Ajker Patrika

উপজেলা পরিষদে তালা দেওয়া ছাত্রদল নেতার ঘরে তালা ঝোলাল ছাত্রলীগ

সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২৩, ২০: ০৮
উপজেলা পরিষদে তালা দেওয়া ছাত্রদল নেতার ঘরে তালা ঝোলাল ছাত্রলীগ

বিএনপি ও এর সমমনা দলের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের দ্বিতীয় দিন ঢাকার সাভার উপজেলা পরিষদের গেটে তালা ঝুলিয়ে ফেসবুকে লাইভ করেছেন এক ছাত্রদল নেতা। পরে সেই ছাত্রদল নেতার ঘরেই তালা দিয়েছেন সাভারের ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। 

আজ বৃহস্পতিবার ভোরে সজীব রায়হান নামের ফেসবুক আইডি থেকে ১০ মিনিট ৩১ সেকেন্ডের ওই লাইভ ভিডিওটি প্রকাশ করা হয়। ভিডিওটি দ্রুতই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। লাইভ ভিডিওতে যেই যুবককে দেখা গেছে, তিনি ঢাকা জেলা উত্তর ছাত্রদলের সাবেক সদস্যসচিব সজীব রায়হান। 

পরে বিষয়টি জানতে পেরে দুপুরে সজীব রায়হানকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে তাঁর ঘরে তালা দিয়েছেন সাভার উপজেলা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। সাভারের বক্তারপুরে ছাত্রদল নেতার বাড়ির সামনে হাজির হয়ে এলাকাবাসীকে ডেকে নেন ছাত্রলীগ নেতারা। তখন ছাত্রলীগের ঢাকা জেলা উত্তর, সাভার উপজেলা, সাভার পৌরসহ বিভিন্ন ইউনিটের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। 

ভিডিওতে দেখা গেছে, ছাত্রদল নেতা সজীব বিএনপি নেতাদের ছবিসংবলিত একটি ব্যানার উপজেলা পরিষদের ফটকে ঝুলিয়ে তালা দিচ্ছেন। আরেকজন মোবাইল ফোনে এই ভিডিও ধারণ করছেন। পরবর্তীকালে লাইভ ভিডিও চলাকালীন একটি মোটরসাইকেলে উঠে দ্রুত উপজেলা চত্বর ত্যাগ করেন ওই ছাত্রদল নেতা ও তাঁর সহযোগী। 

এ সময় মোটরসাইকেলের ওপর থেকেই লাইভে ছাত্রদল নেতা সজীব বলেন, ‘অবরোধের দ্বিতীয় দিনে আজকে সাভার উপজেলা পরিষদের প্রধান ফটকে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল এই মুহূর্তে তালা লাগিয়ে দিয়েছে। ওবায়দুল কাদের আপনাকে বলতে চাই, আপনারা এই দেশের মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দিতে চাচ্ছেন না। আপনারা অতি শিগগিরই, দ্রুত পদত্যাগ করুন।’ 

ভিডিওতে সজীব সাভার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজীবকে চ্যালেঞ্জ করে বলেন, ‘দেশের জনগণের প্রায় এক লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। সাভারে ৪০টা বাড়ি করেছেন, গাড়ি করেছেন। এর হিসাব আপনাকে দিতে হবে।’ 

লাইভে তিনি আরও বলেন, ‘দেশনেতা তারেক রহমানের এক দফা দাবি মেনে নিয়ে, গণতান্ত্রিকভাবে জনগণের পাশে দাঁড়ান। তাতেই হয়তো আপনার মঙ্গল হবে, দেশের মানুষ আপনাকে ক্ষমা করবে।’ 

এদিকে সজীবের ঘরে তালা ঝোলানোর সময় এলাকাবাসীর উদ্দেশে সাভার উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আতিকুর রহমান আতিক বলেন, ‘আমরা যারা এখানে বসবাস করি আমরা শান্তিপ্রিয় লোক। যখন এই আগুন-সন্ত্রাসীরা ঘর থেকে বের হতে পারবে না, তখন তারা আপনাদের ঘরে আগুন দেবে। আগুন দিয়ে বলবে বাংলাদেশে সহিংসতা চলছে। বাইরে যখন আগুন দিতে পারবে না, তখন ঘরে ঘরে দেবে! এটা আমার এলাকা, আপনার এলাকা, আমাদের সবার এলাকা। একটি সরকারি অফিসে সে ব্যানার নিয়ে গিয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। সমস্ত উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে পরিকল্পনা করছে।’ 

উপজেলা পরিষদের গেটের সামনে ছাত্রদল নেতা সজীব রায়হান। ছবি: সংগৃহীততিনি আরও বলেন, ‘তারেক রহমান লন্ডনে বসে হয়তো তাকে এমন নির্দেশনা দিয়েছে। সে যদি বলে তুমি মানুষের ঘরে আগুন দিবা, তুমি মানুষকে পুড়িয়ে মেরে ফেলবা, সে তা-ই করবে। আমরা আজকে এই বাসায় তালা দেব। তালা দেওয়ার পরে এই বাসায় কেউ অবস্থান করতে পারবেন না। আপনারা এটা প্রতিহত করবেন।’

যে ভবনে তালা ও ব্যানার ঝোলানো হয়েছে তার দ্বিতীয় তলায় সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাজহারুল ইসলাম এবং সাভার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজীবের দাপ্তরিক কার্যালয় রয়েছে। 

এ বিষয়ে সাভার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনজুরুল আলম রাজীব বলেন, ‘এটি একটি বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য করা হয়েছে। ওই মাদকসেবী ভোরবেলা আইসা, ওগো নেতা আছে তারেক রহমান, সে নাকি শুধু ভিডিও পাঠাতে বলে। তো সেই ভিডিওতে আমাদের নামে বদনাম করলে, একটু ভালো বীর খেতাব পায়।’ 

সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাজহারুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সকালে আমাদের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা পরিষদ ভবনের সামনের গেটের পাশে একটি ব্যানার ও একটি চাবিসহ তালা পড়ে থাকতে দেখে। পরে সেগুলো সংগ্রহ করে তারাই রেখে দিয়েছে বলে আমাকে জানানো হয়েছে। এই ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি করার প্রক্রিয়া চলছে, তবে বিষয়টি আমরাও তদন্ত করে দেখছি, আসলে কী হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদির ওপর হামলাকারীরা সীমান্ত দিয়ে পালিয়েছে কি না—তা শতভাগ নিশ্চিত নয় বিজিবি

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান । ছবি: আজকের পত্রিকা
বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান । ছবি: আজকের পত্রিকা

বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, ঢাকায় শরিফ ওসমান হাদির ওপর গুলি বর্ষণকারী ব্যক্তিরা ময়মনসিংহ সীমান্ত ব্যবহার করে ভারতে পালিয়েছে কি না—তা এখনো শতভাগ নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।

সোমবার ময়মনসিংহ নগরীর খাগডহর বিজিবি ক্যাম্পে তিনি আরও জানান, শুক্রবার ৯টার মধ্যে বিজিবি সদর দপ্তরের নির্দেশনায় সম্ভাব্য পাচারের রুটগুলো চিহ্নিত করে টহল এবং চেকপোস্ট বসানো হয় সীমান্তের অধিকাংশ স্থানে। পরদিন অর্থাৎ শনিবারে পুলিশ এবং বিজিবির সমন্বয়ে যৌথ অপারেশনের প্ল্যান করা হয়। ঢাকা থেকে আগত পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে বিজিবি ময়মনসিংহ সেক্টর কমান্ডারের নিয়মিত যোগাযোগ এবং অপারেশন সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা হয়।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আলোচনায় দুটি স্থানে একসঙ্গে অপারেশনের প্ল্যান করা হয়। সন্দেহভাজন হিসেবে শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে অবস্থানরত ফিলিপ স্নালকে আটকের পরিকল্পনা করা হয়। পুলিশের আরেকটি টিম হালুয়াঘাট এলাকায় অপারেশনের প্ল্যান করে। হালুয়াঘাটে অপারেশনের বিষয়ে বিজিবির সোর্স এবং অন্যান্য বিষয়ে তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহায়তা করেছে। অপর দিকে নালিতাবাড়ীর বারোমারি এলাকায় অপারেশন পরিচালিত হয় বিজিবির নেতৃত্বে এবং ঢাকা হতে আগত ও হালুয়াঘাট থানার পুলিশ সদস্যদের সমন্বয়ে। কিন্তু ফিলিপকে পাওয়া যায়নি। তবে তার স্ত্রী ডেলটা চিরান, শ্বশুর ইয়ারসন রংডি এবং মানব পাচারকারী লুইস লেংমিঞ্জাকে আটক করা হয়। তাদের বাড়ি থেকে একটি মোটরসাইকেলও উদ্ধার করা হয়।’

তাঁদের পরিবারের তিনজনসহ এ পর্যন্ত বিজিবি চারজনকে আটক করেছে। এঁদের মধ্যে সোমবার সকালে মানব পাচারকারী বেঞ্জামিন চিরামকে আটক করা হয়। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বরগুনায় স্বামীকে গলা টিপে হত্যা, স্ত্রী ও পরকীয়া প্রেমিক আটক

বরগুনা প্রতিনিধি
আটক পরকীয়া প্রেমিক আলামিন। ছবি: সংগৃহীত
আটক পরকীয়া প্রেমিক আলামিন। ছবি: সংগৃহীত

বরগুনার বামনা উপজেলায় পরকীয়া প্রেমের জেরে এক প্রবাসফেরত স্বামীকে গলা টিপে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ আব্দুল জলিল (৪৫)। তিনি উপজেলার রামনা ইউনিয়নের ঘোপখালী গ্রামের বাসিন্দা।

এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী নাজমা বেগম (৩৫) ও তাঁর পরকীয়া প্রেমিক আলামিনকে (৩০) আটক করেছে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দুজনই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে আব্দুল জলিলের নিজ বাড়িতে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।

স্থানীয় ও থানা সূত্রে জানা যায়, প্রায় পাঁচ বছর ধরে একই এলাকার আবু খতিবের ছেলে আলামিন নিহতের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করতেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে নাজমা বেগমের পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রায় ১৫ দিন আগে প্রবাস থেকে বাড়িতে ফিরে স্ত্রীর সম্পর্কের বিষয়টি জানতে পারেন আব্দুল জলিল।

অভিযোগ রয়েছে, রোববার বিকেলে স্ত্রী ও ওই গৃহকর্মী মিলে ঘুমন্ত অবস্থায় আব্দুল জলিলকে গলা টিপে হত্যা করেন।

হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করে বামনা থানায় নিয়ে যায়। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

বামনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে নিহতের স্ত্রী ও তাঁর পরকীয়া প্রেমিককে তাৎক্ষণিকভাবে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা দুজনই হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। মামলা দায়েরের পর আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মহান বিজয় দিবসে মেট্রোরেল সাময়িক বন্ধ থাকবে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে আগামী ১৬ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) মেট্রোরেল চলাচল সাময়িক বন্ধ থাকবে। ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দর এলাকায় প্যারাজাম্প অনুষ্ঠিত হওয়ার কারণে প্যারাট্রুপারদের নিরাপত্তার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ডিএমটিসিএল ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে জানিয়েছে, আগামী ১৬ ডিসেম্বর দুপুর ১১টা ৫০ মিনিট হতে ১২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত, অর্থাৎ মোট ৪০ মিনিটের জন্য মেট্রোরেল চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে।

ডিএমটিসিএল সাময়িক অসুবিধার জন্য যাত্রীসাধারণের কাছে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে। যাত্রীদের এই সময়সূচি মেনে প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ইডেনের সেই ছাত্রীকে বিয়ের ছয়মাস পর নোবেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের চার্জশিট

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
নোবেল। ছবি: সংগৃহীত
নোবেল। ছবি: সংগৃহীত

বাসায় আটকে রেখে ইডেন কলেজের এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করার অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় গায়ক নোবেলের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। গত ২৯ নভেম্বর ডেমরা থানার উপপরিদর্শক এসআই মুরাদ হোসেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন প্রসিকিউশন বিভাগের উপপরিদর্শক (এসআই) ইলামনি আজ সোমবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, আগামী ২৮ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্রটি উপস্থাপন করা হবে। পরে এ সংক্রান্ত মামলা বিচারের জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হবে।

নোবেলের আইনজীবী মোসতাক আহমেদ জানান, এই ধর্ষণ মামলার বাদীকে বিয়ে করেছেন নোবেল। তাঁরা সংসার করছেন।

গত ১৯ মে নোবেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, নির্যাতন ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেন ইডেন কলেজের ওই ছাত্রী। নোবেলকে গ্রেপ্তার করার পর কারাগারে পাঠানো হলে বিয়ের শর্তে তিনি জামিন পান। ১৯ জুন ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বসে ১০ লাখ টাকা দেনমোহরে নোবেল ওই ছাত্রীকে বিয়ে করেন।

এই মামলায় অভিযোগ করা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই ছাত্রীর সঙ্গে পরিচয় হয় নোবেলের। এরপর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নোবেল তাঁর স্টুডিও দেখানোর কথা বলে ছাত্রীকে ডেমরার বাসায় নিয়ে যান। সেখানে আটকে রাখেন, মোবাইল ফোন ও টাকা কেড়ে নেন। এরপর ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণ করেন। কথামতো না চললে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয়ও দেখান।

অভিযোগে বলা হয়, ওই তরুণীকে ছয় মাস ধরে ডেমরার ওই বাসায় আটকে রাখা হয়, মারধর করা হতো প্রায়ই। দু-তিন জনের সহায়তায় বাদীকে চুল ধরে টেনেহিঁচড়ে একটি কক্ষে আটকে রাখেন নোবেল। ওই ঘটনার ভিডিও ছড়ালে বাদীর বাবা-মা তাঁকে চিনতে পারেন। এরপর পরিবার পুলিশের সহায়তায় তাঁকে ১৯ মে উদ্ধার করে এবং পুলিশ নোবেলকে গ্রেপ্তার করে।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, নোবেল বাদীকে আটক রেখে ধর্ষণ করেন এবং ধর্ষণের ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে রাখেন। বাসায় না থাকলে ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। নোবেল নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বিভিন্ন সময়ে তাঁকে মারপিট করেছেন।

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, বাদীর অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। আসামি নোবেল জামিনে আছেন।

তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্রে আরও বলেছেন, বাদীকে মারধর ও ধর্ষণে আসামিকে আরও কয়েকজন সহযোগিতা করেছেন। তবে তাঁদের নাম-ঠিকানা উদ্‌ঘাটন করা সম্ভব হয়নি। অদূর ভবিষ্যতে তাঁদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করা সম্ভব হলে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।

এখন কী হবে:

নোবেলের আইনজীবী বলেছেন, নোবেল মামলার বাদীকে বিয়ে করে সংসার করছেন। তাই এই অভিযোগপত্রে নোবেলের কোনো সমস্যা হবে না। বিচারিক ট্রাইব্যুনালে বাদী আপসনামা দেওয়ার পর মামলা নিষ্পত্তি হবে। খালাস পাবেন নোবেল।

উল্লেখ্য, ভারতের সংগীত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান ‘সা রে গা মা’ দিয়ে পরিচিতি পান এই গায়ক। এর আগে মাদকে আসক্ত হয়ে সংগীত ছেড়েছিলেন তিনি। দীর্ঘ বিরতির পর আবারও শ্রোতাদের সামনে হাজির হন। সেবার নোবেল জানিয়েছিলেন, তিনি আর কখনো দর্শকদের হতাশ করবেন না। সব অতীত পেছনে ফেলে নিয়মিত গান উপহার দেবেন।

কিন্তু ২০২৩ সালে অগ্রিম টাকা নিয়ে গান গাইতে না যাওয়ায় প্রতারণার অভিযোগে রাজধানীর মতিঝিল থানায় নোবেলের বিরুদ্ধে মামলা হয়। জানা যায়, ওই বছর ১৬ মে শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ হেডকোয়ার্টার পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি ব্যাচ ২০১৬-এর অনুষ্ঠানে গান গাইতে গিয়ে ১ লাখ ৭২ হাজার টাকা অগ্রিম নেওয়ার প্রতারণায় অভিযোগে আটক হয়েছিলেন। সে সময় একদিন রিমান্ডেও ছিলেন এই গায়ক। পরে আপসের মাধ্যমে ওই মামলা থেকে অব্যাহতিও পান নোবেল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত