Ajker Patrika

‘আদিবাসী’ শব্দটি নিয়ে গবেষণা হওয়া উচিত: ড. ইফতেখারুজ্জামান

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
রাজধানীর ধানমন্ডিতে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সভা অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর ধানমন্ডিতে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সভা অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

‘আদিবাসী’ শব্দটি নিয়ে গবেষণা হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। আজ শুক্রবার (২০ জুন) বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম আয়োজিত ‘সাম্প্রতিক পার্বত্য চট্টগ্রাম পরিস্থিতি ও পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন। রাজধানীর ধানমন্ডিতে উইমেন্স ভলান্টারি অ্যাসোসিয়েশন (ডব্লিউভিএ) মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন লেখক ও অধিকারকর্মী সতেজ চাকমা। তিনি বলেন, ‘১৯৭২ সালের ১৫ জানুয়ারি মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার নেতৃত্বে জুম্ম নেতৃবৃন্দের পেশকৃত প্রথম স্মারকলিপির চার দফা দাবিনামাকে আমলে না নিয়ে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরে থেকে মূলধারার বাঙালি জনগোষ্ঠী ঢুকিয়ে দিয়ে জুম্ম দমনের “হুমকির” বিষয়টি বিশেষভাবে স্মরণযোগ্য। মূলত তাঁর এই আধিপত্যবাদী চিন্তার প্রতিফলনই বাংলাদেশের রাজনৈতিক চরিত্রকে ভিন্ন এক রূপ দেয়।’

অথচ ১৯৭১ সালে সংঘটিত মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম মৌল চেতনা এবং ১৯৭২ সালে প্রণীত সংবিধানের মূলনীতির অন্যতম ছিল ‘অসাম্প্রদায়িকতা’। তবে শেখ মুজিবুর রহমানের আধিপত্যবাদী চিন্তার আক্ষরিক বাস্তবায়ন করেন জেনারেল জিয়াউর রহমান।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘আদিবাসী শব্দটি নিয়ে গবেষণা হওয়া উচিত। আদিবাসী নেই, এটা প্রচার করতে পারলে তাদের অধিকারের বিষয়টিও আর থাকে না।’

বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং বলেন, ‘পাহাড় পাহাড়ের মতো থাকুক, সেখানকার জীববৈচিত্র্য মানুষেরা তাদের মতো থাকুক।’

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘এই অঞ্চলজুড়ে অস্থিতিশীলতা তৈরি করার মধ্য দিয়ে যে ঘটনা ঘটবে তাতে জঙ্গিগোষ্ঠী, আধিপত্যবাদ বিস্তার পাবে। এর ফলে ওই অঞ্চলে আরও সামরিকীকরণ ঘটবে। পার্বত্য চট্টগ্রামের সংকট রাজনৈতিক সংকট। রাজনৈতিকভাবেই এর সমাধান হওয়া উচিত।’

সভায় জানানো হয়, সামরিক-বেসামরিক বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী—পাহাড়ে সশস্ত্র তৎপরতায় স্বাধীনতার পর থেকে পার্বত্য চুক্তির পূর্ববর্তী সময়ে নিহত, আহত ও অপহরণ কিংবা নিখোঁজের শিকার হয়েছেন অন্তত ৮ হাজার ১৪০ জন। নিহতদের মধ্যে ১ হাজার ১৩৮ জন পাহাড়ি এবং ১ হাজার ৪৪৬ জন বাঙালি। এই সময়ে বিভিন্ন বাহিনীর ৩৮০ জন সদস্য নিহত হয়েছেন।

অন্যদিকে পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পরও ৮৯৯ জন পাহাড়ি, ৩৯০ বাঙালি এবং সামরিক-আধা সামরিক বাহিনীর ২৬ জনসহ ১ হাজার ৩১৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় ১ হাজার ৮২৩ জন। চুক্তি পরবর্তী সময়ে পাহাড়ে অপহরণের শিকার হয়েছেন ২ হাজার ১৯৮ জন। কিন্তু কোনো ঘটনারই দৃষ্টান্তমূলক বিচার হয়নি।

পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহসভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার পাহাড়ে নির্যাতন-নিপীড়নের বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরে বলেন, ‘পাহাড়ি মানুষ কারও সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদে জড়াতে চায় না। কিন্তু আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। আমরা বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব স্বীকার করে এখানেই থাকতে চাই। আশা করি, আমাদের ভিন্ন পথে ধাবিত করতে বাধ্য করা হবে না।’

বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বের পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে সদিচ্ছার অভাবই এই চুক্তির বাস্তবায়ন না হতে পারার অন্যতম মূল কারণ বলে মনে করে আদিবাসী ফোরাম। জনসংহতি সমিতির তথ্য তুলে ধরে সভায় বলা হয়, পার্বত্য চুক্তির ৭২টি ধারার মধ্যে ২৫টি ধারা বাস্তবায়িত হয়েছে। অবশিষ্ট ২৯টি ধারার সম্পূর্ণভাবে অবাস্তবায়িত এবং ১৮টি ধারা আংশিক বাস্তবায়িত অবস্থায় রয়েছে।

অভ্যুত্থান-পরবর্তী অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েও পার্বত্য চট্টগ্রামের মানবাধিকার পরিস্থিতির কোনো অগ্রগতি হয়নি বলে মনে করে আদিবাসী ফোরাম। বিগত ১০ মাসে পাহাড়ি জনগোষ্ঠী চরম নিরাপত্তাহীনতায় এবং নানা মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকারে পরিণত হয়েছে বলে সভায় জানানো হয়।

সভায় পার্বত্য চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়নে সরকারের প্রতি ছয়টি করণীয় সম্পর্কে পরামর্শ দেওয়া হয়। সভায় পার্বত্য চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়নে সরকারের প্রতি ছয় দফা সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে—এই অঞ্চলের অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প সরিয়ে নেওয়া ও সেটেলার বাঙালিদের পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরে সম্মানজনক পুনর্বাসন করা।

সভায় সভাপতিত্ব করেন আদিবাসী ফোরামের সহসভাপতি অজয় এ মৃ। আরও বক্তব্য দেন পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী অধ্যাপক ড. খায়রুল ইসলাম চৌধুরী, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (এএলআরডি) নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি 
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে মজিরুলের নেতৃত্বে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে মজিরুলের নেতৃত্বে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

জীবন আছে যার, তার মৃত্যু অনিবার্য। মৃত্যুর পর মানুষের শেষ ঠিকানা কবর। মৃতদেহ গোসল করিয়ে কাফন পরানো হয়, জানাজা শেষে তাকে শায়িত করা হয় চিরনিদ্রার ঘরে। এই কবর খোঁড়ার দায়িত্বটি গ্রামের কিছু মানুষ বহু বছর ধরে স্বেচ্ছায়, বিনা পারিশ্রমিকে পালন করে আসছেন, যাঁরা সবার কাছে ‘গোরখোদক’ নামে পরিচিত। আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় তাঁরা করে থাকেন এই কাজ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গোরখোদকেরা কোনো পারিশ্রমিক নেন না। গ্রামের যে কেউ মারা যাক, নিজেদের ব্যস্ততা ফেলে তাঁরা ছুটে আসেন কবর খুঁড়তে। তাঁদের এই মানবিক কাজের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে গ্রামের লোকেরা দোয়া করেন—আল্লাহ যেন তাদের সুস্থ ও ভালো রাখেন।

দেবীপুর গ্রামের বাসিন্দা গোরখোদক মজিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ৫৫ বছর ধরে কবর খুঁড়ছি। যত দিন সুস্থ থাকব, এই কাজ চালিয়ে যাব। আমাদের গ্রাম ছাড়াও অন্য গ্রাম থেকে কেউ ডাকলে সেখানেও যাই। ছোটবেলায় ওস্তাদের কাছে ডালি ধরেই শিখেছি। গরিব মানুষ, মাঠে কাজ করি; কিন্তু কেউ মারা গেলে দ্বিধা করি না—এই কাজ আমার নেশায় পরিণত হয়েছে।’

মজিরুল আরও জানান, এখন তিনি তরুণদেরও এই কাজ শেখাচ্ছেন।

গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

গোরখোদক শাকের আলী বলেন, ‘আমরা নিঃস্বার্থভাবে কাজ করি। কখনো কোনো টাকা নিই না। যেখানেই থাকি, গ্রামের কারও মৃত্যুর সংবাদ শুনলে দ্রুত কবর খুঁড়তে চলে আসি।’

গোরখোদক ফুয়াদ হোসেন বলেন, ‘অন্য গ্রাম থেকে ডাক এলেও আমরা যাই। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই করি এই কাজ। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’

স্থানীয় বাসিন্দা শাজাহান আলী বলেন, ‘কবর খোঁড়া বড় দায়িত্বের কাজ। গ্রামের এসব মানুষ খবর পেলেই দৌড়ে আসে। আমরা তাদের জন্য দোয়া করি।’

মাওলানা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘মৃত ব্যক্তির জন্য কবর খোঁড়া নিঃসন্দেহে সওয়াবের কাজ। হাদিসে এসেছে—যাঁরা কবর খোঁড়েন, আল্লাহ তাদের জন্য জান্নাতে ঘর নির্মাণ করবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে কারখানার ফটকের সামনে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকেরা। আন্দোলনের মুখে কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রধান ফটক তালাবদ্ধ করে সটকে পড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে শিল্প ও থানা-পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসেছেন। আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের সাইটালিয়া গ্রামে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানায় এই ঘটনা ঘটে।

কারখানার নারী শ্রমিক মিনারা আক্তার বলেন, ‘অক্টোবর ও নভেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করে নাই। এক মাসের বেতন না পেলে আমাদের চলা খুবই কঠিন হয়। আমাদের নাওয়া-খাওয়া বন্ধ হয়। আর সেখানে কারখানা কর্তৃপক্ষ দুই মাসের বেতনভাতা বকেয়া রেখেছে। আজ সকালে শ্রমিকেরা জড়ো হলে তারা পালিয়ে যায়।’

মিন্টু নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘এই কারখানায় আমরা তিন বছর ধরে চাকরি করছি। আমাদের বেতনের বাইরে কোনো সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে না। তবু পেটের দায়ে চাকরি করি। দুই মাসের বেতন বকেয়া। আমাদের তো পেট আছে, সন্তান-সংসার আছে। এক মাস দোকান বাকি পরিশোধ করতে না পারলে পরের মাসে আর দোকানি বাকি দেয় না। আমরা কী অবস্থায় আছি, একবার ভাবুন। বেতন পরিশোধ না করে তারা পালিয়ে গেছে।’

আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

মেহেদী হাসান বলেন, ‘এত দিন ধরে ঋণ করে বলে-কয়ে দোকান থেকে বাকি নিয়ে চলছি। আর পারছি না। এখন দোকান বাকি দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। অক্টোবর মাসের বকেয়া বেতন নিয়ে কমপক্ষে ১০টি তারিখ দিছে। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ বেতন পরিশোধ করেনি। শেষে আজ বেতন পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু তারা কারখানা ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে গেছে।’

কারখানার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. বুলবুল হাসান বলেন, ‘ব্যাংকের সমস্যার কারণে বেতন-ভাতা পরিশোধ করা যাচ্ছে না। আশা করি, আজকের মধ্যে নভেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করতে পারব।’ বিনা নোটিশে কারখানার ফটক কেন তালাবদ্ধ? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমি বলতে পারব না।’

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাছির আহমদ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাছ ধরতে গিয়ে ভারতে আটক ৬ জেলে, ১৩ মাস পর হস্তান্তর

নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি 
১৩ মাস সাজা ভোগের পর হস্তান্তর হওয়া বাংলাদেশি ছয় জেলে। ছবি: আজকের পত্রিকা
১৩ মাস সাজা ভোগের পর হস্তান্তর হওয়া বাংলাদেশি ছয় জেলে। ছবি: আজকের পত্রিকা

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার নাকুগাঁও সীমান্ত দিয়ে ছয় বাংলাদেশি মৎস্যজীবীকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কাছে হস্তান্তর করেছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁদের হস্তান্তর করা হয়।

হস্তান্তর হওয়া মৎস্যজীবীরা কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলার বাসিন্দা। তাঁরা হলেন আবুল হোসেনের ছেলে রাসেল মিয়া (৩৫), বাহাদুর মিয়ার ছেলে বিপ্লব মিয়া (৪৫), ইসহাক আলীর ছেলে মীর জাফর আলী (৪৫), ইছাক আলীর ছেলে বকুল মিয়া (৩২), ফকির আলীর ছেলে আমের আলী (৩৫), সলিমুদ্দিন ব্যাপারীর ছেলে চাঁন মিয়া (৬০)।

বিজিবি ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৪ নভেম্বর জিঞ্জিরাম নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে ভুলক্রমে সীমান্ত অতিক্রম করে তাঁরা ভারতের ভেতরে প্রবেশ করেন। এ সময় স্থানীয় পুলিশ ও বিএসএফ সদস্যরা তাঁদের আটক করে। অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে তাঁরা সেখানে প্রায় ১৩ মাস সাজা ভোগ করেন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সন্ধ্যায় শেরপুর ৩৯ বিজিবির দায়িত্বে থাকা এলাকার হাতিপাগার বিজিবি কোয়ার্টার মাস্টার মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে ভারতের কিল্লাপাড়া বিএসএফ ক্যাম্পের সঙ্গে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে বিএসএফ ছয় বাংলাদেশি নাগরিককে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে। এ সময় নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।

মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান বলেন, আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর তাঁদেরকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

উত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ১৬
কারওয়ান বাজারের বিএফডিসি রেলগেট এলাকা থেকে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার মো. আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে কালা সিদ্দিক এবং মো. মিলন। ছবি: উত্তরা আর্মি ক্যাম্প
কারওয়ান বাজারের বিএফডিসি রেলগেট এলাকা থেকে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার মো. আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে কালা সিদ্দিক এবং মো. মিলন। ছবি: উত্তরা আর্মি ক্যাম্প

রাজধানীর কারওয়ান বাজার থেকে বিদেশি পিস্তল, গুলিসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে সেনাবাহিনী। তাঁরা হলেন মো. আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে কালা সিদ্দিক এবং মো. মিলন।

সেনাবাহিনী জানায়, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে জড়িত ছিলেন।

গতকাল মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) কারওয়ান বাজারের বিএফডিসি রেলগেট এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে এই দুজনকে গ্রেপ্তার করে সেনাবাহিনীর ৬ স্বতন্ত্র এডি ব্রিগেডের অধীনস্থ উত্তরা আর্মি ক্যাম্প।

উত্তরা আর্মি ক্যাম্প থেকে আজ বুধবার পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে কারওয়ান বাজারের বিএফডিসি রেলগেট সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাদক সেবনরত অবস্থায় শীর্ষ সন্ত্রাসী আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে কালা সিদ্দিক এবং মিলনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই স্থানে তল্লাশি চালিয়ে তাঁদের কাছ থেকে একটি স্প্যানিশ পিস্তল ও তিনটি গুলি উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এই দুজনকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে সেনাবাহিনী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত