Ajker Patrika

ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরছে মানুষ, পরিবহনসংকটে ভোগান্তি

শ্যামপুর-কদমতলী (প্রতিনিধি) ঢাকা 
আপডেট : ১৩ জুন ২০২৫, ২০: ০০
পরিবহন সংকটের কারণে অনেক যাত্রীকে হাতে, কাঁধে কিংবা মাথায় মালপত্র বহন করে হাঁটতে দেখা গেছে। যাত্রাবাড়ী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
পরিবহন সংকটের কারণে অনেক যাত্রীকে হাতে, কাঁধে কিংবা মাথায় মালপত্র বহন করে হাঁটতে দেখা গেছে। যাত্রাবাড়ী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঈদুল আজহার ছুটি শেষ হতে এক দিন বাকি থাকতেই রাজধানীমুখী কর্মজীবী মানুষ ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের ঢল নেমেছে। তবে তীব্র গরমের মধ্যে পরিবহন সংকট আর অতিরিক্ত ভাড়া চাওয়ায় চরম ভোগান্তির মধ্য দিয়ে ফিরতে হচ্ছে তাঁদের।

আজ শুক্রবার (১৩ জুন) সায়েদাবাদ আন্তজেলা বাস টার্মিনাল, যাত্রাবাড়ী, দোলাইরপাড় বাসস্ট্যান্ড এবং ঢাকা-মাওয়া সড়কে গিয়ে দেখা যায় এ চিত্র।

আজ দুপুরে সায়েদাবাদ টার্মিনালের ভেতর গিয়ে যাত্রীদের চাপ তেমন দেখা যায়নি। কারণ হিসেবে জানা যায়, যাত্রীরা তাঁদের সুবিধামতো বিভিন্ন জায়গায় নেমে যাওয়ায় টার্মিনালে তেমন যাত্রী আসেন না।

চট্টগ্রাম থেকে সপরিবারে সায়েদাবাদে আসা সরকারি চাকরিজীবী আমান বলেন, ‘এবারের দীর্ঘ ছুটিতে বাড়ি গিয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে ঈদ করার মজাটা পুরোপুরি উপভোগ করলাম। তাই ছুটি এক দিন বাকি থাকতেই এসে পড়লাম। ঈদের ছুটিতে বাড়ি যেতে আনন্দ লাগে, কিন্তু আসার সময় মনটা খুবই খারাপ লাগে। এটাই নিয়ম। কিছুই করার নেই।’

এদিকে যাত্রাবাড়ী, দোলাইরপাড় ও পোস্তগোলা বাসস্ট্যান্ড গিয়ে দেখা যায়, দেশের দক্ষিণাঞ্চল থেকে দল বেঁধে যাত্রীরা ঢাকায় আসছেন। প্রখর তাপের মধ্যে লোকাল পরিবহন না পাওয়ায় মালামাল ও পরিবার-পরিজন নিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে অনেককে। কিছু পরিবহন থাকলেও ভাড়া চাওয়া হচ্ছে অনেক বেশি।

যশোর থেকে যাত্রাবাড়ী আসা বেসরকারি চাকরিজীবী জুয়েল বলেন, ‘আজ আসার সময়ও বাসভাড়া বেশি দিতে হয়েছে। কিন্তু এখানে এসেও পরিবার ও বাচ্চাদের নিয়ে পড়েছি দুর্ভোগে। যাব খিলগাঁও, কিন্তু রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার ভাড়া চাওয়া হচ্ছে কয়েক গুণ বেশি।’

বরিশাল থেকে বাসে বয়স্ক মাকে নিয়ে দোলাইরপাড় এসে নামেন এনজিও কর্মকর্তা রুপা আক্তার। তিনি বলেন, ‘যাব রামপুরা। কিন্তু লোকাল বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার ভাড়া বেশি চাচ্ছে। একদিকে গরম, অন্যদিকে মালপত্র নিয়ে পড়েছি চরম ভোগান্তিতে। ভাবলাম, আগামীকাল শনিবারও অফিস ছুটি, তাই একটু আরামে আসার জন্য আজকে আসলাম।’

অন্যদিকে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে যাত্রাবাড়ী ও যাত্রাবাড়ী থেকে ঢাকা-মাওয়া সড়কের জুরাইন পর্যন্ত রাস্তা ও ফ্লাইওভারের ওপর যানজট দেখা যায়। ফলে তীব্র গরমের মধ্যে বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষদের রাস্তায় নেমে মালপত্র এবং শিশুদের নিয়ে হেঁটে গন্তব্যে যেতে দেখা যাচ্ছে।

পরিবহন সংকটের কারণে অনেক যাত্রীকে কাঁধে কিংবা মাথায় মালপত্র বহন করতে দেখা গেছে। ধোলাইপাড় বাসস্ট্যান্ড এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
পরিবহন সংকটের কারণে অনেক যাত্রীকে কাঁধে কিংবা মাথায় মালপত্র বহন করতে দেখা গেছে। ধোলাইপাড় বাসস্ট্যান্ড এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আলম দেওয়ান ও সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঈদ উপলক্ষে বাড়ি যাওয়া ও আসার সময় যাত্রীদের হয়রানি, ব্যাগ টানাটানি, ছিনতাই ও মলম পার্টি রোধে পরিবহনশ্রমিকদের সতর্ক অবস্থানে থাকতে বলা হয়েছে। যদি কেউ এসব কাজে জড়িত থাকেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সিটি পরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া প্রসঙ্গে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সদস্যসচিব হুমায়ূন আহমেদ বলেন, ‘আমরা ঈদের আগের ছুটি থেকেই আমাদের সিটি পরিবহন (বাস) মালিক সমিতির নেতাদের যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া না নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। যারাই অতিরিক্ত ভাড়া নেবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিমধ্যে এ ধরনের কিছু পরিবহনচালক ও কন্ট্রাক্টরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত