Ajker Patrika

স্বাস্থ্য খাতে বৈষম্য বাড়ছে, দরকার আমূল পরিবর্তন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০২ এপ্রিল ২০২২, ১৫: ৫২
স্বাস্থ্য খাতে বৈষম্য বাড়ছে, দরকার আমূল পরিবর্তন

চলমান স্বাস্থ্যব্যবস্থায় চিকিৎসা খরচ বহন করতে গিয়ে অসংখ্য মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাচ্ছে। চিকিৎসা খরচের ৬৭ শতাংশের বেশি ব্যক্তির পকেট থেকে যাচ্ছে। এ ছাড়া স্বাস্থ্য খাতে বৈষম্য বাড়ছে, যা খুবই দুঃখজনক। তবে স্বাস্থ্যব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনেই চলমান স্বাস্থ্যের ভঙ্গুর অবস্থা থেকে উত্তরণ সম্ভব বলে মনে করছেন চিকিৎসক, জনস্বাস্থ্যবিদ ও বিশেষজ্ঞরা।

তাঁরা বলছেন, অন্য অনেক দেশে যেখানে বিনা মূল্য ও অতি সহজ উপায়ে জনগণকে চিকিৎসা ও ওষুধ দেওয়া হয়, সেখানে বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে। স্বাস্থ্যনীতি থাকলেও সেটি কার্যকর নয়। এ ছাড়া অন্যান্য দেশে জিডিপির বড় একটা অংশ স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় করলেও বাংলাদেশ সেখানে ১ শতাংশেরও কম। ফলে বিনিয়োগ না বাড়ায় অনেক কিছু অগ্রগতি হলেও পিছিয়ে পড়ছে বাংলাদেশ।

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর: বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের বিকাশ’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে আজ শনিবার এসব কথা বলেন তাঁরা।

সুইডিশ ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন এজেন্সির (সিডা) স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ডা. জহিরুল ইসলাম বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর একটি বড় মাইলফলক। আর বইটি স্বাস্থ্য খাতে একটি দলিল। আমাদের মাতৃ ও শিশুমৃত্যু কমেছে। কিন্তু স্বাস্থ্যে যে বৈষম্য বাড়ছে, সেটি খুবই দুঃখজনক। এ জন্য এই খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। অনেক মানুষ স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় মেটাতে গিয়ে দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাচ্ছে। গড় আয়ু বাড়লেও স্বাস্থ্যসেবা ভালো না হওয়ায় শেষ সময়ে গিয়ে বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছেন বয়স্করা। এ জন্য একটি স্বাস্থ্য কমিশন জরুরি।

জহিরুল ইসলাম বলেন, সরকার যদি না-ও করে, ব্যক্তি উদ্যোগে হলেও এটি হওয়া দরকার। তবে স্বাস্থ্য খাতে একটা পরিবর্তন হয়েছে। একই সঙ্গে আগামী ৫০ বছরের স্বাস্থ্য খাত কেমন হবে, সেটিও এখন থেকে ভাবতে হবে। 

মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ড. মালেকা বানু বলেন, বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের অন্যতম প্রধান কাজ হলো বৈষম্যহীন স্বাস্থ্যব্যবস্থা। আমাদের সংবিধানেও এটি ভালোভাবে বলা হয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে যে নারী আন্দোলন হয়েছে, এর মধ্যে নারীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা, নিরাপদ গর্ভপাত রক্ষা করাসহ অনেক কাজ করেছে নারীরা। নারীর ক্ষমতায়নে নারীর অধিকার নিয়ে, পুরুষদের সচেতনতা নিয়ে কাজ করেছে মহিলা পরিষদ।

মালেকা বানু বলেন, ‘দেশে কোনো কার্যকর স্বাস্থ্যনীতি নেই। এ জন্য এমন একটি নীতিমালা আমরা চেয়েছি, যেখানে লিঙ্গভিত্তিক কোনো বৈষম্য থাকবে না। আমাদের স্বাস্থ্য বাজেট অপ্রতুল, অব্যবস্থাপনা আরও বেশি। করোনা মহামারিতে সেটা আমরা দেখেছি। এমডিজিতে আমাদের সাফল্য কেবল সংখ্যায় হয়েছে, কিন্তু বাস্তবে সেটি তেমনটা প্রভাব ফেলেনি।’

সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক বলেন, ‘স্বাস্থ্যব্যবস্থার যে পরিবর্তন হয়েছে, আমরা সবাই জানি। বিশ্বে আমাদের স্বাস্থ্য নিয়ে ইতিবাচক ধারণা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর স্বাস্থ্যব্যবস্থা কী ছিল, আর এখন কী অবস্থা, সেটি আমরা দেখতে পাচ্ছি। সেই সঙ্গে ২০০৯ সালের পর বর্তমান সরকার স্বাস্থ্য খাতে কী পরিবর্তন করেছে, সেগুলোও আলাদাভাবে এলে আরও ভালো হতো।’

রুহুল হক বলেন, ‘অনেক দেশ জিডিপির ২-৩ শতাংশ খরচ ব্যয় করে, আমাদের ১ শতাংশেরও কম। তার পরও আমাদের স্বাস্থ্যব্যবস্থা এগিয়েছে, যেটি ইতিবাচক। তবে অনেক অব্যবস্থাপনাও রয়েছে। আমাদের পুষ্টির এখনো ঘাটতি রয়েছে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে। এটির পরিবর্তন হওয়া দরকার। আমাদের ব্যক্তি খরচ অনেক বেশি। অভ্যন্তরীণ রোগীরা বিনা মূল্যে ওষুধ পেলেও বহির্বিভাগে এখনো এটি সেভাবে করা যায়নি। ফলে এই ব্যয় বেড়েই চলেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কমিউনিটি ক্লিনিক, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য, জেলা সদর হাসপাতালসহ চিকিৎসার প্রতিটি স্তরে যে জনবলের সংকট, সেটিরও সমাধান দরকার।’

প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যে মোট ব্যয়ের ১৫ শতাংশ হওয়া দরকার, কিন্তু সেটিতে আমরা একেবারে পিছিয়ে। ফলে সর্বজনীন স্বাস্থ্যব্যবস্থা নেই বললেই চলে। আবার হাসপাতালগুলোতে নানা অব্যবস্থাপনা। অনেক দামি দামি জিনিসপত্র কেনা হয়, কিন্তু সেগুলো সঠিকভাবে ব্যবহার করা হয় না। আছে নিয়োগে অনিয়ম। তার পরও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্যে দেশের স্বাস্থ্যখাত অনেক এগিয়েছে।’

বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচের উপদেষ্টা কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. রওনক জাহান বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে চিকিৎসকদের ভূমিকা নিয়ে দেশে তেমন লেখালেখি নেই। একই সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তি, অর্জনের সঙ্গে কোথায়, কেন আমাদের স্বাস্থ্য খাতের ঘাটতি সেগুলোও চিহ্নিত করা হয়েছে বইটিতে। বাংলাদেশের যে অর্জন সেটি আমরা কেবল দক্ষিণ এশিয়ার সঙ্গে বিশেষ করে ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে তুলনা করি। পাশের দেশ নেপালও আমাদের অনেক ছোট মনে করে। থাইল্যান্ডসহ ইউরোপের দেশগুলোর সঙ্গে আমরা কতটা এগোতে পেরেছি, সেটি দেখা উচিত। থাইল্যান্ড গত ৬০ বছরে সর্বজনীন স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পেরেছে। কীভাবে পেরেছে, সেটা আমাদের খুঁজে বের করতে হবে। তাদের সঙ্গে কেন তুলনা করি না আমরা?’

রওনক জাহান বলেন, ‘আমরা সবাই বলছি অর্থায়ন বাড়াতে হবে। অপর পক্ষে যতটুকু বরাদ্দ হচ্ছে সেগুলো ব্যয় করতে পারছি না। এ ছাড়া সুশাসনের ঘাটতির বিষয়টা ২৫ বছর ধরে বলা হচ্ছে, তার পরও তেমন পরিবর্তন হচ্ছে না।’

রওনক জাহান আরও বলেন, ‘করোনাকালীন সরকারের যে অব্যবস্থাপনাগুলো ছিল, সেগুলো নিয়ে আমাদের লেখায় অনেকে বিব্রত হোন, কেন আমরা সরকারের প্রশংসা না করে শুধু ঘাটতি ও সংকটের কথা বলি। আমরা মনে করি, সরকারের প্রশংসা করার মতো সরকারি অনেক প্রতিষ্ঠান আছে, আমরা সংকটগুলো ধরিয়ে দিই, যাতে সেগুলো পূরণে গুরুত্ব দেওয়া হয়।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নটর ডেম কলেজে শুরু হলো মিডিয়া কার্নিভ্যাল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ০০: ৩৪
গতকাল শুক্রবার সকালে নটর ডেম কলেজে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী ‘প্রথম জাতীয় মিডিয়া কার্নিভ্যাল-২০২৫ ’। ছবি: আজকের পত্রিকা
গতকাল শুক্রবার সকালে নটর ডেম কলেজে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী ‘প্রথম জাতীয় মিডিয়া কার্নিভ্যাল-২০২৫ ’। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী নটর ডেম কলেজে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী ‘প্রথম জাতীয় মিডিয়া কার্নিভ্যাল-২০২৫ ’। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সাংবাদিকতা, যোগাযোগ ও গণমাধ্যমচর্চা জনপ্রিয় করে তুলতে কলেজের মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন ক্লাব এই আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানের মিডিয়া পার্টনার আজকের পত্রিকা।

গতকাল শুক্রবার সকালে কার্নিভ্যাল উদ্বোধন করেন সাবেক ক্রিকেটার শাহরিয়ার নাফীস এবং খেলবেই বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা কাজী সাবির। বিকেলে তারকা আড্ডায় ছিলেন সংগীতশিল্পী তাসরিফ খান, টিভি উপস্থাপক মানজুর আল মতিন, কনটেন্ট নির্মাতা আসাদুজ্জামান জয় ও মাহিম মেকস।

উৎসবের প্রথম দিনেই কলেজ প্রাঙ্গণে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। শিক্ষার্থীদের ব্যানার, প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় মুখর হয়ে ওঠে নটর ডেম কলেজ চত্বর।

গতকাল শুক্রবার সকালে নটর ডেম কলেজে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী ‘প্রথম জাতীয় মিডিয়া কার্নিভ্যাল-২০২৫ ’। ছবি: আজকের পত্রিকা
গতকাল শুক্রবার সকালে নটর ডেম কলেজে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী ‘প্রথম জাতীয় মিডিয়া কার্নিভ্যাল-২০২৫ ’। ছবি: আজকের পত্রিকা

আয়োজকেরা জানান, কার্নিভ্যালে দেশের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নিচ্ছেন। প্রথম দিনের আয়োজনে থাকছে মিডিয়া মাইন্ড, ক্যাপশন কনটেস্ট, ফটো প্রতিযোগিতা, ফান কনটেস্ট, তারকা আড্ডাসহ নানা প্রতিযোগিতা।

তাঁরা আরও জানান, এই উৎসব শেষ হবে আজ ২৫ অক্টোবর। উৎসবে অংশগ্রহণকারীদের দেওয়া হবে সার্টিফিকেট। এ ছাড়া সমাপনী দিনে থাকবে কনসার্টসহ নানা আয়োজন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গুলশানের বিলস বারে ৪৬৬ বোতল বিদেশি মদসহ গ্রেপ্তার ৯

উত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিবেদক
রাজধানীর গুলশানের বিলস বার থেকে জব্দ মদ ও গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর গুলশানের বিলস বার থেকে জব্দ মদ ও গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানীর গুলশানের বিলস আর্ট লাউঞ্জ লিমিটেড রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড বারে পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

ডিএমপির গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাফিজুর রহমান আজ শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

ওসি মো. হাফিজুর জানান, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে গুলশান-১-এর গুলশান দক্ষিণ অ্যাভিনিউর বিলস আর্ট লাউঞ্জ রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড বারে অভিযান চালিয়ে ৪৬৬ বোতল বিভিন্ন ব্রান্ডের বিদেশি মদসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জব্দ এসব মদের মূল্য ৬৭ লাখ ৯১ হাজার টাকা।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন সৈয়দ আসিফ (২৪), রাকিব খান (২০), তানভির আহমেদ (২৮), নয়ন চক্রবর্তী (২৮), বেল্লাল হাওলাদার (৪০), জহিরুল ইসলাম (৩৩), সাগর নকরেক (২৭), সাইফুল ইসলাম রকি (৩৪) ও মেহেদী হাসান শিকদার (৪০)।

রাজধানীর গুলশানের বিলস বার থেকে জব্দ মদ ও গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর গুলশানের বিলস বার থেকে জব্দ মদ ও গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

ওসি হাফিজুর রহমান বলেন, বিলস আর্ট বারটির দেশীয় কেরু অ্যান্ড কোং কোম্পানির অনুমোদিত পাঁচটি ব্রান্ডের মদ বিক্রির অনুমোদন রয়েছে। কিন্তু তারা অবৈধভাবে বিদেশি মদ মজুত রেখে বিক্রি করে আসছিল; যার পরিপ্রেক্ষিতে অভিযান চালিয়ে ভবনটির ষষ্ঠ তলার চিলেকোঠা থেকে এসব বিদেশি মদ জব্দ করা হয়।

এ ঘটনায় আজ (শুক্রবার) গুলশান থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে গ্রেপ্তার আসামিদের বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান ওসি হাফিজ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকার মেট্রোরেল মুন্সিগঞ্জ পর্যন্ত সম্প্রসারণের দাবি

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ থেকে মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপুর পর্যন্ত মেট্রোরেল প্রকল্প সম্প্রসারণের দাবিতে মতবিনিময় সভা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ থেকে মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপুর পর্যন্ত মেট্রোরেল প্রকল্প সম্প্রসারণের দাবিতে মতবিনিময় সভা। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ থেকে মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপুর পর্যন্ত মেট্রোরেল প্রকল্প সম্প্রসারণের দাবিতে মতবিনিময় সভা হয়েছে। আজ শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে মুন্সিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সফিউদ্দিন আহমেদ মিলনায়তনে ‘ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ মেট্রোরেল দাবি পরিষদের উদ্যোগে এ সভা হয়।

সংগঠনের আহ্বায়ক মো. মঞ্জুর মোর্শেদের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন সদস্যসচিব মো. সিরাজুল ইসলাম, সাবেক পৌর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো. মজিবুর রহমান, মুন্সিগঞ্জ শহর বিএনপির সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট মাহবুব উল আলম স্বপন, মুন্সিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি বাছির উদ্দিন জুয়েল, সহসভাপতি মো. গোলজার হোসেন, অ্যাডভোকেট মুস্তাফিজুর রহমানসহ অন্যান্য সদস্য।

সভায় বক্তারা বলেন, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ থেকে মুন্সিগঞ্জ পর্যন্ত মেট্রোরেল সম্প্রসারণ বাস্তবায়িত হলে জেলার মানুষের দীর্ঘদিনের যাতায়াত সমস্যা দূর হবে। এতে ঢাকা ও মুন্সিগঞ্জের মধ্যে আধুনিক ও দ্রুত যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে উঠবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে মুন্সিগঞ্জের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়নে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে।

সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, মেট্রোরেল সম্প্রসারণের দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হবে। এর মধ্যে রয়েছে স্মারকলিপি প্রদান, মানববন্ধন আয়োজন ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচি।

আহ্বায়ক মো. মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, ‘আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে সরকারের কাছে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবি জানাব। মুন্সিগঞ্জবাসীর স্বচ্ছ ও দ্রুত যাতায়াতের অধিকার নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিবাদী ও সক্রিয় থাকব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিলেটে শাহ আরেফিন (র.) মাজার ধ্বংসের হোতা বশর আটক

সিলেট প্রতিনিধি
বশর মিয়া ওরফে বশর কোম্পানি। ছবি: সংগৃহীত
বশর মিয়া ওরফে বশর কোম্পানি। ছবি: সংগৃহীত

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার শাহ আরেফিন (র.)-এর মাজার খুঁড়ে পাথর তুলে ধ্বংসের হোতা বশর মিয়া ওরফে বশর কোম্পানিকে আটক করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় নিজ ঘর থেকে তাঁকে আটক করা হয়। তাঁকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ১ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আব্দুল মালেক নামের আরেকজনকে আটক করে তিন মাসের সাজা দেওয়া হয়।

বশর উপজেলার জালিয়ারপাড় গ্রামের মৃত শুকুর আলীর ছেলে। আব্দুল মালেক উপজেলার বৈশাখান্দী বাহাদুরপুর গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শুরু হয় শাহ আরেফিন টিলা থেকে পাথর উত্তোলন। এ সময় প্রায় ৭’শ বছরের পুরোনো শাহ আরেফিন (র.)-এর মাজারে স্তূপ করে রাখা প্রায় ২ কোটি টাকার পাথর লুটপাট করা হয়। এরপর মাজারের শতবর্ষী গাছপালা কেটে নিয়ে সেখানে গর্ত করে পাথর উত্তোলন শুরু হয়। দীর্ঘ ১ বছর পাথর উত্তোলন করে বিলীন করা হয়েছে মাজারের কবরস্থান ও খেলার মাঠ। আর এ সবই হয়েছে বশর কোম্পানির নেতৃত্বে।

পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাত ১২টায় পুলিশ ও বিজিবিকে সঙ্গে নিয়ে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পাথর লুটপাটকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালান। অভিযানে শাহ আরেফিন ধ্বংসের হোতা বশর মিয়া এবং আব্দুল মালেক নামের আরও একজনকে আটক করা হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বশর কোম্পানি আগে থেকেই শাহ আরেফিন টিলা ধ্বংসের বেশ কয়েকটি মামলার আসামি। তা ছাড়া অস্ত্র এবং পুলিশের ওপর হামলার মামলাও ছিল তাঁর বিরুদ্ধে। তিনি এলাকায় খুব প্রভাবশালী হওয়ায় সহজে কেউ কথা বলতে চায় না। ভাইদের দিয়ে তিনি শাহ আরেফিন টিলা ও মাজার ধ্বংস করে পাথর উত্তোলন করান। তবে এ নিয়ে বেশ কয়েকবার মাজার রক্ষাকারীদের সঙ্গে তাঁদের মারামারি হয়।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রতন শেখ জানান, বশর মিয়ার বিরুদ্ধে ৪টি নিয়মিত মামলা রয়েছে। তা ছাড়া মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তাঁকে ১ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আব্দুল মালেককে তিন মাসের সাজা দেওয়া হয়। তাঁদেরকে আজ শুক্রবার বিকেলে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত