Ajker Patrika

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে যাত্রীর চাপ কম, টিকিট বিক্রি করছেন আনসার সদস্য

নুরুল আমিন হাসান, বিমানবন্দর থেকে
বিমানবন্দর রেলস্টেশনে যাত্রীর চাপ কম, টিকিট বিক্রি করছেন আনসার সদস্য

রাজধানীর বিমানবন্দর রেলস্টেশনের টিকিট কাউন্টারে কোনো টিকিট নেই। তবুও কাউন্টারে দীর্ঘ লাইন। স্টেশনের ভেতরে ঈদ উপলক্ষে যাত্রীর চাপ তুলনামূলক কম। অপরদিকে স্টেশনের বাইরে মো. মুনছুর নামের একজন আনসার সদস্যকে ট্রেনের টিকিট বিক্রি করতে দেখা গেছে।

আজ সোমবার (৮ এপ্রিল) সরেজমিনে বিমানবন্দর রেলস্টেশনে দুপুর থেকে বিকেলে পর্যন্ত এমন দৃশ্য দেখা যায়। এদিকে টিকিট ব্যতীত কাউকে স্টেশনে প্রবেশ করতে না দেওয়ার জন্য বিমানবন্দর রেলস্টেশনের বাইরে কড়াকড়ি অবস্থানে থাকতে দেখা গেছে বিমানবন্দর রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে।

বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিমানবন্দর স্টেশনের বাইরে মো. মুনছুর নামের একজন আনসার সদস্যকে টাকার বিনিময়ে কয়েকজন যাত্রীর কাছে ট্রেনের টিকিট বিক্রি করতে দেখা গেছে। এক যাত্রীকে দেখা যায়, তার কাছ থেকে একশত টাকার বিনিময়ে একটি কম্যুটার ট্রেনের টিকিট কিনেছেন। এ ছাড়া চার শ টাকার বিনিময়ে আরেকজন আরেকটি টিকিট কিনেছেন।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘একজন লোক আমাকে টাকা দিয়েছেন। আমি তার টিকিট কিনে দিয়েছি। তিনি আমাকে ২০ টাকা দিয়েছেন। কিন্তু অন্যান্য টিকিট বিক্রির বিষয়ে অস্বীকার করেন।’

বিমানবন্দরের অগ্রিম টিকিট কাউন্টার থেকে ৫/৭টি লাইন ধরে ট্রেনের টিকিট কাটার জন্য পার্কিং পর্যন্ত চলে গেছেন যাত্রীরা। আবার নগদ টিকিট বিক্রি করার কাউন্টারগুলো রয়েছে বন্ধ। অপেক্ষমাণ যাত্রীদের অভিযোগ, তাঁরা ট্রেনের টিকিটের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে আছেন। কিন্তু ট্রেনের টিকিট পাচ্ছেন না। অনলাইনেও টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না।

কাউন্টারের সামনে লেখা রয়েছে, ট্রেন ছাড়ার দুই ঘণ্টা পূর্ব থেকে কাউন্টার থেকে আন্তনগর ট্রেনের বিভিন্ন গন্তব্যের আসনবিহীন ২৫% টিকিট ইস্যু করা হবে।

কাউন্টারের বুকিং সহকারী মঞ্জুর হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের সিটের বিপরীতে ২৫% আসনবিহীন টিকিট রয়েছে। তার মধ্যে যেখানে ১০টি টিকিটের মধ্যে আমরা ২/৩টি স্ট্যান্ডিং টিকিট দিতে পারছি। তাও শুধু বিমানবন্দর স্টেশন থেকে।’

বিমানবন্দর রেলস্টেশনের টিকিট কাউন্টারে কোনো টিকিট না থাকলেও কাউন্টারে দীর্ঘ লাইন।বিমানবন্দরে স্টেশনের প্রবেশ পকেট টিকিট যাচাই বাছাই করে স্টেশনে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন আনসার, পুলিশ, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি) ও টিটিই সদস্যরা। যার কারণে অনেকেই অন্যের টিকিট নিয়ে এসে প্রবেশ করতে পারছেন না। আবার ভোটার আইডি কার্ড ছাড়া যারা আসছেন, তাঁরাও প্রবেশ করতে পারছেন না।

প্রবেশ পথে অপেক্ষমাণ কামরুল ইসলাম নামের একজন মধ্যবয়স্ক ব্যবসায়ী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অনলাইন কি? আমি তো বুঝি না? স্টেশনে আসছিলাম, কাউন্টার থেকে টিকিট নেওয়ার জন্য। কিন্তু টিকিট না পাওয়ায় স্টেশনে ঢুকতে পারছি না।’

যানজটের কারণে বিলম্বে এসে ট্রেন মিছ করেছেন এসিআই কোম্পানিতে চাকরি করা মাসুদ রানা বলেন, ‘তেজগাঁও থেকে সিরাজগঞ্জ যাওয়ার জন্য এসেছিলাম। কিন্তু লেট করে আসায় ট্রেন মিস করেছি। এখন অনলাইনেও টিকিট পাচ্ছি না, কাউন্টারেও না।’

স্টেশনের ভেতর অন্যান্য ঈদ যাত্রার তুলনায় যাত্রীর চাপ তুলনামূলক চাপ অনেক কম দেখা যায়। যারা টিকিট পেয়ে বাড়ি ফেরার জন্য স্টেশনে এসেছেন, তাদের চোখেমুখে হাসির ছাপ। এদিকে ট্রেনের টিকিট ছাড়া দুজনকে আটক করে রাখতে দেখা যায় রেলওয়ে পুলিশ সদস্যদের।

আটকৃতরা হলেন— টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার মৃত হাফিজ উদ্দিনের ছেলে হাবিল উদ্দিন (২৪) ও কুমিল্লার হায়দার রহমানের ছেলে শান্ত ইসলাম। তারা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ’ ট্রেনের টিকিট না থাকায় স্টেশনে প্রবেশ করতে পারিনি। পরে হাজী ক্যাম্প রেলক্রসিংয়ে ট্রেনে স্লো করার পর ট্রেনে উঠে স্টেশনে ঢুকেছি। কিন্তু আমরা ভুল করেছি, আর করব না।’

স্টেশনের বাইরে মো. মুনছুর নামের একজন আনসার সদস্য ট্রেনের টিকিট বিক্রি করছিলেন।পরবর্তীতে পুলিশ তথ্য কেন্দ্রের সামনে থাকা একজন রেলওয়ে পুলিশের বয়স্ক কনস্টেবল তাদের টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দিয়েছেন। পরে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই রেলওয়ে পুলিশের সদস্য আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি ওদের কাছ থেকে দুই শত টাকা নিয়েছি। আপনি একশত টাকা নিয়ে নেন!’

বিমানবন্দর স্টেশনের আরএনবি’র চিফ ইন্সপেক্টর মো. সিরাজুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত স্টেশনে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। সেই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমরা আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’ এদিকে বিচ্ছিন্ন অনিয়মের বিষয়ে তাঁর কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

বিমানবন্দর রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার মাহমুদুল হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত তেমন কোনো ট্রেন ডিলে হয়নি। তা ছাড়াও কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এখন পর্যন্ত আমরা আশঙ্কাও করছি না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদির ওপর হামলাকারীরা সীমান্ত দিয়ে পালিয়েছে কি না—তা শতভাগ নিশ্চিত নয় বিজিবি

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান । ছবি: আজকের পত্রিকা
বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান । ছবি: আজকের পত্রিকা

বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, ঢাকায় শরিফ ওসমান হাদির ওপর গুলি বর্ষণকারী ব্যক্তিরা ময়মনসিংহ সীমান্ত ব্যবহার করে ভারতে পালিয়েছে কি না—তা এখনো শতভাগ নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।

সোমবার ময়মনসিংহ নগরীর খাগডহর বিজিবি ক্যাম্পে তিনি আরও জানান, শুক্রবার ৯টার মধ্যে বিজিবি সদর দপ্তরের নির্দেশনায় সম্ভাব্য পাচারের রুটগুলো চিহ্নিত করে টহল এবং চেকপোস্ট বসানো হয় সীমান্তের অধিকাংশ স্থানে। পরদিন অর্থাৎ শনিবারে পুলিশ এবং বিজিবির সমন্বয়ে যৌথ অপারেশনের প্ল্যান করা হয়। ঢাকা থেকে আগত পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে বিজিবি ময়মনসিংহ সেক্টর কমান্ডারের নিয়মিত যোগাযোগ এবং অপারেশন সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা হয়।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আলোচনায় দুটি স্থানে একসঙ্গে অপারেশনের প্ল্যান করা হয়। সন্দেহভাজন হিসেবে শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে অবস্থানরত ফিলিপ স্নালকে আটকের পরিকল্পনা করা হয়। পুলিশের আরেকটি টিম হালুয়াঘাট এলাকায় অপারেশনের প্ল্যান করে। হালুয়াঘাটে অপারেশনের বিষয়ে বিজিবির সোর্স এবং অন্যান্য বিষয়ে তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহায়তা করেছে। অপর দিকে নালিতাবাড়ীর বারোমারি এলাকায় অপারেশন পরিচালিত হয় বিজিবির নেতৃত্বে এবং ঢাকা হতে আগত ও হালুয়াঘাট থানার পুলিশ সদস্যদের সমন্বয়ে। কিন্তু ফিলিপকে পাওয়া যায়নি। তবে তার স্ত্রী ডেলটা চিরান, শ্বশুর ইয়ারসন রংডি এবং মানব পাচারকারী লুইস লেংমিঞ্জাকে আটক করা হয়। তাদের বাড়ি থেকে একটি মোটরসাইকেলও উদ্ধার করা হয়।’

তাঁদের পরিবারের তিনজনসহ এ পর্যন্ত বিজিবি চারজনকে আটক করেছে। এঁদের মধ্যে সোমবার সকালে মানব পাচারকারী বেঞ্জামিন চিরামকে আটক করা হয়। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বরগুনায় স্বামীকে গলা টিপে হত্যা, স্ত্রী ও পরকীয়া প্রেমিক আটক

বরগুনা প্রতিনিধি
আটক পরকীয়া প্রেমিক আলামিন। ছবি: সংগৃহীত
আটক পরকীয়া প্রেমিক আলামিন। ছবি: সংগৃহীত

বরগুনার বামনা উপজেলায় পরকীয়া প্রেমের জেরে এক প্রবাসফেরত স্বামীকে গলা টিপে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ আব্দুল জলিল (৪৫)। তিনি উপজেলার রামনা ইউনিয়নের ঘোপখালী গ্রামের বাসিন্দা।

এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী নাজমা বেগম (৩৫) ও তাঁর পরকীয়া প্রেমিক আলামিনকে (৩০) আটক করেছে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দুজনই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে আব্দুল জলিলের নিজ বাড়িতে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।

স্থানীয় ও থানা সূত্রে জানা যায়, প্রায় পাঁচ বছর ধরে একই এলাকার আবু খতিবের ছেলে আলামিন নিহতের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করতেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে নাজমা বেগমের পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রায় ১৫ দিন আগে প্রবাস থেকে বাড়িতে ফিরে স্ত্রীর সম্পর্কের বিষয়টি জানতে পারেন আব্দুল জলিল।

অভিযোগ রয়েছে, রোববার বিকেলে স্ত্রী ও ওই গৃহকর্মী মিলে ঘুমন্ত অবস্থায় আব্দুল জলিলকে গলা টিপে হত্যা করেন।

হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করে বামনা থানায় নিয়ে যায়। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

বামনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে নিহতের স্ত্রী ও তাঁর পরকীয়া প্রেমিককে তাৎক্ষণিকভাবে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা দুজনই হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। মামলা দায়েরের পর আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মহান বিজয় দিবসে মেট্রোরেল সাময়িক বন্ধ থাকবে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে আগামী ১৬ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) মেট্রোরেল চলাচল সাময়িক বন্ধ থাকবে। ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দর এলাকায় প্যারাজাম্প অনুষ্ঠিত হওয়ার কারণে প্যারাট্রুপারদের নিরাপত্তার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ডিএমটিসিএল ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে জানিয়েছে, আগামী ১৬ ডিসেম্বর দুপুর ১১টা ৫০ মিনিট হতে ১২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত, অর্থাৎ মোট ৪০ মিনিটের জন্য মেট্রোরেল চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে।

ডিএমটিসিএল সাময়িক অসুবিধার জন্য যাত্রীসাধারণের কাছে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে। যাত্রীদের এই সময়সূচি মেনে প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ইডেনের সেই ছাত্রীকে বিয়ের ছয়মাস পর নোবেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের চার্জশিট

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
নোবেল। ছবি: সংগৃহীত
নোবেল। ছবি: সংগৃহীত

বাসায় আটকে রেখে ইডেন কলেজের এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করার অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় গায়ক নোবেলের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। গত ২৯ নভেম্বর ডেমরা থানার উপপরিদর্শক এসআই মুরাদ হোসেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন প্রসিকিউশন বিভাগের উপপরিদর্শক (এসআই) ইলামনি আজ সোমবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, আগামী ২৮ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্রটি উপস্থাপন করা হবে। পরে এ সংক্রান্ত মামলা বিচারের জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হবে।

নোবেলের আইনজীবী মোসতাক আহমেদ জানান, এই ধর্ষণ মামলার বাদীকে বিয়ে করেছেন নোবেল। তাঁরা সংসার করছেন।

গত ১৯ মে নোবেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, নির্যাতন ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেন ইডেন কলেজের ওই ছাত্রী। নোবেলকে গ্রেপ্তার করার পর কারাগারে পাঠানো হলে বিয়ের শর্তে তিনি জামিন পান। ১৯ জুন ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বসে ১০ লাখ টাকা দেনমোহরে নোবেল ওই ছাত্রীকে বিয়ে করেন।

এই মামলায় অভিযোগ করা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই ছাত্রীর সঙ্গে পরিচয় হয় নোবেলের। এরপর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নোবেল তাঁর স্টুডিও দেখানোর কথা বলে ছাত্রীকে ডেমরার বাসায় নিয়ে যান। সেখানে আটকে রাখেন, মোবাইল ফোন ও টাকা কেড়ে নেন। এরপর ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণ করেন। কথামতো না চললে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয়ও দেখান।

অভিযোগে বলা হয়, ওই তরুণীকে ছয় মাস ধরে ডেমরার ওই বাসায় আটকে রাখা হয়, মারধর করা হতো প্রায়ই। দু-তিন জনের সহায়তায় বাদীকে চুল ধরে টেনেহিঁচড়ে একটি কক্ষে আটকে রাখেন নোবেল। ওই ঘটনার ভিডিও ছড়ালে বাদীর বাবা-মা তাঁকে চিনতে পারেন। এরপর পরিবার পুলিশের সহায়তায় তাঁকে ১৯ মে উদ্ধার করে এবং পুলিশ নোবেলকে গ্রেপ্তার করে।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, নোবেল বাদীকে আটক রেখে ধর্ষণ করেন এবং ধর্ষণের ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে রাখেন। বাসায় না থাকলে ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। নোবেল নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বিভিন্ন সময়ে তাঁকে মারপিট করেছেন।

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, বাদীর অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। আসামি নোবেল জামিনে আছেন।

তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্রে আরও বলেছেন, বাদীকে মারধর ও ধর্ষণে আসামিকে আরও কয়েকজন সহযোগিতা করেছেন। তবে তাঁদের নাম-ঠিকানা উদ্‌ঘাটন করা সম্ভব হয়নি। অদূর ভবিষ্যতে তাঁদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করা সম্ভব হলে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।

এখন কী হবে:

নোবেলের আইনজীবী বলেছেন, নোবেল মামলার বাদীকে বিয়ে করে সংসার করছেন। তাই এই অভিযোগপত্রে নোবেলের কোনো সমস্যা হবে না। বিচারিক ট্রাইব্যুনালে বাদী আপসনামা দেওয়ার পর মামলা নিষ্পত্তি হবে। খালাস পাবেন নোবেল।

উল্লেখ্য, ভারতের সংগীত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান ‘সা রে গা মা’ দিয়ে পরিচিতি পান এই গায়ক। এর আগে মাদকে আসক্ত হয়ে সংগীত ছেড়েছিলেন তিনি। দীর্ঘ বিরতির পর আবারও শ্রোতাদের সামনে হাজির হন। সেবার নোবেল জানিয়েছিলেন, তিনি আর কখনো দর্শকদের হতাশ করবেন না। সব অতীত পেছনে ফেলে নিয়মিত গান উপহার দেবেন।

কিন্তু ২০২৩ সালে অগ্রিম টাকা নিয়ে গান গাইতে না যাওয়ায় প্রতারণার অভিযোগে রাজধানীর মতিঝিল থানায় নোবেলের বিরুদ্ধে মামলা হয়। জানা যায়, ওই বছর ১৬ মে শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ হেডকোয়ার্টার পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি ব্যাচ ২০১৬-এর অনুষ্ঠানে গান গাইতে গিয়ে ১ লাখ ৭২ হাজার টাকা অগ্রিম নেওয়ার প্রতারণায় অভিযোগে আটক হয়েছিলেন। সে সময় একদিন রিমান্ডেও ছিলেন এই গায়ক। পরে আপসের মাধ্যমে ওই মামলা থেকে অব্যাহতিও পান নোবেল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত