Ajker Patrika

তিন ফসলি জমি রক্ষার দাবি ১৪ সংগঠনের

  • গোবিন্দগঞ্জে কৃষিজমিতে ইপিজেডের পরিকল্পনা।
  • চুক্তি সত্ত্বেও জমি ফেরত পায়নি সাঁওতালরা।
  • বিচার হয়নি ২০১৬ সালে চালানো হামলার।
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

তিন ফসলি কৃষিজমি রক্ষায় গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ইপিজেড স্থাপন পরিকল্পনা স্থগিত করার দাবি জানিয়েছে নৃগোষ্ঠীগুলোর অধিকার ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা ১৪টি সংগঠন। সেই সঙ্গে সাঁওতাল নৃগোষ্ঠী ও কিছু বাঙালি কৃষিজীবী পরিবারের পূর্বপুরুষদের জমি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তোলা হয়।

সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি), নিজেরা করি, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি), ব্লাস্ট, বেলা, আইন ও সালিশ কেন্দ্র, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদসহ ১৪টি সংগঠন।

সংবাদ সম্মেলনে এএলআরডির চেয়ারপারসন ও নিজেরা করির সমন্বয়ক খুশী কবির সাঁওতালদের ভূমির সমস্যার ইতিহাস তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘১৯৫৬ সালে সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্মে সরকার আখ চাষ ও চিনি কল স্থাপনের জন্য ১৮৪২ একর জমি হুকুমদখল করে। তখন চুক্তি ছিল, জমির নির্ধারিত ব্যবহার বন্ধ হলে জমি আগের মালিকদের ফেরত দেওয়া হবে। কিন্তু ২০০৪ সালে চিনিকল বন্ধ হয়ে গেলেও জমি ফেরত দেওয়া হয়নি। বরং ২০১৬ সালে জমি ফেরতের দাবিতে আন্দোলনরত সাঁওতালদের ওপর হামলা চালানো হয়, ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এতে তিনজন নিহত হন।’

খুশী কবির অভিযোগ করে বলেন, সাঁওতালদের ওপর হামলার ওই ঘটনার এক দশক পরেও এখনো তার পূর্ণাঙ্গ অভিযোগপত্র দেওয়া হয়নি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, এটা স্পষ্ট, জমি ফেরত না দিয়ে সেখানে ইপিজেড স্থাপন শিল্পায়নের ভুল ব্যাখ্যা। কৃষিজমি ধ্বংস করে ইপিজেড করার যুক্তি নেই। বিশ্বে এখন বিভিন্ন দেশে যুদ্ধ হচ্ছে। বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তার স্বার্থেই তিন ফসলি জমি ধ্বংস কোনো ভালো সিদ্ধান্ত নয়।

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর ওপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে। দেশে এত জায়গা থাকতে সাঁওতালপল্লিতে গিয়ে কেন ইপিজেড করতে হবে?’

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা সরকারের কাছে দাবি করেন, সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম এলাকায় ২০১৬ সালের সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত সাঁওতাল ও বাঙালি কৃষিজীবীদের জমির দাবি স্বীকার করে শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে জমি ফিরিয়ে দিতে হবে। ইপিজেড তথা কোনো শিল্প প্রকল্প বাস্তবায়নের আগে অবশ্যই স্বাধীন ও স্বচ্ছ উপায়ে পরিবেশগত ও সামাজিক প্রভাব মূল্যায়ন (ইআইএ এবং এসআইএ) করতে হবে।

শুধু স্থানীয় নয়, গোটা কৃষি-পরিবেশ অঞ্চলের ভূমি, পানি, কৃষি ও জীববৈচিত্র্যের ওপর প্রস্তাবিত প্রকল্পটি কী প্রভাব ফেলবে, তা নির্ণয় করতে হবে। ২০১৬ সালের ঘটনায় নিহতদের জন্য বিচার নিশ্চিত ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ন্যায্য ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। একই সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনের কেউ যদি অনুমোদনের আগেই ইপিজেড স্থাপনের ঘোষণা দিয়ে আতঙ্ক ছড়ান, তা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বুশেহর পারমাণবিক কেন্দ্রে আছেন রুশ বিশেষজ্ঞরা, ইসরায়েলকে রাশিয়ার হুঁশিয়ারি

ইরানকে ঘিরে ফেলছে একের পর এক মার্কিন রণতরি ও যুদ্ধবিমান

পর্যটনে সেরা ১০ মুসলিমবান্ধব অমুসলিম দেশ

ছেলের কাটা পা হাতে নিয়ে বিচারের দাবিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন বাবা

পাকিস্তানি সেনাপ্রধানকে কেন যুক্তরাষ্ট্রে ডেকেছিলেন ট্রাম্প, ইরান-ইসরায়েল নিয়ে কী আলোচনা হলো

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত