Ajker Patrika

পুরান ঢাকার কেমিক্যালের গুদাম সরছে না, আরও সময় চায় বিসিক

আয়নাল হোসেন, ঢাকা
পুরান ঢাকার কেমিক্যালের গুদাম সরছে না, আরও সময় চায় বিসিক

২০১০ সালের জুনে পুরান ঢাকার নিমতলীতে কেমিক্যাল গুদামে ভয়াবহ আগুনের ঘটনায় ১২০ জনের বেশি মানুষ মারা যায়। তখনই পুরান ঢাকা থেকে কেমিক্যাল গুদাম সরানোর দাবিতে সোচ্চার হয় স্থানীয়রাসহ বিভিন্ন-শ্রেণি পেশার মানুষ। এরপর ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে চকবাজারের চুড়িহাট্টায় আগুনে ৭০ জনের বেশি মানুষ মারা গেলে কেমিক্যাল গুদাম সরানোর দাবি আরও জোরালো হয়।

সরকারও উদ্যোগ নেয় নিরাপদ স্থানে তা সরিয়ে নেওয়ার। সে অনুযায়ী মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুঠির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) নির্মিত কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি পল্লির প্লট চলতি বছরের জুনের মধ্যে বুঝিয়ে দেওয়ার কথা। কিন্তু বিসিক এখনো সেখানে নির্মাণকাজ করতে পারেনি। এ জন্য দেড় বছর সময় বাড়ানোর আবেদন করেছে সংস্থাটি। অর্থাৎ ২০২৬ সালের আগে এই শিল্পপার্কের নির্মাণকাজ শেষ হচ্ছে না। ফলে পুরান ঢাকা থেকে সরছে না কেমিক্যাল গুদামও।

বিসিক সূত্রে জানা গেছে, কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি পল্লি নির্মাণের জন্য সিরাজদিখানে ধলেশ্বরী নদীর পারে ৩০৮ দশমিক ৩৩ একর জমি অধিগ্রহণ করে সরকার। এ প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৪৫৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা। পরে প্রকল্প সংশোধন করে ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। বর্ধিত মেয়াদ শেষ হতে চললেও এখনো সেখানে চলছে মাটি ভরাটের কাজ। কিছু জায়গায় চলছে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের কাজ। পুরো শিল্পনগরী গড়ে তুলতে আরও কয়েক বছর সময় লাগবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে বিসিক বলছে, ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ হবে।

এদিকে কেমিক্যাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, তাঁরা কেমিক্যালের গুদাম সরাতে প্রস্তুত আছেন। প্রয়োজনে তাঁরা বিসিককে অগ্রিম টাকা দেওয়ার জন্যও প্রস্তুত রয়েছেন। প্লটের জমি বুঝিয়ে দেওয়া হলেই তাঁরা গুদাম সরিয়ে নেবেন। 

এ বিষয়ে বাংলাদেশ কেমিক্যাল অ্যান্ড পারফিউমারি মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা এনায়েত হোসেন মারুফ বলেন, বিসিক তাঁদের প্লটের সীমানা বুঝিয়ে দিলেই তাঁরা সেখানে নিজস্ব খরচে অবকাঠামো নির্মাণ করতে চান। ভূমি উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনে তাঁরা অগ্রিম টাকা দিতে প্রস্তুত রয়েছেন।

বিসিক কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি পল্লির প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা বলেন, ভূমি উন্নয়নকাজ শেষে চলতি বছরেই প্লট শিল্পমালিকদের কাছে হস্তান্তর করা সম্ভব হবে। ২০২০ এবং ২০২১ সালের করোনা মহামারি, নির্মাণসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি, প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধনীর কারণে কাজের গতি থেমে যায়। নির্মাণকাজে আইনগত কোনো জটিলতা নেই।

প্রকল্প পরিচালক মুহাম্মদ হাফিজুর রহমান বলেন, ‘প্রকল্পের ভূমি বরাদ্দ এই জুলাইয়ে করার নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে। আমরা প্রকল্পের উন্নয়নকাজও করব, প্লট বরাদ্দের কাজও চলবে। দুটি কাজ একই সঙ্গে চলবে। শিল্পমালিকেরা তাঁদের শিল্প গড়ে তুলবেন। আমাদের কিছু অসমাপ্ত কাজও চলমান থাকবে।’

জানা যায়, কেমিক্যাল পল্লি অনাবাসিক ভবন, ডাম্পিং ইয়ার্ড, রাস্তা, ড্রেন, ফায়ার সার্ভিস স্ট্রেশনসহ অন্যান্য কাজ করতে হবে। অথচ প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মাটি ভরাটের কাজ শেষ হতেই আরও এক থেকে দেড় বছর সময় লাগবে।

বিসিকের চেয়ারম্যান সঞ্জয় কুমার ভৌমিক বলেন, কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি পল্লির নির্মাণকাজের জন্য ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছে। এখানে ৯ তলাবিশিষ্ট অফিস ভবন হবে। বিদ্যুৎ ও গ্যাস-সংযোগের জন্য টাকা জমা দেওয়া হয়েছে। তবে এখানে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণ হবে। সব মিলিয়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে সময় লাগবে। জমি অধিগ্রহণেই সময় বেশি লেগেছে।

এদিকে কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি পল্লি পুরোপুরি প্রস্তুত হওয়ার পরও ব্যবসায়ীরা পুরান ঢাকা ছাড়বেন কি না, তা নিয়ে সন্দিহান বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ। তাঁরা বলছেন, পুরান ঢাকাসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে কয়েক হাজার কেমিক্যাল গুদাম। বড় ও মাঝারি ব্যবসায়ীরাও হয়তো দৌড়ঝাঁপ করে প্লট নেবেন। কিন্তু ক্ষুদ্র অনেক ব্যবসায়ীর পক্ষে প্লট নেওয়া সম্ভব হবে না। তাঁদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানও সরবে না।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সহসভাপতি স্থপতি ইকবাল হাবীব বলেন, ব্যবসায়ীরা মুখে বললেও তাঁরা সহজে সরবেন না। চামড়াশিল্প সরানোর সময় ব্যবসায়ীরা সহযোগিতা করেননি। এখানেও ব্যবসায়ীরা নানা অজুহাত খুঁজবেন। এটি যাতে না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

বাংলাদেশ কেমিক্যাল অ্যান্ড পারফিউমারি মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিলন বলেন, কেমিক্যাল গুদামঘর সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রায় ১০ বছর আগে বাংলাদেশ কেমিক্যাল অ্যান্ড পারফিউমারি মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ অ্যাসিড মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশন ও পেইন্ট অ্যান্ড ড্রাই কেমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন বিসিকের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। কিন্তু প্লট নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় তাঁরা স্থানান্তর হতে পারছেন না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পানিতে ডুবে প্রাণ গেল মামা-ভাগনের

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে পুকুরে ডুবে শাহবাব মন্ডল (আড়াই বছর) ও আবু তোহা মন্ডল (৩) নামের দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের যাদুরচর নতুন গ্রাম এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

শাহবাব মন্ডল উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের ধনারচর নতুন গ্রামের শাহজাহান মন্ডলের ছেলে এবং আবু তোহা মন্ডল একই গ্রা‌মের আবু তালেবের ছেলে। এই দুই শিশু সম্পর্কে মামা-ভাগনে।

পরিবারের বরাত দিয়ে যাদুরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সরবেশ আলী জানান, বুধবার সকালে ওই দুই শিশু তালেব মন্ডলের বাড়িতে খেলা করছিল। এ সময় সবার অজান্তে তারা বাড়ির পা‌শে পুকুরের পানিতে পড়ে যায়। স্বজনেরা পুকুর থে‌কে দুই শিশু‌কে উদ্ধার করে হাসপাতালে নি‌য়ে যান। দা‌য়িত্বরত চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।

খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক একই এলাকার বাসিন্দা ও কুড়িগ্রাম-৪ আসনের বিএনপির মনোনীত সংসদ সদস‌্য প্রার্থী আজিজুর রহমান ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তি‌নি শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।

রৌমারী থানার উপপ‌রিদর্শক শাহ‌নেওয়াজ হো‌সেন ব‌লেন, খবর পে‌য়ে ঘটনাস্থ‌লে পু‌লিশ পাঠা‌নো হ‌য়ে‌ছে। সহকারী ক‌মিশনার (ভূ‌মি) ঘটনাস্থ‌লে গি‌য়ে‌ছেন। দুই শিশুর মৃত‌্যুর ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনি ব‌্যবস্থা নেওয়া হ‌বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ১৩
নিহত লায়লা আফরোজ ও নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ। ছবি: সংগৃহীত
নিহত লায়লা আফরোজ ও নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ। ছবি: সংগৃহীত

‎রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যার ঘটনায় গৃহকর্মী আয়েশাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার দুপুরে ঝালকাঠি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

‎গ্রেপ্তারের বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন তেজগাঁও বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন।

‎মামুন বলেন, গৃহকর্মী আয়েশাকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঝালকাঠি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গত সোমবার সকালে শাহজাহান রোডের ১৪ তলা একটি আবাসিক ভবনের সপ্তম তলায় লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তাঁর মেয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে (১৫) ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।

মা-মেয়ে হত্যায় অভিযুক্ত গৃহকর্মী আয়েশা। ছবি: আজকের পত্রিকা
মা-মেয়ে হত্যায় অভিযুক্ত গৃহকর্মী আয়েশা। ছবি: আজকের পত্রিকা

গতকাল তাঁদের মরদেহ নাটোরে দাফন করা হয়েছে। মামলার এজাহারে বাসা থেকে মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র খোয়া যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।

ভবনের ভেতরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, হত্যাকাণ্ডের পর এক নারী স্কুলড্রেস পরে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। চার দিন আগে আয়েশা পরিচয় দিয়ে ওই বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেওয়া তরুণী (২০) এই জোড়া খুনে জড়িত বলে সন্দেহ স্বজনদের। ঘটনার পর থেকে ওই তরুণী পলাতক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি 
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে মজিরুলের নেতৃত্বে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে মজিরুলের নেতৃত্বে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

জীবন আছে যার, তার মৃত্যু অনিবার্য। মৃত্যুর পর মানুষের শেষ ঠিকানা কবর। মৃতদেহ গোসল করিয়ে কাফন পরানো হয়, জানাজা শেষে তাকে শায়িত করা হয় চিরনিদ্রার ঘরে। এই কবর খোঁড়ার দায়িত্বটি গ্রামের কিছু মানুষ বহু বছর ধরে স্বেচ্ছায়, বিনা পারিশ্রমিকে পালন করে আসছেন, যাঁরা সবার কাছে ‘গোরখোদক’ নামে পরিচিত। আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় তাঁরা করে থাকেন এই কাজ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গোরখোদকেরা কোনো পারিশ্রমিক নেন না। গ্রামের যে কেউ মারা যাক, নিজেদের ব্যস্ততা ফেলে তাঁরা ছুটে আসেন কবর খুঁড়তে। তাঁদের এই মানবিক কাজের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে গ্রামের লোকেরা দোয়া করেন—আল্লাহ যেন তাদের সুস্থ ও ভালো রাখেন।

দেবীপুর গ্রামের বাসিন্দা গোরখোদক মজিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ৫৫ বছর ধরে কবর খুঁড়ছি। যত দিন সুস্থ থাকব, এই কাজ চালিয়ে যাব। আমাদের গ্রাম ছাড়াও অন্য গ্রাম থেকে কেউ ডাকলে সেখানেও যাই। ছোটবেলায় ওস্তাদের কাছে ডালি ধরেই শিখেছি। গরিব মানুষ, মাঠে কাজ করি; কিন্তু কেউ মারা গেলে দ্বিধা করি না—এই কাজ আমার নেশায় পরিণত হয়েছে।’

মজিরুল আরও জানান, এখন তিনি তরুণদেরও এই কাজ শেখাচ্ছেন।

গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

গোরখোদক শাকের আলী বলেন, ‘আমরা নিঃস্বার্থভাবে কাজ করি। কখনো কোনো টাকা নিই না। যেখানেই থাকি, গ্রামের কারও মৃত্যুর সংবাদ শুনলে দ্রুত কবর খুঁড়তে চলে আসি।’

গোরখোদক ফুয়াদ হোসেন বলেন, ‘অন্য গ্রাম থেকে ডাক এলেও আমরা যাই। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই করি এই কাজ। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’

স্থানীয় বাসিন্দা শাজাহান আলী বলেন, ‘কবর খোঁড়া বড় দায়িত্বের কাজ। গ্রামের এসব মানুষ খবর পেলেই দৌড়ে আসে। আমরা তাদের জন্য দোয়া করি।’

মাওলানা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘মৃত ব্যক্তির জন্য কবর খোঁড়া নিঃসন্দেহে সওয়াবের কাজ। হাদিসে এসেছে—যাঁরা কবর খোঁড়েন, আল্লাহ তাদের জন্য জান্নাতে ঘর নির্মাণ করবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে কারখানার ফটকের সামনে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকেরা। আন্দোলনের মুখে কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রধান ফটক তালাবদ্ধ করে সটকে পড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে শিল্প ও থানা-পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসেছেন। আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের সাইটালিয়া গ্রামে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানায় এই ঘটনা ঘটে।

কারখানার নারী শ্রমিক মিনারা আক্তার বলেন, ‘অক্টোবর ও নভেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করে নাই। এক মাসের বেতন না পেলে আমাদের চলা খুবই কঠিন হয়। আমাদের নাওয়া-খাওয়া বন্ধ হয়। আর সেখানে কারখানা কর্তৃপক্ষ দুই মাসের বেতনভাতা বকেয়া রেখেছে। আজ সকালে শ্রমিকেরা জড়ো হলে তারা পালিয়ে যায়।’

মিন্টু নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘এই কারখানায় আমরা তিন বছর ধরে চাকরি করছি। আমাদের বেতনের বাইরে কোনো সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে না। তবু পেটের দায়ে চাকরি করি। দুই মাসের বেতন বকেয়া। আমাদের তো পেট আছে, সন্তান-সংসার আছে। এক মাস দোকান বাকি পরিশোধ করতে না পারলে পরের মাসে আর দোকানি বাকি দেয় না। আমরা কী অবস্থায় আছি, একবার ভাবুন। বেতন পরিশোধ না করে তারা পালিয়ে গেছে।’

আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

মেহেদী হাসান বলেন, ‘এত দিন ধরে ঋণ করে বলে-কয়ে দোকান থেকে বাকি নিয়ে চলছি। আর পারছি না। এখন দোকান বাকি দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। অক্টোবর মাসের বকেয়া বেতন নিয়ে কমপক্ষে ১০টি তারিখ দিছে। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ বেতন পরিশোধ করেনি। শেষে আজ বেতন পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু তারা কারখানা ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে গেছে।’

কারখানার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. বুলবুল হাসান বলেন, ‘ব্যাংকের সমস্যার কারণে বেতন-ভাতা পরিশোধ করা যাচ্ছে না। আশা করি, আজকের মধ্যে নভেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করতে পারব।’ বিনা নোটিশে কারখানার ফটক কেন তালাবদ্ধ? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমি বলতে পারব না।’

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাছির আহমদ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত