে বছরের পর বছর অবহেলায় পড়ে আছে সেতুটি; আর মানুষকে পোহাতে হচ্ছে দুর্ভোগ।

স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, কক্সবাজারের রামু উপজেলার গর্জনিয়া ও বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারীর মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী সেতুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দুই উপজেলা প্রশাসন বসে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে এটি পুনর্নির্মাণ করা প্রয়োজন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: অভিযুক্ত গৃহকর্মীর আসল নাম-পরিচয় শনাক্ত

দেড় বছরে ১০ বার থমকে গেছে মেট্রোরেল চলাচল

সাবেক সেনা কর্মকর্তার কাছে দুঃখ প্রকাশ করলেন তারেক রহমান

ভারত যেন হুঁশে থাকে, এবার পাল্টা আঘাত হবে দ্রুত ও মারাত্মক—পাকিস্তানের সিডিএফ হয়েই আসিম মুনিরের গর্জন

জাতীয় সংসদ নির্বাচন ১২ ফেব্রুয়ারি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত