Ajker Patrika

সাভারে আগামী মৌসুমে কোনো ইটভাটা চালু করা যাবে না: রিজওয়ানা হাসান

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরে আজ রোববার অনুষ্ঠিত সভায় কথা বলেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরে আজ রোববার অনুষ্ঠিত সভায় কথা বলেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার সাভার উপজেলায় ঘোষিত ডিগ্রেডেড এয়ারশেড বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আগামী মৌসুমে কোনো ইটভাটা চালু করা যাবে না বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। অন্তর্বর্তী সরকারের এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে ইটভাটার মালিকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

আজ রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরে অনুষ্ঠিত এক সভায় উপদেষ্টা এই আহ্বান জানান।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আইন অমান্য করে ইটভাটা চালু হলে সংশ্লিষ্ট সব সরকারি দপ্তরকে সঙ্গে নিয়ে একযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে। উন্মুক্তভাবে ময়লা পোড়ানো, অবৈধ সিসা-ভাট্টি পরিচালনা এবং টায়ার পুড়িয়ে তেল তৈরিকারী অবৈধ পাইরোলাইসিস কারখানার মাধ্যমে বায়ুদূষণ রোধে প্রয়োজনে রাতের বেলা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।

নির্মাণসামগ্রী খোলা জায়গায় রাখলে বা পরিবহন করলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানার পাশাপাশি মালামাল জব্দের নির্দেশনাও দেন রিজওয়ানা হাসান।

এ বিষয়ে গণসচেতনতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘বায়ুদূষণ রোধে জনগণকে সচেতন করতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশসহ প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। সবাই একসঙ্গে কাজ করলে ঘোষিত ডিগ্রেডেড এয়ারশেড বাস্তবায়নে আমরা সফল হব এবং সুস্থ জীবনের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত আয়ুষ্কাল পুনরুদ্ধার করতে পারব।’

সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ। সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক উদ্বোধন বৃহস্পতিবার, তোলা যাবে ২ লাখ টাকা

তালাকের ১ মাসের মাথায় ফের বিয়ে করলেন ত্বহা-সাবিকুন

হঠাৎ বিদেশে শাহবাজ শরিফ, সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে সিডিএফ নিয়োগ নিয়ে বিড়ম্বনায় পাকিস্তান

খালেদা জিয়াকে দেখতে হাসপাতালে গেলেন ৩ বাহিনীর প্রধানেরা

তালাকের পরে ফের বিয়ে নিয়ে সমালোচনা, যে ব্যাখ্যা দিলেন সাবিকুন নাহার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অর্থাভাবে নিভে যাচ্ছে শিশু সাব্বিরের চোখের আলো

লালমনিরহাট প্রতিনিধি 
বাবার কোলে সাব্বির রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাবার কোলে সাব্বির রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা

অর্থাভাবে নিভে যাচ্ছে লালমনিরহাটের সাত বছরের শিশু সাব্বির রহমানের চোখের আলো। সন্তানকে বাঁচাতে বিত্তবানদের কাছে সাহায্যের হাত পেতেছেন তার অসহায় বাবা রবিউল ইসলাম। সাব্বির রহমান লালমনিরহাট সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের সিংগারদার গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে।

জানা গেছে, তিন মাস আগে চোখ ওঠে ও জ্বর হয় সাব্বিরের। এরপর স্থানীয় পল্লিচিকিৎসকের কাছে ওষুধ খেয়ে শরীর ফুলে যায় ও ফোসকা ওঠে। তখন তাকে ভর্তি করা হয় লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে। সেখানে শিশু বিশেষজ্ঞ তপন কুমারের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা চলে এক সপ্তাহ। এ সময়ে তার পুরো শরীরের মাংসে পচন ধরে। বাধ্য হয়ে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন চিকিৎসকেরা।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে টানা ২৩ দিনের চিকিৎসায় শরীরের পচন রোধ হলেও চোখ আক্রান্ত হয়। ধীরে ধীরে দুই চোখ নষ্ট হতে বসে। চক্ষু বিভাগে স্থানান্তর করা হয়। সেখান থেকে দ্বীপ আই কেয়ার হাসপালেও চিকিৎসা করানো হয় সাব্বিরকে। কোনোভাবেই তার চোখ ভালো করতে পারছিলেন না চিকিৎসকেরা।

চিকিৎসকদের পরামর্শে সাব্বিরকে ঢাকা ইস্পাহানি ইসলামিয়া আই হসপিটালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা দ্রুত তাকে চোখে অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেন। দ্রুত অপারেশন না করলে চিরদিনের মতো চোখের আলো নিভে যাবে সাব্বিরের। এই অপারেশন করতে খরচ পড়বে ৬-৭ লাখ টাকা। খরচের কথা শুনে হতবাক সাব্বিরের বাবা রবিউল ইসলাম। একটি কোম্পানির সেলসম্যানের চাকরি করা রবিউল ইসলামের সঞ্চয়ে যা ছিল, সব তিন মাসে সন্তানের পেছনে খরচ করে বর্তমানে শূন্য। সন্তানকে বাঁচাতে চিকিৎসকদের পেছনে ছুটতে ছুটতে একপর্যায়ে চাকরিও চলে যায় রবিউলের।

প্রতিবেশীদের কাছ থেকে নেওয়া ঋণের টাকায় ওষুধ কিনে দিলেও চোখের আলো ফেরাতে অপারেশন করা তার সাধ্যের বাইরে। বাধ্য হয়ে সন্তানকে বাঁচাতে বিত্তবানদের কাছে সাহায্যের হাত পেতেছেন সাব্বিরের বাবা রবিউল ইসলাম। বাড়িভিটার দুই শতক জমি ছাড়া তাঁর সম্পত্তি বলতে দুই ছেলেই। বড় ছেলে সাব্বির প্রথম শ্রেণির ছাত্র। তার অসুস্থতার কথা শুনে কেউ পাশে ভেড়ে না। বন্ধ হয়ে যায় পড়াশোনা।

সাব্বিরের মা সেলিনা বেগম বলেন, ‘তিন মাস আগেও আমার সাব্বির বাচ্চাদের সঙ্গে স্কুলে যেত। আজ তিন মাসের মাথায় চোখের আলো হারাতে বসেছে। তার চিকিৎসা করাতে পারছি না আমরা। তার চোখের আলো ফেরাতে ৬-৭ লাখ টাকা লাগে। কোথায় পাব এত টাকা? চোখের সামনে ছেলেটা অন্ধ হয়ে যাবে ভাবতেই বুকটা কেঁপে ওঠে। কেউ ঋণে টাকা দিলেও গ্রহণ করে সন্তানকে বাঁচাতাম।’ সমাজের বিত্তবানদের কাছে আর্থিক সাহায্যের আবেদন করেন তিনি।

সাব্বিরের বাবা রবিউল ইসলাম বলেন, ‘আদরের সন্তান সাব্বিরকে সুস্থ করতে চিকিৎসকদের পেছনে ছুটতে ছুটতে চাকরি হারালাম। সঞ্চয় যা ছিল সব শেষ। এখন আমি শূন্য পকেটে ছেলেকে বুকে জড়িয়ে ধরে বিত্তবানদের কাছে সাহায্যের হাত পেতেছি। তবু সন্তানের অপারেশনের টাকা জোগাড় করতে পারছি না। চোখের সামনে আদরের সন্তান ছটফট করছে। বিত্তবানেরা এগিয়ে এলে আমার আদরের ধন তার চোখের দৃষ্টশক্তি ফিরে পেত।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক উদ্বোধন বৃহস্পতিবার, তোলা যাবে ২ লাখ টাকা

তালাকের ১ মাসের মাথায় ফের বিয়ে করলেন ত্বহা-সাবিকুন

হঠাৎ বিদেশে শাহবাজ শরিফ, সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে সিডিএফ নিয়োগ নিয়ে বিড়ম্বনায় পাকিস্তান

খালেদা জিয়াকে দেখতে হাসপাতালে গেলেন ৩ বাহিনীর প্রধানেরা

তালাকের পরে ফের বিয়ে নিয়ে সমালোচনা, যে ব্যাখ্যা দিলেন সাবিকুন নাহার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভাগ্যবদলের স্বপ্নে ছুটছেন গাইবান্ধার চরাঞ্চলের নারীরা

আনোয়ার হোসেন শামীম, গাইবান্ধা
বাড়ির আঙিনায় চাষ করা সবজির পরিচর্যা করছেন এক নারী। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাড়ির আঙিনায় চাষ করা সবজির পরিচর্যা করছেন এক নারী। ছবি: আজকের পত্রিকা

উত্তরের জেলা গাইবান্ধা সাতটি উপজেলা নিয়ে গঠিত। এর মধ্যে সুন্দরগঞ্জ, সদর, ফুলছড়ি ও সাঘাটা—এই চারটি উপজেলা চরবেষ্টিত। এসব চরে প্রায় ৫ লাখ মানুষের জীবন কাটে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, নদীভাঙন, ভূমিক্ষয়, বন্যা, ঝড় আর দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে। নদীভাঙনের ধাক্কা সামলে টিকে থাকতে তাঁদের এক চর থেকে অন্য চরে ছুটে বেড়াতে হয়।

এই পিছিয়ে থাকা মানুষের জীবনমান উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি কাজ করছে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা। প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের নারীরা প্রশিক্ষণ নিয়ে বসতবাড়ির আঙিনায় শাকসবজি চাষ, হাঁস-মুরগি ও ভেড়া পালন শুরু করেছেন। এতে নিজেদের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি বাড়তি আয় করে ভাগ্যবদলের স্বপ্ন দেখছেন তাঁরা।

দুর্যোগে চরের মানুষের ধানের বীজতলা, মাঠের ফসল, ঘরবাড়ি, গরুর খাবার, খড়ের গাদা পর্যন্ত নষ্ট হয়ে যায়। এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ফ্রেন্ডশিপসহ কয়েকটি এনজিও এগিয়ে এসেছে। ফ্রেন্ডশিপের ট্রান্সিশন ফান্ড (এএসডি) প্রকল্পের সহায়তায় এসব পরিবার বসতভিটায় সবজি চাষ এবং ভেড়া, হাঁস-মুরগি পালন শুরু করেছে। তাতেই পাল্টে যাচ্ছে তাঁদের জীবনমান।

গাইবান্ধা সদর উপজেলার মোল্লারচর ইউনিয়নের মাইজবাড়ী চরের এফডিএমসির সদস্য আসমা বেগম ফ্রেন্ডশিপের প্রকল্প থেকে ৩ হাজার ৬০০ টাকা মূল্যের একটি ভেড়া পেয়েছিলেন। সেই ভেড়া থেকে এখন তাঁর পাঁচটি ভেড়া হয়েছে। বাজারে এগুলোর দাম প্রায় ৩২ হাজার টাকা।

মালেকা বেগম বলেন, ‘আধুনিক পদ্ধতিতে শাকসবজি উৎপাদনের প্রশিক্ষণ পাওয়ার পর আমার বসতবাড়িতে সবজি উৎপাদন করে এ বছর ৫ হাজার ১০০ টাকার সবজি বিক্রি করেছি, যা আমার সংসারের ব্যয়ভার বহনে খরচ হচ্ছে এবং আমি সবজি বিক্রির ৮ হাজার টাকায় একটি ছাগল কিনেছি।’

গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানি ইউনিয়নের কড়াইবাড়ী চরের মুনসুরা বেগম বলেন, ‘আগে অবহেলিত ছিলাম। ভেড়া পেয়ে এখন স্বাবলম্বী হওয়ার পথে। একটা ভেড়া দিয়ে শুরু করে বর্তমানে আমার ৩০টি ভেড়া হয়েছে। এ ছাড়া শাকসবজি চাষ করি। নিজে খাই, বাজারে বিক্রি করে বাড়তি আয় করি।’

ভেড়া পালন করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন আসমা বেগমের। ছবি: আজকের পত্রিকা
ভেড়া পালন করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন আসমা বেগমের। ছবি: আজকের পত্রিকা

আম্বিয়া বেগম নামের একজন বলেন, একসময় পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ ছিল। এনজিও থেকে একটি ভেড়া পেয়ে সেটি থেকে একাধিক হয়েছে। এরই মধ্যে কয়েকটি ভেড়া বিক্রি করে পরিবারে বেশ সচ্ছলতা ফিরেছে।

চরের নুরুল ইসলাম, রাশেদা বেগম ও মিনারা বেগম বলেন, ‘আগে বাজার থেকে সার কিনতে হতো, এখন আমরা নিজেরাই কম্পোস্ট সার তৈরি করি। পোকামাকড় দমনে ব্যবহার করি ফেরোমন ফাঁদ। সরকারি সেবা পেতে বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করি। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধেও কাজ করছি।’

তাঁরা আরও বলেন, ঘন ঘন দুর্যোগ মোকাবিলা, অবকাঠামো উন্নয়ন, সরকারি সহায়তা ও সচেতনতা বাড়াতে আরও কার্যকর উদ্যোগ প্রয়োজন।

ফ্রেন্ডশিপের প্রকল্প ব্যবস্থাপক দিবাকর বিশ্বাস বলেন, ‘চরাঞ্চলের পিছিয়ে থাকা নারীদের ভেড়া ও সবজি চাষে স্বাবলম্বী করতে আমরা সহায়তা দিচ্ছি। বীজ, প্রযুক্তিগত সহায়তা—সবই বিনা মূল্যে দেওয়া হচ্ছে। গাইবান্ধার চরাঞ্চলে দেশি ভেড়ার বীজ থেকে উন্নত জাত তৈরির কাজ চলছে। এই জাতের ভেড়া দুর্যোগপ্রবণ এলাকার মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়ক হবে।’

গাইবান্ধা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘চরাঞ্চলে ভেড়া পালন খুবই লাভজনক। জেলায় সমতল এলাকায় ৭৪ হাজার ভেড়া রয়েছে। চরাঞ্চলে চারণভূমি থাকায় ভেড়া পালন সহজ এবং এতে বাড়তি শ্রমিকও লাগে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক উদ্বোধন বৃহস্পতিবার, তোলা যাবে ২ লাখ টাকা

তালাকের ১ মাসের মাথায় ফের বিয়ে করলেন ত্বহা-সাবিকুন

হঠাৎ বিদেশে শাহবাজ শরিফ, সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে সিডিএফ নিয়োগ নিয়ে বিড়ম্বনায় পাকিস্তান

খালেদা জিয়াকে দেখতে হাসপাতালে গেলেন ৩ বাহিনীর প্রধানেরা

তালাকের পরে ফের বিয়ে নিয়ে সমালোচনা, যে ব্যাখ্যা দিলেন সাবিকুন নাহার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জুয়েলারি ব্যবসায়ীকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গুলি করে হত্যা

নরসিংদী প্রতিনিধি
আপডেট : ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৪৯
নিহত প্রান্তোষ কর্মকার। ছবি: সংগৃহীত
নিহত প্রান্তোষ কর্মকার। ছবি: সংগৃহীত

নরসিংদীর রায়পুরায় প্রান্তোষ কর্মকার (৪২) নামের এক জুয়েলারি ব্যবসায়ীকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের দিঘলিয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠের কাছে এই ঘটনা ঘটে। নিহত প্রান্তোষ কর্মকার বাঁশগাড়ি নতুন বাজারের স্বর্ণকার ছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রান্তোষকে রাতের খাবারের পর কয়েকজন মুখোশধারী ব্যক্তি লেনদেনের কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে বাইরে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর গুলির শব্দ শুনে স্থানীয় বাসিন্দারা বিদ্যালয়ের পাশে তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। পরে দ্রুত উদ্ধার করে রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক প্রথমিক চিকিৎসা দিয়ে নরসিংদী সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। সেখানে পৌঁছানোর পর জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনার পর এলাকায় থমথমে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

নিহত ব্যক্তির স্ত্রী স্বর্ণলতা কর্মকার বলেন, কয়েক দিন ধরে কিছু লোকের সঙ্গে তাঁর স্বামীর বিরোধ চলছিল। তারা প্রান্তোষকে নানা সময়ে হুমকি দিত বলেও অভিযোগ করেন তিনি। পরিকল্পিতভাবেই তাঁকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি পরিবারের। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।

নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আসাদুজ্জামান বলেন, ‘হাসপাতালে আনার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছিল। বুক ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলির চিহ্ন রয়েছে।’

জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজন চন্দ্র সরকার বলেন, বাঁশগাড়িতে গুলিবিদ্ধ হয়ে এক ব্যবসায়ী নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। কারা এবং কেন এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে পুলিশের পৃথক টিম মাঠে নেমেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক উদ্বোধন বৃহস্পতিবার, তোলা যাবে ২ লাখ টাকা

তালাকের ১ মাসের মাথায় ফের বিয়ে করলেন ত্বহা-সাবিকুন

হঠাৎ বিদেশে শাহবাজ শরিফ, সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে সিডিএফ নিয়োগ নিয়ে বিড়ম্বনায় পাকিস্তান

খালেদা জিয়াকে দেখতে হাসপাতালে গেলেন ৩ বাহিনীর প্রধানেরা

তালাকের পরে ফের বিয়ে নিয়ে সমালোচনা, যে ব্যাখ্যা দিলেন সাবিকুন নাহার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সাংবাদিকদের তালাবদ্ধ রাখার হুমকি দেওয়া যুবশক্তির দুই নেতাকে অব্যাহতি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৩৯
জাতীয় যুবশক্তির দুই নেতা গত সোমবার সাংবাদিকদের হুমকি দিচ্ছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
জাতীয় যুবশক্তির দুই নেতা গত সোমবার সাংবাদিকদের হুমকি দিচ্ছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহীতে সাংবাদিকদের তালাবদ্ধ করে রাখার হুমকি দেওয়া জাতীয় যুবশক্তির দুই নেতাকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে সংগঠনের যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) আসাদুর রহমান এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, গুরুতর সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় যুবশক্তির রাজশাহী মহানগর শাখার মুখ্য সংগঠক মেহেদী হাসান ফারাবি এবং যুগ্ম সদস্যসচিব সোয়াইব আহমেদকে কমিটির সকল দায়িত্ব থেকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

একই সঙ্গে শৃঙ্খলাভঙ্গজনিত কর্মকাণ্ডের দায়ে এই দুজনকে কেন স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে না, সে বিষয়ে আগামী দুই দিনের মধ্যে লিখিত এবং সশরীর উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য আহ্বায়ক তারিকুল ইসলাম এবং সদস্যসচিব ডা. জাহেদুল ইসলাম নির্দেশ দিয়েছেন।

আসাদুর রহমান আরও জানান, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দেওয়া না হলে সংগঠনের নীতিমালা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, সোমবার রাজশাহী পর্যটন মোটেলে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নতুন জেলা কমিটির পরিচিতি সভা ছিল। সে সভা পণ্ড করতে যান মেহেদী হাসান ফারাবি ও সোয়াইব আহমেদসহ এনসিপির কয়েকজন নেতা-কর্মী। তাঁরা অভিযোগ তোলেন, এনসিপির জেলা কমিটির নতুন আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম আওয়ামী লীগের দোসর। তাঁরা তাঁর পদত্যাগ চান।

এ অভিযোগের বিষয়ে সাংবাদিকেরা মোটেলের সম্মেলনকক্ষে সাইফুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলছিলেন। প্রশ্নোত্তর পর্ব চলাকালে সম্মেলনকক্ষের ভেতরে প্রবেশ করেন সোয়েব আহমেদ ও মেহেদী হাসান ফারাবি।

ঢুকেই সোয়েব বলেন, ‘ভাই, সাংবাদিক যাঁরা আছেন, এইটা যদি এখনই বন্ধ না করেন, আপনাদেরসহ আমরা তালা মেরে দেব। আপনারা পায়খানা-প্রস্রাব সব এইখানে করতে হবে।’

পাশ থেকে ফারাবি বলেন, ‘এত লোক সব বাইরে বসে আছে। আপনারা ফাইজলামি করছেন এখানে, নাকি?’ সাংবাদিকেরা কিছু না বললে ফারাবি আবার বলেন, ‘ভাই চিল্লাচ্ছি, কানে যাচ্ছে না কথা?’

এরপর সোয়েব তাঁকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, ‘এখনই যদি বন্ধ না করেন এটা, আপনাদের সাংবাদিকদেরসহ কিন্তু আমরা তালা মেরে দেব।’

এরপরই সাংবাদিকেরা এসে এর প্রতিবাদ করেন। এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়।

সাংবাদিকদের সঙ্গে এমন আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে রাতেই বিবৃতি দেয় রাজশাহী টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের রাজশাহী শাখা। এ ছাড়া মঙ্গলবার রাজশাহী এডিটরস ফোরাম বিবৃতি দিয়ে এর নিন্দা জানায়।

সাংবাদিক সংগঠনগুলো এই ঘটনাকে স্বাধীন সাংবাদিকতার প্রতি হুমকি এবং জুলাইয়ের চেতনাবিরোধী উল্লেখ করে অবিলম্বে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক উদ্বোধন বৃহস্পতিবার, তোলা যাবে ২ লাখ টাকা

তালাকের ১ মাসের মাথায় ফের বিয়ে করলেন ত্বহা-সাবিকুন

হঠাৎ বিদেশে শাহবাজ শরিফ, সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে সিডিএফ নিয়োগ নিয়ে বিড়ম্বনায় পাকিস্তান

খালেদা জিয়াকে দেখতে হাসপাতালে গেলেন ৩ বাহিনীর প্রধানেরা

তালাকের পরে ফের বিয়ে নিয়ে সমালোচনা, যে ব্যাখ্যা দিলেন সাবিকুন নাহার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত