শাহরিয়ার হাসান, ঢাকা
৫ আগস্ট সকাল থেকেই ঢাকা শহরজুড়ে যেন বিদ্রোহের আগুন। গুলির শব্দ, রাজপথে পুলিশ-ছাত্র-জনতার পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার দৃশ্য আর কোথাও কোথাও আগুনের লেলিহান শিখা—এ নিয়ে রাজধানী পরিণত হয়েছিল টানটান উত্তেজনা আর কিছুটা আতঙ্কের জনপদে। শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ছাত্র-জনতার সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষের খবরে সারা শহর উত্তাল। এমন অবস্থায় আমি অন্যদিনের মতোই অফিসের কাজে ব্যস্ত। সারা দেশের আন্দোলন-সহিংসতার খবর একত্র করার কাজ করছিলাম।
দুপুরের দিকে অফিসের সভাকক্ষে আলোচনা চলছে দিনের পরিকল্পনা নিয়ে। এ সময় হঠাৎ খবর আসে—তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে চলে গেছেন! তার কিছুক্ষণের মধ্যেই আবার জানা গেল, সেনাবাহিনীর প্রধান জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে যাচ্ছেন। বন্ধ থাকা ইন্টারনেট খুলতে শুরু করল। দেখা গেল তাতে ভাইরাল হয়ে পড়েছে শেখ হাসিনার দেশত্যাগের ভিডিও।
ক্রমেই সড়কে মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। আজকের পত্রিকা অফিসের আশপাশ থেকে গুলি ও অন্যান্য শব্দ থেমে গিয়ে তখন ভেসে আসতে থাকে উল্লাসধ্বনি আর চিৎকার-চেঁচামেচি। প্রধান প্রতিবেদক বললেন, ‘গণভবনের দিকে যাও। শুনছি, সেখানে হাজার হাজার মানুষ ঢুকে পড়েছে।’
বেলা ৩টার দিকে বনশ্রী এলাকায় অবস্থিত অফিস থেকে মোটরসাইকেলে বের হলাম। রামপুরা ব্রিজ পেরিয়েই দেখি, রাস্তায় অসংখ্য মানুষের ঢল। ছেলে-বুড়ো, নারী-পুরুষ সবাই ছুটছেন শেখ হাসিনার বাসভবন গণভবনের দিকে। এত মানুষের ভিড়ে মোটরসাইকেল চালাতে খুবই সমস্যা হচ্ছিল। বহু মানুষের হাতে জাতীয় পতাকা, মুখে স্লোগান—‘আমরা স্বাধীন!’
বিজয় সরণি হয়ে বেশ কষ্ট করে সংসদ ভবনের গেট পর্যন্ত পৌঁছালাম। সংসদ ভবনের চত্বরজুড়ে মানুষের ঢল। লোকজন সুরক্ষিত এ ভবনের ভেতরে ইচ্ছামতো ঢুকছে ও বের হচ্ছে। কারও চোখ-মুখে ভয় নেই। চেহারায় কেবল বিস্ময় আর উল্লাস। সংসদ ভবনের ভেতর থেকে যাঁরা বের হচ্ছেন, তাঁদের কারও হাতে চেয়ার, কারও হাতে দামি ল্যাম্প বা অন্য কিছু। জিজ্ঞেস করতে কয়েকজন বললেন—এগুলো পতিত স্বৈরশাসকের স্মৃতি হিসেবে রাখা যাবে।
আবার ভিড় ঠেলে এগোলাম গণভবনের দিকে। কিন্তু নিজের লক্ষ্যমতো চলা কঠিন—অগুনতি মানুষের ঢল ঠেলে অন্যদিকে নিয়ে যায়।
অবশেষে পৌঁছালাম গণভবন প্রাঙ্গণে। দেশের দীর্ঘদিনের একচ্ছত্র ক্ষমতাশালী মানুষটির বাসভবন এখন এক অবারিত খোলা চত্বর। প্রবেশপথ ছাড়াও দেয়ালের জায়গায় জায়গায় ভেঙে ঢুকে পড়েছে জনতা। কাছাকাছি গেলে কানে আসতে থাকে কাচ ভাঙার শব্দ। অনেকে ভাঙচুর করছিলেন আসবাব। অনেকে যা যা ভাঙা সম্ভব তা-ই ভাঙছেন। কেউ বিভিন্ন মালপত্র ইচ্ছামতো নিয়ে যাচ্ছেন। সে তালিকায় ছিল ফ্রিজ, টিভি, এসি, ফ্যান, বিছানার চাদর, লেকের তাজা মাছ, এমনকি হাঁস-মুরগি পর্যন্ত! এসব দেখে মনে হলো অনেক বছরের পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। অনেকে সেলফি তুলছিলেন, কেউবা করছিলেন ভিডিও।
একের পর এক অভাবনীয় দৃশ্যের সাক্ষী হয়ে পেশাগত কাজে আবার অফিসে ফেরার পথ ধরলাম। অবাক হয়ে দেখলাম, যে পথ ধরে কয়েক ঘণ্টা আগে এসেছিলাম, সে পথে এখনো ছুটে আসছে মানুষ। মনে হচ্ছিল, পুরো বাংলাদেশ যেন গণভবনের দিকে দৌড়াচ্ছে।
আমি আমার জীবনে কখনো একসঙ্গে এত মানুষ দেখিনি।
৫ আগস্ট সকাল থেকেই ঢাকা শহরজুড়ে যেন বিদ্রোহের আগুন। গুলির শব্দ, রাজপথে পুলিশ-ছাত্র-জনতার পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার দৃশ্য আর কোথাও কোথাও আগুনের লেলিহান শিখা—এ নিয়ে রাজধানী পরিণত হয়েছিল টানটান উত্তেজনা আর কিছুটা আতঙ্কের জনপদে। শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ছাত্র-জনতার সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষের খবরে সারা শহর উত্তাল। এমন অবস্থায় আমি অন্যদিনের মতোই অফিসের কাজে ব্যস্ত। সারা দেশের আন্দোলন-সহিংসতার খবর একত্র করার কাজ করছিলাম।
দুপুরের দিকে অফিসের সভাকক্ষে আলোচনা চলছে দিনের পরিকল্পনা নিয়ে। এ সময় হঠাৎ খবর আসে—তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে চলে গেছেন! তার কিছুক্ষণের মধ্যেই আবার জানা গেল, সেনাবাহিনীর প্রধান জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে যাচ্ছেন। বন্ধ থাকা ইন্টারনেট খুলতে শুরু করল। দেখা গেল তাতে ভাইরাল হয়ে পড়েছে শেখ হাসিনার দেশত্যাগের ভিডিও।
ক্রমেই সড়কে মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। আজকের পত্রিকা অফিসের আশপাশ থেকে গুলি ও অন্যান্য শব্দ থেমে গিয়ে তখন ভেসে আসতে থাকে উল্লাসধ্বনি আর চিৎকার-চেঁচামেচি। প্রধান প্রতিবেদক বললেন, ‘গণভবনের দিকে যাও। শুনছি, সেখানে হাজার হাজার মানুষ ঢুকে পড়েছে।’
বেলা ৩টার দিকে বনশ্রী এলাকায় অবস্থিত অফিস থেকে মোটরসাইকেলে বের হলাম। রামপুরা ব্রিজ পেরিয়েই দেখি, রাস্তায় অসংখ্য মানুষের ঢল। ছেলে-বুড়ো, নারী-পুরুষ সবাই ছুটছেন শেখ হাসিনার বাসভবন গণভবনের দিকে। এত মানুষের ভিড়ে মোটরসাইকেল চালাতে খুবই সমস্যা হচ্ছিল। বহু মানুষের হাতে জাতীয় পতাকা, মুখে স্লোগান—‘আমরা স্বাধীন!’
বিজয় সরণি হয়ে বেশ কষ্ট করে সংসদ ভবনের গেট পর্যন্ত পৌঁছালাম। সংসদ ভবনের চত্বরজুড়ে মানুষের ঢল। লোকজন সুরক্ষিত এ ভবনের ভেতরে ইচ্ছামতো ঢুকছে ও বের হচ্ছে। কারও চোখ-মুখে ভয় নেই। চেহারায় কেবল বিস্ময় আর উল্লাস। সংসদ ভবনের ভেতর থেকে যাঁরা বের হচ্ছেন, তাঁদের কারও হাতে চেয়ার, কারও হাতে দামি ল্যাম্প বা অন্য কিছু। জিজ্ঞেস করতে কয়েকজন বললেন—এগুলো পতিত স্বৈরশাসকের স্মৃতি হিসেবে রাখা যাবে।
আবার ভিড় ঠেলে এগোলাম গণভবনের দিকে। কিন্তু নিজের লক্ষ্যমতো চলা কঠিন—অগুনতি মানুষের ঢল ঠেলে অন্যদিকে নিয়ে যায়।
অবশেষে পৌঁছালাম গণভবন প্রাঙ্গণে। দেশের দীর্ঘদিনের একচ্ছত্র ক্ষমতাশালী মানুষটির বাসভবন এখন এক অবারিত খোলা চত্বর। প্রবেশপথ ছাড়াও দেয়ালের জায়গায় জায়গায় ভেঙে ঢুকে পড়েছে জনতা। কাছাকাছি গেলে কানে আসতে থাকে কাচ ভাঙার শব্দ। অনেকে ভাঙচুর করছিলেন আসবাব। অনেকে যা যা ভাঙা সম্ভব তা-ই ভাঙছেন। কেউ বিভিন্ন মালপত্র ইচ্ছামতো নিয়ে যাচ্ছেন। সে তালিকায় ছিল ফ্রিজ, টিভি, এসি, ফ্যান, বিছানার চাদর, লেকের তাজা মাছ, এমনকি হাঁস-মুরগি পর্যন্ত! এসব দেখে মনে হলো অনেক বছরের পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। অনেকে সেলফি তুলছিলেন, কেউবা করছিলেন ভিডিও।
একের পর এক অভাবনীয় দৃশ্যের সাক্ষী হয়ে পেশাগত কাজে আবার অফিসে ফেরার পথ ধরলাম। অবাক হয়ে দেখলাম, যে পথ ধরে কয়েক ঘণ্টা আগে এসেছিলাম, সে পথে এখনো ছুটে আসছে মানুষ। মনে হচ্ছিল, পুরো বাংলাদেশ যেন গণভবনের দিকে দৌড়াচ্ছে।
আমি আমার জীবনে কখনো একসঙ্গে এত মানুষ দেখিনি।
হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মুমিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফনের জন্য আমরা প্রস্তুত ছিলাম। কিন্তু পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাঁর ইচ্ছা ছিল যেন সাধারণভাবে দাফন করা হয়। তাই সেই অনুযায়ী দাফন সম্পন্ন হয়েছে।’
৬ মিনিট আগেচট্টগ্রামে ডেঙ্গুতে এক নারীসহ দুজনের মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার (৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় এই তথ্য জানায়। এ ছাড়া সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৯ জনের ডেঙ্গু এবং ২০ জনের চিকুনগুনিয়া শনাক্ত হয়েছে।
৯ মিনিট আগেগত শনিবার বাড়িতে বসে নিজের অভিজ্ঞতা জানান হাসান। তিনি বলেন, ‘১৮ জুলাই ঢাকার রামপুরা ব্রিজ এলাকায় ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে প্রথম পায়ে গুলিবিদ্ধ হই। তখন ভয়ে হাসপাতালে যাইনি, একজন ডাক্তারের মাধ্যমে এক বাসায় বসে চিকিৎসা নিই। কিছুটা সুস্থ হয়ে ৫ আগস্ট আবার আন্দোলনে যাই।’
১৭ মিনিট আগেজানা গেছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর ঢাকায় ছাত্র-জনতার বিজয় মিছিলে অংশ নেন রথিন বিশ্বাস। ওই মিছিল সংসদ ভবনে প্রবেশ করলে তাঁর মাথায় কাচের একটি টুকরো ভেঙে পড়ায় গুরুতর আহত হন তিনি। আহত অবস্থায় সহযোদ্ধারা তাঁকে জাতীয় নিউরোসায়েন্স ইনস্টিটিউটে ভর্তি করেন।
২১ মিনিট আগে