Ajker Patrika

জালিয়াতির মামলায় নর্দান ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১১ জানুয়ারি ২০২২, ১২: ২৯
জালিয়াতির মামলায় নর্দান ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার

প্রতারণা ও জালিয়াতির মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নর্দান ইউনিভার্সিটির ট্রাষ্টিবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু ইউসুফ আবদুল্লাহ। আজ সোমবার বিকেলে তাকে রাজধানীর বনানীর কার্যালয়ে থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পরে তাঁকে কল্যাণপুরে পিবিআই কার্যালয়ে নেওয়া হয়। 

জানা গেছে, দেশের শীর্ষস্থানীয় আবাসন কোম্পানি আশিয়ান ল্যান্ডস ডেভেলপমেন্টের ২০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে জালিয়াতির মাধ্যমে কয়েক বিঘা জমির মালিক বনে যান নর্দান ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ। এ সংক্রান্ত খিলক্ষেত থানার একটি প্রতারণা মামলায় গত ২০ ডিসেম্বর তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ঢাকার একটি আদালত। তারপরও ক্ষমতার দাপট ও বিশেষ মহলের প্রশ্রয়ের কারণে এত দিন ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলেন তিনি। এছাড়া ধানমন্ডি ও তেজগাঁওসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। 

পিটিআইয়ের সদর দপ্তরের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু ইউসুফ জানান, উক্ত প্রতারণা ও জালিয়াতির মামলার আসামি নর্দান ইউনিভার্সিটির ট্রাষ্টিবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু ইউসুফ আবদুল্লাহকে তার বনানী কার্যালয় থেকে গ্রেপ্তার করে কল্যাণপুর কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। সেখানে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন পিবিআই ঢাকা মেট্রো অরগেনাইজড ক্রাইম এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। 

এর আগে প্রতারণা ও জালিয়াতির ঘটনায় গত বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে প্রফেসর আবু ইউসুফ মো. আবদুল্লাহ ও সরকার লুত্ফুল কবীরকে আসামি মামলা দায়ের করা হয়। পরে আদালতের নির্দেশে মামলাটি তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। 

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ৩ আগস্ট আশিয়ান ল্যান্ডস ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের মালিকানাধীন দক্ষিণখান থানার বাড্ডা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের অধীনস্থ ঢাকা কালেক্টরির তৌজিভুক্ত দক্ষিণখান মৌজার অন্তর্গত ১৬৫ শতক বা ৫ বিঘা নাল জমি ক্রয়ের ইচ্ছা পোষণ করেন নর্দান ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আবু ইউসুফ আবদুল্লাহ। উভয় পক্ষের আলোচনা জমির মূল্য পঞ্চাশ কোটি টাকা সাব্যস্ত করা হয়। 
 
ওই দিনই আবু ইউসুফ মো. আবদুল্লাহ ১২ কোটি টাকা নগদ-চেকে আশিয়ান ল্যান্ডস ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডকে প্রদান করে চুক্তিবদ্ধ হন। পরবর্তীতে ইউসুফ আবদুল্লাহ চুক্তিপত্রে উল্লেখিত পঞ্চাশ কোটি টাকার মধ্যে বিভিন্ন সময়ে সর্বমোট ৩০ কোটি টাকা চেক ও নগদ অর্থ প্রদান করলেও ২০ কোটি টাকা পরিশোধ করেন নাই। চুক্তিপত্র মোতাবেক ২০১৩ সালে ৩০ আগস্টের মধ্যে বাকি ২০ কোটি টাকা পরিশোধ করার সুস্পষ্ট অঙ্গীকার ছিল। 

আশিয়ান ল্যান্ডস ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড বাকি টাকা পরিশোধ করার জন্য প্রফেসর আবু ইউসুফ মো. আবদুল্লাহকে বারবার তাগাদা দিলেও তিনি ‘দিব-দিচ্ছি’ বলে সময়ক্ষেপণ করেন। এর মধ্যে তিনি বাড্ডার তৎকালীন সাব রেজিস্ট্রার সরকার লুত্ফুল কবীরের যোগসাজশে আশিয়ান ল্যান্ডস ডেভেলপমেন্টের চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম ভূঁইয়ার অগোচরে তার স্বাক্ষর জালিয়াতি করে চুক্তির ৫ বিঘা জমি ৯ কোটি তেত্রিশ লাখ টাকা মূল্য পরিশোধ করা হয়েছে উল্লেখ করে বাড্ডা সাব-রেজিস্ট্রি অফিস, ঢাকার অফিসে একটি রেজিস্ট্রিকৃত সাফ কবলা দলিল নং-১১৩৫৩, তারিখ: ১৫-১২-২০১৩ মূলে অবৈধভাবে প্রতারণা ও ছল চাতুরীর মাধ্যমে তার নিজ নামে সাফ কবলা দলিল সম্পাদন করেন এবং আশিয়ান ল্যান্ডস ডেভেলপমেন্টের ২০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে উল্লেখিত জমির মালিক সেজে বসেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত